অরুণাচল প্রদেশ
রাজ্য হিসাবে ভারত দ্বারা শাসিত অঞ্চল উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
অরুণাচল প্রদেশ (/ɑːrəˌnɑːtʃəl
অরুণাচল প্রদেশ | |
---|---|
রাজ্য | |
উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার ক্রমে: গোল্ডেন প্যাগোডা, নমশাই, তাওয়াং মঠ, টুটসা নর্তকী, জিরো উপত্যকা, পাক্কে টাইগার রিজার্ভ, সেলা গিরিপথ | |
ব্যুত্পত্তি: অরুণাচল ('ভোর-আলো পাহাড়') এবং প্রদেশ ('প্রদেশ বা অঞ্চল') | |
ডাকনাম: "উদীয়মান সূর্যের দেশ" | |
![]() | |
স্থানাঙ্ক (ইটানগর): ২৭.০৬° উত্তর ৯৩.৩৭° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
প্রতিষ্ঠাকাল | ২০শে ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭[১] |
রাজধানী | ইটানগর |
বৃহত্তম নগর | ইটানগর |
জেলা সংখ্যা | তালিকা |
সরকার | |
• শাসক | অরুণাচল প্রদেশ সরকার |
• রাজ্যপাল | বি ডি মিশরা |
• মুখ্যমন্ত্রী | পেমা খান্ডু |
• আইনসভা | এককক্ষীয় (৬০ টি আসন) |
• সংসদীয় আসন | রাজ্যসভা ১ লোকসভা ২ |
• হাই কোর্ট | গৌহাটি উচ্চ আদালত – ইটানগর বেঞ্চ |
আয়তন | |
• মোট | ৮৩,৭৪৩ বর্গকিমি (৩২,৩৩৩ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ১৫তম |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১৩,৮২,৬১১ |
• ক্রম | ২৭তম |
• জনঘনত্ব | ১৭/বর্গকিমি (৪৩/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+05:30) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | IN-AR |
এইচডিআই | ০.৬১৭ (মধ্যম) |
এইচডিআই স্থান | ১৮তম (২০০৫) |
সাক্ষরতা | ৬৬.৯৫% |
সরকারী ভাষা | ইংরেজি |
ওয়েবসাইট | arunachalpradesh |

ভূগোল
অরুণাচল প্রদেশের ভূপ্রকৃতি দক্ষিণে পাহাড়ের পাদদেশীয় এলাকা দিয়ে শুরু হয়ে ক্ষুদ্রতর হিমালয় পর্বতমালায় উপনীত হয়েছে এবং সেখান থেকে উত্তরে তিব্বতের সাথে সীমান্তের কাছে বৃহত্তর হিমালয় পর্বতমালায় মিশেছে। ব্রহ্মপুত্র নদ (এখানে সিয়াং (Dihang)নামে পরিচিত) ও তার বিভিন্ন উপনদী তিরাপ, লোহিত, সুবর্ণসিড়ি ও ভারেলি এখানকার প্রধান নদনদী। দক্ষিণের পাহাড়ের পাদদেশীয় এলাকার জলবায়ু উপক্রান্তীয় প্রকৃতির। পার্বত্য অঞ্চলে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাপমাত্রা দ্রুত হ্রাস পায়। বার্ষিক ২০০০ থেকে ৪০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।[৩] অঙ্গরাজ্যটির উদ্ভিজ্জ ও প্রাণীজীবনে এর বিচিত্র ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ুর প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। এখানে ৫০০-রও বেশি প্রজাতির অর্কিড গাছ আছে। বিস্তৃত অরণ্য উপক্রান্তীয় থেকে শুরু করে আল্পীয় ধরনের হতে পার। প্রাণীর মধ্যে বাঘ, চিতাবাঘ, তুষার চিতা, হাতি, লাল পান্ডা এবং হরিণ উল্লেখযোগ্য। ২০০০ সালে প্রায় ৬৩,০৯৩ কিমি২ (২৪,৩৬০ মা২)[৪] বনাঞ্চাল ছিল।
জেলাসমূহ
জনতত্ত্ব
অরুণাচল প্রদেশে ১০ লক্ষেরও বেশি লোক বাস করেন। অরুণাচল প্রদেশের ২০টির মত প্রধান তিব্বতি-বর্মী জাতির লোক বাস করেন এবং এরা প্রায় ৫০টিরও বেশি ভাষাতে কথা বলেন। এদের মধ্যে অসমীয়া ভাষা, হিন্দি ভাষা (প্রধানত বিহারী), বাংলা ভাষা (বাঙালী হিন্দু, চাকমা ও হাজং) ও ইংরেজি ভাষা সার্বজনীন ভাষা হিসেবে সর্বত্র ব্যবহার করা হয়। সর্বপ্রাণবাদ এখানকার প্রধান ধর্ম, তবে বৌদ্ধ ধর্মের বিশেষ প্রভাব আছে। ১৭ শতকে নির্মিত বৌদ্ধ বিহার তাওয়াং মঠ ভারতের বৃহত্তম বৌদ্ধ মন্দিরগুলির একটি। এই মন্দিরেই তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের ষষ্ঠ দালাই লামা জন্মগ্রহণ করেন।
ভাষা
অরুণাচল প্রদেশের ভাষাসমূহ- ২০১১[৫]
- নিস্সি 28.6 (২৮.৬%)
- আদি 17.35 (১৭.৩%)
- নেপালী 6.89 (৬.৮৯%)
- ভোটিয়া 4.51 (৪.৫১%)
- ওয়াংচো 4.22 (৪.২২%)
- হিন্দী 4.22 (৪.২২%)
- অসমীয়া 3.9 (৩.৯০%)
- বাংলা 3.87 (৩.৮৭%)
- চাকমা 3.4 (৩.৪০%)
- মিশমি 3.04 (৩.০৪%)
- টাংসা 2.64 (২.৬৪%)
- নচতে 2.19 (২.১৯%)
- ভোজপুরী 2.04 (২.০৪%)
- সাদরি 1.04 (১.০৪%)
- মংপা 0.9 (০.৯০%)
- মিচিং 0.75 (০.৭৫%)
