রুদ্র সম্প্রদায়
From Wikipedia, the free encyclopedia
হিন্দুধর্মে রুদ্র সম্প্রদায় চার বৈষ্ণব উপসম্প্রদায়ের অন্যতম। বৈষ্ণবদের অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো এই সম্প্রদায়েও বিষ্ণু বা তার অবতার কৃষ্ণকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর মনে করা হয়। রুদ্র সম্প্রদায়ের প্রবর্তক সন্ত বিষ্ণুস্বামী।[1][2] যদিও এই সম্প্রদায়ের উৎস রুদ্র নামধারী মুনি, যিনি গত জন্মে ধ্রুবপুত্র শম্ভু ছিলেন। যিনি ভগবান বিষ্ণু (বা কৃষ্ণ) দ্বারা প্রদত্ত জ্ঞান মানবজাতিকে দিয়েছিলেন। বৈষ্ণব মত অনুসারে রুদ্রমুনি হলেন প্রথম এবং প্রধান বৈষ্ণব বা বিষ্ণুর অনুগামী। এই সম্প্রদায়ের মতে, বিষ্ণুস্বামী ছিলেন বৈষ্ণবদের পঞ্চদশ গুরু যিনি বিষ্ণুমাহাত্ম্য শিষ্যসমাজে প্রচার করেন। এই সম্প্রদায়ের প্রবর্তনের তারিখটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। জেমস হেস্টিংসের মতে বিষ্ণুস্বামী পঞ্চদশ শতাব্দীর ব্যক্তিত্ব ছিলেন।[3] কিন্তু কার্ল অলসনের মতে, তিনি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রুদ্র সম্প্রদায়ের অনুগামীগণ অবশ্য বিষ্ণুস্বামীর জন্ম ৪,৫০০ বছর আগে হয়েছিল বলে মনে করেন।[4] ঐতিহাসিক বিষ্ণুস্বামীর সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানা যায় না। তার সকল রচনা কালের গহ্বরে বিলীন হয়ে গেছে। পশ্চিম ভারতের গুজরাত অঞ্চলে এই ধর্ম প্রথম প্রচারিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে বল্লভ আচার্য (১৪৭৯–১৫৩১ খ্রি.) এই সম্প্রদায়ের মুখ্য প্রবক্তা হয়েছিলেন বলে মনে করা হয়।
রুদ্র সম্প্রদায়ের আবার দুটি উপবিভাগ রয়েছে: বিষ্ণুস্বামীর অনুগামী বিষ্ণুস্বামীগণ এবং বল্লভ আচার্য প্রবর্তিত বল্লভগণ বা পুষ্টিমার্গ সম্প্রদায়। উইলিয়াম ডেডওয়েলারের মতে, পুষ্টিমার্গ সম্প্রদায় বাদে রুদ্র সম্প্রদায়ের বর্তমানে কোনো অস্তিত্ব নেই।[5]
এই সম্প্রদায়ের দর্শন হল কৃষ্ণপ্রধান শুদ্ধাদ্বৈত মতবাদ।[6] এই সম্প্রদায়ের অনুগামীগণ কৃষ্ণকে একাকী অথবা রাধার সঙ্গে পূজা করেন। কৃষ্ণের অপর এক রূপ বালগোপাল-ও এই সম্প্রদায়ের পূজ্য।[7]
হিন্দুধর্মে সন্ন্যাসজীবন আদর্শ হলেও রুদ্র সম্প্রদায়ে পুরোহিতদের সংসারধর্ম পালনে উৎসাহিত করা হয়। এই সম্প্রদায় বিবাহ করে পরিবার প্রতিপালনের কথা বলে।[3]