Loading AI tools
বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
খন্দকার নাজমুল হুদা (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ৭ নভেম্বর ১৯৭৫) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। [1] স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য তিনি ২০২২ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।[2]
খন্দকার নাজমুল হুদা | |
---|---|
মৃত্যু | ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর বিক্রম |
সম্মাননা | বীর বিক্রম স্বাধীনতা পুরস্কার (২০২২) |
খন্দকার নাজমুল হুদার পৈতৃক আদি নিবাস ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম খন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন এবং মায়ের নাম বদরুন নেছা খাতুন। তার স্ত্রীর নাম নীলুফার হুদা। তাদের এক ছেলে এহতেশাম হুদা ও এক মেয়ে নাহিদ ইজাহার খান যিনি একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন খন্দকার নাজমুল হুদা। ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা অভিযুক্ত হিসেবে আরও অনেকের সঙ্গে আটক হন। তিনি ছিলেন ২৭ নম্বর আসামি। ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বেকসুর খালাস পান। কিন্তু চাকরিচ্যুত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি এই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তখন তাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৭২ সালে খন্দকার নাজমুল হুদা মেজর হিসেবে কাজ করতেন। তিনি একসঙ্গে আর্মি সার্ভিস কোরের পরিচালক,অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল ও ঢাকা সেনানিবাস স্টেশন কমান্ডার ছিলেন। পরবর্তীতে নবম বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক ছিলেন। বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ), কুমিল্লা প্রথম অধিনায়ক ছিলেন। এরপর রংপুরে ফরমেশন অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর নভেম্বরের অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানে তিনি খালেদ মোশাররফ, এ টি এম হায়দারের সঙ্গে নিহত হন। [3]
যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার বর্ণী বিওপি। সেখানে ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শক্ত একটি ঘাঁটি। ছিল প্রায় ৭৫ জন পাকিস্তানি সেনা। ওই ঘাঁটির কারণে মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অভ্যন্তরে সহজে অপারেশন করতে পারছিলেন না। আগস্ট মাসের প্রথম দিকে খন্দকার নাজমুল হুদা সিদ্ধান্ত নিলেন সেখানে আক্রমণের। ৫ আগস্ট দুই কোম্পানি মুক্তিযোদ্ধা তার নেতৃত্বে আক্রমণ চালায়। তার পণ, পাকিস্তানিদের সেখান থেকে তাড়াবেনই। শেষ পর্যন্ত তিনি তার পণ রক্ষা করলেন। মুক্তিবাহিনীর তীব্র আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি সেনারা তাদের ১৫ জনের লাশ ফেলে রেখেই পালিয়ে গেল। যুদ্ধজয়ের পর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানিদের ফেলে যাওয়া অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ নিজেদের ঘাঁটিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। নাজমুল হুদা তা তদারক করছিলেন। এমন সময় হঠাৎ আরেক দল পাকিস্তানি সেনা পেছন থেকে এসে তাদের ওপর আক্রমণ করল। এর জন্য তারা প্রস্তুত ছিলেন না। এ সময় শুরু হয় আবার ব্যাপক সংঘর্ষ। খন্দকার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তানিদের মোকাবিলা করতে থাকেন। তিনি নিজেও অস্ত্র হাতে সহযোদ্ধাদের পাশে থেকে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন। একপর্যায়ে তিনি পাকিস্তানিদের আওতার মধ্যে পড়ে যান। তখন কয়েকজন সহযোদ্ধা তাকে পেছনে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসেন। ফলে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে তিনি অলৌকিকভাবে রক্ষা পান। সেদিন চারজন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে শহীদ এবং কয়েকজন আহত হন। খন্দকার নাজমুল হুদা প্রকৃতপক্ষেই ছিলেন একজন সাহসী যোদ্ধা। ৮ নম্বর সেক্টরের বয়রা সাব-সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন তিনি। যুদ্ধের ময়দানে তিনি শুধু অধিনায়কত্ব বা নির্দেশ দিতেন না। বেশির ভাগ সময় নিজেও প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশ নিতেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বয়রা সাব-সেক্টরে অসংখ্য যুদ্ধ সংঘটিত হয়। রঘুনাথপুর, যাদবপুর, বেলতা, গঙ্গানদ, বর্ণী, চৌগাছা-মাসলিয়া, চৌগাছার যুদ্ধ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ২০-২১ নভেম্বর চৌগাছার গরীবপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। এছাড়া মুক্তিবাহিনী অসংখ্য অ্যামবুশ, ডিমোলিশন, আকস্মিক আক্রমণ করে।[4]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.