- অন্যান্য 10.44 (১০.৪%)
ধর্ম
অরুণাচল প্রদেশের ধর্মবিশ্বাস (২০১১)[৬]
- খ্রিস্ট ধর্ম 30.26 (৩০.৩%)
- হিন্দুধর্ম 29.04 (২৯.০%)
- ইসলাম 26.2 (২৬.২%)
- তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম 11.76 (১১.৮%)
- ডোনি-পোলো 1.9 (১.৯০%)
- অন্যান্য 0.84 (০.৮৪%)
অর্থনীতি
অরুণাচল প্রদেশের অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। ধান প্রধান শস্য; এছাড়াও যব, বজরা, গম, ডাল, আলু, আখ, ফলমূল, তেলবীজ, ইত্যাদি চাষ করা হয়। ঝুম চাষ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, যেখানে পাহাড়ের একটি নির্দিষ্ট অংশের সমস্ত গাছ কেটে ফেলে সেখানে কয়েক মৌসুম চাষ করা হয়, এবং এরপর চাষের জায়গা নতুন এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। এর ফলে বনসম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। অরুণাচল প্রদেশে কলকারখানার পরিমাণ স্বল্প; এখানে কাঠ কাটা, ধান ও তেলের কল, সাবান ও মোমবাতি তৈরি, রেশম, এবং হস্তশিল্প প্রচলিত। অরুণাচল প্রদেশের অরণ্য, নদী, কয়লা, তেল এবং অন্যান্য খনিজের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এখনো পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করা হয়নি। অংশত রুক্ষ ভূপ্রকৃতির কারণে এমনটি ঘটেছে। ১৯৯২ সালে অঙ্গরাজ্যটিকে সীমিত আকারের পর্যটনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
অরুণাচল প্রদেশে একটি এক-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা আছে, যাতে আসনসংখ্যা ৬০। অঙ্গরাজ্য থেকে ভারতের জাতীয় আইনসভার নিম্নকক্ষ লোকসভায় ২ জন এবং উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ১ জন প্রতিনিধি পাঠানো হয়। অঙ্গরাজ্যটির স্থানীয় সরকার প্রশাসন ১২টি প্রশাসনিক জেলায় বিভক্ত।
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
হিন্দু পুরাণে অঞ্চলটির উল্লেখ পাওয়া গেলেও এর প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। ১৬শ শতকে অসমের রাজারা এর কিছু অংশ দখলে নিয়েছিলেন। ১৮২৬ সালে অসম ব্রিটিশ ভারতের অংশে পরিণত হয়, কিন্তু ১৮৮০-র দশকের আগ পর্যন্ত অরুণাচল প্রদেশকে ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আনার কোন প্রচেষ্টা নেওয়া হয়নি। ১৯১২ সালে অঞ্চলটি আসামের একটি প্রশাসনিক অঞ্চলে পরিণত হয় এবং এর নাম দেয়া হয় নর্থ ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার ট্র্যাক্ট (North Eastern Frontier Tract সংক্ষেপে NEFT)। ১৯৫৪ সালে এটির নাম বদলে North East Frontier Agency রাখা হয়। ১৯১৩ সাল থেকেই উত্তরে তিব্বতের এর সীমান্ত নিয়ে বিবাদ রয়েছে। ব্রিটিশেরা হিমালয়ের শীর্ষরেখাকে সীমান্ত হিসেবে প্রস্তাব করেছিল, কিন্তু চীনারা তা প্রত্যাখান করে। এই প্রস্তাবিত রেখাটি ম্যাকমাহন রেখা (McMahon line) নামে পরিচিত এবং বর্তমানে এটিই কার্যত ভারত চীন সীমান্ত হিসেবে স্বীকৃত।[৭] ১৯৪৭ সালে চীন প্রায় সম্পূর্ণ অরুণাচল প্রদেশের উপর কর্তৃত্ব দাবী করে। ১৯৫৯ ও ১৯৬২ সালের মধ্যবর্তী সময়ে চীনা সেনারা বেশ কয়েকবার ম্যাকমাহন রেখা অতিক্রম করে ও সাময়িকভাবে ভারতের সীমান্ত ঘাঁটিগুলি দখল করে। ১৯৬২ সালে চীন অরুণাচল প্রদেশ থেকে পশ্চাদপসরণ করে। এরপর বহুবার সীমান্ত বিবাদটি সমাধানের চেষ্টা করা হলেও আজও কোন সমঝোতা হয়নি। ১৯৭২ সালে অঞ্চলটি অরুণাচল প্রদেশ ইউনিয়ন অঞ্চলে পরিণত হয় এবং ১৯৮৬ সালের ডিসেম্বরে একে পূর্ণাঙ্গ অঙ্গরাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়।
পর্যটন

পরিবহন
প্রধান পরিবহন কেন্দ্র অবস্থান
আকাশ পথে
একমাত্র বিমানবন্দর, ইটানগর বিমানবন্দর নির্মাণাধীন অবস্থায় আছে।[৮]
রেলপথে
বর্তমানে রেলপথ ইটানগর-এর নিকটবর্তী নাহারলাগুন পর্যন্ত বিস্তৃত। রাজ্যের অপর স্টেশনটি হচ্ছে এই রুটের গুমত। একটি নতুন দিল্লি এসি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ও গুয়াহাটি শতাব্দী এক্সপ্রেস চলাচল করে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.