Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
স্পেশাল এয়ার সর্ভিস (এসএএস) হচ্ছে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ বাহিনী ইউনিট। এসএএস ১৯৪১ সালে একটি রেজিমেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তীতে ১৯৫০ সালে এটিকে একটি সৈন্যদল হিসাবে পুনর্গঠন করা হয়।[5] এই ইউনিট গোপন নজরদারী, সন্ত্রাসবিরোধী, সরাসরি আক্রমণ এবং জিম্মি উদ্ধার সহ অনেকগুলো দায়িত্ব পালন করে। এসএএস এর বেশির ভাগ তথ্য ও কর্মপদ্ধতি অত্যন্ত গোপনীয় এবং স্পর্শকাতর বিধায় ব্রিটিশ সরকার বা ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দ্বারা মন্তব্য করা হয় না।[10][11][12]
স্পেশাল এয়ার সার্ভিস | |
---|---|
সক্রিয় | ১৯৪১–১৯৪৫; ১৯৪৭–বর্তমান[1][2][3] |
দেশ | United Kingdom |
শাখা | ব্রিটিশ সেনাবাহিনী |
ধরন | বিশেষ বাহিনী |
ভূমিকা | বিশেষ অভিযান কাউন্টার টেরোরিজম Reconnaissance |
আকার | Three regiments[nb 1] |
অংশীদার | 22 SAS: United Kingdom Special Forces (UKSF) 21 & 23 SAS: 1st ISR Brigade |
গ্যারিসন/সদরদপ্তর | RHQ: Stirling Lines, Hereford, United Kingdom 21 SAS: Regent's Park Barracks, London, United Kingdom[4] 22 SAS: Stirling Lines, Hereford, United Kingdom[4] 23 SAS: Birmingham, West Midlands, United Kingdom[4] |
ডাকনাম | "The Regiment"[7] |
নীতিবাক্য | Who Dares Wins[8] |
Colours | Pompadour blue[8] |
কুচকাত্তয়াজ | Quick: Marche des Parachutistes Belges[8] Slow: Lili Marlene[8] |
যুদ্ধসমূহ | SAS operations |
কমান্ডার | |
Colonel-Commandant | Field Marshal The Lord Guthrie[9] |
বর্তমানে যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ফোর্সের কার্যনির্বাহী কমান্ডের অধীনে ২২নম্বর স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট এর সাথে ২১নম্বর (আর্টিস্ট) স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট (রিজার্ভ) এবং ২৩ তম এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট (রিজার্ভ) গঠিত যা ১ম ইন্টেলিজেন্স, গোয়েন্দা নজরদারি ও রক্ষণ ব্রিগেড দ্বারা সংরক্ষিত।
২য় বিশ্বযুদ্ধকালীন ১৯৪১ এ স্পেশাল এয়ার সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে টেরিটোরিয়াল আর্মির অংশ হিসাবে এটি সংস্কার করা হয় ২১ তম স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট (আর্টিস্টস রাইফেলস) নামে। নিয়মিত বাহিনীর অংশ হিসাবে ১৯৮০ সালের ইরানি দূতাবাসের অবরোধের সকল বন্দীদের উদ্ধারের টেলিভিশন সম্প্রচরের পর ২২তম স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট বিশ্বব্যাপী খ্যাতি এবং স্বীকৃতি লাভ করে।
স্পেশাল এয়ার সার্ভিস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট ছিল যা ১৯৪১ সালে ডেভিড স্টার্লিং দ্বারা গঠিত হয় এবং “এল” ডিটাচমেন্ট নামে ডাকা হত। স্পেশাল এয়ার সার্ভিস ব্রিগেড- "এল" পদবী এবং এয়ার সার্ভিস নামটি ব্রিটিশ ভ্রান্ত প্রচারাভিযানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, এটা আ্যাক্সিসকে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করে যে উক্ত এলাকায় একাধিক ইউনিট যুক্ত একটি প্যারাট্রুপার রেজিমেন্ট ছিল (প্রকৃত এসএএস অ্যাক্সিসকে "প্রমাণ" করে যে নকলটারও অস্তিত্ব ছিল)।