Loading AI tools
আফগানিস্তানের শেষ বাদশাহ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মুহাম্মদ জহির শাহ (পশতু: محمد ظاهرشاه, দারি: محمد ظاهر شاه; ১৫ অক্টোবর ১৯১৪ – ২৩ জুলাই ২০০৭) ছিলেন আফগানিস্তানের শেষ বাদশাহ। ১৯৩৩ থেকে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে একটি বিদ্রোহে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগ পর্যন্ত চার দশক তিনি শাসন করেছেন। নির্বাসন থেকে ফিরে আসার পর ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তাকে জাতির পিতা উপাধি প্রদান করা হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই উপাধি ধারণ করেছিলেন।[2]
মুহাম্মদ জহির শাহ محمد ظاهر شاه (বাদশাহ সপ্তম মুহাম্মদ) | |
---|---|
আফগানিস্তানের বাদশাহ[1] | |
আফগানিস্তানের বাদশাহ | |
রাজত্ব | ৮ নভেম্বর ১৯৩৩ – ১৭ জুলাই ১৯৭৩ |
পূর্বসূরি | মুহাম্মদ নাদির শাহ |
উত্তরসূরি | রাজতন্ত্র বিলুপ্ত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি হিসেবে মুহাম্মদ দাউদ খান |
বারাকজাই প্রধান | |
রাজত্ব | ৮ নভেম্বর ১৯৩৩ – ২৩ জুলাই ২০০৭ |
জন্ম | ১৫ অক্টোবর ১৯১৪[2] কাবুল, আফগানিস্তান |
মৃত্যু | ২৩ জুলাই ২০০৭ ৯২) কাবুল, আফগানিস্তান | (বয়স
সমাধি | মারানজান পাহাড় |
দাম্পত্য সঙ্গী | হুমাইরা বেগম |
বংশধর | প্রিন্সেস বিলকিস বেগম প্রিন্স মুহাম্মদ আকবর খান যুবরাজ আহমেদ শাহ খান প্রিন্সেস মরিয়ম বেগম প্রিন্স মুহাম্মদ নাদির খান প্রিন্স শাহ মাহমুদ খান প্রিন্স মুহাম্মদ দাউদ পাশতুনিয়ার খান প্রিন্স মীর ওয়াইস খান |
রাজবংশ | বারাকজাই |
পিতা | মুহাম্মদ নাদির শাহ |
মাতা | মাহ পারওয়ার বেগম |
ধর্ম | ইসলাম (সুন্নি) |
জহির শাহ ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ অক্টোবর আফগানিস্তানের কাবুলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাতিগত দিক থেকে পশতু।[2] তার বাবা মুহাম্মদ নাদির শাহ ছিলেন বারাকজাই রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং সাবেক বাদশাহ আমানউল্লাহ খানের সময় আফগান সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান। হাবিবউল্লাহ গাজির মৃত্যুদন্ডের পর নাদির শাহ ক্ষমতালাভ করেন।[3] জহির শাহের দাদা মুহাম্মদ ইউসুফ খান ব্রিটিশ ভারতের দেরাদুনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দ্বিতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের পর তার পরিবার নির্বাসিত হয়েছিল। নাদির শাহ ছিলেন আমির দোস্ত মুহাম্মদ খানের সৎ ভাই সুলতান মুহাম্মদ খানের বংশধর। তার দাদা মুহাম্মদ ইয়াহিয়া খান (আমির ইয়াকুব খানের শ্বশুর) গান্দামাকের সন্ধির আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে স্যার লুই চাভাগনারি নিহত হওয়ার পর ইয়াকুব খান, ইয়াহিয়া খান ও তার পুত্রগণ, প্রিন্স মুহাম্মদ ইউসুফ খান ও প্রিন্স মুহাম্মদ আসিফ খানকে ব্রিটিশরা গ্রেপ্তার করে ব্রিটিশ রাজের হেফাজতে নেয়। আমির আবদুর রহমান খান তার শাসনের শেষ বছরে উক্ত দুই রাজপুত্রকে আফগানিস্তানের আমন্ত্রণ জানানোর আগ পর্যন্ত তারা সেখানে ছিলেন। আমির হাবিবুল্লাহ খানের শাসনামলে তারা মুশাইবান (বাদশাহর সঙ্গী) উপাধি পান।
জহির শাহ্ কাবুলের হাবিবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে রাজপুত্রদের জন্য বিশেষ শ্রেণীতে পড়াশোনা করেছেন।[4] তার বাবা ফ্রান্সে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন। সেসময় তিনি পাস্তুর ইন্সটিটিউট ও মন্টপেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।[5] আফগানিস্তানে ফিরে আসার পর দেশের বিশৃঙ্খল অবস্থা সামাল দেয়ার জন্য তিনি তার বাবা ও চাচাদের সহায়তা করেছেন।[6] পরে তিনি পদাতিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং প্রিভি কাউন্সিলর হিসেবে নিযুক্ত হন। জহির শাহ উপযুদ্ধমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন।[4] তিনি পশতু, ফার্সি, ও ফরাসি ভাষায় দক্ষ ছিলেন।[7]
