মুন্ডা ভাষা
ভারত ও বাংলাদেশে কথিত ভাষা পরিবার / From Wikipedia, the free encyclopedia
মুন্ডা ভাষা হলো ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালে প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষের দ্বারা কথিত ভাষাগুলোর একটি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত গোষ্ঠী।[2][3][4] ঐতিহাসিকভাবে এগুলোকে কোলারিয়ান ভাষা বলা হত। এগুলো অস্ট্রো-এশীয় ভাষা পরিবারের একটি শাখা গঠন করে, যার অর্থ এগুলো মন, খমের, ভিয়েতনামী ভাষার পাশাপাশি থাইল্যান্ড, লাওস এবং দক্ষিণ চীনের কিছু সংখ্যালঘু ভাষার সাথে দূরবর্তীভাবে সম্পর্কিত।[5] ভুমিজ, হো, মুন্ডারি এবং সাঁওতালি হলো উল্লেখযোগ্য কিছু মুন্ডা ভাষা।[6][7][8]
মুন্ডা | |
---|---|
Mundaic | |
জাতিতত্ত্ব | মুন্ডা জনগোষ্ঠী |
ভৌগোলিক বিস্তার | দক্ষিণ এশিয়া |
ভাষাগত শ্রেণীবিভাগ | অস্ট্রো-এশীয়
|
প্রত্ন-ভাষা | প্রত্ন-মুন্ডা |
উপবিভাগ |
|
আইএসও ৬৩৯-২/৫ | mun |
গ্লটোলগ | mund1335[1] |
মুন্ডা ভাষাভাষীদের উল্লেখযোগ্য ঘনত্ব সহ এলাকার মানচিত্র |
মুন্ডা ভাষা পরিবার দুটি প্রধান শাখায় বিভক্ত: উত্তর মুন্ডা এবং দক্ষিণ মুন্ডা। উত্তর মুন্ডা ভাষা ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, বিহার, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের ছোট নাগপুর মালভূমিতে বলা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশ ও নেপালের কিছু অংশেও উত্তর মুন্ডা ভাষা প্রচলিত। অন্যদিকে, দক্ষিণ মুন্ডা ভাষা কেন্দ্রীয় ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার সীমান্তবর্তী এলাকায় বলা হয়।[9][10][11]
মুন্ডা ভাষা পরিবারের দুটি শাখার মধ্যে উত্তর মুন্ডা শাখার ভাষাগুলো বেশি প্রচলিত। এই শাখার সাঁওতালি ভাষা সবচেয়ে বেশি মানুষ বলে এবং ভারতে এটি একটি সরকারি স্বীকৃত ভাষা। দক্ষিণ মুন্ডা শাখার তুলনায় উত্তর মুন্ডার বক্তার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। সাঁওতালির পরে, মুন্ডারি ও হো ভাষা বক্তার সংখ্যায় যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এরপর রয়েছে কোরকু ও সোরা ভাষা। বাকি মুন্ডা ভাষাগুলো বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট জনগোষ্ঠী ব্যবহার করে এবং এই ভাষাগুলোর তেমন বিবরণ পাওয়া যায় না।[12]
মুন্ডা ভাষাগুলোর বৈশিষ্ট্য: মুন্ডা ভাষায় তিনটি সংখ্যা ব্যবহার করা হয় - একবচন, দ্বিবচন এবং বহুবচন। মুন্ডা ভাষায় দুটি লিঙ্গ ব্যবহার করা হয় - সজীব এবং নির্জীব। 'আমরা' বলার সময় মুন্ডা ভাষায় দুটি ভাষা ব্যবহার করা হয় - সমষ্টিবাচক (বক্তা নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করেন) এবং ব্যক্তিবাচক (বক্তা নিজেকে বাদ দেন)।[13] মুন্ডা ভাষায় কাল নির্দেশ করার জন্য প্রত্যয় বা সহায়ক ক্রিয়ার ব্যবহার করা হয়।[14][15] মুন্ডা ভাষায় শব্দের আংশিক, সম্পূর্ণ ও জটিল পুনরাবৃত্তি ব্যবহার করা হয়। মুন্ডা ভাষা বহুসংশ্লেষী এবং সমীভূত শব্দ-নির্মাণকারী। মুন্ডা ভাষায় শব্দের মাঝখানে ব্যতীত ব্যঞ্জনধ্বনির ক্রমিক সমাহার বিরল।[16][17]