ভারতীয় উপমহাদেশে বৌদ্ধধর্মের অবনতি
ভারতে বৌদ্ধধর্মের প্রতিস্থাপনের ধীর প্রক্রিয়া যা ১২ শতকের কাছাকাছি শেষ হয়েছিল / From Wikipedia, the free encyclopedia
ভারতীয় উপমহাদেশে বৌদ্ধধর্মের অবনতি বলতে বোঝায় প্রাচীন ভারতে ধীরে ধীরে বৌদ্ধধর্মের প্রভাব হ্রাস ও ক্রমাবনতি। খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যেই উপমহাদেশে বৌদ্ধধর্ম একটি অপ্রধান ধর্মবিশ্বাসে পরিণত হয়েছিল।[1][2] লার্স ফোজেলিনের মতে, এই ক্রমাবলুপ্তি কোনও একক ঘটনা নয়, এমনকি কোনও একটি নির্দিষ্ট কারণেও এটি ঘটে; বরং এটি ছিল বহু শতাব্দী ধরে সংঘটিত একটি প্রক্রিয়া।[3]
বৌদ্ধধর্মের অবনতির একাধিক কারণ চিহ্নিত করা হয়। তবে এই ঘটনার একটি প্রধান ছিল গুপ্ত সাম্রাজ্যের (৩২০-৬৫০ খ্রিস্টাব্দ) পতনের পর ভারতের আঞ্চলিকীকরণ। এই সময় ভারতীয় রাজবংশগুলি হিন্দু ব্রাহ্মণদের সেবায় আত্মনিয়োগ করলে বৌদ্ধ সংঘ তাদের পৃষ্ঠপোষকতা ও দান থেকে বঞ্চিত হয়। অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল ইন্দো-ইরানীয় হুন, শ্বেত হুন, সুন্নি মুসলমান তুর্কি-মঙ্গোলীয়, আরব ও পার্সি প্রভৃতি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর উত্তর ভারত আক্রমণ এবং তাদের দ্বারা নালন্দা প্রভৃতি বৌদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস ও ব্যাপক বৌদ্ধনিপীড়ন ও গণহত্যা।[4] হিন্দুধর্ম ও পরবর্তীকালে ইসলামের সঙ্গে ধর্মীয় প্রতিযোগিতাও একটি উল্লেখযোগ্য কারণ ছিল। মনে করা হয় যে, বাংলার ইসলামীকরণ এবং দিল্লি সুলতানির সেনানায়ক মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি কর্তৃক নালন্দা, বিক্রমশিলা ও ওদন্তপুরী মহাবিহারের বিনষ্টীকরণ পূর্ব ভারতে বৌদ্ধধর্মের ভিত্তি বিশেষভাবে দুর্বল করে দিয়েছিল।[5]
২০১০ সালে শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটান বাদে ভারতীয় উপমহাদেশে মোট বৌদ্ধ জনসংখ্যা ছিল ১ কোটি। এই জনসংখ্যার ৯২.৫ শতাংশ ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের, ৭.২ শতাংশ বাংলাদেশের এবং ০.২ শতাংশ পাকিস্তানের অধিবাসী।[6]