[1][13] It was conceived as a commando force to operate behind enemy lines in the North African Campaign[14] এটি উত্তর আফ্রিকান ক্যাম্পেইনে শত্রু সিমার পিছনে পরিচালিত একটি কমান্ডো বাহিনী হিসেবে ধারণা করা হয়েছিল এবং প্রাথমিকভাবে ৬০জন অন্যান্য র্যাঙ্কধারীদের সাথে পাঁচ কর্মকর্তা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪১ সালের ১লা নভেম্বর, অপারেশন ক্রুসেডার আক্রমণের সমর্থনে একটি প্যারাশুট ড্রপ ছিল এসএএস এর প্রথম মিশন। জার্মান প্রতিরোধ এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে, মিশনটি ব্যর্থ হয়েছিল; ২২ জন পুরুষ, ইউনিটের এক তৃতীয়াংশ খুন অথবা বন্দী হয়। এটার দ্বিতীয় মিশনটি অবশ্য খুব বড় একটা সাফল্য ছিল। দূরপাল্লা মরুভূমির একটি দলের সাহায্যে এটি লিবিয়ার তিনটি বিমানঘাঁটি আক্রমণ করে, মাত্র ২জন সৈন্যের মৃত্যু এবং ৩টি জিপ ধ্বংসের বিনিময়ে ৬০টি বিমান ধ্বংস করে। ১৯৪২ সালের সেপ্টেম্বরে এটি চারটি ব্রিটিশ স্কোয়াড্রন, একটি ফ্রি ফ্রেঞ্চ, একটি গ্রীক এবং ফোলবোট সেকশনের সমন্বয়ে ১ম এসএএস নামে পুনঃনামকরণ করা হয়।[15]
১৯৪৩ সালের জানুয়ারীতে, কর্নেল স্টার্লিংকে তিউনিসিয়াতে বন্দী করা হলে প্যাডি মেইনকে তার বদলে কমান্ডার করা হয়। ১৯৪৩ সালের এপ্রিলে, মেইন সাহেবের কমান্ডে স্পেশাল রেইডিং স্ক্রোয়াড্রন এবং জর্জ জেলিকোর অধীনে স্পেশাল নৌ স্ক্রোয়াড্রন কে ১ম এসএএস তে পুনঃমোতায়ন করা হয়।[16] স্পেশাল রেইডিং স্কোয়াড্রন সিসিলি ও ইতালিতে ২য় এসএএস এর সাথে যুদ্ধ করে। ২য় এসএএস উত্তর আফ্রিকায় ১৯৪৩ সালে ছোট ছোট রেইডিং ফোর্সে বিভক্ত হয়ে গঠিত হয়েছিল।[17][18] যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্পেশাল বোট স্কোয়াড্রন এইগেয়ান দ্বীপ ও ডোডেক্যানিজে যুদ্ধ করে। ১৯৪৪ সালে ব্রিটিশ ১ম ও ২য় এসএএস, ফ্রেঞ্চ ৩য় ও ৪র্থ এসএএস এবং বেলজিয়ান ৫ম এসএএস মিলে এসএএস ব্রিগেড গঠিত হয়।[19] এই ব্রিগেড মিত্র শক্তিকে এগিয়ে নিতে ফ্রান্স (অপারেশন হাউন্ডসওর্থ, বুলবাস্কেট, লয়টন এবং ওয়ালাস-হার্ডলি) সহ বিভিন্ন দেশে জার্মান লাইনের পেছনে[2] মিত্র শক্তির প্যারাশুট অপারেশনগুলি দক্ষতার সাথে পরিচালনা করে। বেলজিয়ামে দ্য নেদারল্যান্ডস (অপারেশন পেগাস্যাস) এবং সবশেষে জার্মানিতে (অপারেশন আর্কওয়ে)।[19][20] ১৯৪২ সালের ১৮ই অক্টোবর হিটলার কর্তৃক জারীকৃত কমান্ডো অর্ডারের ফলে ইউনিটের সদস্যরা এমন মারাত্মক বিপদের মুখে পড়েন যে, যদি তারা জার্মানদের হাতে ধরা পড়ে তাহলে সংক্ষিপ্ত বিচারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হবেন। ১৯৪৪ সালের জুলাইয়ে, অপারেশন বুলবাস্কেট চলাকালীন ৩৪ জন এসএএস সদস্য ধরা পড়েন এবং সংক্ষিপ্ত বিচারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হন; জার্মানরা তা কার্যকর করে। একই বছরের অক্টোবরে অপারেশন লয়টন পরবর্তী সময়ে ৩১ জন এসএএস কমান্ডোকে ধরে জার্মানরা কমান্ডো অর্ডার বলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে।[21]
যুদ্ধের শেষের দিকে ব্রিটিশ সরকার আর প্রয়োজন মনে না করায় ১৯৪৫ সালের ৮ অক্টোবর তারিখে এটিকে ভেঙ্গে দেয়।[2]
পরের বছর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যে দীর্ঘমেয়াদী গভীর অনুপ্রবেশ সক্ষম কমান্ডো ইউনিটের প্রয়োজন এবং একটি নতুন এসএএস রেজিমেন্ট টেরিটরিয়াল আর্মির অংশ হিসাবে পুনরুত্থান করা হয়।[22] পরিশেষে, ১৮৬০ সালে উত্থাপিত শিল্পী রাইফেলসের সদর দফতর ইউস্টনস্থ ডিউকস রোডে স্থাপন করে ১৯৪৭ সালের ১লা জানুয়ারি তারিখ অনুসারে ২১ তম এসএএস রেজিমেন্ট (ভি) কে এসএএস ম্যান্টেল হিসাবে গ্রহণ করেন।[3][22]
