মাহদী
দ্বাদশ ইমাম / From Wikipedia, the free encyclopedia
মাহদী বা মাহদি ( আরবি: ٱلْمَهْدِيّ, প্রতিবর্ণীকৃত: al-Mahdī, অনুবাদ 'সুপথপ্রাপ্ত') হল ইসলামি পরকালবিদ্যায় চর্চিত একজন মসীহ বা ত্রাণকর্তা, যিনি মন্দ ও অন্যায় থেকে বিশ্বকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য কেয়ামতের কিছু দিন আগে উপস্থিত হবেন বলে বিশ্বাস করা হয়। তাকে নবি মুহাম্মদ সা. এর বংশধর বলা হয়, যিনি নবী ঈসা আ. এর আগে আবির্ভূত হবেন এবং মুসলিমদেরকে পুরো বিশ্ব শাসনে নেতৃত্ব দেবেন। যদিও কুরআনে মাহদীর উল্লেখ নেই এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দুইটি হাদিসগ্রন্থ: সহীহ আল-বুখারি ও সহিহ মুসলিমসহ হাদিসের বেশ কয়েকটি প্রামাণিক সংকলনেও তার আলোচনা তেমন পাওয়া যায় না; তবে হাদিসের অন্য কিছু কিতাবে তার উল্লেখ রয়েছে এবং নববী যুগ থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত তাঁর আগমনের বিষয়টি মুসলিম উম্মাহের মাঝে চর্চিত হয়ে আসছে।
ইসলামের ১ম ও ২য় শতাব্দীতে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক উত্থান-পতনের বিভ্রান্তি ও অস্থিরতার সময়ে মাহদির মতবাদটি আকর্ষণ লাভ করেছে বলে মনে করা হয়। যদিও মাহদি ধারণাটি নববী যুগ থেকে চলে এসেছে। মাহদি মতবাদটি সবচে' বেশি আকর্ষণ লাভ করে ৭ম শতাব্দীর শেষের দিকে, যখন বিপ্লবী মুখতার ইবনে আবি উবায়দ ( আনু. ৬২২-৬৮৭ ) ঘোষণা দেন যে, খলিফা আলী (র.) এর পুত্র মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়া ( শা. ৬৫৬–৬৬১ ) কাঙ্খিত মাহদি হতে পারেন। এটি মুসলমানদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটি ১৪০০ বছর যাবত মুসলমানদের আক্বিদার একটি অংশ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মাহদির দাবীদারদের একটি বিশাল সংখ্যাও রয়েছে এবং প্রতিবারই তারা ভণ্ড বলে ত্যাজ্য হয়েছে।
ইসলামের শিয়া ও সুন্নি উভয় শাখায়ই মাহদির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। যদিও তারা তার গুণাবলী এবং মর্যাদার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভিন্নতা পোষণ করেন। ইসনা আশারিয়া শিয়াদের মতে, মাহদী হলেন একাদশ ইমাম মুহাম্মদ আল-মাহদীর পুত্র ইমাম হাসান আল-আসকারি (মৃ: ৮৭৪), যার ব্যাপারে তাদের ধারণা হলো যে, তিনিই কাঙ্খিত মাহদি এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তাকে অদৃশ্য করে রাখা হয়েছে। এই ধারণাটি সুন্নিদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। সুন্নিদের বিশ্বাস হলো, মাহদি এখনও জন্মগ্রহণ করেননি। তিনি কিয়ামতের আগে আগে জন্মগ্রহণ করবেন এবং তার আত্মপ্রকাশই হবে কিয়ামতের বড় নির্দশনসমূহের একটি।[1]