Loading AI tools
ভারতীয় অভিনেত্রী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নীতু সিং (জন্মঃ ৮ জুলাই ১৯৫৮) যিনি তার বিবাহিত নাম নীতু কাপুর দ্বারাও পরিচিত, একজন ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি সত্তরের দশকে হিন্দি চলচ্চিত্রে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করতেন। নীতু মাত্র ৮ বছর বয়সে অভিনয় করা শুরু করেন 'বেবী সোনিয়া' নামে। ১৯৬৬ সালের চলচ্চিত্র 'সুরাজ' এ নীতু প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৬৬ সালের চলচ্চিত্র 'দশ লাখ' এ তিনি রূপা চরিত্রে অভিনয় করেন 'দো কালিয়া' চলচ্চিত্রে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেন। শিশু চরিত্রে অভিনয় করা তার আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র হলো 'ওয়ারিশ' এবং 'পবিত্র পাপী'। প্রাপ্তবয়স্ক চরিত্রে নীতু সর্বপ্রথম 'রিকশাওয়ালা' চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন যেটি ১৯৭৩ সালে মুক্তি পেয়েছিলো এবং ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত দশ বছরে মোট ৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮০ সালে নীতু তার সহকর্মী ঋষি কাপুরকে প্রেম করে বিয়ে করেন এবং ১৯৮৩ সালে চলচ্চিত্রে অভিনয় করা ছেড়ে দেন। ২৬ বছর পর তিনি আবার চলচ্চিত্রে ফিরে আসেন 'লাভ আজকাল' (২০০৯) এর মাধ্যমে যেখানে ঋষিও ছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি তার ছেলে রণবীর কাপুর এর সঙ্গে 'বেশরম' চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন।[2][3]
নীতু সিং | |
---|---|
জন্ম | |
পেশা | অভিনেত্রী |
কর্মজীবন | ১৯৬৬–১৯৮৩, ২০০৯–বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | ঋষি কাপুর (বিয়ে ১৯৮০) |
সন্তান | ২ (তন্মধ্যে রণবীর কাপুর) |
১৯৬৬ সালের চরিত্র সুরাজ এ নীতু প্রথম অভিনয় করেন, চলচ্চিত্রটিতে রাজেন্দ্র কুমার এবং বৈজয়ন্তীমালা মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। চলচ্চিত্রটিতে মূলত বৈজয়ন্তীমালার সুপারিশেই নীতু অভিনয় করার সুযোগ পান। নীতু এরপর দাছ লাখ (১৯৬৬), ভারিছ (১৯৬৯), পাভিত্রা পাপি (১৯৭০) এবং ঘার ঘার কি কাহানি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। নীতু ১৯৬৫ সালের তামিল চলচ্চিত্র কুড়ানদাইয়ুম দেইভামুম এর কুট্টি পদ্মিনীর চরিত্র পুনরায় হিন্দি পুনঃনির্মাণ দো কালিয়াঁ (১৯৬৮) তে গঙ্গা/যমুনা হিসেবে ফুটিয়ে তোলেন।
তামিল চলচ্চিত্র রিকশাকারান (১৯৭১) এর সফলতার পর প্রযোজক আর এম বীরাপ্পান হিন্দি ভাষায় চলচ্চিত্রটি বানানোর কথা ভাবেন। তামিল চলচ্চিত্রটি তুমুল জনপ্রিয়তাসহ মুখ্য অভিনেতা এম জি রামচন্দ্রণকে ন্যাশনাল ফিল্ম এ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট এ্যাক্টর এনে দেয়। রিকশাকারান এর হিন্দি সংস্করণ রিকশাওয়ালা (১৯৭৩) এম জি রামচন্দ্রণের বন্ধু কে. শঙ্কর পরিচালনা করেন অভিনেতা রণধীর কাপুর এবং নীতুকে নিয়ে। দো কালিয়াঁ এর পরিচালক কৃষ্ণন-পাঞ্জু তামিল চলচ্চিত্র রিকশাকারান এ মঞ্জুলার চরিত্র নীতুকে দিয়ে করাতে বলেন। এইভাবেই নীতুর সর্বপ্রথম মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ আসে মাত্র ১৫ বছর বয়সে। যদিও তামিল চলচ্চিত্রটির হিন্দি সংস্করণ রিকশাওয়ালা দর্শকপ্রিয়তা পায়নি। ইয়াদোঁ কি বারাত (১৯৭৩) চলচ্চিত্রের গান 'লেকার হাম দিওয়ানা দিল'তে নীতু অভিনয় করেন, ইয়াদোঁ কি বারাত ছিলো ১৯৭৩ সালের একটি উচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র, রাহুল দেব বর্মণ এর সঙ্গীত পরিচালনায় চলচ্চিত্রটির প্রত্যেকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়, 'লেকার হাম দিওয়ানা দিল' গানটির মাধ্যমে নীতু প্রযোজক-পরিচালক মহলে একটি পরিচিত মুখ হয়ে যান, নীতুর জন্য অনেক চলচ্চিত্রে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য প্রস্তাব আসতে থাকে। নীতুকে নেওয়া হয় 'আদরের মেয়ে', 'আশাবাদী' অথবা 'চটপটে প্রেমিকা'র চরিত্রে।