১৯৫০ সালে, কোরিয়ার যুদ্ধে ২১ এসএএস এর একটি স্কোয়াড্রনকে ব্যবহার করা হয়েছিল। ব্রিটেনে তিন মাসের প্রশিক্ষণের পর, জানানো হয়েছিল যে স্কোয়াড্রনটি আর কোরিয়ার যুদ্ধে প্রয়োজন হবে না এবং এর পরিবর্তে মালায়ান জরুরী অবস্থায় স্বেচ্ছাসেবক দল হিসাবে যুদ্ধ করতে পাঠানো হয়।[23] মালায়ায় পৌছানো পর স্কোয়া্ড্রনটি মাইকেল ক্যালভার্টের অধীনে আসে যিনি মালয়ী স্কাউটস (এসএএস) নামে একটি নতুন ইউনিট গঠন করেন।[23] ক্যালভার্ট ইতোমধ্যে দূর প্রাচ্যে ১০০ স্বেচ্ছাসেবীকে নিয়ে থেকে একটি স্কোয়াড্রন গঠন করেন, যেটাকে বলা হত এ স্কোয়াড্রন- ২১ এসএএস হয়ে ওঠে তখন বি স্কোয়াড্রন এবং রোডেশিয়া পরিদর্শন শেষে ক্যালভার্ট ১০০০ রোডেশিয়ান স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে সি স্কোয়া্ড্রন তৈরি করেন।[24] রোডেশিয়ানরা তিন বছর দায়িত্ব পালনের পর বাড়িতে ফিরে যায় এবং নিউজিল্যান্ড স্কোয়াড্রন তাদের জায়গায় দায়িত্ব নেয়।[25] এই সময় একটি নিয়মিত সেনাবাহিনী হিসাবে এসএএস রেজিমেন্ট স্বীকৃতি পায়; ২২তমএসএএস রেজিমেন্টকে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫২ সালে সেনাবাহিনীর তালিকাতে যুক্ত করা হয় এবং ১৯৬০ সাল হতে হেরফোর্ডে এটি গঠিত হয়।[8] ১৯৫৯ সালে তৃতীয় রেজিমেন্ট, ২৩তম এসএএস রেজিমেন্ট, রিজার্ভ রিকনাইসেন্স ইউনিট হিসাবে নামকরণ করে গঠিত হয়, যা এমএ৯-র সফলতা লাভ করে এবং যার সদস্যরা পলায়ন এবং চুরি-তে (এস্কেপ অ্যান্ড ইভেশন) দক্ষ ছিলেন।[26]
মালায়াতে দায়িত্ব পালনের সময়ে নিয়মিত বাহিনীর অংশ হিসাবে ২২ এসএএস রেজিমেন্টের সৈন্যদের বোর্নেওতে কিছু গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে গোপন নজরদারি এবং সার্ভেইল্যান্স টহলে অংশগ্রহণ করে।[27] কমিউনিস্ট গেরিলাদের বিরুদ্ধে একটি অপারেশন ছিল ওমানের মিরবত যুদ্ধ।[28] তারা অ্যাডেনের জরুরীবস্থায়,[29] উত্তর আয়ারল্যান্ড[30] এবং গাম্বিয়াতে[27] অপারেশনগুলিতে অংশগ্রহণ করে। তাদের বিশেষ প্রকল্প দল মোগাদিশুতে ওয়েস্ট জার্মান সন্ত্রাসবিরোধী গোষ্ঠী জিএসজি ৯-কে সহায়তা করেছিল।[27] লন্ডনের ইরান দূতাবাস অবরোধে জিম্মি উদ্ধার অভিযানে চমৎকারভাবে অংশ নেয় এসএএস-র সন্ত্রাস বিরোধী বিভাগ।[31] ফকল্যাণ্ড যুদ্ধের সময় বি স্কোয়াড্রনকে অপারেশন মিকোডোর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে যদিও এটি বাতিল করে ডি এবং জি স্কোয়াড্রনকে মোতায়েন করা হয়েছিল পেবেল দ্বীপ আক্রমণে অংশগ্রহণের জন্য।[32] জিব্রাল্টারে আঞ্চলিক আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি (পিআইআরএ)-এর বিরুদ্ধে অপারেশন ফ্লাভিয়াস প্রিজিভাল ছিল একটি বিতর্কিত অপারেশন।[27] এছাড়াও ২২তম এসএএস সার্ব অবস্থানের উপর ন্যাটোর বিমান হামলা পরিচালনা করে এবং বসনিয়াতে যুদ্ধাপরাধীদের ধরে।[33][34] তারা কসোভো যুদ্ধে সার্বিয়ান লাইনের পেছনে কেএলএ গেরিলাদেরকে সহায়তাদানে জড়িত ছিলেন। আলবানিয়ান সূত্রমতে একজন এসএএস সার্জেন্ট সার্বিয়ার বিশেষ বাহিনী কর্তৃক নিহত হয়।[35]
উপসাগরীয় যুদ্ধ, যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রাভো টু জিরো মিশনের ব্যর্থতার পরও ছিল এ, বি এবং ডি স্কোয়াড্রনের উল্লেখযোগ্য বৃহত্তম সৈন্য সমাবেশ।[36] সিয়েরা লিওনে রয়্যাল আইরিশ রেজিমেন্টের জিম্মি সদস্যদের বের করার জন্য অপারেশন ব্যারাসে নামক অভিযান পরিচালনা করে।[27] ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখে আল কায়েদা দ্বারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর হামলার পর, ২২ এসএএস-এর ২ টি স্কোয়াড্রন জোটবদ্ধ আক্রমণের অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে ন্যস্ত দুটি আঞ্চলিক এসএএস ইউনিটের সাথে সংযুক্ত হয়ে (২০০১-চলমান) আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতা থেকে হটিয়ে সেখানকার আল-কায়েদার নিরাপদ বেস ধ্বংস করার যুদ্ধে লিপ্ত। এই রেজিমেন্ট এর ইতিহাসের সর্ববৃহৎ অপারেশন সম্পন্ন করে যার নাম অপারেশন ট্রেন্ট, যে অপারেশনে যুদ্ধকালীন হ্যলো প্যারাসুট লাফ অন্তর্ভূক্ত। এই আক্রমণের পর, রেজিমেন্ট আফগানিস্তানে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তালিবান ও অন্যান্য বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যায়, এসএএস আফগানিস্তানে পুনঃমোতায়েন হওয়ার পর ২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত ইরাকে অপারেশন পরিচালনা এর লক্ষ্য হয়ে ওঠে।[37][38]