মুহাম্মদ নাদির শাহ নিহত হওয়ার পর ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের ৮ নভেম্বর ১৯ বছর বয়সে জহির শাহ বাদশাহ ঘোষিত হন। সিংহাসনে আরোহণের পর তাকে অলঙ্কারিক উপাধি হিসেবে "যিনি আল্লাহর উপর ভরসা স্থাপন করেন, সত্য ধর্ম ইসলামের অনুসারী" উপাধিতে ভূষিত করা হয়।[4] প্রথম ত্রিশ বছর তিনি প্রত্যক্ষভাবে শাসন করেননি। এসময় তার চাচা মুহাম্মদ হাশিম খান ও শাহ মাহমুদ খানের উপর বেশিরভাগ ক্ষমতা ন্যস্ত ছিল।[8] এই সময়কালে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে আফগানিস্তানের সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। এসময় আফগানিস্তান লীগ অফ নেশনসের সদস্য হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভ করে।[9] ১৯৩০ এর দশকের শেষের দিক নাগাদ জার্মানি, ইটালি ও জাপানসহ অনেক দেশের সাথে বৈদেশিক সহায়তা ও বাণিজ্য বিষয়ে সমঝোতা হয়।[10]
জহির শাহ প্রথম পূর্ব তুর্কিস্তান প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকারী উইঘুর ও কিরগিজ মুসলিমদেরকে সহায়তা, অস্ত্র ও আফগান যোদ্ধা পাঠিয়ে সাহায্য করেছেন। কাশগরের যুদ্ধ ও ইয়ারকান্দের যুদ্ধে আফগান, উইঘুর ও কিরগিজ বাহিনী চীনা হুইদের নিয়ে গঠিত ৩৬ম ডিভিশনের কাছে পরাজিত হওয়ায় প্রজাতন্ত্র রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। আফগান যোদ্ধারা সবাই চীনাদের হাতে নিহত এবং চীনারা প্রথম পূর্ব তুর্কিস্তান প্রজাতন্ত্র বিলুপ্ত করে অত্র অঞ্চলে চীনা সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।[11]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জহির শাহ আফগানিস্তানের আধুনিকায়নে মনোনিবেশ করেন। তিনি এই কাজে সহায়তার জন্য বেশ কিছু বিদেশি উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়েছিলেন।[12] এই সময় আফগানিস্তানের প্রথম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়।[12] তার শাসনামলে রাজনৈতিক দলাদলির বেশ কিছু অগ্রগতি অর্জন ও সংস্কার উদ্দেশ্যচ্যুত হয়েছিল।[13]
১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে জহির শাহ নিজের হাতে শাসন লাভ করেন।[8] রাজনৈতিক দলাদলি সত্ত্বেও ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে আফগানিস্তানে নতুন সংবিধান প্রণীত হয়। এতে আফগানিস্তানকে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গঠনের কথা বলা হয়।[12]
তার শাসনামলে অন্তত পাঁচটি মুদ্রায় আরবি উপাধি উৎকীর্ণ ছিল: المتوكل على الله محمد ظاهر شاه,[14] "আলমুতাওয়ক্কিল আলাল্লাহ মুহাম্মদ জহির শাহ" যার অর্থ "আল্লাহর উপর ভরসাকারী, মুহাম্মদ জহির শাহ"। "আলমুতাওয়াক্কিল" বিশেষণটি কুরআনের সূরা আনফালের ৬১ নং আয়াত থেকে নেয়া হয়েছে।
চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে জহির শাহ ইটালি যান। এসময় তার চাচাত ভাই ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ দাউদ খান একটি অভ্যুত্থান ঘটান এবং প্রজাতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। এক দশক পূর্বে জহির শাহ তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিলেন।[15] ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে জহির শাহ গৃহযুদ্ধের ঝুকি না নিয়ে সিংহাসন ত্যাগ করেন।[15]
জহির শাহ ২৯ বছর যাবত ইটালিতে নির্বাসিত ছিলেন।[6][7][16] ১৯৭০ এর দশকে সোভিয়েত সমর্থিত কমিউনিস্ট শাসনের ফলে তিনি আফগানিস্তানে ফিরতে পারেননি। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে সোভিয়েত আফগান যুদ্ধের সময় তিনি প্রবাসী সরকারের পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন। তবে শক্তিশালী ইসলামপন্থিদের সাথে সমঝোতা না হওয়ায় এই পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।[4]
