ফার্সি ভাষা
ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের একটি ভাষা / From Wikipedia, the free encyclopedia
ফার্সি ভাষা[10] (فارسی, ফ়্যর্সী, [fɒːɾˈsiː] (শুনুনⓘ)) মধ্য এশিয়ায় প্রচলিত ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের ইরানীয় শাখার অন্তর্ভুক্ত একটি ভাষা। পারস্যের প্রাচীন জনগোষ্ঠীর ভাষা থেকে ফার্সি ভাষার উদ্ভব হয়েছে। বর্তমানে ভাষাটির তিনটি সরকারি রূপ প্রচলিত: ইরানে এটি ফ়্যর্সী (فارسی [fɒːɾˈsiː]) নামে পরিচিত। আফগানিস্তানেও এটি বহুল প্রচলিত; সেখানে এটি দ্যারী (دری [dæˈɾi]) নামে পরিচিত। ভাষাটির আরেকটি রূপ তাজিকিস্তান এবং পামির মালভূমি অঞ্চলে প্রচলিত। তাজিকিস্তানে এর সরকারি নাম তজিকী (Тоҷикӣ / Toçikī / تاجيكی [tɔːdʒɪˈkiː])। এছাড়া উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, আজারবাইজান, বাহরাইন, কাতার এবং কুয়েতেও অনেক ফার্সিভাষী লোক বাস করে।
এই নিবন্ধটি ইংরেজি উইকিপিডিয়ার অনুরূপ নিবন্ধ অনুবাদ করে সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। (আগস্ট ২০২৩) অনুবাদ করার আগে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশাবলী পড়ার জন্য [দেখান] ক্লিক করুন।
|
ফার্সি | |
---|---|
فارسی (fārsi), форсӣ (forsī) | |
উচ্চারণ | [fɒːɾˈsiː] (শুনুনⓘ) |
দেশোদ্ভব |
|
মাতৃভাষী | ৭ কোটি[7] (১১ কোটি মোট ভাষাভাষী)[6] |
ইন্দো-ইউরোপীয়
| |
পূর্বসূরী | প্রাচীন ফার্সি
|
প্রমিত রূপ | ইরানি ফার্সি
|
উপভাষা | |
| |
সরকারি অবস্থা | |
সরকারি ভাষা |
|
নিয়ন্ত্রক সংস্থা |
|
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-১ | fa |
আইএসও ৬৩৯-২ | per (বি) fas (টি) |
আইএসও ৬৩৯-৩ | fas – সমেত কোডপৃথক কোডসমূহ: pes – ফার্সিprs – দারিtgk – তাজিকaiq – আইমাকbhh – বুখোরিhaz – হাজারাগিjpr – ইহুদি-ফার্সিphv – পাহলাওয়ানিdeh – দেহওয়ারিjdt – ইহুদি-তাতttt – ককেশীয় তাত |
গ্লোটোলগ | fars1254 [9] |
লিঙ্গুয়াস্ফেরা |
|
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফার্সি মাতৃভাষী অঞ্চল (উপভাষাসহ) | |
ফার্সি ভাষামণ্ডল নির্দেশক দাপ্তরিক ভাষা
১০ লক্ষাধিক ভাষী
৫ লাখ – ১০ লাখ ভাষী
১ লাখ – ৫ লাখ ভাষী
২৫ হাজার – ১ লাখ ভাষী
২৫ হাজারের কম ভাষী বা নেই | |
এই নিবন্ধটিতে আধ্বব ধ্বনিমূলক চিহ্ন রয়েছে। সঠিক পরিবেশনার সমর্থন ছাড়া, আপনি ইউনিকোড অক্ষরের পরিবর্তে প্রশ্নবোধক চিহ্ন, বক্স, অথবা অন্যান্য চিহ্ন দেখতে পারেন। |
