Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ভারতীয় অ্যান্টার্কটিকা কর্মসূচি ভারত সরকারের ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের জাতীয় অ্যান্টার্কটিকা ও মহাসাগর গবেষণা কেন্দ্রের অধীনস্থ একটি বহুমুখী, বহু-সংস্থা-কেন্দ্রিক কর্মসূচি। ১৯৮১ সালের ভারতের প্রথম অ্যান্টার্কটিকা অভিযানের মাধ্যমে এই কর্মসূচির সূচনা ঘটে।[1] ভারত অ্যান্টার্কটিকা চুক্তিতে সাক্ষর করলে পরে এই কর্মসূচি আন্তর্জাতিক অনুমোদন পায়। এরপর ১৯৮৩ সালে ভারতের প্রথম অ্যান্টার্কটিকা গবেষণা মূলকেন্দ্র দক্ষিণ গঙ্গোত্রী স্থাপিত হয়।[1] ১৯৯০ সালে কেন্দ্রটি মৈত্রী গবেষণা কেন্দ্রে সরে আসে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ভারত অ্যান্টার্কটিকায় বায়ুমণ্ডলীয়, জৈব, ভূবৈজ্ঞানিক, রাসায়ণিক ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত গবেষণা চালাচ্ছে। ২০১০ সালের ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত ভারত অ্যান্টার্কটিকায় ৩০টি অভিযান চালিয়েছে। ভারত অ্যান্টার্কটিকায় ভারতী নামে আরও একটি অতিরিক্ত গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এর ফলে ভারত অ্যান্টার্কটিকায় একাধিক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনকারী নয়টি প্রধান রাষ্ট্রের একটির স্বীকৃতি পায়।[2]
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা–হাইড্রোমেটেরোলজিক্যাল সেন্টার অফ রাশিয়া চুক্তির সময় ভারতের অ্যান্টার্কটিকা অভিযানের চিন্তাভাবনা শুরু হয়। ওই চুক্তির পর ১৮৭১-৭৩ সালে ভারতীয় ড. পরমজিৎ সিং সেহরা সপ্তদশ সোভিয়েত অ্যান্টার্কটিকা অভিযানে অংশ নেন।[3]
২০০৮ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ভারত অ্যান্টার্কটিকায় ২৭টি অভিযান চালায়।[4][5] ২৭তম অভিযানটি শুরু হয় ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর এবং শেষ হয় ২০০৮ সালের ১১ এপ্রিল।[4] জাতীয় অ্যান্টার্কটিকা ও মহাসাগর গবেষণা কেন্দ্রের অধীনস্থ এই অভিযানে ২০টি বৈজ্ঞানিক সংগঠন অংশ নেয়। এই অভিযানের সময় অ্যান্টার্কটিকায় ভারতের তৃতীয় গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনার দিকটি খতিয়ে দেখা হয়।[4] এরপর আরও তিনটি অভিযান হয়েছে।
ভারত সরকারের ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের অন্তর্গত জাতীয় অ্যান্টার্কটিকা ও মহাসাগর গবেষণা কেন্দ্র নামে একটি গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ভারতীয় অ্যান্টার্কটিকা কর্মসূচির দায়িত্বে রয়েছে।[4] এনসিএওআর ও মহাসাগর উন্নয়ন বিভাগ ভারতের অ্যান্টার্কটিকা অভিযানের সদস্যদের নির্বাচন করে।[3] মেডিক্যাল পরীক্ষা এবং হিমালয়ে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের নির্বাচিত সদস্যদের টিকে থাকা, পরিবেশ ধারণা, অগ্নিনির্বাপণ ও দল পরিচালনার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।[3]
এক-একটি অভিযানের পিছনে খরচ হয় ২০ কোটি টাকা।[3] প্রয়োজনীয় রসদ ভারতের সামরিক বাহিনীর নির্দিষ্ট শাখা জুগিয়ে থাকে।[4] গোয়া অথবা দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন থেকে অভিযান শুরু হয়।[3] ২০০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের ৭০টি প্রতিষ্ঠান এই অভিযানে অংশ নিয়েছে।[3]