ইরাক যুদ্ধে রেজিমেন্ট অংশ নেয়ার পর, ২০০৩ সালের আগ্রাসনের পূর্বে ইরাকে উল্লেখযোগ্যভাবে অভিযান চালায়। এই আক্রমণের পর, এটি টাস্ক ফোর্স ব্ল্যাক/নাইট টাস্ক ফোর্সের অংশ হিসাবে পশ্চাদপসরণকারী বিদ্রোহীদের সাথে লড়াই করে; ২০০৫ সালের শেষের দিকে/২০০৬ এর শুরুতে, এসএএস জেএসওসি-র সাথে একত্রিত হয়ে ইরাকের আল-কায়েদা এবং সুন্নি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ডেল্টা ফোর্সের পাশাপাশি যুদ্ধ করে। জঙ্গি-বিদ্রোহ দমন সফল হয় এবং ইরাকে ইউকেএসএফ মিশন ২০০৯ সালের মে মাসে শেষ হয়।[37][38][39]
বিভিন্ন ব্রিটিশ পত্রিকায় অপারেশন এলামি এবং ২০১১ সালের লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে এসএএস-র সম্পৃক্ততা নিয়ে আলোচনা করা হয়। ডেইলি টেলিগ্রাফ রিপোর্ট করে যে, “প্রতিরক্ষা সূত্রগুলি নিশ্চিত করেছে যে লিবিয়ায় কয়েক সপ্তাহ ধরে এসএএস রয়েছে এবং ত্রিপোলির পতনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।”[40] দ্য গার্ডিয়ান জানায়, "তারা ফরেন এয়ার কন্ট্রোলার-পাইলট পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে ন্যাটো কর্মসংস্থান কমান্ডারদের সাথে যোগাযোগ ও যোগাযোগের জন্য। দ্য গার্ডিয়ান জানায়, “এসএএস অগ্রগামি এয়ার কন্ট্রোলার পদে বহাল হয়ে পাইলটদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানার দায়িত্ব পরিচালনা করছে এবং ন্যাটোর অপারেশনাল কমান্ডারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছে। তারা বিদ্রোহীদেরও যুদ্ধকৌশল নির্ণয়ে পরামর্শ দিচ্ছে।”[41]
২০১৪ সালের আগস্ট মাসের শেষদিকে সিরিয়া ফেরত এমআই৬ এর প্রধান রিচার্ড ব্যারেটের অধীনে স্পেশাল এয়ার সার্ভিসের সদস্যদের উত্তর ইরাকে মোতায়েন করা হয়। তাদের দায়িত্ব ছিল মিডিয়ায় দ্য বিটলস হিসেবে আখ্যায়িত ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এবং লেভান্ট (আইএসআইএল) কে খুঁজে বের করা।[42][43][44][45] গণমাধ্যমে এদেরকে দ্য বিটলস নামে আখ্যায়িত করেছিল। ২০১৪ সালের অক্টোবরে, এসএএস পশ্চিম ইরাকে আইএসআইএল এর সাপ্লাই লাইনে আক্রমণ করে হেলিকপ্টার থেকে হালকা যানে স্নাইপার স্কোয়াড ড্রপ করার মাধ্যমে। এই হামলায় প্রতিদিন গড়ে ৮জন আইএসআইএল যোদ্ধা এসএএস-দ্বারা নিহতের দাবী করা হয়।[46]
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এসএএস কর্মকর্তারা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে উন্নীত হন। জেনারেল পিটার দে লা বিলিয়ের ১৯৯০ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীর প্রধান ছিলেন।[47] জেনারেল মাইকেল রোজ ১৯৯৪ সালে বসনিয়াতে ইউনাইটেড নেশনস প্রোটেকশন ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন।[48] ১৯৯৭ সালে জেনারেল চার্লস গুথ্রি ব্রিটিশ চিফ অব দ্য ডিফেন্স স্টাফ নির্বাচিত হন অর্থাৎ ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান।[49] লেফটেন্যান্ট-জেনারেল ক্যাডরিক ডেলভেস-কে ২০০২-২০০৩ সালে ন্যাটোর আঞ্চলিক সদর দপ্তরে যৌথ বাহিনী উত্তর-এর স্থল বাহিনীর কমান্ডার এবং ডেপুটি কমান্ডার ইন চিফ পদে নিযুক্ত করা হয়।[50]
