Loading AI tools
পাখির প্রজাতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ময়না Sturnidae (স্টার্নিডি) গোত্রের অন্তর্গত একদল পাখি। বেশিরভাগ প্রজাতির ময়নার আবাস দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। বহু প্রজাতির ময়না উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিজি, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে অবমুক্ত করা হয়েছে। শালিকের সাথে এরা অনেকটাই সম্পর্কিত। বেশিরভাগ ময়নার স্বরতন্ত্র জটিল প্রকৃতির বলে তারা বিভিন্ন শব্দ বা কথা সহজে অনুকরণ করতে পারে। পাতি ময়না কথা বলা পাখি হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত।
এই নিবন্ধে একাধিক সমস্যা রয়েছে। অনুগ্রহ করে নিবন্ধটির মান উন্নয়ন করুন অথবা আলাপ পাতায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
|
ময়না | |
---|---|
বালি ময়না, (Leucopsar rothschildi) | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণীজগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | প্যাসারিফর্মিস |
পরিবার: | স্টার্নিডি |
কথা বলা এক মজার পাখি ময়না। পাতি ময়না, সোনাকানি ময়না, পাহাড়ি ময়না বা ময়না মাঝারি আকারের কথা-বলা পাখি।
বৈজ্ঞানিক নামঃ "Gracula Religiosa"।
পাতি ময়নার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ পবিত্র পাতিকাক (লাতিনঃ Graculus = পাতিকাক, Religiosus = পবিত্র)। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ময়না পাখি কথা বলতে পারে। পাখিরা মানুষের মতো যে কথা বলতে পারে যারা টিয়া কিংবা ময়না পাখির কথা শুনেছেন তারা নির্দ্বিধায় বলতে পারবেন। পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের বসবাস। প্রায় ৩৯ লক্ষ ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। কিন্তু দূ:খের বিষয় বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। তবে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
বিবরণঃ পাতি ময়না মাঝারি কালো রঙের পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ২৯ সেমি , ডানা ১৭ সেমি, ঠোঁট ৩ সেমি, পা ৩.৫ সেমি, লেজ ৮ সেমি ও ওজন ২১০ গ্রাম। ভাত শালিকের (Acridotheres Tristis) তুলনায় এটি আকারে একটু বড়। সাধারণ অবস্থায় প্রাপ্তবয়স্ক পাখিকে পুরোপুরি চকচকে ঘোর কৃষ্ণবর্ণ দেখায়। প্রজননের সময় মাথা আর ঘাড়ে হালকা বেগুনী আভা দেখা যায়। পালকহীন চামড়ার পট্টি হলুদ এবং চোখের নিচে, মাথার পাশে ও পেছনে মাংসল উপাঙ্গ থাকে। ওড়ার সময় ডানার সাদা পট্টি স্পষ্ট দেখা যায়, এমনিতে বসে থাকলে ডানা দিয়ে তা ঢাকা থাকে। চোখ কালচে বাদামি। ঠোট শক্ত ও হলুদ, ঠোঁটের আগা কমলা রঙের। পা ও পায়ের পাতা হলুদ। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির ঠোঁট তুলনামূলক অনুজ্জ্বল হলদে-কমলা। মাংসল উপাঙ্গ ফিকে হলুদ এবং পালক কম উজ্জ্বল। বাংলাদেশে সাধারণত তিন ধরনের ময়না পাখি দেখা যায়। বান্দরবান, সিলেট, ময়মনসিংহ জেলায় এদের বিচরণ।
