Loading AI tools
বাংলাদেশের বিভিন্ন রান্না উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাংলাদেশের রান্না মূলতঃ বাংলাদেশে প্রচলিত রন্ধনপ্রণালীর অতি সাধারণ বিষয়াদি নিয়ে আবর্তিত হয়েছে। রন্ধনপ্রণালীতে অনেক ফারসি-আরবী উপাদান, উপকরণ-সহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রান্নার সাথে সংশ্লিষ্টতা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। অঞ্চলগত সীমারেখা অতিক্রম করে এ রান্না বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।
বাংলাদেশে রান্নার ধরন ও সনাতনী ধারা বাংলাদেশী রান্নায় ব্যাপকভাবে প্রতিফলিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। এছাড়াও স্থানভেদে খাবারের ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। থালা, রান্না পদ্ধতি, রীতি-নীতি, খাবার পরিবেশন, খাদ্যের নামকরণ, স্বাদ-সহ অনেকগুলো বিষয়ে এ ভিন্নতা রয়েছে। সচরাচর প্রশাসনিক বিভাগসমূহে রান্নার বহমান ধারা কম-বেশি বিভাজিত হয়ে থাকে।
তন্মধ্যে - বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা বিভাগের স্থায়ী অধিবাসীগণ সাগর তীরবর্তী এলাকায় অবস্থান করেন বিধায় তাদের খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক খাবারের ব্যবহার অধিক হয়ে থাকে। এছাড়াও, সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি নারিকেলের ব্যবহার বিশেষভাবে লক্ষণীয়। মাছকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় রোদে শুকিয়ে শুঁটকি হিসেবে রূপান্তর করা হয়। এ ধারাটি বরিশাল ও চট্টগ্রামে দেখা যায়। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুঁটকি সরবরাহ ও বাজারজাতকরণসহ বিদেশে রপ্তানী করা হয়।
তবে খুলনায় সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি স্বাদু পানির মাছের প্রাচুর্য রয়েছে এবং তা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। চট্টগ্রাম বিভাগে অতিথি হিসেবে পরিচিত মেজবানগণকে গরুর গোশত ও মসুর ডাল সহযোগে পরিবেশন করা হয়। কিন্তু, বরিশাল কিংবা খুলনায় গরুর গোশতের পরিবর্তে মুরগী, মুরগীর বাচ্চা ও মাছকেই খাদ্য হিসেবে প্রাধান্য দেয়া হয় বেশি।
সুপ্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহে মসলা সংযুক্ত ভাত এবং প্রচুর মাংস সহযোগে খাদ্য পরিবেশনের রেওয়াজ প্রচলিত রয়েছে। এ রীতি-রেওয়াজ এখনো পুরনো ঢাকায় অস্তিত্ব বজায় রেখেছে। বিরিয়ানি, বিভিন্ন ধরনের কাবাব, বাকরখানি ইত্যাদি শতাব্দী প্রাচীন খাবারগুলো বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁয় তৈরী করতে দেখা যায়।
পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এলাকাগুলোয় সব্জিসহযোগে তরকারির সাথে খাদ্য গ্রহণ করা হয় ব্যাপকভাবে। এছাড়া, মশলাও সাধারণ অর্থে এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। নদীর মাছ বিশেষ করে স্বাদু পানির মাছও সাধারণভাবেই পাতে বা থালায় থাকে। বৃহত্তর বরিশাল বিভাগে মেজবান অনুসঠানের প্রচলন ইদানীং উঠে যাচ্ছে।
বাঙ্গালি খাবারের প্রধান অংশ ভাত, যা প্রায় প্রতিবেলার আহারেই অন্তর্ভুক্ত থাকে । তবে ভাতের পরিবর্তে অনেকেই রুটিও খেয়ে থাকেন । এর সাথে মাছ, মাংস, ডাল, সবজি, ভর্তা, ভাজি ইত্যাদি খাওয়া হয়ে থাকে ।
এছাড়া আটা বা ময়দা থেকে প্রস্তুত লুচি, পরোটা, পিঠা ইত্যাদিও খাবার হিসেবে পরিবেশিত হয়ে থাকে । ডালজাতীয় খাবারের মধ্যে মুসুরের ডাল, খেসারির ডাল, মুগের ডাল, মাসকলাই ডাল, ছোলা ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়ে থাকে । গ্রীষ্মপ্রধান দেশ হওয়ার কারণে বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের শাকসবজি ও ফলমূল পাওয়া যায় । [1]
বাঙালী খাবার রান্নার ক্ষেত্রে প্রধানত সরিষার তেল এবং সয়াবিন তেল ব্যবহৃত হয়ে থাকে । এছাড়াও কিছু কিছু খাবার প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে ঘি ব্যবহৃত হয় । রান্নার ক্ষেত্রে প্রচলিত দ্রব্যাদি ও মশলা হচ্ছে আদা, রসুন, হলুদ, মরিচ, পেয়াজ, জিরা, লবঙ্গ, এলাচ, দারুচিনি ইত্যাদি । এছাড়াও খুলনাঞ্চলে চুইঝাল নামে এক ধরনের মসলার ব্যবহার দেখা যায়।
দৈনন্দিন আহারের ক্ষেত্রে সাধারনত প্রতিবেলার খাবার পৃথকভাবে কিছু ভাত অথবা রুটিসহ প্রস্তুতকৃত তরকারির সাথে ভোজন করা হয় । অপরদিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় একাধিক পদ রান্না করা হয়ে থাকে । দাওয়াত বা অনুষ্ঠানে অতিথি বা মেহমানকে খাবার পরিবেশন করা বাঙ্গালিদের একটি ঐতিহ্য, তবে ইদানীং কোনো কোনো অনুষ্ঠানে প্রফেশনাল ক্যাটারিং বা বুফে পদ্ধতি অনুসরন করতে দেখা যায় ।
দৈনন্দিন আহারের ক্ষেত্রে ভাত, ডাল, ভর্তা, ভাজি, মাছ ভাজি, মাছের তরকারি, সবজি, মাংস, ভূনা খিচুরি, পোলাও, রুটি, পরোটা, কাবাব, সেমাই, পায়েস ইত্যাদি প্রধান পদ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে । এছাড়াও বর্তমানে বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্টে অথবা বাসা বাড়িতে বিভিন্ন ফাস্টফুড জাতীয় খাবার যেমন বার্গার, রোল, কেক, সুপ, চিকেন ফ্রাই, ফ্রাইড রাইস, নুডলস ইত্যাদি তৈরি হয়ে থাকে । অপরদিকে অনেক রেস্টুরেন্ট বা বাসা বাড়িতে তেহারি, বিরিয়নি, কাবাব ইত্যাদি বিশেষ পদসমূহ প্রস্তুত করা হয়ে থাকে । [2]
বাঙ্গালি খাবারের বিভিন্নতা এবং বিচিত্রতা ব্যাপক ও বিশাল । বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশিত ও প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন ধরনের খাবার ছাড়াও নিজের পরিবার অথবা আত্মীয়স্বজনদের জন্য বিভিন্ন ধরনের আচার, পিঠা ইত্যাদি তৈরি করা হয়ে থাকে । এছাড়াও বাঙ্গালি খাবারের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পানীয় যেমন সরবত, আখের রস, মালাই, লাচ্ছি, ফালুদা, বোরহানী, ঘোল, বেলের সরবত, চা, কফি ইত্যাদি ।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.