স্পেশাল এয়ার সার্ভিসের যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠনের পর কমনওয়েলথের অন্যান্য দেশ তাদের অনুরূপ ইউনিটের প্রয়োজন অনুভব করে। কানাডিয়ান স্পেশাল এয়ার সার্ভিস কোম্পানি গঠিত হয় ১৯৪৭ সালে, ১৯৪৯ সালে তা আবার ভেঙ্গেও দেয়া হয়।[51][52] নিউজিল্যান্ডের স্পেশাল এয়ার সার্ভিস স্কোয়াড্রনটি ব্রিটিশ এসএএস এর সাথে মালয়ে কাজ করার জন্য ১৯৫৫ সালের জুনে গঠিত হয় যা ২০১১-তে এসে পূর্ণ রেজিমেন্টে রূপান্তরিত হয়ে ওঠে।[53] অস্ট্রেলিয়া প্রথম এসএএস কোম্পানী গঠন করে ১৯৫৭ সালের জুলাইতে। যা ১৯৬৪-তে এসে স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট (এসএএসআর)-রূপে পূর্ণ রেজিমেন্টে পরিণত হয়।[54] ১৯৬১ সালে মালয় ফেরত সি (রোডেশিয়ান) স্কোয়াড্রন রোডেশিয়ান স্পেশাল এয়ার সার্ভিস এর নির্মাণের ভিত্তি তৈরি করে।[26] ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এই বাহিনী “সি স্কোয়াড্রন (রোডেশিয়ান) স্পেশাল এয়ার সার্ভিস” নামটি রয়ে যায়। পরে এটা ১ (রোডেশিয়ান) স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট হয়।
কমনওয়েলথ এর বাইরের দেশগুলোও এসএএস-র মত ইউনিট গঠন করেছে। বেলজিয়ান সেনবাহিনী-র স্পেশাল ফোর্স গ্রুপ, যারা আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৫ম স্পেশাল এয়ার সার্ভিস এর উত্তরসূরী ঠিক এসএএস এর মত একই ধরনের ক্যাপ ব্যাজ ব্যবহার করে।[55][56][57][58][59][60][61] ফ্রেঞ্চ ১ম মেরিন ইনফ্যান্ট্রি প্যারাস্যুট রেজিমেন্ট (১ম আরপিএমএ) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৩য় ও ৪র্থ এসএসএস-র সাথে মিল পাওয়া যায়, এমনকি এসএএসের মূলমন্ত্র “হু ডেয়ারস উইনস” অনুকরণ করে।[62] ১ম স্পেশাল ফোর্স অপারেশনাল ডিটাচমেন্ট ডেল্টা- নামের আমেরিকান ইউনিটটি চার্লস এলভিন ব্যাকউইথের অধীনে গড়ে ওঠে, যিনি নিজে ২২ এসএএস-তে বদলী কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করেন এবং অনুরুপ একটি মার্কিনী রেজিমেন্টের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।[63] ইজরাইলী সায়রেত মাতকাল রেজিমেন্টও এসএএস-এর মূলমন্ত্র অনুকরণে গঠিত হয়। আয়ারল্যান্ডের সৈন্যদল রেঞ্জার উইং (এআরডব্লিউ)-ও এসএএসের অনুকরণে প্রশিক্ষিত হয়।[64] ফিলিপাইনের ন্যাশনাল পুলিশের স্পেশাল ফোর্সও এসএএস এর অনুকরণে গঠিত হয়।[65]
যদিও ব্রিটিশ সরকার সাধারণত স্পেশাল ফোর্সের কার্যকলাপ দরূন কোন মন্তব্য করেন না, তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে সমসাময়িক এসএএস-র সম্পর্কে জানা যায় যে, স্পেশাল এয়ার সার্ভিস তিনটি ইউনিট নিয়ে গঠিত।[10][11] একটি নিয়মিত এবং দুটি আর্মি রিজার্ভ (এআর) ইউনিট। নিয়মিত বাহিনী ইউনিট হচ্ছে ২২ এসএএস রেজিমেন্ট এবং রিজার্ভ ইউনিটগুলি হচ্ছে ২১ স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট (আর্টিস্টিস)(রিজার্ভ)(২১ এসএএস(আর)) এবং ২৩ স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট (২৩ এসএএস(আর))। সামষ্টিকভাবে, স্পেশাল এয়ার সার্ভিস (রিজার্ভ)(এসএএস(আর))।[6]
২২ এসএএস-এ সাধারণত ৪০০ থেকে ৬০০ জনবল আছে।[66] এই রেজিমেন্টের চারটি কার্যকরী স্কোয়াড্রন রয়েছে: এ, বি, ডি এবং জি। প্রতিটি স্কোয়াড্রনে একজন মেজরের অধীনে প্রায় ৬৫ জন সেনা থাকে, যা চারটি ট্রুপে বিভক্ত (প্রতিটি ট্রুপ একজন ক্যাপ্টেন এর অধীনে থাকে) এবং একটি ছোট সদর দফতর।[67][68] ট্রুপগুলোতে সাধারণত ১৫ জন সেনা থাকে(এসএএস সদস্যদেরকে নাম "ব্লেড" বা "অপারেটর" নামে ডাকা হয়)[69][70][71] এবং প্রতিটি প্যাট্রলে ৪জন সেনা থাকে যাদের প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে মৌলিক প্রশিক্ষণর পাশাপাশি কোন না কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ; যেমন- সংকেত, ধ্বংস, ডাক্তারী অথবা ভাষাবিদ।[68] অনেককাল আগে থেকে “স্কোয়াড্রন” শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে, সেই শুরুর দিকে জার্মান গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করার সময়ে থেকেই।[70] চারটি ট্রুপস চারটি ভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞঃ
১৯৮০তে আর স্কোয়াড্রন (যা পরে এল ডিটেকমেন্ট নামকরণ করা হয়) গঠিত হয়েছিল; এর সদস্যরা সব প্রাক-নিয়মিত এসএএস রেজিমেন্ট সৈন্য যারা রিজার্ভ সার্ভিসের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।[68][nb 2]