বান্দরবন জেলার ময়নাঃ এই ময়না পাখি লম্বা ধরনের হয়। ঠোঁট সরু ও হালকা কমলা রং ও ঠোঁটের অগ্রভাগ হলুদ হয়ে থাকে। মাথার চারপাশের মাংসল উপাঙ্গের রং হালকা হলুদ। এরা দারুন ডাকতে পারে। এরা দারুন কথা বলতে পারে। কথা বলা ময়নার মধ্যে এরা বেশি সবচেয়ে বেশি কথা বলতে পারে।
সিলেটের ময়নাঃ এই ময়না পাখির একটু মোটা ও গোল ধরনের হয়৷ ঠোঁট চওড়া ও মোটা এবং ঠোঁটের রং মাঝারি লাল ও অগ্রভাগ হলুদ হয়ে থাকে। মাংসল উপাঙ্গ বেশি বড় ও লালচে হলুদ হয়ে থাকে। এরাও বনে বিভিন্ন রকম ডাকে। তবে বাড়িতে এরা কথা বলে ঠিকই তবে কম কথা বলে ৷ অপরিস্কার ভাবে কথা বলে ৷ এরা কথা বলার থেকে বিভিন্ন ডাক ও শব্দ নকল করে।
ময়মনসিংহের ময়নাঃ এই ময়না খুব ছোট হয়। ঠোঁট বেশি লাল ধরনের ও মাংসল উপাঙ্গ কমলা ধরনের হয়ে থাকে। পা হলদে কমলা ধরনের হয়ে থাকে৷ এই ময়না বনে মোটামুটি ডাকাডাকি করে। বাড়িতে কথা বলতে পারে না। শিস দিতে পারে। এদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক ময়নাই কথা বলে।
বিচরণ: পশ্চিমে ভারতের কুমায়ন বিভাগ থেকে শুরু করে হিমালয়ের পাদদেশে নেপালের তেরাই, সিকিম, ভুটান ও অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত পাতি ময়না বিস্তৃত। সমুদ্রসমতল থেকে ২০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত এদের দেখা মেলে। পূর্বে সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া হয়ে চীনের দক্ষিণাঞ্চল পর্যন্ত এরা বিস্তৃত। দক্ষিণে থাইল্যান্ড ও মালয় উপদ্বীপ হয়ে ইন্দোনেশিয়ার পালাওয়ান এবং ফিলিপাইন পর্যন্ত এদের বিচরণ রয়েছে।
বাংলাদেশে আবাসস্থল ধ্বংস করা ছাড়াও ঘরে পোষার জন্য চোরাইপথে সংগ্রহ করার কারণে ময়না পাখি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে। অথচ একটা সময় দেশের মিশ্র চিরসবুজ অরণ্যে এদের মোটামুটি সাক্ষাৎ পাওয়া যেত। দেখা যেত পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অরণ্যেও।
ক্রিস্টমাস দ্বীপের ময়নার দলটিও একই কারণে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এছাড়া পুয়ের্তো রিকো, হংকং ও ম্যাকাওয়ে এদের অবমুক্ত করা হয়েছে। সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে এদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে।
উপপ্রজাতি: আগে শ্রীলঙ্কান ময়নাকে উপপ্রজাতি G. religiosa-এর অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করা হত। বর্তমানে এটিকে একটি পৃথক প্রজাতির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে (G. ptilogenys)। পাতি ময়নার মাংসল উপাঙ্গটি দুই ভাগে বিভক্ত। একটি ভাগ ঘাড়ের সাথে আর আরেকটি ভাগ চোখের সাথে যুক্ত। কিন্তু শ্রীলঙ্কান ময়নার শুধু ঘাড়ের উপাঙ্গটি রয়েছে, চোখের উপাঙ্গটি অনুপস্থিত। এর ঠোঁট আর চোখের রঙও ভিন্ন। এরকম আরও দুইটি স্বীকৃত প্রজাতি হল এনগনো ময়না (G. enganensis) আর নিয়াস ময়না (G. robusta)। কয়েকজন লেখক নীলগিরি পর্বত ও ওয়েস্টার্ন ঘাটস অঞ্চলের উপপ্রজাতি G. r. indica-কে আলাদা প্রজাতি হিসেবে গণ্য করেছেন।
