Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মালিকুয যাহির গিয়াসুদ্দীন গাজী ইবনে ইউসুফ ইবনে আইয়ুব (আরবি: الملك الظاهر غياث الدين غازي بن الناصر صلاح الدين يوسف; সাধারণত যাহির গাজী নামে পরিচিত; ১১৭২- ৮ অক্টোবর ১২১৬) ছিলেন ১১৮৬ থেকে ১২১৬ সাল পর্যন্তআলেপ্পোর আইয়ুবীয় আমির।[1] তিনি ছিলেন সালাহউদ্দিনের তৃতীয় পুত্র। তার এলাকার মধ্যে উত্তর সিরিয়া এবং মেসোপটেমিয়ার ছোট একটি অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
যাহির গাজী | |
---|---|
মালিকুয যাহির | |
আলেপ্পোর আমির | |
রাজত্ব | ৪ মার্চ ১১৯৩–৮ অক্টোবর ১২১৬ |
পূর্বসূরি | সালাহউদ্দিন মিশর ও সিরিয়ার সুলতান হিসেবে |
উত্তরসূরি | আল-আজিজ মুহাম্মদ |
জন্ম | ১১৭২ |
মৃত্যু | ৮ অক্টোবর ১২১৬ ৪৩–৪৪) | (বয়স
দায়ফা খাতুন | |
বংশধর | আল-আজিজ মুহাম্মদ |
পিতা | সালাহউদ্দিন |
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
১১৮৬ খ্রিস্টাব্দে যাহিরের বয়স যখন ১৫ বছর, তখন তার পিতা তাকে মসুল এবং এর আশেপাশের এলাকার গভর্নর নিযুক্ত করেন। এসব এলাকা কিছুকাল পূর্বেই জেনগিদের নিকট থেকে নেওয়া হয়েছিল। একই সময়ে তার দুই বড় ভাই আফযাল আর আজিজকে যথাক্রমে সিরিয়া এবং মিশরের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। যাহির যেই এলাকা পেয়েছিলেন, সেগুলো তার চাচা সালাহউদ্দিনের ভাই আদিলের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আদিলও তার ভ্রাতুষ্পুত্র যাহিরের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তিনি ১১৯৩ খ্রিস্টাব্দে উত্তরাধিকারসূত্রে দামেস্ক পেলেও বড় ভাই আফযালের আধিপত্যের অধীন ছিলেন। অবশ্য তিনি তার ভাইদের বলয় থেকে দূর থেকে স্বাধীনভাবে তার রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। একারণের প্রথম দিকে কিছু সময় চাচা আদিলের সাথে তাদের ঝগড়ার সময়ে দূরে ছিলেন।[2]
১১৯৩ খ্রিস্টাব্দে মসুলে জেনগি ইযযুদ্দীনের বিদ্রোহের মুখোমুখি হয়ে তিনি তার চাচা আদিলকে আমন্ত্রণ জানান। আদিল অগ্রসর হয়ে দ্রুত এই বিদ্রোহ দমন করেন। ১১৯৪ খ্রিস্টাব্দে একটি চুক্তির শর্ত অনুসারে লাতাকিয়া ও জাবলেহ পেয়েছিলেন। সেখানে তিনি আফযালের কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তবে ১১৯৬ খ্রিস্টাব্দে আফযাল নিজেকে শাসনকার্যে অযোগ্য প্রমাণ করেছিলেন এবং আদিলের সমর্থন হারিয়েছিলেন। সেসময়ে যাহির তার আরেক ভাই আজিজ ও চাচা আদিলকে সমর্থন করে আফযালকে ক্ষমতাচ্যুত ও নির্বাসনে যেতে বাধ্য করতে কাজ করেন। এদিকে লুসিগানের আমালরিক বৈরুত বন্দর পুনরায় দখল করে নেয়। আবার অ্যান্টিওকের তৃতীয় বোহেমন্ড লাতাকিয়া ও জাবলেহের জন্য হুমকী হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। সেজন্য ১১৯৭ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরে বন্দরগুলো ধ্বংস করে দেন। যদিও বোহেমন্ড দুইটি জায়গায় অবস্থান নিয়েছিল; কিন্তু সেগুলো সুবিধাজনক ছিলনা। যার ফলে সে বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর যাহির পুনরায় সেগুলো দখল করে নেন এবং লাতাকিয়ার দুর্গ পুনর্নির্মাণ করেন।