২২ এসএএস স্কোয়াড্রনের দায়িত্ব এমন ভাবে বণ্টন করা হয়েছিল যাতে একটি স্কোয়াড্রন যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসবিরোধী দায়িত্বে থাকলে আরেকটি স্কোয়াড্রন অন্যখানে মোতায়েনে হবে। তৃতীয় স্কোয়াড্রন মোতায়েনের জন্য তৈরি হবে যতক্ষণ না তাদের স্বল্প-দৈর্ঘ্যের প্রশিক্ষণ তৈরি হয় এবং ৪র্থ স্কোয়াড্রনটি দীর্ঘ-মেয়াদী বৈদেশিক প্রশিক্ষণের জন্য প্রস্তুতি নেবে যেমন- জঙ্গল অথবা মরুভূমিতে। যুদ্ধকালীন সময়ে, যেমন ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমনের সময়, এমনও হয়েছে যে এক সাথে দুই স্কোয়াড্রন সৈন্যও মোতায়েন হয়েছে।[70]
২২ স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট | ২১ স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট (আর্টিস্টস) | ২৩ স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্ট |
---|---|---|
‘এ’ স্কোয়াড্রন (হিয়ারফোর্ড)[4] | ‘এ’ স্কোয়াড্রন (রিজেন্ট’স পার্ক)[4] | ‘বি’ স্কোয়াড্রন (লিডস)[75] |
‘বি’ স্কোয়াড্রন[76] | ‘সি’ স্কোয়াড্রন (ব্রেমলি ক্যাম্প)[77] | ‘ডি’ স্কোয়াড্রন (স্কটল্যান্ড)[78] |
‘ডি’ স্কোয়াড্রন | ‘ই’স্কোয়াড্রন (ওয়েলস)[79] | ‘জি’স্কোয়াড্রন (ম্যানচেস্টার)[80] |
‘জি’ স্কোয়াড্রন[81] |
স্কোয়াড্রন কাঠামো[82]
এ স্কোয়াড্রন: ১ (বোট) ট্রুপ- ২(এয়ার) ট্রুপ- ৩(মোবিলিটি) ট্রুপ- ৪(মাউনটেইন) ট্রুপ
বি স্কোয়াড্রন: ৬ (বোট) ট্রুপ- ৭(এয়ার) ট্রুপ- ৮(মোবিলিটি) ট্রুপ- ৯(মাউনটেইন) ট্রুপ
ডি স্কোয়াড্রন: ১৬ (বোট) ট্রুপ- ১৭(বোট) ট্রুপ- ১৮(মোবিলিটি) ট্রুপ- ১৯(মাউনটেইন) ট্রুপ
জি স্কোয়াড্রন: ১ (মোবিলিটি) ট্রুপ- ২২(মাউনটেইন) ট্রুপ- ২৩(বোট) ট্রুপ- ২৪(এয়ার) ট্রুপ
দ্য স্পেশাল প্রোজেক্টস টিম হচ্ছে স্পেশাল এয়ার সার্ভিসের অ্যান্টি-হাইজ্যাকিং কাউন্টার-টেরোরিজম টিমের অফিসিয়াল নাম।[68] এটা ক্লোজ কোয়ার্টার ব্যাটল (সিকিউবি), স্নাইপার কৌশল এবং ভবন বা গণ পরিবহন হতে জিম্মি উদ্ধারের উপর প্রশিক্ষণ দেয়।[83] ১৯৭০ সালের গোড়াতে প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ ১৯৭২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে গণহত্যার মতো সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে এই বিশেষায়িত দল গঠনের নির্দেশ দেন। সেই আদেশ মোতাবেক এসএএস কাউন্টার রেভল্যুশনারী ওয়ারফোয়ার (সিআরডব্লিউ) গঠিত হয়।[84]
উইংটি প্রতিষ্ঠার পর প্রতিটি স্কোয়াড্রন ঘন ঘন জিম্মি উদ্ধার, অবরোধ ভাঙ্গা এবং বন্দুকবাজীর অনুশিলন করতে থাকে। রিপোর্ট অনুসারে জানা যায় যে, অনুশিলন চলাকালীন প্রতিটি সৈন্য গড়ে ১০০,০০০ রাউন্ড গুলি ব্যয় করে। স্কোয়াড্রনটি প্রতি ১৬ মাসে নতুন করে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়। বালকম্ব স্ট্রিট অবরোধে সিআরডব্লউ-কে প্রথম ব্যবহার করা হয়। এখানে মেট্রোপলিটন পুলিশ একদল পিআইআরএ-কে আটকে রাখে। তারা আত্মসমর্পণ করে যখন বিবিসি-তে শোনে যে, এসএএস পাঠানো হচ্ছে।[84]
পশ্চিম জার্মানের মোগাদিশুতে সন্ত্রাসবিরোধী গ্রুপ জিএসজি ৯কে সহায়তা করা ছিল বিদেশে সিআরডব্লিউ দ্বারা প্রথম নথিভুক্ত আক্রমণ। ১৯৮০ সালে ইরান দূতাবাস অবরোধে এসএএস একটি নাটকীয় জিম্মি উদ্ধার ঘটনার সাথে জড়িত হয়।
