Loading AI tools
মার্কিন অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দ্বিতীয় উইলার্ড ক্যারল স্মিথ[1] (জন্ম ২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৮) একজন মার্কিন অভিনেতা, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও র্যাপার। এছাড়া তিনি তার মঞ্চ নাম দ্য ফ্রেশ প্রিন্স নামেও পরিচিত। সঙ্গীত, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে[5] কাজের জন্য স্মিথ চারটি গ্র্যামি পুরস্কার, একটি একাডেমি পুরস্কার, একটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, একটি বাফটা পুরস্কার, একটি স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার, একটি ক্রিটিকস চয়েস চলচ্চিত্র পুরস্কার-সহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। ২০২১ সাল নাগাদ, তার অভিনীত চলচ্চিত্রসমূহ বিশ্বব্যাপী $৯.৩ বিলিয়নের উপর আয় করেছে,[6] এবং স্মিথ একাধিক মার্কিন ও আন্তর্জাতিক বক্স অফিস রেকর্ড ধরে রেখেছেন।[7][8][9]
উইল স্মিথ | |
---|---|
Will Smith | |
জন্ম | দ্বিতিয় উইলার্ড ক্যারল স্মিথ[1] ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮[2] |
অন্যান্য নাম | দ্য ফ্রেশ প্রিন্স |
পেশা |
|
কর্মজীবন | ১৯৮৬-বর্তমান[3] |
প্রতিষ্ঠান |
|
প্রতিনিধি |
|
কর্ম | ডিস্কোগ্রাফি ও চলচ্চিত্রের তালিকা |
দাম্পত্য সঙ্গী |
|
সন্তান | ৩, জ্যাডেন ও উইলো স্মিথ-সহ |
পুরস্কার | পূর্ণ তালিকা |
সঙ্গীত কর্মজীবন | |
উদ্ভব | পশ্চিম ফিলাডেলফিয়া, পেন্সিলভেনিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
ধরন | পপ-র্যাপ[4] |
লেবেল |
|
ওয়েবসাইট | willsmith |
স্বাক্ষর | |
তিনি ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে, মেন ইন ব্ল্যাক, আলী চলচ্চিত্রের জন্য বিখ্যাত। সিনেমায় আসার আগে তিনি দি ফ্রেশ প্রিন্স অফ বেল এয়ার নামক টিভি কমেডি সিরিজে ১৯৯০ হতে ১৯৯৬ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত অভিনয় করেছেন। তিনি হিপ হপ সঙ্গীত দল ডিজে জ্যাজি জেফ অ্যান্ড দ্য ফ্রেশ প্রিন্স এর সদস্য ছিলেন।
আলী চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য স্মিথ অস্কার মনোনয়ন পান। এছাড়া হিপ হপ সঙ্গীতের জন্য তিনি একাধিকবার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন।
স্মিথ ১৯৬৮ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর পেন্সিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়া শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা উইলার্ড ক্যারল স্মিথ সিনিয়র[10][11] একজন মার্কিন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা[12] ও রেফ্রিজারেশন প্রকৌশলী এবং মাতা ক্যারোলাইন (জন্মনাম ব্রাইট) ফিলাডেলফিয়া স্কুল বোর্ডের প্রশাসক। তার মাতা কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।[13]
স্মিথ পশ্চিম ফিলাডেলফিয়ার নিকটবর্তী উইনিফিল্ডে[14] ব্যাপ্টিস্ট হিসেবে বেড়ে ওঠেন।[15] পামেলা নামে তার এক বড় বোন এবং হ্যারি ও এলেন নামে দুই যমজ ছোট ভাই-বোন রয়েছে।[14] স্মিথ ফিলাডেলিফিয়ার বেসরকারি ক্যাথলিক এলিমেন্টারি স্কুল আওয়ার লেডি অব লোর্ডেসে পড়াশোনা করেন,[16] এবং এরপর ওভারব্রুক হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন, এটিও ক্যাথলিক ছিল। তার পিতামাতা তাকে ভালো শিক্ষা দেওয়ার জন্য এই বিদ্যালয়গুলো বাছাই করেছিলেন।[17] তার যখন ১৩ বছর বয়স তখন তার পিতামাতা আলাদা হয়ে যান,[18] কিন্তু ২০০০ সালের পূর্ব পর্যন্ত তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেনি।[19]
