Loading AI tools
ক্রিকেট মাঠে অবস্থান উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইকেট-রক্ষক বা উইকেট-কিপার রাজকীয় খেলা হিসেবে পরিচিত ক্রিকেটের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। তিনি ক্রিকেট খেলায় ফিল্ডিংয়ে নিয়োজিত একজন খেলোয়াড়, যিনি উইকেট কিংবা স্ট্যাম্পের পিছন দিকে অবস্থান গ্রহণ করে বোলার কর্তৃক প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানের কাছে ছোড়া বল সংগ্রহ করে রান সংগ্রহ করতে না দিয়ে পুনরায় অন্যান্য ক্রিকেটার অথবা বোলারের কাছে ফেরত পাঠান। তার প্রধান কাজই হচ্ছে বোলার কর্তৃক নিক্ষিপ্ত বল সংগ্রহ, ব্যাটসম্যানের ব্যাটের কিনারায় স্পর্শকৃত বল হাতে মুঠোয় রাখা, উইকেট ভেঙ্গে ফেলা, ফিল্ডার কর্তৃক উইকেট লক্ষ্য করে ছোড়া বলের সাহায্যে রান আউট করা ইত্যাদি। ফিল্ডিংয়ে অবস্থানকারী দলের একমাত্র সদস্য হিসেবে গ্লাভস ও বহিরাংশে পায়ের গার্ড ব্যবহারের অনুমতি পেয়ে থাকেন।[1] এছাড়াও প্রয়োজনে তিনি বলের আঘাত থেকে আত্মরক্ষার্থে হেলমেট পরিধান করে থাকেন।[2] উইকেট-রক্ষক উইকেটের পিছনে অবস্থান করলেও দলের প্রয়োজনে অধিনায়ক কর্তৃক আহুত হয়ে মাঝে-মধ্যে বোলিং করারও অনুমতি পেয়ে থাকেন। এ সময় দলের অন্য কোন একজন সদস্য সাময়িকভাবে উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে থাকেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দুইজন উইকেট-রক্ষক হ্যাট্রিক করার গৌরব অর্জন করেছেন। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে বাংলা বনাম ওড়িষ্যা’র মধ্যকার খেলায় প্রবীর সেন এবং ১৯৬৫ সালে ওয়ারউইকশায়ার বনাম এসেক্সের মধ্যকার খেলায় অ্যালান স্মিথ এ বিরল কীর্তিগাঁথা রচনা করেন।
উইকেট-রক্ষকের ভূমিকার কথা ক্রিকেটের আইনের ৪০ ধারায় বর্ণিত হয়েছে। টেস্টখেলুড়ে দেশের বিখ্যাত কয়েকজন উইকেট-রক্ষক হচ্ছেন - খালেদ মাসুদ পাইলট (বাংলাদেশ), সৈয়দ কিরমানী ও মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত), মঈন খান (পাকিস্তান), জেফ ডুজন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), ইয়ান হিলি ও রড মার্শ (অস্ট্রেলিয়া), জ্যাক রাসেল (ইংল্যান্ড) প্রমুখ।
উইকেট-রক্ষকের প্রধান কাজ হচ্ছে ব্যাটসম্যানকে অতিক্রমণকারী বলকে থামানো। থামাতে না পারলে ক্রিজে অবস্থানকারী ব্যাটসম্যানদ্বয় প্রান্ত বদল করে বাই হিসেবে রান সংগ্রহ করতে পারেন। তিনি সাধারণত বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে নিম্নোক্তভাবে ব্যাটসম্যানকে আউট করার চেষ্টা চালান:
