চন্দ্রকেতুগড়
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংবলিত পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম / From Wikipedia, the free encyclopedia
চন্দ্রকেতুগড় বাংলার গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রত্নস্থল। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় এবং কলকাতা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে একদা ভাগীরথী নদীর অন্যতম প্রবাহ পদ্মা নদী (বর্তমানে অবলুপ্ত) ও বিদ্যাধরী নদীর কূল ঘেঁষে এর অবস্থান। এখানকার দেগঙ্গা (এটি দেবগঙ্গা, দ্বীপগঙ্গা বা দীর্ঘগঙ্গা নামের অপভ্রংশ) গ্রামের রাজপথের সমান্তরালে এক প্রবাহিত নদীর (পদ্মা) শুষ্কখাত এখনো দেখা যায়। এই প্রত্নস্থলটি আনুমানিক ৪০০ থেকে ৮০০ খ্রিস্টপূর্বে গড়ে উঠেছিল।
খনা-মিহিরের টিবি, চন্দ্রকেতুগড়, বেড়াচাঁপা, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার খননে প্রাপ্ত ইটের দেওয়াল। | |
অবস্থান | বেড়াচাঁপা,পশ্চিমবঙ্গ,ভারত |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ২২.৪১° উত্তর ৮৮.৪১° পূর্ব / 22.41; 88.41 |
ধরন | নগর-বসতি |
ইতিহাস | |
প্রতিষ্ঠিত | আনুমানিক ৪০০ - ৮০০ খ্রিষ্টপূর্বে |
পরিত্যক্ত | ১২০৪ সাল |
স্থান নোটসমূহ | |
মালিকানা | সরকারি |
ব্যবস্থাপনা | আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া |
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/3/39/SungaMasculine.jpg/640px-SungaMasculine.jpg)
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/3/36/SungaFecondity2.jpg/640px-SungaFecondity2.jpg)
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/49/SungaWithChild.jpg/640px-SungaWithChild.jpg)
প্রত্নস্থলটিতে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার উৎখনন পরিচালিত হয়েছে। উৎখননে প্রাপ্ত প্রত্নসামগ্রী চন্দ্রকেতুগড়ের প্রাচীনত্ব ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব প্রমাণ করে। এখানকার নিদর্শনাবলির প্রধান অংশ কলকাতার আশুতোষ সংগ্রহশালা ও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু নিদর্শন শহর এবং শহরের বাইরে ব্যক্তিগত সংগ্রহেও রয়েছে। চন্দ্রকেতুগড়ে প্রাপ্ত পঞ্চচূড় অপ্সরা, নগরশ্রেষ্ঠীর ও গজদন্ত শিল্প ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নামি সংগ্রহালয়ে রয়েছে।
প্রত্নস্থলটিতে বর্তমানে দেবালয়, হাদীপুর, বেড়াচাঁপা, শানপুকুর, ঝিক্রা ও ইটাখোলা গ্রামের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে প্রাচীন নগর-বসতির চিহ্ন পাওয়া যায়। মাটির তৈরি বিশাল দুর্গপ্রাচীর প্রত্নস্থলটির মূল কেন্দ্র ঘিরে আছে; যা আকৃতিতে আয়তাকার এবং মোটামুটিভাবে এক বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। মাটির তৈরি এই দুর্গপ্রাচীরের অভ্যন্তরেই চন্দ্রকেতুগড়, খনা-মিহিরের ঢিবি, ইটাখোলা এবং নুনগোলা ইত্যাদি স্থানে খননের মাধ্যমে প্রাচীন ভারতের নগর-সভ্যতার পাঁচটি পৃথক সাংস্কৃতিক স্তর বা পর্বের সন্ধান পাওয়া গেছে।
স্থানটির "খনা-মিহিরের ঢিবি" অংশের সঙ্গে প্রাচীন ভারতীয় রাজা বিক্রমাদিত্যের সভারত্ন বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহমিহির এবং তার পুত্রবধূ খনার নাম যুক্ত; লোকপ্রবাদ যে, এখানেই খনা ও বরাহমিহিরের বাসস্থান ছিল। এছাড়া, এখানে "দেবালয়"-এর রাজা চন্দ্রকেতুর নামে একাধিক কিংবদন্তি প্রচলিত আছে (দ্রষ্টব্য: পীর গোরাচাঁদ)।
বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের মতে, চন্দ্রকেতুগড়ই ছিল সম্ভবত ‘পেরিপ্লাস’ এবং টলেমি সূত্রে উল্লিখিত বিখ্যাত প্রাচীন সমুদ্র-বন্দর 'গঙ্গারিডাই'-এর রাজধানী বা 'গাঙ্গে' বন্দর। এই প্রত্নস্থলটির সঙ্গে জলপথে প্রাচীন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল বিশেষত রোমের বাণিজ্যিক যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হয় ।[1]