১৯৯৮ সালে স্মিথ জিন হ্যাকম্যানের সাথে এনিমি অব দ্য স্টেট চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।[20] পরের বছর তিনি ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট (১৯৯৯) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য দ্য ম্যাট্রিক্স চলচ্চিত্রের নিও চরিত্রটির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট ব্যর্থ হলেও স্মিথ বলেন তার এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার কোন খেদ নেই এবং বলেন নিও চরিত্রে কিয়ানু রিভসের অভিনয় স্মিথ নিজে যেমন করতে পারতেন তার চেয়ে ভালো হয়েছে,[21] তবে ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট মুক্তির পরবর্তী সাক্ষাৎকারগুলোতে তিনি বলেছিলেন যে তিনি "ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট করে ভুল করেছেন। এটা আরও ভালো হতে পারত।"[22]
স্মিথ ২০০১ সালের জীবনীনির্ভর আলি চলচ্চিত্রে হেভিওয়েট মুষ্টিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলি চরিত্রে অভিনয় করেন। এই অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার ও নাট্যধর্মী চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[23][24] চার বছর সঙ্গীত থেকে দূরে থাকার পর ২০০২ সালে স্মিথ তার তৃতীয় অ্যালবাম বর্ন টু রেইন নিয়ে ফিরে আসেন। এটি বিলবোর্ড ২০০ তালিকায় ১৩তম অবস্থানে পৌঁছে এবং আরআইএএ কর্তৃক গোল্ড সনদ লাভ করে।[25][26] এই অ্যালবামের প্রধান একক গান ছিল স্মিথের মেন ইন ব্ল্যাক ২ চলচ্চিত্রের থিম গান "ব্ল্যাক স্যুটস কামিন' (নড ইয়া হেড)", যেটি ইউকে সিঙ্গলস চার্টে তৃতীয় স্থানে পৌঁছায়।[27] এই বছরের পরবর্তী সময়ে স্মিথ স্মিথের প্রথম সংকলিত অ্যালবাম গ্রেটেস্ট হিটস মুক্তি পায়, যেটিতে তার তিনটি একক অ্যালবামের এবং ডিজে জ্যাজি জেফের সাথে গাওয়া গানগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়।[28]
২০০৮ সালে স্মিথ দ্য লাস্ট ফ্যারাও নামে একটি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেছিলেন, এতে তার তাহারকা চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল।[29] একই বছর তিনি সুপারহিরো চলচ্চিত্র হ্যানকক-এ অভিনয় করেন।[30] চলচ্চিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় $২২৭,৯৪৬,২৭৪ এবং বিশ্বব্যাপী মোট $৬২৪,৩৮৬,৭৪৬ আয় করে।[31] ২০১১ সালের ১৯শে আগস্ট ঘোষণা দেওয়া হয় যে স্মিথ প্রযোজক লা মার এডওয়ার্ডসের সাথে তার পঞ্চম স্টুডিও অ্যালবাম প্রকাশের কাজ শুরু করেছেন।[32]
স্মিথ মেন ইন ব্ল্যাক ৩-এ পুনরায় এজেন্ট জে চরিত্রে অভিনয় করেন। এটি ২০১২ সালের ২৫শে মার্চ মুক্তি পায়। এর মধ্য দিয়ে তিনি চার বছর পর প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন।[33][34] চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর স্মিথ এই ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে তার কাজ সমাপ্ত করে সন্তুষ্ট ছিলেন এবং বলেন, "আমি মনে করি আমার জন্য তিনটাই যথেষ্ট। যেকোন কিছুর তিনটাই আমার জন্য যথেষ্ট।"[35] মেন ইন ব্ল্যাক ২ (২০০২) মুক্তির দশ বছর পর মেন ইন ব্ল্যাক ৩ মুক্তি পায় এবং বিশ্বব্যাপী $৬২৪ মিলিয়ন আয় করে।[36][37] মুদ্রাস্ফীতি সমন্বয় না করলে এটি এই ধারাবাহিকের সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র।[38][39]
২০১৩ সালে স্মিথ তার ছেলে জ্যাডেনকে নিয়ে আফটার আর্থ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রটি দেশের বক্স অফিসে ব্যর্থ হয় এবং সমালোচনামূলকভাবেও ব্যর্থ হয়।[40] স্মিথ চলচ্চিত্রটিকে "আমার কর্মজীবনের সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যর্থতা" বলে উল্লেখ করেন এবং এর ফলে দেড় বছরের বিরতি নেন।[41]
