Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
২০০৯ সালের উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষা বলতে ২০০৯ সালের ২৫শে মে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রর মাধ্যমে ভূগর্ভে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষাকে মূলতঃ বোঝায়।[8] এটি দেশটির দ্বিতীয় পারমাণবিক পরীক্ষা ছিল প্রথম পরীক্ষাটি সালের অক্টোবরে করা হয়।[9] এই পরীক্ষাটি সারা বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হয়। এই পরীক্ষার পরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিষদ একটি নিরাপত্তা নীতিমালা, "রেজুলেশন ১৮৭৪" পাস করে এবং উত্তর কোরিয়ার অনুমোদনের ব্যাপারে আরো সচেতন হয়। [10] দেশটির উত্তরাধিকার সংকটের ফলস্বরূপই এই পরীক্ষাটি চালানো হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। [11][12][13][14] ২০০৮ এর গ্রীষ্মে কিম জোং-ই এর স্ট্রোকের পর, তার তৃতীয় পুত্র, কিম জোং-উন এর উপর দায়িত্বভার অর্পিত হয়।[11][15] অধিকাংশের ধারণা,নিজেদের সম্ভাব্য সংকটকালীন সময়েও উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র গবেষণা থেকে পিছু পা হয়নি প্রমাণ করতেই এই পারমাণবিক পরীক্ষাটি করা হয়।[11][14]
২০০৯ সালে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষা | |
---|---|
তথ্য | |
রাষ্ট্র | উত্তর কোরিয়া |
পরীক্ষার স্থান | ৪১.৩০৬° উত্তর ১২৯.০২৯° পূর্ব, পুংগিয়ে-রি পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্র, কিলজু কাউন্টি |
Period | ২৫ মে ২০০৯, ০৯:৫৪:৪৩ ইউটিসি |
Number of tests | ১ |
পরীক্ষার ধরন | ভূগর্ভস্থ্য |
ডিভাইসের ধরন | ফিশন |
সর্বোচ্চ শক্তি |
|
পরীক্ষার কালানুক্রম | |
২০০৯ সালের এপ্রিলের ৫ তারিখে উত্তর কোরিয়া একটি রকেট নিক্ষেপ করে। বলা হয়ে থাকে,গোয়াংমিয়ংসং-২ নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহ বহন করছিল রকেটটি। এর পরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রেসিডেনশিয়াল স্টেটমেন্ট গ্রহণ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এরূপ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে উত্তর কোরিয়া দ্বিতীয় পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর হুমকি দেয়। [16] উত্তর কোরিয়া সীমিত আকারে মাঝারি রেঞ্জের পারমাণবিক মিসাইল তৈরি করছে যা যেকোন সময় নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত একজন বিশ্লেষক কর্তৃক এরকম তথ্য প্রচারের পরপরই উক্ত পরীক্ষাটি চালানো হয়। [17]
২০০৯ সালের জুনে ঘোষণা দেয়া হয় কিম জং-ইলের পর উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ব দিবেন কিম জং-ঊন। মার্কিন সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জানায় কিম জং-ইলের জীবদ্দশাতেই উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে পরীক্ষাটি চালানো হয়।[18]
সোমবার, কোরিয়ান সময় প্রায় ১০:০০ টার দিকে পারমাণবিক পরীক্ষাটি চালানোর এক ঘণ্টা আগে ওয়াশিংটন ডি.সি এবং বেইজিংকে পিয়ং ইয়াং বার্তা পাঠায়। যদি বার্তাতে পরীক্ষার সময় জানানো ছিল না। [19] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাথে সাথেই সিক্স-পার্টি টক এর অন্য চারটি সদস্য রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ করে। [20] উত্তর কোরীয় সরকার কর্তৃক পরিচালিত কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি একটি ঘোষণা দেয়, যার অংশবিশেষঃ
The Democratic People's Republic of Korea successfully conducted one more underground nuclear test on May 25 as part of the measures to bolster up its nuclear deterrent for self-defence in every way as requested by its scientists and technicians. The current nuclear test was safely conducted on a new higher level in terms of its explosive power and technology of its control and the results of the test helped satisfactorily settle the scientific and technological problems arising in further increasing the power of nuclear weapons and steadily developing nuclear technology.[21]
দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান উভয়ই কোরিয়ান স্ট্যান্ডার্ড সময় ০০:৫০ ইউটিসি তে ভূকম্পনের রিপোর্ট দেয়। .[22] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগোলিক পরিসংখ্যান থেকে কিমচেক থেকে প্রায় ৭০ কি.মি উত্তর-পশ্চিমে এবং পিয়ং ইয়াং এর৩৭৫ কি.মি উত্তর-পূর্বে পারমাণবিক পরীক্ষার অঞ্চল থেকে মাত্র কয়েক কি.মি দূরে শূন্য গভীরতায় ৪.৭ মাত্রা ভূকম্পনের রিপোর্ট দেয়া হয়।[23][24] জাপানের আবহাওয়া অফিসের হিসেবে সেদিন ৫.৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। [22] দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স ও টেকনোলজির ভূ-খনিজ সম্পদ ইন্সটিটিউট একই এলাকায় ভূকম্পনের রিপোর্ট দেয়, তবে তা ২০০৬ সালের চেয়ে অনেক শক্ত ছিল। [22]
পারমাণবিক পরীক্ষাটির উৎপাদের ব্যাপারে নিশ্চিত ধারণা না পেলেও বিশ্লেষকরা এটি একটি সফল পরীক্ষা বলেই মেনে নিয়েছেন। [25] মার্কিন ইন্টেলিজেন্স কম্যুনিটি ধারণা করেছে যে উত্তর কোরিয়ার পরীক্ষাটির খুব সম্ভবত "কয়েক কিলোটন" উৎপাদ তৈরিতে সক্ষম হয়। [1] পরীক্ষাটি ২০০৬ সালের বিস্ফোরন অপেক্ষা কিছুটা বড় ছিল বলে প্রিপারেটরি কমিশন (CTBTO) থেকে জানানো হয়। [1] ২৩টি ভূমিকম্প কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, প্রিপারেটরি কমিশন ২০০৬ সালের বিস্ফোরনে ৪.১ মাত্রার ভূকম্পনে ০.৮ কিলোটন উৎপাদের সাথে তুলনা করে ২০০৯ সালের এই বিস্ফোরণটিতে ৪.৫২ মাত্রার ভূকম্পন ঘটে এবং বিস্ফোরিত উৎপাদ ২.৪ কিলোটনের মত হয় বলে ধারণা করে। [26][27] রাশিয়া এই বিস্ফোরনের উৎআদ লক্ষনীয়ভাবে ১০ থেকে ২০ কিলোটন বলে প্রকাশ করে। [1] যা প্রায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সংঘটিত ট্রিনিটি এবং ফ্যাট ম্যান বোম বিস্ফোরনের সমান। [28] ২০০৬ সালের পরীক্ষার পরেও রাশিয়া তা ৫ থেকে ১০ কিলোটন বলে প্রচার করে যদিও অন্যান্য সূত্র মতে তা ০.৫ থেকে ০.৯ কিলোটনেই সীমাবদ্ধ ছিল। [29] দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, লি সাং-হি, যথেষ্ট তথ্যের অভাব থাকলেও এতে সম্ভবত ১ থেকে ২০ কিলোটনের মত উৎপাদ হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন।
একই দিনে উত্তর কোরিয়া স্বল্প দূরত্বের মিসাইল পরীক্ষা চালায়। [30] প্রথমে তিনটি মসাইল নিক্ষেপের কথা ঘোষিত হলেও ২০০৯ সালের ২৭শে মে দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় দুইটি মিসাইল নিক্ষেপের মাধ্যমে পরীক্ষার সত্যতা স্বীকার করে। [31] প্রথম মিসাইলটি ১৩০ কিমি (৮১ মা) দূরত্বগামী ছিল। [32] দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ সংস্থা(Yonhup) সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে জানায়, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারিরত বিমান থেকে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর স্থানের উপর দৃষ্টি সরিয়ে রাখতে মিসাইল দু'টি নিক্ষেপ করা হয়েছিল। [33]
একই বছরের ২৭শে মে'র মাঝে উত্তর কোরিয়া কর্তৃক অন্তত পাঁচটি মিসাইল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। একজন সামরিক মুখপাত্র সরকারি প্রচার মাধ্যমের বরাত দিয়ে জানায়, উত্তর কোরিয়া পশ্চিম সমুদ্র ঊপকূলের দিকেও মিসাইল নিক্ষেপ হতে পারে ইঙ্গিত দিয়ে জানায় সেইদিকের নিরাপত্তা তারা নিশ্চিত করতে পারছে না। [34]
২৮শে মে, উত্তর কোরিয়ার পূর্ব ঊপকূলের দিকে আরেকটি মিসাইল নিক্ষেপণের ঘটনা ঘটে।[35][36]
২০০৯ সালের ২৯ শে মে, মার্কিন কর্মকর্তারা জানায় উপগ্রহীয় ছবি থেকে উত্তর কোরিয়ার দুই দিকে মিসাইল পরীক্ষা চালানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা থেকে ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী সম্ভবত দীর্ঘ দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র মিসাইল নিক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। [37][38] একই বছরে পহেলা জুন নিরাপত্তা সেক্রেটারি রবার্ট এম. গেইটস ফিলিপাইনের ম্যানিলাতে এক সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেন, "আমরা বেশ কিছু ইঙ্গিত পেয়েছি যা প্রমাণ করে তারা আরেকটি তেপোদোং-২ মিসাইলের মত কিছু নিয়ে কাজ করছে। তবে এই মুহুর্তে তাদের মূল উদ্দ্যেশ্যের ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই।"[39]
