নাদের শাহ
পারস্যের শাহ / From Wikipedia, the free encyclopedia
নাদের শাহ আফশার বা নাদের শাহ (ফার্সি:نادر شاه افشار; নাদের কুলি বেগ হিসেবেও পরিচিত- نادر قلی بیگ বা তাহামাস কুলি বেগ- تهماسپ قلی خان) (২২ নভেম্বর ১৬৮৮[1] বা আগস্ট ৬, ১৬৯৮[2] – জুন ২০, ১৭৪৭) ইরানের শাহ হিসেবে শাসন করেছেন ও তিনি ছিলেন আফছারিদ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তার প্রখর সামরিক দক্ষতার কারণে কোন কোন ইতিহাসবিদ তাকে ইরানের নেপোলিয়ন বা আলেকজান্ডার হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।[5] নাদের শাহ তুর্কীর আফছার উপজাতীর সদস্য ছিলেন[6] যারা প্রথম শাহ ইসমাইলের সময় থেকেই সাফাভিদ রাষ্ট্রে সামরিক রসদ সরবরাহ করতেন।[7]
নাদের শাহ | |
---|---|
ইরানের শাহেনশাহ | |
রাজত্ব | ১৭৩৬–১৭৪৭ |
পূর্বসূরি | তৃতীয় আব্বাস |
উত্তরসূরি | আদিল শাহ |
জন্ম | ১৬৮৮[1] বা ১৬৯৮[2] দস্তগীর,[3] (কুরাশান, ইরান) |
মৃত্যু | ২০ জুন ১৭৪৭[4] কুচেন (কুরাশান, ইরান) |
হুতাকি আফগানদের দ্বারা বিদ্রোহ শুরু হলে ইরানে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তারা পারস্যের শাহ সুলতান হুসাইনকে সহজেই ক্ষমতাচুত্য করে। উসমানীয় ও রাশিয়া উভয়েই পারস্যের বিভিন্ন অঞ্চল দখল করে নেয়। ঠিক এরকম পরিস্থিতিতে নাদের শাহ ক্ষতায় আসেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর পারস্যের অঞ্চলগুলোকে পুনরায় একত্রিত করেন ও সেখান থেকে দখলদারীদের উচ্ছেদ করেন। তিনি এতো ক্ষমতাবান হয়ে উঠেন যে ২০০ বছর ধরে পারস্য শাসন করা সাফাভিদ রাজবংশের শেষ শাসককে পদচুত্য করার পরিকল্পনা করেন। ১৭৩৬ সালে সাফাবিধ রাজবংশের শাসককে ক্ষমতাচুত্য করে নিজেকে ইরানের শাহ হিসেবে ঘোষণা করেন। তার অনেক সামরিক অভিযান তার সাম্রাজ্য বহুগণে বৃদ্ধি করে ও চতুর্দিকে তার সাম্রাজ্যের পরিধি বাড়তে থাকে। তিনি বর্তমান ইরান, ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, ভারত, জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, রাশিয়া, ওমান ও পারস্য উপসাগরের অঞ্চলকে তার সাম্রাজ্যের অধীনে নিয়ে আসেন কিন্তু তার সেনাবাহিনী পারস্যের অর্থনীতিতে ধ্বংস ডেকে আনে।[1]
নাদের তার আদর্শ হিসেবে মধ্য এশিয়ার আরো দুজন অন্যতম বিজেতা চেঙ্গিস খান ও তৈমুর লংকে অনুসরন করেন। তিনি তাদের সামরিক ক্ষমতা, তাদের রাজত্ব পরিধির ধারা ও পরবর্তীকালে তাদেরমত নিষ্ঠুরও হয়ে উঠেন। তার এই বিজয় তাকে মধ্য-প্রাচ্যের সার্বভৌম ক্ষমতাধর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে কিন্তু ১৭৪৭ সালে তাকে হত্যা করার পরপরই তার সাম্রাজ্য ধ্বংসের দিকে যেতে থাকে। নাদের শাহকে এশিয়ার ইতিহাসের সর্বশেষ মহান সামরিক বিজেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।[8] তাকে উসমানীয় ও মুঘল সাম্রাজ্যের মাঝেও ইরানের ক্ষমতা পূণ:প্রতিষ্ঠার জন্য কৃতিত্ত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।[9][10][11]