মামলুক
From Wikipedia, the free encyclopedia
মামলুক (مملوك) দ্বারা রাজার “সম্পত্তি” বা “অধীন দাস” বোঝানো হয়।
আরো নির্দিষ্টভাবে, মামলুক দ্বারা বোঝায়,
- খোয়ারিজমীয় রাজবংশ (পারস্য) (১০৭৭-১২৩১)
- মামলুক সালতানাত (দিল্লি) (১২০৬-১২৯০)
- মামলুক সালতানাত (কায়রো) (১২৫০-১৫১৭)
- ইরাকের মামলুক রাজবংশ (১৭০৪-১৮৩১, উসমানীয় ইরাকের অধীন)
মিশরের মামলুকরা সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মামলুক শাসন কায়েম করে। কিপচাক ও অন্যান্য অনেক তুর্কীয় জনগোষ্ঠী থেকে সংগৃহীত দাস সৈনিকদের মধ্য থেকে এই শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।[1] এই দাসরা ছিল সিরকাসিয়ান[2] ও জর্জিয়ান[3][4][5] বংশোদ্ভূত। তবে বুরজি মামলুক সালতানাতে বলকান (আলবেনিয়ান, গ্রীক ,দক্ষিণ স্লাভিক) বংশোদ্ভূত অনেক মামলুক ছিল।
মামলুকরা সরাসরি সুলতানের তত্ত্বাবধানে দীক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতেন। সুলতান তাদের জন্য নীলনদের রাওজা দ্বীপে একটি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করে দেন। এখানে মামলুকরা সামরিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ধর্মীয় ও আদর্শিক দীক্ষাও গ্রহণ করতেন।
মামলুকদের মধ্যে একে অপরের সাথে অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল। সহপাঠীদের মধ্যে ছিল 'খুশদাশিয়া' বা সাথী সম্পর্ক। আর মনিবদের সাথে ছিল ছাত্র-উস্তাদ সম্পর্ক। মনিবরা তাদের মামলুকদের সাথে গোলামের মতো ব্যবহার করতেন না; বরং উস্তাদের জন্য ছাত্রের সাথে যেমন আচার ব্যবহার করা দরকার, সেভাবেই করতেন।
সময়ের সাথে সাথে মামলুকরা বিভিন্ন মুসলিম সমাজে শক্তিশালী হয়ে উঠে। মিশর ছাড়াও লেভান্ট, মেসোপটেমিয়া ও ভারতে মামলুকরা রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি অর্জন করেছিল। কিছু ক্ষেত্রে সুলতানের পদ লাভ করে। অন্যান্য ক্ষেত্রে স্থানীয় আমির বা বে হিসেবে তারা দায়িত্ব পায়। মিশর ও সিরিয়ায় মামলুকরা সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেছিল যা মামলুক সালতানাত (১২৫০-১৫১৭) বলে পরিচিত। আইন জালুতের যুদ্ধে মামলুক সালতানাত ইলখানাতের সেনাদের পরাজিত করে। ক্রুসেডারদের সাথে লড়াইয়ের মাধ্যমে ১২৯১ সালের মামলুকরা তাদেরকে সিরিয়া থেকে বিতাড়িত করে এবং ১৩০২ সালের মধ্যে ক্রুসেডের যুগ শেষ হয়।[6]
ক্রয় করার পর মামলুকদের অবস্থান অন্যান্য দাসদের চেয়ে উপরে থাকত। অন্যান্য দাসদেরকে অস্ত্র বহন ও নির্দিষ্ট কিছু কাজ করার অনুমতি ছিল না। আইয়ুবীয় রাজবংশের সময় থেকে মুহাম্মদ আলি পাশার সময় পর্যন্ত মিশরে মামলুকদেরকে “প্রকৃত শাসক” হিসেবে বিবেচিত হত। স্বাধীন মুসলিমদের চেয়ে তাদের সামাজিক মর্যাদা উপরে ছিল।[7]