Loading AI tools
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের যুদ্ধ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
গরীবপুরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২০-২১ নভেম্বরে পাকিস্তান ও মুক্তিবাহিনীর মধ্যে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে মুক্তিবাহিনীর সাথে এ যুদ্ধে যোগ দেয় এবং এ বাহিনীর নাম দেয়া হয় মিত্র বাহিনী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম অংশ এই যুদ্ধ।
এ যুদ্ধের অন্যতম ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কিত অংশ হলো বয়রা প্রধানের উপর বিমান যুদ্ধ, যা মূলত বয়রার যুদ্ধ, যেখানে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তান বিমানবাহিনীর মারণাস্ত্র সফলভাবে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। ভারতের পশ্চিম প্রান্তে যুদ্ধ শুরু হবার প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের ইন্দো-পাকিস্তান যুদ্ধ নামে পরিচিত) মূলত এই সংঘর্ষ ঘটে। প্রধান অঞ্চল গুলো দখল নিয়ে এবং বারংবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীদের মনোবল ভেঙে, মুক্তিবাহিনী এই যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কে পরাস্ত্র করে।
দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ চিন্তাভাবনা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদী দের কঠোর হাতে দমনের পর, কতক স্বাধীনতা সৈনিক মিলিতভাবে গেরিলা বাহিনী তৈরি করে। মুক্তিবাহিনী নামে পরিচিত এই বাহিনী যুদ্ধে ভারত হতে বিভিন্ন সাহায্য লাভ করে। পাক সেনাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক বিজয় লাভের পর এই অঞ্চলে তুলনামূলক শান্তি আসে এবং পরবর্তিতে ভারতীয় সাহায্যের মাধ্যমে স্রোত সম্পূর্ণ বদলে যায়। ভারতকোষ সেনাবাহিনী অতঃপর এই অঞ্চলে প্রবেশ করে এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সৈন্য মোতায়েন করে।
বয়রা প্রধান অঞ্চল পূর্ব পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের গরীবপুর গ্রামের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। এটি উভয় দেশের সংযোগকারী একটি অঞ্চল। যশোর থেকে ভারতে একটি হাইওয়ে থাকায় এ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
২১ নভেম্বর, ৪৫ ক্যালিভারির ১৪ পিটি-৭৬ ট্যাংক এর একটি স্কোয়াড্রনের সহায়তায় ১৪-পাঞ্জাব ব্যাটেলিয়ন গরীবপুরের পাকিস্তানি দুর্গের ভেতরে প্রবেশ করে। যদিও এটি একটি আকস্মিক আক্রমণ ছিল, তবে আগের দিনে ঘটা উভয় পক্ষের পেট্রোল সৈন্যদের দাঙ্গার কারণে পাকসেনারা ঘটতে যাওয়া এই আক্রমণ সম্পর্কে যথেষ্ট সতর্ক ছিল। এম২৪ শ্যাফে নামক হালকা ট্যাংক দ্বারা সজ্জিত ৩য় স্বাধীন সশস্ত্র স্কোয়াড্রনের সহায়তায় ১০৭ পদাতিক বিগ্রেড এই আক্রমণ তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিহত করে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারতীয়দের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত ছিল। তবে পাঞ্জাব ব্যাটেলিয়ন যুদ্ধ, আগ্রাসী মনোভাব আর কাউন্টার এটাকের জন্য সুপরিচিত ছিল। রিকয়েলবিহীন রাইফেল নিয়ে প্রস্তুত থাকা পদাতিক বাহিনী কে সংরক্ষিত জায়গায় রেখে পাকিস্তানি আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য ভারতীয় বাহিনী ট্যাংক পাঠায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাক বাহিনীর শিবির ধ্বংস করে ফেলে। পাক বাহিনী ঘন কুয়াশার জন্য এই তাৎক্ষনিক আক্রমণের ভয়াবহতা বুঝতে পারল না। তবে পাক বাহিনী এ যুদ্ধ অব্যহত রাখতে ভারতীয় শিবিরে ট্যাংক এবং পদাতিক বাহিনী প্রেরণ করে। তবে এবারো ভারতীয় বাহিনীর কৌশলের কাছে পাক বাহিনী পরাজিত হয়। সেই সাথে তাদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। দুপুরের মধ্যে ১১টির ও বেশি ট্যাংক ধ্বংস হয়, ৩টি ট্যাংক চলমান হিসেবে আটক হয় এবং ৬ টি পিটি-৭৬ ট্যাংক নিয়ে পাক বাহিনী পালিয়ে যায়। ১০৭ বিগ্রেডে কে হারাতে হয় বিপুল সৈন্য। যার ফলে এটি তার মূল শক্তি হারায়। অন্যদিকে ভারতীয় বাহিনীর মাত্র ৪০ জন শহীদ হন।
তবে যুদ্ধের শেষ এখনো বাকি ছিল। পাক বাহিনী পাকিস্তান বিমান বাহিনীর কাছে সাহায্য চেয়ে পাঠায় এবং এই আহবানে পাকিস্তান বিমান বাহিনী ভারতীয় শিবিরে আক্রমণ করে সাহায্যের জানান দেয়। দুপুর ৩:০০ টার পর আকাশ পথে সহায়তা দেয়ার জন্য পাক বিমান বাহিনী তিনটি এফ-৮৬ স্যব্রেস এর মেশিনগান এবং রকেটের সাহায্যে ভারতীয় ঘাটিতে আক্রমণ করে।
গরিবপুরের যুদ্ধের ঘটনা অবলম্বনে বলিউড নির্মাতা রাজা কৃষ্ণা মেনন তৈরী করেছেন চলচ্চিত্র পিপ্পা। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর ‘পিপ্পা’ সরাসরি অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওতে মুক্তি পায়।[1]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.