Loading AI tools
নজরুল সঙ্গীত উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পদ্মার ঢেউ রে একটি ভাটিয়ালী ঢঙ্গে রচিত বিচ্ছেদধর্মী নজরুল সঙ্গীত।[1][2] কবি কাজী নজরুল ইসলামের গীতি ও দ্রুত দাদরা তালে আরোপিত সুরে জনপ্রিয় গানটি শচীন দেববর্মণের কন্ঠে প্রথম ধারণ করা হয়।[3] ১৯৪১ সালে কলকাতা হতে তৎকালীন হিন্দুস্তান রেকর্ড কোম্পানি এই সঙ্গীত বা গানটি প্রথম প্রকাশ করে।[4]:১৪০,১৪১ পরবর্তীতে ১৯৫৯ সালে কবিপত্নী প্রমীলা নজরুল কর্তৃক কলকাতার ডি এম লাইব্রেরী হতে প্রকাশিত নজরুল গীতি সংকলন 'বুলবুল' এর দ্বিতীয় খণ্ডে গানটি সংকলিত হয়।[5] এটা পদ্মা নদী নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর গীতিকাব্য। গানটি শচীন দেববর্মনের পর ফিরোজা বেগম, ফেরদৌসি রহমান ও খায়রুল আনাম শাকিলের কন্ঠে আরো জনপ্রিয় হয়। এই গানের মুখরা পদ্মা নদী নিয়ে লেখা প্রবন্ধসমূহে 'উপমা' হিসেবে নিয়মিত উল্লিখিত হয়েছে।
"পদ্মার ঢেউ রে" | |
---|---|
শচীন দেববর্মণ কর্তৃক নজরুল গীতি | |
ভাষা | বাংলা |
মুক্তিপ্রাপ্ত | ১৯৪১ |
বিন্যাস | আর পি এম রেকর্ড |
রেকর্ডকৃত | ১৯৪১ |
স্টুডিও | ভারতলক্ষী স্টুডিও |
স্থান | কলকাতা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান)পশ্চিম বঙ্গ, ভারত |
ধারা | নজরুল গীতি |
দৈর্ঘ্য | ০৩:০৫(মূল গান) |
লেবেল | হিন্দুস্তান রেকর্ড কোম্পানি |
লেখক | কাজী নজরুল ইসলাম |
সুরকার | কাজী নজরুল ইসলাম |
প্রযোজক | কাজী নজরুল ইসলাম |
১৯৪১ সালে 'নন্দিনী' শিরোনামে একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। কবি'র ছেলেবেলার বন্ধু শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় নন্দিনী চলচ্চিত্রের কাহিনী, চিত্র্যনাট্য রচনা ও পরিচালনা করেন। বন্ধু শৈলজানন্দের অনুরোধে কাজী নজরুল ইসলাম এই চলচ্চিত্রের জন্য "চোখ গেল চোখ গেল" শিরোনামের গানটি রচনা ও সঙ্গীতায়োজন করেছিলেন। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর গানটি জনপ্রিয় হয়। জনপ্রিয়তার কারণে হিন্দুস্তান রেকর্ড কোম্পানী গানটি গ্রামোফোন রেকর্ড আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। রেকর্ডের এক পাশে চোখ গেল চোখ গেল গান ছাড়াও অপর পাশে আরেকটি গানের প্রয়োজনীয়তা ছিল। কবিকে রেকর্ডের অপর পাশের জন্য একটি গান রচনা করার অনুরোধ করা হলে তিনি পদ্মার ঢেউ রে গানটি রচনা করেন।[4]:১৪০,১৪১
'চোখ গেল পাখিরে' আর 'পদ্মার ঢেউরে'। সে দুটি গানের ভেতর কুমার শচীনদেব বর্ম্মণ আজও চির নতুন হয়ে আছেন। সে গান দুটি নজরুল আর শচীন দেবের এক অমর সৃষ্টি, যুগ্ম প্রতিভার এক অম্লান স্বাক্ষর
'সুর-সভায় নজরুল' গ্রন্থে শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়[4]
পদ্মার ঢেউ রে —
মোর শূণ্য হৃদয়–পদ্ম নিয়ে যা, যা রে।
এই পদ্মে ছিল রে যার রাঙ্গা পা
আমি হারায়েছি তারে।।
মোর পরান–বঁধু নাই, পদ্মে তাই মধু নাই (নাই রে)
বাতাস কাঁদে বাইরে, সে সুগন্ধ নাই রে
মোর রূপের সরসীতে আনন্দ–মৌমাছি নাহি ঝঙ্কারে রে।।
ও পদ্মারে —
ঢেউয়ে তোর ঢেউ ওঠায় যেমন চাঁদের আলো
মোর বঁধুয়ার রূপ তেমনি ঝিল্মিল করে কৃষ্ণ–কালো।
সে প্রেমের ঘাটে ঘাটে বাঁশি বাজায়
যদি দেখিস্ তারে, দিস্ এই পদ্ম তার পায়
বলিস্, কেন বুকে আশার দেয়ালি জ্বালিয়ে
ফেলে গেল চির–অন্ধকারে।
পদ্মার ঢেউ রে গানে সুরারোপের ক্ষেত্রে কবি দ্রুত দাদরা তাল ব্যবহার করেছেন। চোখ গেল চোখ গেল এবং পদ্মার ঢেউ রে গান দুইটি একই সাথে গাওয়ার জন্য শচীন দেববর্মণকে মনোনীত করে রেখেছিলেন। কলকাতার ভারতলক্ষী স্টুডিও-তে কবি ও শৈলজানন্দের উপস্থিতিতে শচীন এই গান দুটিতে কন্ঠ দিয়েছিলেন। 'নন্দিনী' ছায়াচিত্র মুক্তির বছর- ১৯৪১ সালেই হিন্দুস্তান রেকর্ড কোম্পানী গান দুইটি গ্রামোফোন রেকর্ড(নম্বরঃ এইচ ৯৬৯) হিসেবে বাজারজাত করে।[4] কবিপত্নী প্রমিলা নজরুলের উদ্যোগে ১৯৫৯ সাল(১৩৫২ বঙ্গাব্দ)-এ কবি'র জন্মদিনে নজরুল গীতি সংগ্রহ বুলবুল-এর দ্বিতীয় খণ্ডে গানটির কথা ও স্বরলিপি সংকলিত হয়।[5]
গানটি শচীন দেববর্মণের কন্ঠে ধারণ করা অন্যতম জনপ্রিয় গান। ১৯৫০ সালের হিন্দি চলচ্চিত্র আফসার-এর সঙ্গীত পরিচালনার সময় 'পরদেসি রে' নামক গানে শচীন এই গানের সুর ব্যবহার করেছেন।[4]:২০৪,২০৫ গানটি অভিনেত্রী সুরাইয়ার কন্ঠে ধারণ করা হয়েছিল।[6] শচীন ছাড়াও ফিরোজা বেগম, ফেরদৌসী রহমান ও খায়রুল আনাম শাকিলের কন্ঠে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছে।[7][8] বাংলাভিশন তাদের একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানের নাম এই গানের নামে রেখেছিল।[9] প্রাবন্ধিকরা পদ্মা নদী নিয়ে স্মৃতিচারণ বা পদ্মার সৌন্দর্য্য বর্ণনায় এই গানের প্রথম চার পঙতি উপমা বহুবার ব্যবহার করেছেন।(উদাহরণ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ])
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.