Loading AI tools
তৈলবীজ উদ্ভিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সরিষা (ইং“ Mustard) ব্রাসিকা (Brassica) বা ক্রুসিফেরি (Cruciferae) গোত্রের একটি দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ। এটি একটি তৈলফসল। এর ডিম্বক বক্রমুখী ৷ সরিষার দানা মশলা হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। সরিষা শাক বাংলাদেশে জনপ্রিয়। এছাড়াও সরিষার দানা পানির সাথে মিশিয়ে ভিনেগারসহ বিভিন্ন তরল তৈরি করা হয়, দানা পিষে সরিষার তেল তৈরি করা হয় যা রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। সরিষার পাতা সরিষার শাক বা সর্ষে শাক হিসেবে খাওয়া হয়। সরিষা ফুলে স্ব-পরাগায়ন ঘটে থাকে। স্বপরাগায়ণ এর ফলে পরাগরেণুর অপচয় কম হয়, পরাগায়ণের জন্য বাহক এর উপর নির্ভর করতে হয় না এবং পরাগায়ণ নিশ্চিত হয়। এর ফলে নতুন যে উদ্ভিদ উৎপন্ন হয় তাতে বৈশিষ্ট্যের কোন পরিবর্তন আসে না এবং কোনো একটি প্রজাতির চরিত্রগত বিশুদ্ধতা বজায় থাকে। তবে এতে জিনগত বৈচিত্র্য কম থাকে ।এই বিচার থেকে জন্ম নেওয়া নতুন গাছের অভিযোজন ক্ষমতা কমে যায় এবং অচিরেই প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে।
সরিষার ক্ষেত ও ফুল | |
---|---|
সরিষার ক্ষেত ও ফুল | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Rosids |
বর্গ: | Brassicales |
পরিবার: | Brassicaceae |
সরিষা বর্ষজীবী উদ্ভিদ। এর উৎপত্তিস্থল এশিয়া। ভারতীয় উপমহাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে শীতকালীন রবি শস্য হিসেবে সরিষার চাষ করা হয়। সরিষার গাছ দৈর্ঘ্যে ১ মিটার মত হয়, তবেরাই সরিষা ২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে[1][2]।
বপন পদ্ধতি: সরিষা বীজ সাধারণত ছিটিয়ে বপন করা হয়। লাইন করে বুনলে সুবিধা হয়।
বপনের সময়: অঞ্চল ভেদে মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য কার্তিক মাস পর্যন্ত।
নিড়ানী দেয়া: বপনের ১৫-২০ দিন পর একবার এবং ফুল আসার সময় দ্বিতীয়বার।
সেচ প্রয়োগ: বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ এবং ৫০-৫৫ দিসের মধ্যে দ্বিতীয় সেচ।
সারের পরিমাণ: জাত, মাটি ও মাটিতে রসের তারতম্য অনুসারে বিভিন্ন সার দিতে হয়।[3]
সরিষা একটি তৈলফসল। সরিষা বাংলাদেশের প্রধান ভোজ্য তেল। প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ হেক্টর জমিতে (২০২০) এর সরিষা আবাদ করা হয়। বিভিন্ন জাতের সরিষার বীজে প্রায় ৪০-৪৪% তেল থাকে। বাংলাদেশে সরিষার তেলের উৎপাদনের বাৎসরিক পরিমাণ প্রায় আড়াই লক্ষ টন (২০২০)। সরিষার খৈলে প্রায় ৪০% আমিষ থাকে। বাংলাদেশে ৩ প্রকার সরিষার চাষ করা হয় যথা মাঘী সরিষা, রাই সরিষা ও ধলি সরিষা।। বাংলাদেশে এর বেশ কিছু উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি উদ্ভাবন করা হয়েছে।[5] [6]
এই জাতে গাছের উচ্চতা ৮০-৯৫ সেমি এবং প্রতি গাছে ৪-৬টি শাখা থাকে। পাতা হালকা সবুজ রঙের এবং মসৃণ। পাতার বোঁটা কান্ডকে সম্পূর্ণ ঘিরে রাখে। প্রস্ফুটিত ফুল কুঁড়ির উপরে থাকে। ফুলের রং হলুদ। প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৮০-১০০টি। ফল ২ কক্ষ বিশিষ্ট। প্রতি বীজে ফলের সংখ্যা ১৫-২০টি। বীজের রং পিঙ্গল। এক হাজার বীজের ওজন ২.৫-৩.০ গ্রাম। বীজে তেলে পরিমাণ ৪৩-৪৪ ভাগ। ফসল পাকতে ৮০-৮৫ দিন সময় লাগে। পরিমিত সার ও সেচ প্রয়োগে হেক্টর প্রতি ১.২৫-১.৪৫ মে.টন ফলন পাওয়া যায়।