ডাক: ময়না প্রায় সবসময়ই তীক্ষ্ন চিৎকার করে ডাকে। সেকারণে ঘন অরণ্যে এদের শনাক্ত করা খুবই সহজ কাজ। তীক্ষ্ন ডাক ছাড়াও এরা বিভিন্ন বিচিত্র স্বরে ডাকাডাকি করে। ভোরে আর সন্ধ্যায় এদের ডাকাডাকি বেড়ে যায়। সাধারণত এ সময়ে এরা দল বেঁধে গাছের মগডালে বসে ডাকাডাকি করে।
স্ত্রী পুরুষ দুই লিঙ্গের ময়নাই বিচিত্র রকমের ডাকে সমানভাবে দক্ষ। এরা শিষ দেয়, খর্ খর্ করে ডাকে আবার গলা খাকরানোর মত করে ডাকতে পারে। এরা আবার মানুষের মত শব্দ উৎপন্ন করতে সক্ষম। বুনো ময়না প্রায় তিন থেকে তের রকমভাবে ডাকতে পারে। সম্ভবত ময়নারা শিশু অবস্থায় আশেপাশের ময়নাদের থেকে এসব ডাক শেখে। এক দলের ময়নার ডাক অন্য দল থেকে ভিন্ন। এমনকি কোন একদল থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের আরেকটি দলের ডাক ভিন্ন হয়।
গোটা বিশ্বে রয়েছে এদের ব্যাপক চাহিদা। কারণ এরা মানুষের কথাবার্তা হুবহু নকল করতে পারে। অন্যসব কথাবলা পাখিরা যেমন বনের অন্য পাখি বা প্রাণীদের স্বর বা আওয়াজ নকল করতে পারে (যেমন- ভিমরাজ, Dicrurus paradiseus), ময়না তেমনটি পারে না। যদিও এ বিষয়ে মানুষের একটা ভুল ধারণা রয়েছে যে বুনো ময়নারা অন্য প্রাণীর ডাক অনুকরণ করতে পারে। তবে বন্দী অবস্থায় এরা মানুষের কথা ছাড়াও বাচ্চার কান্না, থালাবাসনের শব্দ, কলিংবেলের শব্দ, বেড়ালের ডাক ইত্যাদি অবিকল অনুকরণ করতে পারে। তারা তীক্ষ্ন ও পরিষ্কার গলায় মানুষের মত শিষ দিতেও সক্ষম।
খাদ্য: এদের খাদ্যতালিকায় রয়েছে রসালো ফল যেমন; কলা, পেঁপে, আম, আনারস, কমলা, বটের ফল, চেরী ফল, ব্লুবেরি ইত্যাদি। তাছাড়াও এরা মৌমাছি, টিকটিকি, বিভিন্ন পোকামাকর, ফুলের মধু, প্রজনন মৌসুম এ এরা মেলওয়ার্ম খেয়ে থাকে। এই খাদ্য তালিকায় এরা সাধারণত আয়রন মুক্ত খাবার গ্রহণ করে। কারণ তাদের দেহে আয়রনের পরিমান বেশি।
সখের বসে বাড়িতে যারা পালন করে তারা ময়না পাখিকে ভাত আর মরিচ দিয়ে থাকে। সাধারণ আয়রন যুক্ত খাবার ও পানি সরবারহ করে থাকি। যার ফলে তাদের দেহে আয়রন এর পরিমান বেড়ে যার৷ এ কারণে ময়নার সহজেই হেমোসাইডারোসিস নামক যকৃৎ-এর এক ধরনের রোগ হয়ে থাকে। ফলে তারা মারা যায়। পাহাড়ী ময়না আয়রন মুক্ত ঝরণা ও বৃষ্টির পানি পান করে থাকে। ভাত আর মরিচ ময়নার খাবার নয়।
প্রজননকাল: স্ত্রী-পুরুষ ময়না আজীবনের জন্য জোড়া বাঁধে। সঙ্গী না মারা যাওয়া পর্যন্ত ওদের জোড় অটুট থাকে। বর্ষাকালে এরা প্রজনন করে। এপ্রিল-জুলাই মাসে বন অথবা চা বাগানের ধারে ১০-১৫ মিটার উঁচুতে গাছের কোটরে (সাধারণত কাঠঠোকরার সৃষ্ট) ঘাস, পালক ও আবর্জনা দিয়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো নীল, সংখ্যায় দুই-তিনটি। ডিমের মাপ ৩.৬ × ২.৬ সেমি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৫। ছানারা উড়তে শিখলেই মা-বাবার কাছ থেকে সরে পড়ে।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.