আলেপ্পোর শাসক থাকাকালীন তিনি তার পিতার অনেক উপদেষ্টাকে সাথে রেখেছিলেন। তিনি বাহাউদ্দিন ইবনে শাদ্দাদকে আলেপ্পোর কাজী (বিচারক) নিযুক্ত করেন।[3] তিনি আধুনিকমনা সোহরাওয়ার্দীকে আলেপ্পোতে নিয়ে আসেন। কিন্তু ১১৯১ খ্রিস্টাব্দে মূলধারা উলামাদের দাবির মুখে তাকে বন্দী করতে বাধ্য হন।[4]
১১৯৮ খ্রিস্টাব্দে আজিজ মিশরে মারা গেলে তার পুত্র নয় কি বার বছর বয়সী মানসুর তার স্থলাভিষিক্ত হন। আজিজের মন্ত্রীরা আদিলের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তাই তারা আফযালকে নির্বাসন থেকে যুবক ভ্রাতুষ্পুত্রের রাজপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য ডেকে পাঠায়। পরের বছরের শুরুর দিকে আদিল উত্তরে আর্তুকিদ বিদ্রোহ দমন করছিলেন। তখন আফযাল আর যাহিরসহ আইয়ুবীয় রাজপুত্ররা জোট করে একত্রে দামেস্ক অবরোধ করেন। কিন্তু এটি অনেক দীর্ঘ হয়। যার ফলে অন্যান্য আইয়ুবীয় রাজকুমারদের মত যাহিরও আগ্রহ হারিয়ে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেন।[2] তবে সৈন্য প্রত্যাহার করলেও আদিল তার উপর সন্তুষ্ট হননি। মিশর বিজয় করার পর তিনি ফিরে এসে আলেপ্পোর আশেপাশের অঞ্চল দখল করতে থাকেন। যদ্দরুণ যাহির আদিলের সালতানাত ও আধিপত্যকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হন। তার জীবনের শেষ দশকে তিনি ক্রুসেডারদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। আর তিনি তার সৈন্যবাহিনীকে অন্যান্য আইয়ুবীয়দের সমর্থনের জন্য প্রেরণ করতেন। ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে সিসিলির রাজা লিও আমাকের যুদ্ধে যাহিরের সৈন্যদলকে পরাজিত করেন। কিন্তু আলেপ্পোর বিরুদ্ধে কোনো স্থায়ী সুবিধা নিশ্চিত করতে পারেননি। ১২০৭ খ্রিস্টাব্দে ফ্রেঞ্চ বাহিনী হিমস আক্রমণ করে শহর অবরোধ করে ফেলে। সেখানকার আইয়ুবীয় আমির মুজাদিদ শিরকুহ দ্বিতীয় যাহিরের কাছে আবেদন প্রেরণ করেন। যাহির সৈন্যবাহিনী ফ্রেঞ্চ বাহিনীকে অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য করে।
১২১২ খ্রিস্টাব্দে যাহির তার পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বী আদিলের কন্যা দায়ফা খাতুনকে বিয়ে করেন। এটি বিভিন্ন দিক দিয়েই বিশেষ গুরুত্ব বহন করেছে।[2] এর ফলে রাজবংশটির দুইটি শাখার মধ্যে দ্বন্দ্বের অবসান ঘটেছিল।[5]
যাহির তার ছোট ছেলে আজিজ মুহাম্মাদকে তার উত্তরাধিকারী নির্বাচিত করেছিলেন। আজিজ মুহাম্মাদের জন্ম হয়েছিল ১২১৩ খ্রিস্টাব্দে। ১২১৬ খ্রিস্টাব্দে যাহির মৃত্যুবরণ করেন।[1]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.