জ্যোতির্বিজ্ঞান
গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ, ধূমকেতু ইত্যাদি মহাজাগতিক বস্তু সম্পর্কিত বিজ্ঞান / From Wikipedia, the free encyclopedia
জ্যোতির্বিজ্ঞান (ইংরেজি Astronomy প্রতিশব্দটি গ্রিক: ἀστρονομία শব্দটি থেকে উদ্ভূত) হল প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের একটি শাখা। এই শাখায় গ্রহ, প্রাকৃতিক উপগ্রহ, তারা, ছায়াপথ ও ধূমকেতু ইত্যাদি মহাজাগতিক বস্তু এবং অতিনবতারা বিস্ফোরণ, গামা রশ্মি বিচ্ছুরণ ও মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ প্রভৃতি ঘটনাবলি এবং সেগুলির বিবর্তনের ধারাটিকে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান , রসায়ন ও ভূগোল এর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ ও ব্যাখ্যা করা হয়। সাধারণভাবে বললে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে ঘটা সকল ঘটনাই জ্যোতির্বিজ্ঞানের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। ভৌত বিশ্বতত্ত্ব নামে আরেকটি পৃথক শাখাও জ্যোতির্বিজ্ঞানের সঙ্গেই সম্পর্কিত। এই শাখায় সামগ্রিকভাবে মহাবিশ্ব নিয়ে বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা করা হয়।[1]
জ্যোতির্বিজ্ঞান হল প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের প্রাচীনতম শাখাগুলির অন্যতম। লিপিবদ্ধ ইতিহাসে দেখা যায় প্রাচীন ব্যাবিলনীয়, গ্রিক, ভারতীয়, মিশরীয়, নুবিয়ান, ইরানি, চিনা, মায়া ও বেশ কয়েকটি আমেরিকান আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী নিয়মবদ্ধ প্রণালীতে রাতের আকাশ পর্যবেক্ষণ করত। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে জ্যোতির্মিতি, সেলেস্টিয়াল নেভিগেশন, পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং পঞ্জিকা প্রণয়নের মতো নানা রকম বিষয় ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের অন্তর্গত। তবে আজকাল পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানকে প্রায়শই জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের সমার্থক মনে করা হয়।[2]
পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞান দু’টি উপশাখায় বিভক্ত: পর্যবেক্ষণমূলক ও তাত্ত্বিক। জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তুগুলিকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা এবং সেই সব তথ্য পদার্থবিজ্ঞানের মূল সূত্র অনুযায়ী ব্যাখ্যা করা পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞানের কাজ। অন্যদিকে তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে এই সব বস্তু ও মহাজাগতিক ঘটনাগুলি বর্ণনার জন্য কম্পিউটার বা অন্যান্য বিশ্লেষণধর্মী মডেল তৈরির কাজ করা হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানের এই দু’টি ক্ষেত্র পরস্পরের সম্পূরক। তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণের ফলাফলগুলির ব্যাখ্যা অনুসন্ধান করে। অন্যদিকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাত্ত্বিক ফলাফলগুলির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
বিজ্ঞানের অল্প কয়েকটি শাখায় এখনও অপেশাদারেরা প্রত্যক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকেন। জ্যোতির্বিজ্ঞান এই শাখাগুলির অন্যতম। মূলত অস্থায়ী ঘটনাগুলি পর্যবেক্ষণ ও আবিষ্কারের ক্ষেত্রে অপেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। নতুন ধূমকেতু আবিষ্কারের ক্ষেত্রেও তাঁদের অবদান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।