স্মিথ ২০১৫ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি মুক্তিপ্রাপ্ত প্রণয়ধর্মী নাট্য চলচ্চিত্র ফোকাস-এ মার্গো রবির বিপরীতে অভিনয় করেন।[42] এতে তিনি নিকি স্পার্জেন নামক একজন বর্ষীয়ান কন শিল্পী চরিত্রে অভিনয় করেন, যে তরুণী ও আকর্ষণীয় নারীকে তার দলে যুক্ত করেন। তিনি মার্কাস স্যাকির উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিতব্য বিজ্ঞান কল্পকাহিনী থ্রিলারধর্মী ব্রিলিয়ান্স ছবিতে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয়ের জন্য প্রস্তুত হলেও পরবর্তীকালে রিডলি স্কটের ক্রীড়া নাট্যধর্মী কনকাশন চলচ্চিত্রে কাজের জন্য এই চলচ্চিত্রের কাজ ছেড়ে দেন।[43][44]
স্মিথ মার্কিন গায়ক নিকি জ্যাম ও কসোভার গায়ক ইরা ইস্তরেফির সাথে রাশিয়ার মস্কোতে অনুষ্ঠিত ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের সমাপনী অনুষ্ঠানে দাপ্তরিক গান "লিভ ইট আপ" পরিবেশন করেন।[45] এই সেপ্টেম্বর মাসে স্মিথকে মার্ক অ্যান্থনির "এস্তা রিকো" গানে ব্যাড বানির সাথে দেখা যায়।[46]
স্মিথ ডিজনির আলাদিন-এর লাইভ অ্যাকশন চলচ্চিত্রে দি জিনি (মূল কণ্ঠ রবিন উইলিয়ামস) চরিত্রে অভিনয় করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি "অ্যারাবিয়ান নাইটস (২০১৯)", "ফ্রেন্ডস লাইক মি", ও "প্রিন্স আলি" গানে কণ্ঠ দেন।[47] চলচ্চিত্রটি ২০১৯ সালের ২৪শে মে মুক্তি পায়।[48] আলাদিন বিশ্বব্যাপী $১ বিলিয়ন আয় করে যা স্মিথের সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে-কে পিছনে ফেলে।[49] এছাড়া তাকে র্যাপার লজিকের পঞ্চম স্টুডিও অ্যালবাম কনফেশন্স অব আ ডেঞ্জারাস মাইন্ড-এর "ডোন্ট বি অ্যাফ্রেইড টু বি ডিফারেন্ট" (২০১৯)-এ দেখা যায়।[50]
দ্য সাটল আর্ট অব নট গিভিং আ ফ*ক বইয়ের লেখক মার্ক ম্যানসনের সাথে যৌথভাবে রচিত স্মিথের স্মৃতিকথা উইল ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর প্রকাশিত হয় এবং একটি সফরের মধ্যে দিয়ে এর প্রচারণা চালান।[51][52] বইটিতে তার শৈশবের মানসিক আঘাত, তার পিতার সাথে তার সম্পর্ক, এবং আয়াহুয়াস্কা নিয়ে তার অভিজ্ঞতার গল্প বর্ণিত হয়েছে।[53][54] একই বছর তিনি ও তার ওয়েস্টব্রুক স্টুডিও কোম্পানি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হন।[55]
স্মিথ ২০২১ সালে কিং রিচার্ড চলচ্চিত্রে ভেনাস ও সেরেনা উইলিয়ামসের পিতা ও টেনিস কোচ রিচার্ড উইলিয়ামস চরিত্রে অভিনয় করেন। এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার,[56] নাট্যধর্মী চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার,[57] সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার অর্জন করেন।[58]
২০২২ সালের ২৭শে মার্চ ৯৪তম একাডেমি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থাপক ও কৌতুকাভিনেতা ক্রিস রক জি.আই. জেন চলচ্চিত্রের সূত্র ধরে স্মিথের স্ত্রী জ্যাডা পিঙ্কেট স্মিথের ন্যাড়া মাথা নিয়ে কৌতুক করলে স্মিথ মঞ্চে এসে রককে থাপ্পড় মারেন।[59] ২০১৮ সালে পিঙ্কেট স্মিথ আলোপেশিয়ার চিকিৎসা নেন এবং এই অবস্থার জন্য তার চুল কামিয়ে ফেলেন। স্মিথের থাপ্পড় মারার ঘটনা টেলিভিশন দর্শক ও অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশগ্রহণকারী দর্শকদের অবাক করে দেয়, যারা এটা পূর্বরচিত কিনা এই নিয়ে সন্দিহান।[60] স্মিথ পরে তার আসনে ফিরে যান এবং রকের প্রতি তীক্ষ্ণস্বরে চেঁচিয়ে বলেন, "তোমার দুষ্ট মুখে আমার স্ত্রীর নাম নেবে না!"[61][62][63] এই রাতে স্মিথ কিং রিচার্ড চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে পুরস্কৃত হন এবং পুরস্কার গ্রহণের বক্তৃতায় একাডেমি ও অন্যান্য মনোনীতদের কাছে ক্ষমা চাইলেও রকের কাছে ক্ষমা চাননি।[64][65][66] রক স্মিথের বিরুদ্ধে কোন মামলা করা থেকে বিরত থাকেন।[67]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.