ভাস্কো দা গামা
পর্তুগিজ সমুদ্রগামী অভিযাত্রী যিনি ইউরোপ থেকে ভারতে আসার সমুদ্রপথ আবিষ্কার করেন / From Wikipedia, the free encyclopedia
ভাস্কো দা গামা (পর্তুগিজ: Vasco da Gama, উচ্চারণ: ভ়াশ্কু দ্য গ্যঁম্য; আনু. ১৪৬০ – ২৪ ডিসেম্বর ১৫২৪, কোচি, ভারত) একজন পর্তুগীজ অনুসন্ধানকারী এবং পর্যটক যিনি প্রথম পঞ্চদশ শতাব্দীতে সমুদ্রপথে ইউরোপ থেকে ভারতে আসেন। ১৪৯৮ সালের ২০মে ভারতের কালিকটে পৌছান তিনি। সেই সময় কালিকটের রাজা ছিলেন জামোরিনি। তিনি ভাস্কো দা গামা কে সম্বর্ধনা জানান। তিনিই প্ৰথম ইউরোপীয় ব্যক্তি যিনি সম্পূৰ্ণ সাগর পথ পাড়ি দিয়ে ভারতে এসে উপস্থিত হন, তার ভ্ৰমণে এশিয়া এবং ইউরোপকে সংযোগ করার সাথে সাথে আটলান্তিক মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরকে সংযোগ করেছিল এবং এ দিক থেকেই তিনি পশ্চিমা সংস্কৃতির সাথে পাশ্চাত্য দুনিয়ার সেতুবন্ধন গড়ে তোলেন৷ তার প্ৰথম ভারতমুখী ভ্ৰমণে (১৪৯৭-১৪৯৯) এই কাজ সম্পন্ন হয়েছিল৷ ভাস্কো দা গামার এই আবিষ্কার বৈশ্বিক সাম্ৰাজ্যবাদের ইতিহাসে অতি তাৎপৰ্য্যপূৰ্ণ ছিল কারণ এই ভ্ৰমণের দ্বারাই পর্তুগীজদের এশিয়া মহাদেশে দীৰ্ঘকালীন উপনিবেশ স্থাপনের পথ সুগম হয়েছিল৷ তার দ্বারা আবিষ্কৃত পথটি বিবাদপূৰ্ণ ভূমধ্য সাগর এবং বিপদজনক আরব উপদ্বীপ পার হওয়া থেকে রেহাই দিয়েছিল কারণ সমগ্র পথটিই ছিল সাগর পথে৷
ভাস্কো দা গামা | |
---|---|
জন্ম | ১৪৬০ কিংবা ১৪৬৯ |
মৃত্যু | ডিসেম্বর ২৪, ১৫২৪ (বয়স ৫৫ বা ৬৪) কোচি, ভারত |
পেশা | অভিযাত্রী, পর্তুগিজ ভারতের গভর্নর |
স্বাক্ষর | |
তিনি দুটি ভারত অভিমুখী নৌযাত্ৰার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন,প্রথমটি এবং চতুর্থটি, চতুর্থ যাত্ৰাটি ছিল সবচেয়ে বড় যাত্রা যা তিনি তার প্রথম সমুদ্র যাত্রা থেকে ফিরে আসার চার বছর পর পরিচালনা করেন। তার অবদানের জন্য ১৫২৪ সালে ভারতে নিযুক্ত পতুৰ্গীজ সাম্ৰাজ্যের গভৰ্ণর হিসেবে ভাইসরয় উপাধিতে নিযুক্তি করা হয়। এবং ১৫১৯ সালে তাকে নবগঠিত ভিডিগুয়েরা(Vidiguera)র কাউন্ট পদবী প্ৰদান করা হয়েছিল৷ এই দিনটিতে আবিষ্কারের জন্যে তিনি ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে আছেন। তার অন্বেষণ এবং শিক্ষাদীক্ষা উদ্যাপন করতে বিশ্বব্যাপী অসংখ্য শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়েছে। পতুৰ্গীজ মহাকাব্য অস লুইসিয়াডাস, তার সম্মানার্থে লেখা হয়েছে। ভারতে তার প্ৰথম ভ্ৰমণ কে বিশ্ব ইতিহাসে মাইলফলক বলে বিবেচনা করা হয় কারণ এই ভ্ৰমণের ফলেই বিশ্বায়নের বহুসাংস্কৃতিক ধারণাটির প্রচলন হয়৷[1][পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]
আসা যাওয়ার জন্য অতিক্ৰম করা দূরত্বের দৈৰ্ঘ্য সেই সময়কার সৰ্বাধিক ভ্ৰমণ দূরত্ব(সমুদ্র যাত্রা) ছিল এবং এই দূরত্ব বিষুবরেখার দৈৰ্ঘ্য থেকেও বেশি ছিল৷[2] নৌপথ আবিষ্কারের এক শত বছর পর, ইউরোপীয় শক্তি যেমন ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্স অবশেষে সক্ষম হয় পর্তুগীজদের একাধিপত্য ভেঙ্গে দিতে এমনকি তাদের নৌ শক্তির আধিপত্য আফ্রিকার কাছাকাছি, ভারত মহাসাগর এবং প্রাচ্যের দূরবর্তী স্থানে, যা প্রাচ্যে ইউরোপীয় সাম্ৰাজ্যবাদের এক নতুন যুগ সৃষ্টি করে। হাজার হাজার জীবন এবং ডজন ডজন জাহাজ ডুবি এবং আক্রমণ, নাবিকদের দশকের পর দশক ধরে প্রচেষ্টার পর ভাস্কো দা গামা ১৪৯৮ সালের ২০মে ভারতের কালিকট(Calicut) বন্দরে উপস্থিত হতে সক্ষম হন। দা গামার আবিষ্কারে, পৌরাণিক ভারতীয় মসলা ব্যবসায় এসেই বাধাহীন সহযোগিতায় পর্তুগীজ সাম্ৰাজ্যের অর্থনীতি উন্নত করে তোলে, যা মূলত উত্তর এবং উপকূলীয় পশ্চিম আফ্রিকার সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে হত। প্রথম দিকে যার বেশির ভাগই গোলমরিচ এবং দারুচিনি/ডালচিনি ছিল, তবে শীঘ্রই অন্যান্য পণ্য ও যোগ হয়, যা ইউরোপে সম্পূর্ণ নতুন ছিল এবং কয়েক দশক ধরে ব্যবসায়িক আধিপত্য বজায় রাখতে কার্যকর হয়েছিল।