এই জাতে গাছের উচ্চতা ৭৫-৮৫ সেমি। পাতা হালকা সবুজ রঙের এবং মসৃণ। ফুলের রং হলুদ। প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৮০-১০০টি। ফল ৪ কক্ষ বিশিষ্ট মনে হলেও ২ কক্ষ বিশিষ্ট। প্রতি বীজে ফলের সংখ্যা ২২-২৬টি। বীজের রং হলুদ। এক হাজার বীজের ওজন ৩.৫-৩.৮ গ্রাম। ফসল পাকতে ৭৫-৮০ দিন সময় লাগে। পরিমিত সার ও সেচ প্রয়োগে হেক্টর প্রতি ১.৪-১.৬ মে.টন ফলন পাওয়া যায়।
এই জাতে গাছের উচ্চতা ৯০-১০০ সেমি। পাতা হালকা সবুজ রঙের এবং মসৃণ। প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৭০-৮০টি। ফল ২ কক্ষ বিশিষ্ট। প্রতি বীজে ফলের সংখ্যা ২০-২২টি। ফল বারি সরিষা-১৪ এর তুলনায় সরু ও লম্বা। বীজের রং হলুদ। এক হাজার বীজের ওজন ৩.২৫-৩.৫০ গ্রাম। ফসল পাকতে ৮০-৮৫ দিন সময় লাগে। পরিমিত সার ও সেচ প্রয়োগে হেক্টর প্রতি ১.৫৫-১.৬৫ মে.টন ফলন পাওয়া যায়।
এই জাতে গাছের উচ্চতা ৯৫-৯৭ সেমি। পাতা হালকা সবুজ রঙের এবং মসৃণ, ফুলের রং হলুদ, প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৬০-৬৫টি। প্রতি বীজে ফলের সংখ্যা ২৮-৩০টি। বীজের রং হলুদ। এক হাজার বীজের ওজন ৩.০-৩.৪ গ্রাম। ফসল পাকতে ৮২-৮৬ দিন সময় লাগে। ফলন হেক্টর প্রতি ১.৭-১.৮ মে.টন।
এই জাতে গাছের উচ্চতা ৯০-৯৫ সেমি। প্রাথমিক শাখার সংখ্যা ৩-৫ টি। ফুলের রং হলুদ, বীজের রং লালচে কালো। ফসল পাকতে ৮০-৮৫ দিন সময় লাগে। এ জাতে এক হাজার বীজের ওজন ৩.৬-৩.৮ গ্রাম। ফলন হেক্টর প্রতি ১.৮০ মে.টন। এ জাতের সরিষা মধ্য অগ্রহায়ণ পর্যন্ত বপন করা করা যায়।
এই জাতে গাছের উচ্চতা ৮৫-৯০ সেমি। প্রাথমিক শাখার সংখ্যা ৩-৪টি, ফুলের রং হলুদ, বীজের রং লালচে কালো। ফসল পাকতে ৮০-৮৪ দিন সময় লাগে।এক হাজার বীজের ওজন ২.৯-৩.৫ গ্রাম। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ১.৭ মে.টন। এই জাত অল্টারনারিয়া ব্লাইট ও বৃষ্টিজনিত সাময়িক জলাবদ্ধতা সহনশীল।
এই জাতে গাছের উচ্চতা ৯৫-১০৫ সেমি এবং প্রাথমিক শাখার সংখ্যা ৩-৫টি, ফুলের রং হলুদ, বীজের রং লালচে। উচ্চফলনশীল এক হাজার বীজের ওজন ২.৮-২.৯ গ্রাম। ফসল পাকতে ৭৮-৮২ দিন সময় লাগে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ১.৫ মে.টন। এই জাতে বীজে তেলের পরিমাণ ৪২%।[7]
দেশ | উৎপাদন (টন) | পাদটীকা | ||
---|---|---|---|---|
পাকিস্তান | ২৩৩,০০০ | |||
ভারত | ২০০,০০০+ | |||
কানাডা | ১৫৪,৫০০ | |||
নেপাল | ১৪২,৯২০ | |||
মিয়ানমার | ৯১,০০০ | * | ||
রাশিয়া | ৫৪,৬৮২ | |||
ইউক্রেন | ৩০,১৭০ | |||
গণচীন | ১৭,০০০ | ফ | ||
যুক্তরাষ্ট্র | ১৬,৬৬০ | |||
ফ্রান্স | ১৪,০০০ | ফ | ||
চেক প্রজাতন্ত্র | ১৩,৩৭৮ | |||
জার্মানি | ১০,৫০০ | ফ | ||
পৃথিবী | ৫৭১,৮৮০ | এ | ||
* = অনানুষ্ঠানিক উপাত্ত | ফ = খাদ্য ও কৃষি সংস্থার অনুমান | এ = আনুষ্ঠানিক, উপ-আনুষ্ঠানিক বা প্রাক্কলিত উপাত্ত অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে তথ্যসূত্র: জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)[8] |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.