ভারত ১৯৮৩ সালে অ্যান্টার্কটিকা চুক্তিতে সাক্ষর করে। ভারতীয় অ্যান্টার্কটিকা কর্মসূচি এই চুক্তির নিয়মাবলি মেনে চলে।[4] এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে ভারত যে আন্তর্জাতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে তা হল:
১৯৮৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভারত কনসালটিভ পার্টির মর্যাদা পায়। ১ অক্টোবর সায়েন্টিফিক কমিটি অন অ্যান্টার্কটিক রিসার্চ বা এসসিএআর-এর সদস্য হয়। ১৯৮৬ সালে কনভেনশন অন দ্য কনজারভেশন অফ আন্টার্কটিক মেরিন লিভিং রিসোর্সেস বা সিসিএএমএলআর-এর সদস্য হয়। ১৯৯৭ সালে ভারত প্রোটোকল অন এনভায়োরনমেন্টাল প্রোটেকশন টু দি আন্টার্কটিক ট্রিটি মেনে নেয়। এর মাধ্যমে ভারত আন্টার্কটিক পরিবেশরক্ষায় তার প্রতিশ্রুতি পুনরায় স্বীকার করে। ভারত ১৯৯৯ সালে গোয়ায় একাদশ সিওমএনএপি/এসসিএএলওপি (স্ট্যান্ডিং কমিটি অন আন্টার্কটিক লজিস্টিকস অ্যান্ড অপারেশনস) সম্মেলন আয়োজন করে। ১৯৯৮ সালে কোচিতে সিসিএএমএলআর-এর বাস্তুতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ মিটিং আয়োজন করে। ১৯৯৮ সালে ভারত দু-বছরের জন্য সিসিএএমএলআর-এর চেয়ার অধিকার করে।[3]
ভারত ইন্টার-গভর্নমেন্টাল ওশেনোগ্রাফিক কমিশন, ইন্টারগভার্নমেন্টাল ওশেনোগ্রাফিক কমিশন ইন কোস্টাল ইন্ডিয়ান ওশেন-এর আঞ্চলিক কমিটি, ইন্টারন্যাশানাল সি-বেড অথরিটি ও স্টেট পার্টিজ অফ দি ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশোন অন দ্য ল অফ দ্য সিজ-এর সদস্য।[4][6][7]
১৯৮১ সালে প্রথম অ্যান্টার্কটিকায় উড়েছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। ১৯৮৩ সালে দক্ষিণ গঙ্গোত্রী নামে প্রথম স্থায়ী বসতি গড়ে তোলা হয়। ১৯৮৯ সালে এই কেন্দ্রটি পরিত্যক্ত হওয়ার পর এটি বরফের তলায় চাপা পড়ে যায়।
দ্বিতীয় কেন্দ্র মৈত্রী গড়ে তোলা হয় ১৯৮৮-৮৯ সালে। এটি শির্মাকার মরুদ্যানে অবস্থিত। এখান থেকে ভারত ভূতাত্ত্বিক, ভৌগোলিক ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত গবেষণা চালায়। এখানে প্রিয়দর্শিনী হ্রদ নামে ভারত একটি মিষ্টি জলের হ্রদও তৈরি করেছে। শির্মাকার মরুদ্যানের জিওমর্ফোলজিক মানচিত্র তৈরিতেও মৈত্রী কেন্দ্রের যথেষ্ট অবদান রয়েছে।
ভারতের দ্বারা নিযুক্ত একটি আন্টার্কটিকা গবেষণা কেন্দ্র । এটি ভারতের তৃতীয় আন্টার্কটিকা গবেষণা কেন্দ্র যেটি মৈত্রীর পাশাপাশি দ্বিতীয় সক্রিয় গবেষণা কেন্দ্র। এটি 69 ডিগ্রি দক্ষিণ থেকে 76 ডিগ্রী পূর্ব তে লারসেমান পাহাড়ের কাছে গড়ে উঠেছে । 2012 সালে 18 মার্চ থেকে ক্রীড়া কলাপ শুরু হয়েছে যদিও 2015 সালে এটির পরীক্ষামূলক কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে। তখন ভারতও অ্যান্টার্কটিকায় একাধিক গবেষণা কেন্দ্র পরিচালনাকারী উন্নত রাষ্ট্রগুলির একটি হিসেবে গণ্য হবে। ভারতী কেন্দ্রটি সমুদ্রবিদ্যা সংক্রান্ত গবেষণার জন্য ব্যবহৃত হবে। এই কেন্দ্র মহাদেশীয় বিচ্ছেদের প্রমাণ সংগ্রহ করে ভারতীয় উপমহাদেশের ১২০-মিলিয়ন-বছরের প্রাচীন ইতিহাস পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে। [2][8][9]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.