স্কোয়াড্রনের মধ্যে সিটি ভূমিকা ভাগ করা হয়েছিল, প্রাথমিকভাবে ১২মাস মেয়াদী এবং পরে ছয় মাস মেয়াদী চলমান প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সিটি এবং সিআরবি কৌশল শেখানো হয়। পনট্রিলাস সেনা প্রশিক্ষণ এলাকায় কিলিংস হাউজ (আনুষ্ঠানিক ভাবে ক্লোজ কোয়ার্টার ব্যাটেল নামে পরিচিত) এবং বাণিজ্যিক বিমানের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি বোয়িং ৭৪৭ বিমানের আভ্যন্তরীণ লেআউটের অংশবিশেষ এর সুবিধাসমূহ ব্যবহার করে এসএএস সিটি ভূমিকায় প্রশিক্ষণ লাভ করে। অন কল সিটি স্কোয়াড্রন চারটি ট্রুপসে ভাগ করা হয়, যার মধ্যে দুটি দলকে হেয়ারফোর্ড-ক্রেডেনহিল এলাকায় তাৎক্ষণিক নির্দেশে যেতে প্রস্তুত রাখা হয়। অন্যদিকে অপর দুটি দলকে অপারেশন ব্যতীত সময়ে যুক্তরাজ্য জুড়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।[85]
ডিরেক্টর স্পেশাল ফোর্সেস (ডিএসএফ) এর একজন মেজর জেনারেলের অধীনে ২২তম স্পেশাল এয়ার সার্ভিস কাজ করে। পূর্বে এই পদটি একজন ব্রিগেডিয়ারের ছিল। ইউনাইটেড কিংডম স্পেশাল ফোর্সেস (ইউকেএসএফ) এর উল্লেখযোগ্য বিস্তারের লক্ষ্য জন্য পূরণের ডিএসএফ-এর পদটি ব্রিগেডিয়ার হতে মেজর জেনারেল উন্নীত করা হয়।[86]
অপারেশন হেরিকের সময় এসএএস রিজার্ভ আফগান ন্যাশনাল পুলিশ সদস্যদের উপদেশ দেওয়ার দায়িত্বে ছিল। ইউনিটের কর্মক্ষমতার সক্ষমা যাচাইয়ের একটি পর্যবেক্ষণ হতে গৃহীত সিদ্ধান্তে রিজার্ভ ইউনিট সরিয়ে নিয়মিত ইউনিটের হাতে দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়। প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, নিয়মিত বিশেষ বাহিনীর পাশাপাশি এসএএস রিজার্ভ দলেরও একটি সুস্পষ্ট দায়িত্ব পালন এবং সামরিক সক্ষমতা ও দক্ষতা প্রদর্শনে বেশ ঘাটতি রয়েছে।[87] ১৯৪৭ সালের ১লা সেপ্টেম্বর, ২১ ও ২৩ এসএএস যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ফোর্স ছেড়ে ১ম ইন্টেলিজেন্স সার্ভেইল্যান্স ও রিকন্যাইস্যান্স ব্রিগেডের অধীনে কাজ করতে থাকে।[88][89]
যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ফোর্সে নিয়মমাফিক সাধারণ জনগণ হতে নিয়োগ দেয়া হয় না।[90] যুক্তরাজ্যের সমস্ত সশস্ত্র বাহিনীর বর্তমান সদস্য বিশেষ বাহিনী নির্বাচনের জন্য আবেদন করতে পারেন, তবে ঐতিহ্যগতভাবে অধিকাংশ প্রার্থী কমান্ডো অথবা বিমানবাহিনী বাহিনী হতে আসে।[91] গ্রীষ্ম এবং শীতকাল,[90] বাছাই হয় বছরের এই দুই সময়ে সেন্নিব্রিজ এবং ব্রেকন বিকনসে। পাঁচ সপ্তাহ মেয়াদী এই বাছাই পর্বে সাধারণত ২০০ সম্ভাব্য প্রার্থীকে বাছাই করা হয়।[90] এখানে আসার শুরুতেই প্রার্থীকে পার্সোনাল ফিটনেস টেস্ট (পিএফটি) এবং একটি বার্ষিক বা এন্যুয়াল ফিটনেস টেস্ট (এএফটি) দিতে হয়।.[nb 3] তারপর তারা লম্বা সময়ের জন্য হাঁটা শুরু করে। প্রতিদিনই হাঁটার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করা হয়। সমস্ত সরঞ্জামসহ নিরুত্তাপ হয়ে ৪০ মাইল (৬৪ কিমি) হেঁটে ২০ ঘণ্টার মধ্যে পেন ই ফ্যানের শিখরে চড়তে হয়। পর্বত পর্ব শেষে প্রার্থীকে ৩০ মিনিটে ৪ মাইল (৩.২ কিলোমিটার) দৌঁড়াতে হয় এবং ৯০ মিনিটের মধ্যে ৪ মাইল (৬.৪ কিমি) সাঁতরাতে হয়।[90]
পাহাড় পর্ব শেষে শুরু হয় জঙ্গল পর্ব। এটার জন্য যেতে হয় বেলিজ, ব্রুনেই অথবা মালয়েশিয়াতে। এখানে প্রার্থীকে নেভিগেশন, টহল দল গঠন/চলাফেরা এবং জঙ্গলে বেঁচে থাকার কৌশল শেখানো হয়।[93] হেয়ারফোর্ডে ফিরে গিয়ে যুদ্ধ কৌশল এবং বিদেশী অস্ত্র চালনা ও যুদ্ধে বেঁচে থাকার অনুশিলন করার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ শেষ হয়।[94] শেষেরটায় সপ্তাহ ব্যাপী পালিয়ে ও ফাঁকি দিয়ে বেঁচে থাকার অনুশিলন মাত্র। এসময়ে প্রার্থীকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার উর্দি পড়িয়ে এক টিন বেঁচে থাকার সরঞ্জামাদি দিয়ে টহলে পাঠানো হয় এবং নির্দিষ্ট একটা বিন্দুকে লক্ষ্য করে এগুতে বলা হয়। চূড়ান্ত নির্বাচনে ৩৬ঘণ্টা ব্যাপী বিরক্তিকর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় যাকে বলে- রেজিস্ট্যান্স টু ইন্টারোগেশন (আরটিআই)।[95]