১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজ সাংবাদিকের ছদ্মবেশী আততায়ীর হামলা থেকে বেঁচে যান।[15]
তালেবান শাসন সমাপ্ত হওয়ার পর ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে জহির শাহ লয়া জিরগা শুরু করার জন্য আফগানিস্তান আসেন। এরপর জুন মাসে লয়া জিরগার অধিবেশন বসেছিল।[17] তালেবান শাসন সমাপ্ত হওয়ার পর রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক আহ্বান এসেছিল।[15] জহির শাহ লয়া জিরগা কর্তৃক তাকে দেয়া যেকোনো দায়িত্ব মেনে নেবেন বলে ঘোষণা দেন।[17] তবে লয়া জিরগার অধিকাংশ প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত হামিদ কারজাইয়ের বদলে তার পক্ষে ভোট দেয়ার পক্ষে ছিল, ফলে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে তিনি সরে দাড়ান।[17] তবে রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি বলেছিলেন যে: "লয়া জিগরা দাবি করলে আমি রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করব, তবে আমার রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার ইচ্ছা নেই। আমি বাদশাহ উপাধির জন্য ইচ্ছুক নই। জনগণ আমাকে বাবা বলে এবং আমি এই উপাধি আশা করি।"[15] আফগানিস্তানের বর্তমান সংবিধানে তাকে "জাতির পিতা" উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।[18]
হামিদ কারজাই আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি হন। জহির শাহর আত্মীয় ও সমর্থকদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বিভিন্ন পদ দেয়া হয়েছিল। জহির শাহ তার পুরনো প্রাসাদে ফিরে যান। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে ফ্রান্সে সফরের সময় তিনি বাথরুমে পা পিছলে পড়ে যান। এতে তার বুকের হাড় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরের বছর ২০০৩ এর ২১ জুন ফ্রান্সে স্বাস্থ্যপরীক্ষার সময় সফরে গেলে সেখানে তার ফিমার ভেঙে যায়।
২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি অন্ত্রের চিকিৎসার জন্য ভারতের নয়াদিল্লিতে আসেন। তিনি দুই সপ্তাহ পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন এবং এরপর নয়াদিল্লিতে পর্যবেক্ষণে ছিলেন। গরমের জন্য নাক থেকে রক্তপাতের কারণে ১৮ মে তাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর হামিদ কারজাইয়ের শপথ অনুষ্ঠানে জহির শাহ উপস্থিত ছিলেন। জীবনের শেষের দিকে তিনি খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। তার দুর্বল স্বর শোনার জন্য এসময় তার কলারে মাইক্রোফোন লাগিয়ে রাখা হত।[15] ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি জহির শাহ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে শয্যাশায়ী হন।
২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুলাই দীর্ঘদিন রোগাক্রান্ত থাকার পর কাবুলের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে মারা যান। রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই টেলিভিশনে তার মৃত্যু ঘোষণা করেন।[15][19] ২৪ জুলাই তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর তার কফিন মসজিদে নিয়ে আসা হয়। এখান থেকে মারানজান পাহাড়ের রাজকীয় জাদুঘরে আনা হয়।[20]
জহির শাহ হুমাইরা খানকে ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ নভেম্বর বিয়ে করেছিলেন। তাদের ছয় পুত্র ও দুই কন্যা ছিল।[1] তারা হলেন প্রিন্সেস বিলকিস বেগম, যুবরাজ মুহাম্মদ আকবর খান, যুবরাজ আহমাদ শাহ খান, প্রিন্সেস মরিয়ম বেগম, প্রিন্স মুহাম্মদ নাদির খান, প্রিন্স শাহ মাহমুদ খান, প্রিন্স মুহাম্মদ গুল খুরসান্দ খান, প্রিন্স মীর ওয়াইস খান
মুহাম্মদ জহির শাহর পরিবার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.