ইরানীয় ভাষাগুলির বিকাশ তিনটি পর্বে বিভক্ত করা যায় --- প্রাচীন, মধ্য এবং আধুনিক। অবেস্তান ভাষা এবং প্রাচীন ফার্সি ভাষা প্রাচীন ইরানীয় ভাষার নিদর্শন। অবেস্তান ভাষা সম্ভবত প্রাচীন পারস্যের উত্তর-পূর্ব অংশে প্রচলিত ছিল। এই ভাষাতে জরথুষ্ট্রবাদের পবিত্র গ্রন্থ অবেস্তা লেখা হয়। এই ধর্মীয় স্তোত্রমূলক ব্যবহার ছাড়া অবেস্তা ভাষা পারস্যে ইসলামের আগমনের অনেক আগেই মৃত ভাষায় পরিণত হয়। প্রাচীন ফার্সি ভাষাটি পারস্য সাম্রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিমের কিউনিফর্ম শিলালিপিতে ধারণ করা আছে। এগুলি মূলত সম্রাট প্রথম দরিউশ এবং প্রথম খাশইয়রের আমলে লিখিত হয়। প্রাচীন ফার্সি ভাষা ও অবেস্তান ভাষার সাথে সংস্কৃত ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। সংস্কৃত, গ্রিক ও লাতিন ভাষার মতো এগুলিও অত্যন্ত বিভক্তিমূলক ভাষা।
মধ্য ফার্সি ভাষা এবং ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত পার্থীয় ভাষা ছাড়াও বেশ কিছু মধ্য এশীয় ভাষা মধ্য ইরানীয় ভাষার মধ্যে পড়ে। পার্থীয় ভাষা ছিল আর্সাসিদ বা পার্থীয় সাম্রাজ্যের ভাষা, যে সাম্রাজ্যটি ২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২২৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। সাসানীয় পর্বের পরবর্তী রাজাদের খোদাইলিপি থেকে পার্থীয় ভাষার নমুনা পাওয়া যায়। তবে সাসানীয়দের ক্ষমতায় আসার পর এই ভাষার অবনতি ঘটে। আর্সাসিদ পর্বে এটি ফার্সি ভাষার উপর প্রভাব ফেলেছিল। সাসানীয় সাম্রাজ্যের (২২৪-৬৫১) সময় সরকারী ভাষা ছিল মধ্য ফার্সি ভাষা বা পাহলভী ভাষা। মধ্য ফার্সি ভাষার ব্যাকরণ প্রাচীণ ফার্সি ভাষার চেয়ে সরল ছিল। আরামীয় লিপি থেকে উদ্ভূত একটি লিপিতে এটি লেখা হত। ৭ম শতকে আরবদের (উমাইয়া সাম্রাজ্য) পারস্য বিজয়ের পর ভাষাটির অবনতি ঘটে। যদিও বহু মধ্য ফার্সি সাহিত্য আরবিতে অনুবাদ করা হয়েছিল, এতে রচিত বেশির ভাগ সাহিত্যই ইসলামি যুগে হারিয়ে যায়। সাসানীয় সাম্রাজ্যে ও মধ্য এশিয়াতে অন্য আরও মধ্য ইরানীয় ভাষা প্রচলিত ছিল। যেমন খিভাতে খোয়ারাজমীয় ভাষা, বাকত্রিয়াতে বাকত্রীয় ভাষা, সগদিয়ানাতে সগদীয় ভাষা এবং পূর্ব তুর্কিস্তানে শক ভাষা। সগদীয় ভাষাতে খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য রচিত হয়। শক ভাষার খোতানীয় উপভাষাতে গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ সাহিত্য রচিত হয়। বেশির ভাগ কোয়ারিজমীয় সাহিত্য ইসলাম-পরবর্তী পর্বের। অন্যদিকে অতি সম্প্রতি আফগানিস্তানে বাকত্রীয় ভাষায় লেখা শিলালিপির সন্ধান পাওয়া গেছে।
আধুনিক ফার্সি ভাষাটি ৯ম শতকের মধ্যেই বিকাশ লাভ করে। ভাষাটিতে পার্থীয় ও মধ্য ফার্সি ভাষার বহু উপাদান আছে এবং অন্যান্য ইরানীয় ভাষাগুলিও একে প্রভাবিত করেছে। ভাষাটি পারসিক-আরবি লিপিতে লেখা হয়। ভাষাটির ব্যাকরণ মধ্য ফার্সির চেয়েও সরল এবং এটি আরবি ভাষা থেকে বিপুল পরিমাণ শব্দ আত্মীকৃত করেছে। শুরু থেকেই আধুনিক ফার্সি ভাষাটি পারস্যের সরকারি ও সাংস্কৃতিক ভাষা।
পার্সিয়ান, লুরস, তাজিক, হাজারাস, ইরানি আজারিস, ইরানি কুর্দি, বালুচ, তাত, আফগান পশতুন এবং আইমাক সহ বিশ্বব্যাপী প্রায় ১১ কোটি ফার্সি ভাষাভাষী রয়েছে । পার্সোফোন শব্দটি পারস্যের একজন বক্তাকে বোঝাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।[11][12]