Loading AI tools
ভারতের একটি ইসলামি সংগঠন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ইমারত শরিয়াহ (উর্দু: امارت شرعیہ; পূর্ণনাম: ইমারত শরিয়াহ বিহার, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড) ভারতের একটি ইসলামি সংগঠন।[2] ধরন অনুযায়ী এটি ভারতের অদ্বিতীয় সংগঠন।[3] এর কার্যক্রম প্রধানত বিহার, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড জুড়ে বিস্তৃত। বিহারের রাজধানী পাটনার ফুলওয়ারী শরিফে এর প্রধান কেন্দ্র অবস্থিত। ১৯২১ সালে আবুল মুহাসিন মুহাম্মদ সাজ্জাদ ইসলামের মূল নীতি এবং শরিয়াহ আইনের ভিত্তিতে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের সাথে যুক্ত বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে রয়েছেন: মুহাম্মদ আলি মুঙ্গেরি, মিন্নাতুল্লাহ রহমানি, ওয়ালি রহমানি, মুজাহিদুল ইসলাম কাসেমি, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
امارت شرعیہ | |
গঠিত | ১৯২১ |
---|---|
প্রতিষ্ঠাতা | আবুল মুহাসিন মুহাম্মদ সাজ্জাদ |
আইনি অবস্থা | ধর্মীয় সংগঠন |
উদ্দেশ্য | শরিয়াহ আইনের প্রচার ও প্রসার, শিক্ষা, কল্যাণ, ত্রাণ, পুনর্বাসন |
সদরদপ্তর | ফুলওয়ারী শরিফ, পাটনা, বিহার, ভারত |
যে অঞ্চলে কাজ করে | ভারত-বিহার, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড |
মহাসচিব | আনিসুর রহমান কাসেমি |
আমিরে শরিয়ত | আহমদ ওয়ালি ফয়সাল রহমানি[1] |
প্রকাশনা | সাপ্তাহিক নকিব |
ওয়েবসাইট | www |
১৯২১ সালে আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনের মাধ্যমে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। সম্মেলনে বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকে বহু ইসলামি পণ্ডিত ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। তখন থেকে এই সংগঠনটি ইসলাম প্রচারের জন্য সেবা প্রদানের পাশাপাশি মুসলিমদের শরিয়াহ আইনের অধীনে সামষ্টিক জীবন পরিচালনার জন্য অনুপ্রাণিত ও নির্দেশনা প্রদান এবং শিক্ষা, কল্যাণ, ত্রাণ এবং পুনর্বাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছে।
সংগঠনটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:[4]
নিম্নোক্ত বিভাগসমূহের মাধ্যমে সংগঠন কর্তৃক গৃহীত সমগ্র কার্যক্রম পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রিত হয়:[5]
এটি সংগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলির মধ্যে একটি। এই বিভাগের মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলিম জনসংখ্যার জরিপ করা হয় এবং গ্রাম/মহল্লার সাথে পরামর্শ করে প্রতিটি গ্রামের জন্য আমীরে শরিয়ত কর্তৃক "নকিব" নামে একজন গ্রাম-প্রধান নিয়োগ করা হয়। নির্দিষ্ট গ্রামের মুসলমানদের একত্রিত রাখা, শরিয়াহ আইনের আলোকে ধর্মীয় ও অন্যান্য সমস্ত কার্যক্রমকে পরিচালনার জন্য জনসাধারণকে উদ্ভুদ্ধ করা তার প্রধান কাজ।
এটিও সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর একটি। এর মাধ্যমে মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে মুবাল্লিগরা ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকে। এই বিভাগের অধীনে এক শতাধিক বেতনভুক্ত মুবাল্লিগ রয়েছে।
এই বিভাগ প্রতিষ্ঠা সংগঠনটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। একে দারুল কাজাও বলা হয়। এর প্রধান কেন্দ্র পাটনার ইমারত শরিয়াহ’র কার্যালয়ে অবস্থিত। একজন প্রধান কাজী ও ৬ জন অতিরিক্ত কাজীর মাধ্যমে এটি পরিচালিত হয়। বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার বিভিন্ন জেলায় এর ৫০টি শাখা রয়েছে। এই বিভাগে মুজাহিদুল ইসলাম কাসমি দীর্ঘ ৪০ বছর প্রধান কাজী ছিলেন। বর্তমানে জসিমউদ্দিন রহমানি প্রধান কাজী। দেশের ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ বিচারব্যবস্থার তুলনায় স্বচ্ছ বিচারিক কাজের জন্য এটি বেশিরভাগ মুসলমানদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি কেন্দ্রে প্রায় ২০ হাজার এবং শাখাগুলোতে সমপরিমাণ মামলা নিষ্পত্তি করেছে। তবে দেশের বিচারব্যবস্থার সমান্তরাল আরেকটি বিচারিক প্রক্রিয়া চালানোর জন্য এটি সমালোচিত।[6]
এই বিভাগে যোগ্যতা সম্পন্ন মুফতিদের মাধ্যমে মুসলমানদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান প্রদান করা হয়। এ পর্যন্ত এই বিভাগের মাধ্যমে প্রায় ৫ লক্ষ ফতোয়া জারি করা হয়েছে।
এটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে এবং এজাতীয় কাজের জন্য জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করে।
আধুনিক বিশ্বের চাহিদা মতে ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আধুনিক ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চতুর্থ আমিরে শরিয়ত মিন্নাতুল্লাহ রহমানির সময়ে এটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এই বিভাগের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষায় মুসলমান ও অমুসলিমদের মধ্যে জাগরণ আনতে মৌলিক ইসলামি জ্ঞান, শরিয়াহ আইন এবং অন্যান্য বিষয়ে পুস্তক-পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়। সংগঠনের মুখপত্র সাপ্তাহিক নকিব এই বিভাগের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
এটি সংগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। সংগঠনের জন্য ফান্ড সংগ্রহ, তা রক্ষণাবেক্ষণ ও বিতরণ করা এই বিভাগের কাজ।
সংগঠনের প্রধানকে বলা হয় আমিরে শরিয়ত, তার সহকারী হিসেবে থাকেন নায়েবে আমিরে শরিয়ত। সাংগঠনিক কাঠামোতে ৩টি বোর্ড রয়েছ। যথা:[7]
এটি সংগঠনের সর্বোচ্চ বোর্ড। বিশিষ্ট মুসলিম বুদ্ধিজীবী, উলামা, আইনবিদ এবং সামাজিক কর্মীদের সমন্বয়ে এটি গঠিত। এর সদস্য সংখ্যা ৮৫১ জন। সাধারণত দুই বছরের মধ্যে অন্তত একবার এর সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে আমিরে শরিয়ত প্রয়োজন অনুসারে এটি একাধিকবার আহ্বান করতে পারে।
এই বোর্ডের প্রধান কাজ হল আয়-ব্যয় পরীক্ষা করা এবং বিভিন্ন দপ্তরের কাজকর্ম পর্যালোচনা করা এবং উন্নয়ন কাজ করা। এটি বিভিন্ন বিভাগের কার্যক্রমের বিষয়ে বাজেট এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনুমোদন করে। প্রতি বছরে অন্তত একবার এই বোর্ডের সভা আহ্বান করা হয়।
৩১ জন সদস্য নিয়ে এই বোর্ড গঠিত। মজলিসে শূরা কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ দেখভাল করা এই বোর্ডের দায়িত্ব।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.