এক্লাম্পসিয়া
From Wikipedia, the free encyclopedia
এক্লাম্পসিয়া(ইংরেজি: Eclampsia) প্রি-এক্লাম্পসিয়ায় আক্রান্তগর্ভবতী মহিলাদের খিঁচুনি হওয়াকে এক্লাম্পসিয়া বলে।[1] প্রি-এক্লাম্পসিয়া হলোগর্ভবতী মহিলাদের এমন এক রোগ যেখানে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং হয় প্রস্রাবেরসাথে প্রচুর প্রোটিন নির্গত হয় নতুবা অন্যান্য অঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়।[7][8] এটা শুরু হতে পারে সন্তান প্রসবের পূর্বে, প্রসবের সময় বা এর পরে।[1] প্রায়শ এটা গর্ভাবস্থার দ্বিতীয়ার্ধে ঘটে।[1] টনিক-ক্লনিক ধরনের খিঁচুনি হয় যা প্রায় এক মিনিট স্থায়ী হয়।[1] খিঁচুনির পরে সাধারণত চিত্তবিভ্রম বা গাঢ় নিদ্রাচ্ছন্নতা ঘটে।[1] জটিলতাসমূহের মধ্যে রয়েছে অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া,মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ,বৃক্কীয় অক্ষমতা,হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধহয়ে যাওয়া ইত্যাদি। [1] গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপজনিত অনেক রোগরয়েছে, এক্লাম্পসিয়া ও প্রি-এক্লাম্পসিয়া তারই অংশ।[1]
এক্লাম্পসিয়া | |
---|---|
বিশেষত্ব | ধাত্রীবিদ্যা |
লক্ষণ | খিঁচুনি, উচ্চ রক্তচাপ [1] |
জটিলতা | অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ, বৃক্কীয় অক্ষমতা, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া।[1] |
রোগের সূত্রপাত | গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহ পরে।[1] |
ঝুঁকির কারণ | প্রি-এক্লাম্পসিয়া[1] |
প্রতিরোধ | অ্যাসপিরিন, পরিপূরক খাদ্য হিসেবে ক্যালসিয়াম খাওয়া, পূর্ববর্তী উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা করা।[2][3] |
চিকিৎসা | ম্যাগনেশিয়াম সালফেট, হাইড্রালাজিন, জরুরি সন্তান প্রসব।[1][4] |
আরোগ্যসম্ভাবনা | মৃত্যুর ঝুঁকি ১%।[1] |
সংঘটনের হার | ১.৪% সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে।[5] |
মৃতের সংখ্যা | ৪৬,৯০০ গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগসমূহ (২০১৫)[6] |
উচ্চ ঝুঁকিতে যারা রয়েছে তাদের অ্যাসপিরিন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, এছাড়া পরিপূরক খাদ্য হিসেবে ক্যালসিয়াম খাওয়া, পূর্ববর্তী উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা করার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করার সুপারিশ করা হয়।[2][3] গর্ভাবস্থায় শারীরিক ব্যায়াম কিছুটা উপকারী হতে পারে।[1] শিরাপথে বা মাংসপেশিতে ম্যাগনেশিয়াম সালফেটের ব্যবহার এক্লাম্পসিয়াতে ফলদায়কও নিরাপদ।[4][9] এটা উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয়দেশের জন্যই সত্য।[1] অন্যান্য চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ যেমন হাইড্রালাজিনের প্রয়োগ ও জরুরি ভিত্তিতে যোনিপথে বা সিজারিয়ান সেকশন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করানো।[1]
প্রি-এক্লাম্পসিয়া হয় ৫% ক্ষেত্রে ও এক্লাম্পসিয়া হয় প্রায় ১.৪% ক্ষেত্রে।[5] উন্নত বিশ্বে উন্নত চিকিৎসাসেবার কারণে এর হার অনেক কম। সেখানে প্রায় প্রতি ২০০০ সন্তান প্রসবে একবার এই ঘটনা ঘটে।[1] গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগই হল গর্ভকালীন মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। [10] ২০১৫ সালে এই রোগে প্রায় ৪৬,৯০০ জনের মৃত্যু হয়।[6] এক্লাম্পসিয়ায় আক্রান্ত মহিলাদের মধ্যে প্রায় এক শতাংশ মৃত্যুবরণ করে।[1] এক্লাম্পসিয়া শব্দটির উৎপত্তি গ্রিক ভাষা থেকে সেখানে এর অর্থ বিজলি চমক বা বজ্র।[11] খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে হিপোক্রেটিস প্রথম এই রোগের বর্ণনা দেন।[11]