Loading AI tools
পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্তর্গত মেদিনীপুর বিভাগের একটি জেলা। ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এই জেলা প্রতিস্থাপিত হয়। এই জেলাতে তিনটি মহকুমা রয়েছে: খড়গপুর, মেদিনীপুর সদর এবং ঘাটাল।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা | |
---|---|
পশ্চিমবঙ্গের জেলা | |
পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
বিভাগ | মেদিনীপুর |
সদর দপ্তর | মেদিনীপুর |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্রগুলি | মেদিনীপুর, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম (এসটি)- সকলের সংলগ্ন জেলাগুলিতে বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে, আরামবাগ- জেলার একটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে |
• বিধানসভা কেন্দ্রগুলি | দাঁতন, কেশিয়ারি, খড়গপুর সদর, নারায়ণগড়, সবং, পিংলা, খড়গপুর, ডেবরা, দাশপুর, ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, গড়বেতা, শালবনি, কেশপুর, মেদিনীপুর |
আয়তন | |
• মোট | ৬,৩০৮ বর্গকিমি (২,৪৩৬ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৪৭,৭৬,৯০৯ |
• জনঘনত্ব | ৭৬০/বর্গকিমি (২,০০০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ১১.৯% |
জনসংখ্যার উপাত্ত | |
• সাক্ষরতা | ৭৯.০৪% |
• লিঙ্গ অনুপাত | ৯৬০ |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
প্রধান সড়ক | এনএইচ ১৬, এনএইচ ৬০ |
গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত | ২,১১১ এমএম |
ওয়েবসাইট | http://www.paschimmedinipur.gov.in/ |
ঐতিহাসিক মতে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন (তৎকালীন দন্দভুক্তি) এলাকায় রাজা শশাঙ্কের রাজত্বের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।[1][2] ঐ সময়কালে তাম্রলিপ্ত সাম্রাজ্যের অংশ ছিল এই জেলার অনেকাংশ। ১০২১-১০২৩ খ্রিষ্টাব্দে রাজা রাজেন্দ্র ঢোলের আক্রমণের পর তাম্রলিপ্ত সাম্রাজ্যের পতন হয়। এরপর ১১৩৫ খ্রিষ্টাব্দে রাজা অনন্ত বর্মণ মেদিনীপুরের (তৎকালীন মিধুনপুর) দখল নেন।[3] খ্রিষ্টীয় ১৩০০-১৫০০ শতাব্দীতে সারা বাংলায় মুসলিম সাম্রাজ্যের বিস্তার হলেও বিষ্ণুপুরের হিন্দু রাজা এবং জমিনদারেরা মেদিনীপুরের সুবিশাল অংশে হিন্দু সাম্রাজ্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।[1] ১৫০০ শতাব্দীর শুরুতে মেদিনীপুর মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। ১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জব চার্নক মেদিনীপুরের হিজলিতে আসেন।[2] ১৭০০ শতাব্দীর মধ্যান্তরে মারাঠারা একাধিক বার মেদিনীপুরে আক্রমণ ও লুঠতরাজ করে। ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশ মারাঠা সাম্রাজের অধীনে চলে যায়। এরপর ব্রিটিশ আমলে মেদিনীপুর একাধিক কৃষক বিদ্রোহ ও স্বাধীনতা সংগ্রামী আন্দোলনের সাক্ষী থেকেছে।[2][4]
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ২০০২ সালের ১ জানুয়ারী ভারতের তৎকালীন বৃহত্তম জেলা মেদিনীপুর জেলার বিভাজনের মাধ্যমে নির্মিত হয়। এই বিভজনের পরে জেলার ভৌগোলিক অঞ্চলের আয়তন হয় ৯,২৯৫.২৮ বর্গ কিমি এবং এটি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার পরে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ জেলা। ২০১১ সালের হিসাবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা (৫৮ লাখ ২০ হাজার) এবং মুর্শিদাবাদ (৫১ লাখ ৩০ হাজার) এর পরে গ্রামীণ জনসংখ্যার (৪৪ লাখ ৮০ হাজার) দিক দিয়ে এটি তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এটি ২০১১ সালের হিসাবে জেলাতে বসবাসকারী উপজাতির জনসংখ্যার শতাংশের (১৪.৮৭%) দিক থেকে জলপাইগুড়ি (১৮.৮৭), পুরুলিয়া (১৮.২৭%) এবং দক্ষিণ দিনাজপুর (১৬.১২%) পরে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।[5]
বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে, জেলার দুটি প্রাকৃতিক বিভাগ রয়েছে। বাঁকুড়া থেকে বালাসোর পর্যন্ত এনএইচ ১৪ এবং এনএইচ ১৬ (পুরাতন নম্বর এনএইচ ৬০) জেলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এবং এই জাতীয় সড়ক দুটি মোটামুটি ভাবে দুটি প্রাকৃতিক বিভাগের মধ্যে বিভাজক রেখা। এই রাস্তার পূর্বদিকে মাটি উর্বর পলল এবং অঞ্চল সমতল এবং পশ্চিমে, ছোটা নাগপুর মালভূমি ধীরে ধীরে লাল হয়ে যায়, যা ল্যাটারাইট শিলা এবং মাটি দিয়ে একটি কৃষিকাজে অনউপযোগী অঞ্চল তৈরি করে। জেলাতে ভূপ্রকৃতি পশ্চিমে ঘন শুকনো পাতলা বন থেকে পূর্বের প্রাকৃতিক জলাভূমিতে পরিবর্তিত হয়।[5]
পলল অংশটি আরও দুটি বিভাগে বিভক্ত হতে পারে। প্রথমত, এটি হুগলি নদী এবং রুপনারায়ণ নদের নিকটবর্তী খাঁটি বদ্বীপদেশের একটি ভূমিভাগ, যা অধীনে অসংখ্য নদী এবং জলরাশি দ্বারা বিভক্ত করা হয়। দ্বিতীয়ত, এটি জেলার পূর্বে বাকি অংশ, এটি একঘেয়ে ধানের চাষে উপযুক্ত সমভূমি, যেখানে অসংখ্য জলপথ এবং জোয়ারের জলে পুষ্ট খাঁড়ি রয়েছে। জোয়ারের জলে পুষ্ট খাঁড়িগুলি জমিতে বন্যা রোধে বাঁধের সাথে সারিবদ্ধভাবে আবদ্ধ। বেশিরভাগ অঞ্চল জল-লগ্ন।[5]
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বন্যা এবং খরা উভয়েরই জন্য পরিচিত। ঘাটাল এবং খড়গপুর মহকুমার ১৪২,৬৪৭ হেক্টর (১,৪২৬.৪২ বর্গ কিমি) জমি বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ঘাটাল এবং খড়গপুর মহকুমার দক্ষিণাঞ্চলে প্রভাব ফেলে এবং এর ফলে সবং, পিংলা এবং নারায়ণগড় সিডি ব্লক, মেদিনীপুর সদর মহকুমায় র ৩,৩৩,২৪৮ হেক্টর (৩৩৫২.৪৮ বর্গ কিমি) জমি খরার প্রবণতা বয়ে যায়। যদিও জেলাটি সমুদ্র থেকে দূরে থাকলেও অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় প্রায়শই এই স্থানে আঘাত করে।[5]
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আয়তন ৯২৯৫.২৮ বর্গ কিমি।[6]
এই জেলার আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৪৫ ডিগ্রি ও ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গড় বৃষ্টিপাতের পরিমান ১৫১৪ মিমি।[6]
২০১১ এর আদমশুমারি অনুযায়ী এই জেলার জনসংখ্যা ৫৯,৪৩,৩০০ জন। এরমধ্যে ৫১.০২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৮.৯৭ শতাংশ মহিলা।[6]
মেদিনীপুর এই জেলার সদর। এছাড়া বাকি গুরুত্ত্বপূর্ণ শহরগুলি হল: খড়্গপুর, ঘাটাল, বেলদা, চন্দ্রকোণা, রামজীবনপুর, গড়বেতা, বালিচক, দাঁতন, মোহনপুর, গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম, কেশিয়াড়ী, কেশপুর, নারায়ণগড়, সবং এবং দাসপুর।
এই জেলার অধিবাসীদের প্রধান ভাষা বাংলা (৮৬.৯০%) । এছাড়াও অন্য ভাষাগুলি হলো সাঁওতালি সাঁওতালি (৬.২৩%), হিন্দি (২.৮৫%), তেলুগু(০.৯৩%), ওড়িয়া (০.৭৫%) ও উর্দু (০.৭২%)
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে থাকা মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় গুলি হলঃ[9]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.