অ্যান্টার্কটিকা
বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ / From Wikipedia, the free encyclopedia
অ্যান্টার্কটিকা (বাংলা উচ্চারণ: [ænʈarkʈika]; ইংরেজি: Antarctica /ænˈtɑːrktɪkə/ (শুনুনⓘ)[lower-alpha 1] পৃথিবীর দক্ষিণতম ও সবচেয়ে কম জনবহুল মহাদেশ। এটি কুমেরু বৃত্তের প্রায় সম্পূর্ণভাবে দক্ষিণে অবস্থিত এবং চারিদিকে দক্ষিণ মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত, যা কুমেরু মহাসাগর নামেও পরিচিত। এই মহাদেশটির উপর ভৌগোলিক দক্ষিণ মেরু অবস্থিত। অ্যান্টার্কটিকা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ এবং ইউরোপ মহাদেশের তুলনায় ৪০% বড়। এর আয়তন ১,৪২,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৫৫,০০,০০০ বর্গমাইল)। অ্যান্টার্কটিকার বেশিরভাগ ভূখণ্ড বরফাবৃত, যার গড় বেধ ১.৯ কিলোমিটার (১.২ মাইল)।
আয়তন | ১,৪২,০০,০০০ কিমি২ ৫৫,০০,০০০ মা২[1] |
---|---|
জনসংখ্যা | ১,৩০০ থেকে ৫,১০০ (ঋতুভেদে) |
জনঘনত্ব | ০.০০০০৯/কিমি২ থেকে ০.০০০৩৬/কিমি২ (ঋতুভেদে) |
দেশসমূহ | ৭টি দাবি করা রাজ্যক্ষেত্র |
সময় অঞ্চলসমূহ | সব সময় অঞ্চল |
ইন্টারনেট টিএলডি | .একিউ |
ইউএন এম৪৯ কোড | ০১০ |
সাধারণভাবে অ্যান্টার্কটিকা অন্যান্য মহাদেশের তুলনায় শীতল, শুষ্ক ও বায়ুপ্রবাহপূর্ণ এবং এর গড় উচ্চতা সর্বোচ্চ। এটি মূলত একটি মেরু মরুভূমি, যেখানে উপকূলীয় এলাকার বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২০০ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি)-এর অধিক এবং অভ্যন্তরে বৃষ্টিপাত অনেক কম। বিশ্বের প্রায় ৭০% স্বাদু পানির ভাণ্ডার এখানে হিমায়িত অবস্থায় পাওয়া যায়, এবং একে গলালে বিশ্বের সমুদ্র সমতল প্রায় ৬০ মিটার (২০০ ফুট) বেড়ে যাবে। অ্যান্টার্কটিকায় পৃথিবীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা −৮৯.২ °সে (−১২৮.৬ °ফা) রেকর্ড করা হয়েছে। গ্রীষ্মকালে উপকূলীয় এলাকার তাপমাত্রা ১০ °সে (৫০ °ফা) পর্যন্ত বাড়তে পারে। স্থানীয় প্রাণী প্রজাতির মধ্যে মাইট, সুতাকৃমি, পেঙ্গুইন, সামুদ্রিক সীল ও টারডিগ্রেড অন্তর্গত। যেখানে গাছপালা পাওয়া যায়, সেখানে উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে মূলত মস ও লাইকেন পাওয়া যায়।
সম্ভবত ১৮২০ সালে ফাবিয়ান গটলিব ফন বেলিংসহাউসেন ও মিখাইল লাজারেফের নেতৃত্বে একটি রুশ অভিযানের সময়ে অ্যান্টার্কটিকার বরফের স্তূপ প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল। পরবর্তী দশকে ফরাসি, মার্কিন ও ব্রিটিশ অভিযানে মাধ্যমে অ্যান্টার্কটিকার আরও অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছিল। ১৮৯৫ সালে এক নরওয়েজীয় দল প্রথম নিশ্চিতভাবে অবতরণ করেছিল। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে মহাদেশের অভ্যন্তরে কিছু অভিযান সম্পন্ন হয়েছিল। ১৯০৯ সালে ব্রিটিশ অভিযাত্রীরা প্রথম চৌম্বক দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছিল, এবং ১৯১১ সালে নরওয়েজীয় অভিযাত্রীরা প্রথম ভৌগোলিক দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছিল।
অ্যান্টার্কটিকা প্রায় ৩০টি দেশ দ্বারা শাসিত, যার সবকটিই ১৯৫৯-এর অ্যান্টার্কটিক চুক্তি ব্যবস্থার অংশীদারি। চুক্তির শর্তাবলী অনুযায়ী, সামরিক কার্যকলাপ, খনি, পারমাণবিক বিস্ফোরণ ও পারমাণবিক বর্জ্য নিষ্পত্তি সবই অ্যান্টার্কটিকায় নিষিদ্ধ। পর্যটন, মাছধরা ও গবেষণা অ্যান্টার্কটিকার প্রধান মানব কার্যকলাপ। গ্রীষ্মের মরশুমে প্রায় ৫,০০০ জন লোক গবেষণা কেন্দ্রে বসবাস করে, যা শীতকালে প্রায় ১,০০০-এ নেমে আসে। মহাদেশটির দূর অবস্থানের সত্ত্বেও দূষণ, ওজোনস্তর ক্ষয় ও জলবায়ু পরিবর্তনের মাধ্যমে মানব কার্যকলাপ অ্যান্টার্কটিকায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করেছে।