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষার সংবাদ খুব দ্রুত দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতিতে প্রভাবে ফেলে। ২৫শে, পরীক্ষার দিন প্রধান শেয়ার সূচক ৪% নেমে যায় এবং মার্কিন ডলারের তুলনায় কোরিয়ান ওনের ১% দর পতন ঘটে। [40] ২২শে মে জাপানী ইয়েন প্রতি ডলারে ৯৪.৭৮ থেকে ৯৫.১০ হয়। [57] কোরীয় উপদ্বীপের উত্তেজনা পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নেয়ার আশঙ্কায় রাশিয়া বেশকিছু নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করে।[58] উত্তর কোরিয়াও মে মাসের ২৯ তারিখে দেশটির সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করলে দক্ষিণ কোরিয়া এবং ঊপকূলের নিকটবর্তী অবস্থানরত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌজাহাজ আক্রমণের হুমকি দেয়। [59] জাপান এই ঘটনার রেশ ধরে নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা শুরু করে। প্রয়োজনবোধে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার এবং এ সংক্রান্ত প্রচলিত ট্যাবু নিয়ে আলোচনা বিতর্কের উত্থাপন করে। [60][61] মার্কিন সহকারী সচিব জিম স্টেইনবার্গ এবং উত্তর কোরিয়ায় নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত স্টিফেন বসওর্থ ২০০৯ সালের জুনের ১ তারিখে একটি প্রতিনিধি দল এশিয়ায় আঞ্চলিক শক্তির সাথে একটি আলোচনায় বসে। বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক পারমাণবিক পরীক্ষার প্রতিক্রিয়া কীভাবে দেয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রতিনিধি দলে সন্ত্রাস ও অর্থনৈতিক ইন্টেলিজেন্সের ট্রেজারি আন্ডার-সেক্রেটারি স্টুয়ার্ট লেভি এবং জয়েন্ট চীফ অব স্টাফসের(JCS) এডমিরাল জেমস উইনফেল্ড উপস্থিত ছিলেন। [62]
নতুন মহাকাশ নিয়মের নথি মোতাবেক ২০০৯ সালের ২রা জুন জাপান একটি উপগ্রহীয় পূর্ব-সতর্কীকরণ পদ্ধতির মিসাইল তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর এক বছর পরে জাপান প্রায় দশক ধরে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে সামরিক বাহিনীকে বেশ কিছু ছাড় দেয়। উত্তর কোরিয়া কিছু মধ্য -দূরত্বগামী মিসাইল নিক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে এরকম সংবাদে তৎকালীন শাসক মহলের আইনপ্রণেতারা উপদেশ দেয় যে, জাপানের উচিত উত্তর কোরিয়ার জাহাজ সমূহের উপর নজর রাখা।[63] একই দিনে উত্তর কোরীয় সেনাবাহিনী দেশটির পশ্চিম সমুদ্র ঊপকূলে নৌ মহড়া চালিয়েছে এরকম তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিণ কোরিয়া একটি উচ্চ গতি সম্পন্ন নৌ রণতরী, ইউন ইয়োংহা নিয়ে আসে। ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল অব্দি দুই কোরিয়ার দাঙ্গার অঞ্চলে নিয়ে আসে। [64][65]
উত্তর কোরিয়ার এই পারমাণবিক পরীক্ষার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার নিকট বিভিন্ন প্রকার অস্ত্র বিক্রিতে রাজি হয়। এর মাঝে জিবিইউ-২৮(GBU-28) "বাংকার বাস্টার" বোমা, এসএস-২ স্টান্ডার্ড(SM-2 Standard), মিসাইল, এবং এফ-১৬ ব্লক ৩২ এয়ারক্রাফটের উন্নতীকরণ এবং দক্ষিণ কোরিয়া সামরিক বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য। [66][67][68] দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রথম আক্রমণ পরবর্তী আক্রমণের পরিকল্পনা তৈরি করে রাখে। [69]
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে "জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ নীতিমালা ১৮৭৪" গ্রহণ করে। যেটা অনুযায়ী উত্তর কোরিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সমূহ আরো কঠোর করা হয়। এছাড়াও অনুমোদিত সদস্য রাষ্ট্রকে উত্তর কোরিয়ার মালবাহী কার্গো পর্যবেক্ষণ এবং পারমাণবিক অস্ত্র সংক্রান্ত কাজে জড়িত সন্দেহে ধ্বংস করার অধিকার দেয়া হয়। [70] এই সিদ্ধান্তের উত্তরে উত্তর কোরিয়া থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়। যেখানে বলা হয়, দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে মজুদকৃত প্লুটোনিয়াম ব্যবহার শুরু করতে যাচ্ছে। [71] আরো জানানো হয়, দেশটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধীকরণ শুরু করবে এবং এক্ষেত্রে যেকোন ধরনের মার্কিনী হস্তক্ষেপকে যুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত বলে মেনে নিবে।[72] উত্তর কোরিয়ার অন্যান্য সব বিবৃতির তুলনায় এই বিবৃতিকে কম অসৌহার্দ্যপূর্ণ বলা হয়। [71]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.