বোলারের বোলিংয়ের ধরন অনুযায়ী উইকেটের ডানে-বামে, দূরে-কাছে অবস্থান করেন তিনি। ফাস্ট বোলিংয়ের সময় তিনি বেশ দূরে থাকেন। এছাড়াও ধীরগতির কিংবা মিডিয়াম বোলিং বা স্পিন বোলিংয়ের সময় উইকেটের বেশ কাছে থাকেন। শুধুই ব্যাটসম্যান কিংবা বোলারের মতো উইকেট-রক্ষককেও বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু আধুনিককালের ক্রিকেটে একজন উইকেট-রক্ষককে কমপক্ষে মাঝারীসারির ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়। যদি কোন-কারণে উইকেট-রক্ষক সম্মুখসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন তাহলে তিনি অনানুষ্ঠানিকভাবে উইকেট-রক্ষক/ব্যাটসম্যান নামে দর্শকমহলের কাছে পরিচিতি পান।
ক্রিকেটের আইনের ২নং ধারায় একজন অতিরিক্ত খেলোয়াড় অসুস্থ বা আঘাতপ্রাপ্তিজনিত কারণে মাঠে নামতে পারেন কিন্তু উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারবেন না।[3]
কখনো কখনো এ নিয়মের ব্যতয় ঘটতে পারে। সেজন্যে ব্যাটিংয়ে অংশগ্রহণকারী দলের অধিনায়কের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হতে হয়। কিন্তু ক্রিকেটের আইনে এধরনের চুক্তির কথকতা উল্লেখ নেই। উদাহরণস্বরূপ: ১৯৮৬ সালে লর্ডসে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার টেস্টের প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের উইকেট-রক্ষক ব্রুস ফ্রেঞ্চ আহত হলে আরও তিনজন (বিল অ্যাথে, বব টেলর, ববি পার্কস) উইকেট-রক্ষককে দায়িত্বভার নিতে হয়।
অনেক সময় উইকেট-রক্ষক দলের অধিনায়ক কিংবা সহ-অধিনায়কেরও দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিম, ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি সফলতার সাথে নিজ নিজ দলকে পরিচালনা করছেন। সচরাচর উইকেট-রক্ষক ইনিংসের প্রতিটি বলের সাথে নিজেকে জড়িয়ে থাকেন যা অন্যান্য ফিল্ডারকে করতে হয় না। বোলারের বোলিংকে উৎসাহিত করতে তিনি কথা বলে থাকেন যা অনেকসময় ব্যাটসম্যানের কাছে বিরক্তিকর বলে মনে হয় যা স্ল্যাজিং নামে পরিচিত।
নিম্নবর্ণিত ১০জন উইকেট-রক্ষক টেস্ট ক্রিকেটে শীর্ষস্থান দখল করে আছেন:[4]
শীর্ষস্থানীয় টেস্ট উইকেট-রক্ষক১ | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|
নং | খেলোয়াড়ের নাম | দলের নাম | খেলা | কট | স্ট্যাম্পড | সর্বমোট আউট |
১ | মার্ক বাউচার | দক্ষিণ আফ্রিকা | ১৪৭ | ৫৩২ | ২৩ | ৫৫৫ |
২ | অ্যাডাম গিলক্রিস্ট | অস্ট্রেলিয়া | ৯৬ | ৩৭৯ | ৩৭ | ৪১৬ |
৩ | ইয়ান হিলি | অস্ট্রেলিয়া | ১১৯ | ৩৬৬ | ২৯ | ৩৯৫ |
৪ | রড মার্শ | অস্ট্রেলিয়া | ৯৬ | ৩৪৩ | ১২ | ৩৫৫ |
৫ | এমএস ধোনি | ভারত | ৯০ | ২৫৬ | ৩৮ | ২৯৪ |