সাধারণত, ১৫-২০% প্রার্থী পাহড়ী পর্ব সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়। প্রায় ২০০ জন প্রার্থীর বেশির ভাগই প্রথম কয়েক দিনে বাদ পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত, কমবেশি ৩০ জন টিকে থাকে। যারা সকল পর্ব সম্পন্ন করতে সক্ষম হয় তাদেরকে পুরস্কার দিয়ে একটি অপারেশনাল স্ক্রোয়াড্রনে বদলি করা হয়।[96]
সাধারণ ব্যারাক হেডড্রেস হল বালি রঙের টুপি,[8] এর ক্যাপ ব্যাজ হল একটি নিম্নগামী আগুনঘেরা তলোয়ার (প্রায়ই ভুলভাবে একটি ডানাওয়ালা ড্যাগার হিসাবে উল্লেখ করা হয়), কাপড়ের তৈরি একটা যোদ্ধার ঢালের গায়ে লেখা থাকে মূলমন্ত্র হু ডেয়ার উইনস।[97][nb 4] এএসএএস ছাঁচের প্যারাসুট উইংস ডিজাইন করেছেন লেফটেন্যান্ট জক লুইস এবং ডান কাঁধের ওপর মিশরীয় হোটেল শেফার্ড এ রাখা মূর্তিশিল্প ইবিসের ডানা অনুকরণে মনোগ্রাম আঁকা।[99] হালকা নীল ডোরা কাটা প্যান্টের সাথে মেলানো রঙের উর্দি হচ্ছে এর আনুষ্ঠানিক ১ নম্বর পোশাক।[8]
ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে, যুদ্ধক্ষেত্রে রেজিমেন্টকে ব্যাটেল অনার দেয়া হয় সাধারণত কোন বিজয়ের পুরস্কার স্বরূপ।[100] স্পেশাল এয়ার সার্ভিস রেজিমেন্টকে নিম্নলিখিত ব্যাটেল অনার বা যুদ্ধ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছেঃ[101][102]
টেমপ্লেট:Order of precedence
রেগুলার এসএএস এর যারা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মারা গেছেন তাদের নামগুলি রেজিমেন্টাল ক্লক টাওয়ার স্ট্রিলিং লাইনসে উল্লেখ করা আছে।[103] টাওয়ারটি মূলতঃ ফ্রিফল প্যারাস্যুট দুর্ঘটনায় মৃত কর্পোরাল আর.কে. নরি-কে স্মরণ করে রেজিমেন্টের সদস্যদের একদিনের বেতন এবং হ্যান্ডলি পেজ এর অনুদানে নির্মিত হয়।[104][105][106] পরবর্তীতে এটি ক্রেডেনহিল এর নতুন ব্যারাকে পুনর্নির্মিত হয়। যাদের নাম এখানে লেখা আছে, তাদেরকে জীবিত সদস্যরা “সময়কে হারাতে ব্যর্থ” বলে ডাকেন।[107] তৎকালীন কমান্ডিং অফিসার ডেয়ার উইলসন এর পরামর্শে টাওয়ারের গোড়ায় জেমস এলরয় ফ্লেকার এর দ্য গোল্ডেন রোড-নামক কবিতার একটি চরণ লেখা হয়ঃ[108]
- আমরা তো তীর্থযাত্রী, গুরু, আমাদের যেতে হবে
- সবসময় আরেকটু দূরে, যতটুকু পারি
- বরফে মোড়া শেষ নীল পাহাড়ের পেছনে
- সেই ক্রুদ্ধ বা ঝলমলে সমুদ্রের ওপারে...
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবি'র ক্লোস্টার্সে এসএএস এবং এয়ারবোর্নি ফোর্সেস এর আরেকটি স্মৃতিস্তম্ভ আছে। এসএএস ব্রিগেড স্মৃতিস্তম্ভ ফ্রান্সের সেননেসি-লে-গ্র্যান্ড-এ স্থাপিত যেখানে যুদ্ধকালীন বেলজিয়ান, ব্রিটিশ ও ফরাসী মৃত এসএএস সৈন্যদের স্মৃতি রক্ষা করা হয়েছে এবং সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের ডেভিড স্টার্লিং মেমোরিয়ালে একটি স্মৃতি ফলক যোগ করা হয়েছে। অন্যান্য ছোটখাট স্মৃতিস্তম্ভগুলো ইউরোপ এবং এর পূর্ব দিকে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।[109]
হেয়ারফোর্ড এর স্থানীয় গির্জা সেন্ট মার্টিন এর একটি অংশে এসএএস স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে কুড়ি জনেরও বেশি এসএএস সৈন্যকে সমাহিত করা আছে।[110] তাছাড়া ১৯৮২ সালের ১৯ মে,[111] ফকল্যাণ্ড ক্যাম্পেইন চলাকালে সি কিং হেলিকপ্টার দূর্ঘটনায় মৃত ১৮জন সৈন্য সহ যাদেরকে সমাহিত করা সম্ভব হয়নি তাদের স্মরণে একটি স্মৃতি ফলক, একটি ভাস্কর্য ও রঙ্গিন কাঁচযুক্ত দেয়াল এখানে নির্মিত আছে।[112]
২০১৭ সালের অ্যাসেনশন দিবসে, হেয়ারফোর্ড ক্যাথেড্রালে প্রিন্স উইলিয়ামের উপস্থিতিতে স্পেশাল এয়ার সার্ভিস এর সম্মানে বিশপ কর্তৃক একটি নতুন ভাস্কর্য এবং জানালা উন্মোচিত হয়।[113]
অস্ট্রেলিয়া: স্পেশাল এয়ার রেজিমেন্ট[114] নিউজিল্যান্ড: নিউজিল্যান্ড স্পেশাল এয়ার রেজিমেন্ট[114]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.