নীতু তার সময়কার শীর্ষ তারকাদের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তিনি তার ভবিষ্যৎ ভাশুর রণধীর কাপুর এর সঙ্গে নায়িকা হিসেবে হীরালাল পান্নালাল (১৯৭৮), ভালা মানুছ, কাছমে ভাদে, ঢোঙ্গী এবং দেরী হওয়া নিকাম্মাতে অভিনয় করেন। নিকাম্মা চলচ্চিত্রটি ১৯৭৬ সালে শুটিং শুরু হলেও ১৯৮৩ সালে মুক্তি পায়। এছাড়াও নীতু তার চাচা-শ্বশুর (তখন হবু) শশী কাপুর এর সঙ্গে দিবার (১৯৭৫) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, আরো ছিলো শঙ্কর দাদা, এক অর এক গিয়ারা এবং কালা পানি (১৯৮০)। রাজেশ খান্নার সঙ্গে মহা চোর এবং চক্রব্যুহ চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন নীতু।
বাস্তব জীবনের প্রেমিক ঋষি কাপুর এর সঙ্গে নীতু ১২টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, এগুলো হলোঃ খেল খেল মেঁ (১৯৭৫), রাফু চাক্কার (১৯৭৫), কাভি কাভি (১৯৭৬), অমর আকবর এন্থনি (১৯৭৭), দুনিয়া মেরি জেব মেঁ (১৯৭৯) এবং ১৯৭৮ এর চলচ্চিত্র পাতি পাত্নী অর ভোতে তাদের দুজনের গেস্ট এ্যাপেয়ারেন্স সফল ছিলো। ঋষির সঙ্গে অন্যান্য চলচ্চিত্র য্যাহরিলা ইনছান (১৯৭৪), যিন্দা দিল (১৯৭৫), দুছরা আদমী (১৯৭৭), আনজানে মেঁ (১৯৭৮), ঝুটা কাহিঁ কা (১৯৭৯) এবং ধান দাউলাত (১৯৮০) বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছিলো। অভিনেতা জীতেন্দ্রর সঙ্গে নীতু ধারাম ভীর (১৯৭৭), প্রিয়তমা, চোরনী, জানি দুশমান (১৯৭৯), দ্যা বার্নিং ট্রেন এবং বিনোদ খান্নার বিপরীতে ছেভাক, পারভারিশ (১৯৭৭), মাহা বাদমাশ, ইউভরাজ এবং রাজমাহাল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গে নীতু শুধু কালা পাত্থার (১৯৭৯) এবং আব কিয়া হোগা (১৯৭৭) তে অভিনয় করেন। ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৮৩ পর্যন্ত ৫৫টি চলচ্চিত্রে নীতু লিড হিরোইনের চরিত্রে অভিনয় করেন এবং তন্মধ্যে ২৫টি চলচ্চিত্রটি ছিলো বক্স অফিস হিট। নীতু চক্রব্যুহ, চোরনী এবং ঢোঙ্গী চলচ্চিত্র তিনটিকে তার প্রিয় চলচ্চিত্র বলে অভিহিত করেন।
নীতুর বয়স ছিলো ২১ যখন তিনি ঋষিকে বিয়ে করেন ১৯৮০ সালে। তিনি তার কর্মজীবনের শীর্ষের দিকে ছিলেন তখন, ১৯৭৯ সালের চলচ্চিত্র কালা পাত্থার এর জন্য তিনি 'ফিল্মফেয়ার এ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট সাপোর্টিং এ্যাকট্রেস' বিষয়শ্রেণীতে মনোনয়ন পেয়েছিলেন[4],কিন্তু তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় থেকে অবসর নেন।[1] কাপুর পরিবার এ বিয়ে হয়ে গেলে মেয়েদের অভিনয় করা নিষেধ ছিলো ঠিক যেমন রণধীর কাপুর এর পত্নী ববিতা শিবদাসানি অভিনয় ছেড়েছিলেন, নীতুও একই কারণে অভিনয় ছেড়েছেন বলে সবাই ধরে নেন কিন্তু নীতু গণমাধ্যমকে বলেন যে তিনি নিজের ইচ্ছায় অভিনয় ছেড়েছেন।[3]
নীতু ২৬ বছর আবার চলচ্চিত্র জগতে ফিরে আসেন ঋষি কাপুরের সঙ্গে লাভ আজ কাল (২০০৯), দো দুনি চার (২০১০), জাব তাক হে জান (২০১২) এবং বেশরম (২০১৩) এর মাধ্যমে। ২০১১ সালের জী সিনে এ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে নীতু আর ঋষিকে 'বেস্ট লাইফটাইম জোড়ি' পুরস্কার দেওয়া হয়।[5]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.