৬ | ব্রাড হাড্ডিন | অস্ট্রেলিয়া | ৬৬ | ২৬২ | ৮ | ২৭০ |
৭ | জেফ ডুজন | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ৮১ | ২৬৫ | ৫ | ২৭০ |
৮ | অ্যালান নট | ইংল্যান্ড | ৯৫ | ২৫০ | ১৯ | ২৬৯ |
৯ | ম্যাট প্রায়র | ইংল্যান্ড | ৭৯ | ২৪৩ | ১৩ | ২৫৬ |
১০ | অ্যালেক স্টুয়ার্ট | ইংল্যান্ড | ১৩৩ | ২২৭ | ১৪ | ২৪১ |
ছক নির্দেশনামা
নিম্নবর্ণিত উইকেট-রক্ষকগণ দুইশত বা ততোধিকবার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আউট করেছেন:[5]
শীর্ষস্থানীয় ওডিআই উইকেট-রক্ষক১ | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|
নং | খেলোয়াড়ের নাম | দলের নাম | খেলা | কট | স্ট্যাম্পড | সর্বমোট আউট |
১ | কুমার সাঙ্গাকারা | শ্রীলঙ্কা | ৪০৪ | ৩৮৩ | ৯৯ | ৪৮২ |
২ | অ্যাডাম গিলক্রিস্ট | অস্ট্রেলিয়া | ২৮৭ | ৪১৭ | ৫৫ | ৪৭২ |
৩ | মার্ক বাউচার | দক্ষিণ আফ্রিকা | ২৯৫ | ৪০২ | ২২ | ৪২৪ |
৪ | মহেন্দ্র সিং ধোনি২* | ভারত | ৩৩১ | ৩০৯ | ১১৫ | ৪২৪ |
৫ | মঈন খান | পাকিস্তান | ২১৯ | ২১৪ | ৭৩ | ২৮৭ |
৬ | ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম | নিউজিল্যান্ড | ২৬০ | ২২৭ | ১৫ | ২৪২ |
৭ | ইয়ান হিলি | অস্ট্রেলিয়া | ১৬৮ | ১৯৪ | ৩৯ | ২৩৩ |
৮ | রশিদ লতিফ | পাকিস্তান | ১৬৬ | ১৮২ | ৩৮ | ২২০ |
৯ | মুশফিকুর রহিম২* | বাংলাদেশ | ২১৫ | ১৭৬ | ৪৪ | ২২০ |
১০ | রমেশ কালুবিতরাণা | শ্রীলঙ্কা | ১৮৯ | ১৩১ | ৭৫ | ২০৬ |
ছক নির্দেশনামা
নিম্নবর্ণিত ১০জন উইকেট-রক্ষক টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শীর্ষস্থান দখল করে আছেন:[6]
শীর্ষস্থানীয় টি২০আই উইকেট-রক্ষক১ | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|
নং | খেলোয়াড়ের নাম | দলের নাম | খেলা | কট | স্ট্যাম্পড | সর্বমোট আউট |
১ | মহেন্দ্র সিং ধোনি২* | ভারত | ৯৩ | ৫৪ | ৩৩ | ৮৭ |
২ | কামরান আকমল | পাকিস্তান | ৫৪ | ২৮ | ৩২ | ৬০ |
৩ | দিনেশ রামদিন২* | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ৬৫ | ৩৬ | ২০ | ৫৬ |
৪ | মুশফিকুর রহিম২* | বাংলাদেশ | ৭৪ | ২৯ | ২৬ | ৫৫ |
৫ | মোহাম্মাদ শেহজাদ২* | আফগানিস্তান | ৬৩ | ২৬ | ২৮ | ৫৪ |
৬ | কুমার সাঙ্গাকারা | শ্রীলঙ্কা | ৫৬ | ২৫ | ২০ | ৪৫ |
৭ | কুইন্টন ডি কক২* | দক্ষিণ আফ্রিকা | ৩২ | ৩০ | ৯ | ৩৯ |
৮ | সরফরাজ আহমেদ২* | পাকিস্তান | ৪৮ | ২৮ | ৮ | ৩৩ |
৯ | ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম | নিউজিল্যান্ড | ৭১ | ২৪ | ৮ | ৩২ |
১০ | লুক রঙ্কি | নিউজিল্যান্ড | ৩৩ | ২৪ | ৬ | ৩০ |
ছক নির্দেশনামা
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.