রবার্ট ফিস্ক (১২ জুলাই ১৯৪৬ - ৩০ অক্টোবর ২০২০) (Robert Fisk) একজন ব্রিটিশ সাংবাদিক। তিনি নিয়ন্ত্রিত সাংবাদিকতা বিশেষ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের কঠোর সমালোচক। জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুদ্ধাভিযানের সংবাদ সংগ্রহ এবং নিরপেক্ষতার সাথে তা পরিবেশনার জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। বর্তমানে লন্ডনের ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকার মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত।
Robert Fisk | |
---|---|
জন্ম | Maidstone, Kent, England | ১২ জুলাই ১৯৪৬
মৃত্যু | ৩০ অক্টোবর ২০২০ ৭৪) | (বয়স
শিক্ষা | Lancaster University (BA, 1968) Trinity College, Dublin (PhD, 1985) |
পেশা | Middle East correspondent for The Independent |
উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব | Jacob's Award Amnesty International UK Press Awards British Press Awards International Journalist of the Year Lannan Cultural Freedom Prize |
দাম্পত্য সঙ্গী | Lara Marlowe (বি. ১৯৯৪; বিচ্ছেদ. ২০০৬) |
ওয়েবসাইট | independent.co.uk/author/robert-fisk |
শিক্ষা ও সাংবাদিকতা
রবার্ট ফিস্ক ডাবিলেনের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পিএইচডি করেছেন। ল্যাঙ্কাসটার বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাংবাদিকতায় সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করেছে। ১৯৭১-৭৫ সময়ে তিনি লন্ডন টাইমস পত্রিকার আইরিশ প্রতিনিধি হিসেবে বেলফাস্ট থেকে রিপোর্ট করতেন। ১৯৭৬ খ্রীস্টাব্দে তিনি লেবানন যুদ্ধের খবরাখবর সংগ্রহের জন্য বৈরুত চলে যান। সে সময় থেকে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয় নিয়ে সংবাদ সরবরাহ করে চলেছেন। এর মধ্যে রয়েছে লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসন (১৯৭৮-৮২), ইরানের বিপ্লব (১৯৭৯), ইরাক-ইরান যুদ্ধ (১৯৮০-৮৮), আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন (১৯৮০), উপসাগরীয় যুদ্ধ (১৯৯১)। এ ছাড়া তিনি বসনিয়া যুদ্ধের ওপর রিপোর্ট করেছেন। ২০০৮ খ্রীস্টাব্দ অবধি তিনি ৩২ বছরে কমপক্ষে ১১ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন।
বৈরুতের জীবন
১৯৭৬ খ্রীস্টাব্দে ২৯ বছর বয়সে বৈরুতে চলে যান ফিস্ক। তিনি গিয়েছিলেন তিন বছরের জন্য, কিন্তু সেখানেই তিনি কাটিয়ে দিয়েছেন ২৫ বছর। বিয়েও করেছেন সেখানে। স্ত্রীর নাম লারা, তিনিও সাংবাদিক। লারা কাজ করতেন টাইম পত্রিকায়। লেবানন যুদ্ধের সময় জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে সংবাদ সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর দৃষ্ঠিভঙ্গী অনুধাবনের গুরুত্ব অনুধাবন করেন।
ভাবমূর্তি
একুশ শতাব্দীর প্রথম দশকে তিনি সাংবাদিক নিরপেক্ষতার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ ও সাহসিকতার জন্যই তিনি সমধিক খ্যাত। বলা হয়েছে যে তিনি শুধু সাংবাদিক নন, তিনি নির্যাতিত ও বিবেকবান মানুষের কণ্ঠস্বর। তার যেকোনো প্রতিবেদন বিশ্বব্যাপী সাগ্রহে পঠিত এবং আলোচিত হয়, কেননা তিনি জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে খবরাদি সংগ্রহ করেন।। সংবাদের উৎসে পৌঁছতে তিনি কখনো পিছুপা হননি। হাতে গোনা কয়েকজন সাংবাদিকের মধ্যে তিনি একজন, যিনি বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ওসামা বিন লাদেনের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন একাধিকবার। তিনি বলেছেন, "কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে কিংবা কোনো দূতাবাস ঘুরে এসে আমি রিপোর্ট করি না। কারণ এ জন্য তো মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার দরকার নেই ; তা লন্ডনে বসেই করা সম্ভব"।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা
তার বিবেচনায় পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম বিশেষ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নীতিমালা আর ইহুদি স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় এমন খবরাদি সংবাদমাধ্যমগুলো এড়িয়ে যায়। ইরাক যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীতে প্রোথিত সাংবাদিকদল সেনাসূত্রের বরাত পাঠানো খবরাদির নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে তিনি সর্ব্বদাই প্রম্ন তুলেছেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ
- পিটি দ্য নেশান - লেবানন্এট ওয়্যার, ১৯৯০
- দ্য পয়েন্ট ওফ নো রিটার্ন - দ্য স্ট্রাইক দ্যাট ব্রোক দি ব্রিটিশ ইন আলস্টার, ১৯৭৫
- ইন টাইম অফ ওয়্যার, ১৯৮৩
- দ্য গ্রেট ওয়্যার অফ সিভিলাইজেশান - দি তনকোয়েস্ট অফ দি মিডল্ ইস্ট, ২০০৫
- দ্য এইজ অফ ওয়্যারিওয়ার্স - সিলেক্টেড রাইটিংস,
আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি
তিনি পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ১৯৯৮ সালে দিয়েছে ওভার অল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড। সাতবার তাকেঁ দেয়া হয়েছে ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্ট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জাতিসংঘ প্রেস অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার জন্য ১৯৯৬ সালে তাকে জন্স হপকিনস সিআইএএস-সিআই পুরস্কার দেয়া হয়।
ব্যক্তিগত জীবন
বংশোদ্ভূত সাংবাদিক লারা মার্লোকে বিয়ে করেন ১৯৯৪ সালে। ২০০৬ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তাদের কোন সন্তান নেই। ৩০ অক্টোবর ২০২০ সালে ফিস্ক ৭৪ বছর বয়সে সন্দেহজনক স্ট্রোকে ডাবলিনের সেন্ট ভিনসেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মারা যান। [১][২][৩]
বহিঃসংযোগ
তথ্যসূত্র
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.