মুলতান সূর্য মন্দির
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের হিন্দু মন্দির উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের হিন্দু মন্দির উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মুলতান সূর্য মন্দির বা আদিত্য সূর্য মন্দির[1] ছিল একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দির। এটি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুলতান শহরে অবস্থিত।[2]
মুলতান সূর্য মন্দির | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
ঈশ্বর | সূর্য |
অবস্থান | |
অবস্থান | মুলতান, পাঞ্জাব পাকিস্তান |
স্থানাঙ্ক | ৩০°১১′৫২″ উত্তর ৭১°২৮′১১″ পূর্ব |
স্থাপত্য | |
ধরন | হিন্দু মন্দির |
প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে, কৃষ্ণের পুত্র শাম্ব কুষ্ঠ রোগ থেকে মুক্ত হতে মুলতানের আদি সূর্যমন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন।[3][4][5]
গ্রিক নৌপ্রধান সাইল্যাক্স এই সূর্যমন্দিরের উল্লেখ করেছিলেন। তিনি ৫১৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলের পাশ দিয়ে গিয়েছিলেন। মুলতান শহরের প্রাচীন নাম ছিল কাশ্যপপুর। এই শহর ও তার সূর্যমন্দিরের উল্লেখ হেরোডোটাসও করেছিলেন।[6]
কথিত আছে, ৬৪১ খ্রিষ্টাব্দে হিউয়েন সাং এই মন্দিরে এসেছিলেন। তার বর্ণনা থেকে জানা যায়, এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহটি ছিল সোনার তৈরি ও বিগ্রহের চোখদুটি ছিল লাল চুনি দিয়ে তৈরি।[7] মন্দিরের দরজা, স্তম্ভ ও চূড়ায় সোনা, রুপো ও রত্নের অনেক ব্যবহার ছিল। প্রতিদিন সহস্রাধিক হিন্দু এই মন্দিরে পূজা দিত। তিনি এই মন্দিরে কিছু দেবদাসীও দেখেছিলেন।[8][9] তিনি আরও বলেছিলেন, এই মন্দিরে শিব ও বুদ্ধের মূর্তি ছিল।[10]
অষ্টম শতাব্দীতে মুহাম্মদ বিন কাশিমের নেতৃত্বে উমায়াদ খলিফা বাহিনী মুলতান দখল করেন। অনুপ্রবেশকারীরা এই মন্দির লুণ্ঠন করে।[11][12] কাশিম মন্দিরের রক্ষকদের বন্দী করে ধনসম্পদ লুঠ করেন। শুধু কাঠের বিগ্রহটি লুঠ করা হয়নি। তবে হিন্দুধর্মকে উপহাস করতে এক টুকরো গোমাংস মুর্তিটির গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।[13][14][15] বাজারের কাছে কাশিম একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। পরে মুলতান আক্রমণকারী হিন্দু রাজাদের সঙ্গে দরাদরি করার জন্য এই মন্দিরটিকে ব্যবহার করা হত। যেকোনো হিন্দু রাজা মুলতান দখল করতে চাইলেই, মন্দিরটি ধ্বংস করার হুমকি দেওয়া হত। এর ফলে হিন্দু রাজারা মুলতান আক্রমণ থেকে বিরত থাকতেন।[13][16][17] দশম শতাব্দীতে ইসমাইলিরা মুলতান দখল করে মূর্তিটি ভেঙে ফেলে ও পুরোহিতদের হত্যা করে। তারা মন্দিরের জায়গায় একটি মসজিদ তৈরি করে। উমায়াদ মসজিদটির বদলে এটি ব্যবহৃত হতে থাকে। পরে গজনির মামুদ নতুন মসজিদটি বন্ধ করে শুক্রবারের প্রার্থনার জন্য পুরনো মসজিদটিই চালু রাখেন। এর ফলে ইসমাইলি মজজিদটি জীর্ণ হয়ে পড়ে। আল বিরুনি লিখেছিলেন, একাদশ শতাব্দীতে হিন্দু তীর্থযাত্রীরা মুলতানের সূর্যমন্দিরে আসতেন না। কারণ সেই সময় মন্দিরটি পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল। তারপর আর মন্দিরটি তৈরি হয়নি।[13][18][19]
আল বিরুনি এই মন্দিরের বর্ণনাও দিয়েছিলেন।[3] যদিও কথিত আছে গজনির মামুদই ১০২৬ সালে মন্দিরটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেন।[8][9][12]
মুলতানের যে অংশে মন্দিরটি অবস্থিত ছিল “মূলস্থান”। সম্ভবত এই নাম থেকেই মুলতান শহরের নামের উৎপত্তি হয়েছিল।[20][21] এই স্থানটি সঠিক কোথায় ছিল, তা আর জানা যায় না। এই নিয়ে গবেষকদের মধ্যে মতান্তর আছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.