Loading AI tools
বাংলাদেশী অভিনেত্রী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সুবর্ণা মুস্তাফা (জন্ম: ২ ডিসেম্বর ১৯৫৯)[১] একজন বাংলাদেশী টেলিভিশন, চলচ্চিত্র এবং মঞ্চ অভিনেত্রী। তিনি ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসন-৪-এর প্রতিনিধিত্বকারী প্রাক্তন জাতীয় সংসদ সদস্য।[২] ১৯৮০-এর দশকে তিনি বাংলাদেশের অন্যতম দর্শকপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। বিশেষ করে আফজাল হোসেন এবং হুমায়ুন ফরীদির সাথে তার জুটি ব্যাপক দর্শক সমাদর লাভ করে। এছাড়া তিনি হুমায়ূন আহমেদের লেখা কোথাও কেউ নেই ও আজ রবিবার টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন। টেলিভিশন নাটকের পাশাপাশি তিনি ২২ বছর মঞ্চে অভিনয় করেন।
সুবর্ণা মুস্তাফা | |
---|---|
জন্ম | [১] ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান, পাকিস্তান (এখন: বাংলাদেশ) | ২ ডিসেম্বর ১৯৫৯
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
শিক্ষা | এমএ (ইংরেজি) |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অভিনয়শিল্পী |
কর্মজীবন | ১৯৭৮–বর্তমান |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী |
|
পিতা-মাতা |
|
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ – ১ মার্চ ২০২৫ | |
উত্তরসূরী | নাছিমা জামান ববি |
সংসদীয় এলাকা | সংরক্ষিত মহিলা আসন-৪ |
সুবর্ণা ১৯৮৩ সালে নতুন বউ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ হল ঘুড্ডি (১৯৮০), নয়নের আলো (১৯৮৪), পালাবি কোথায় (১৯৯৭) ও গহীন বালুচর (২০১৭)। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।[৩]
সুবর্ণা মুস্তাফা ১৯৫৯ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।[১][৪][৫][৬] তার পৈত্রিক নিবাস ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নে।[৭] তার পিতা গোলাম মুস্তাফা ছিলেন একজন প্রখ্যাত অভিনেতা ও আবৃত্তিকার। তার মাতা হোসনে আরা পাকিস্তান রেডিওতে প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন। মায়ের সহায়তায় মাত্র ৫/৬ বছর বয়সে বেতার নাটকে কাজ করেন। নবম শ্রেণীতে পড়াকালীন তিনি প্রথম টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৭১ সালের পূর্ব পর্যন্ত তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে নিয়মিত টেলিভিশনে কাজ করেছেন।[৮]
১৯৭০-এর দশকে সুবর্ণা ঢাকা থিয়েটারে নাট্যকার সেলিম আল দীনের নাটক জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন-এ অভিনয় করেন। ১৯৮০ সালে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী পরিচালিত ঘুড্ডি ছবির মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে আসেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ছবিটিকে "সময়ের আগে নির্মিত একটি ছবি, অ্যাহেড অব ইটস টাইম" বলে উল্লেখ করেন।[৮] ১৯৮৩ সালে নতুন বউ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। নয়নের আলো (১৯৮৪) ছবিতে তার অভিনয় সব শ্রেণীর দর্শককে নাড়া দিয়েছিল।
তিনি আজাদ আবুল কালাম রচিত ও আফসানা মিমি এবং বদরুল আনাম সৌদ পরিচালিত ডলস হাউজ টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয় করেন। এটি সৌদ পরিচালিত ও সুবর্ণা অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক। পরবর্তী কালে তিনি সৌদের পরিচালনায় সীমান্ত, উপসংহার, গহীনে, গ্রন্থিকগণ কহে, এলেবেলে, কোমল বিবির অতিথিশালা ও কানা সিরাজউদ্দৌলা, পিঞ্জর, ঘোড়ার চাল আড়াই ঘর, অন্তর্যাত্রা টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয় করেন।[৬]
২০১৮ সালে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিটিভির বিশেষ অনুষ্ঠান আনে মুক্তি আলো আনে উপস্থাপনা করেন এবং চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় বিশেষ টেলিভিশন নাটক অপেক্ষা-এ অভিনয় করেন।[৬] সুবর্ণা বর্তমানে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পল্লীসমাজ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিতব্য লীলাবতী চলচ্চিত্রে কাজ করছেন।[৯]
দীর্ঘদিন সাংস্কৃতিক অঙ্গনে দৃপ্ত পদচারণার পর সুবর্ণা মুস্তফা নাম লিখিয়েছেন রাজনীতির ঘরে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ বিজয়ী ও ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সংরক্ষিত মহিলা আসন-৪ (৩০৪), ঢাকা-২২ থেকে সুবর্ণা মুস্তফাকে মনোনয়ন ও চূড়ান্তভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।[১০][১১]
সুবর্ণা অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দীর্ঘ ২২ বছর সংসার করার পর ২০০৮ সালে ফরীদির সাথে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে তিনি বদরুল আনাম সৌদকে বিয়ে করেন।[১২]
২০২৪ সালে সংঘটিত কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন চলাকালে সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন সুবর্ণা মুস্তাফা। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সুবর্ণা মুস্তাফা সহ স্বৈরাচার আওয়ামী পন্থী শিল্পীদের একাংশ চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নেতৃত্বে হোয়াটসঅ্যাপে 'আলো আসবেই' নামের একটি গ্রুপে আন্দোলনের বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিলেন।[১৩][১৪] অসহযোগ আন্দোলন পরবর্তী সময়ে ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঐ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ সংশ্লিষ্ট কিছু স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে।[১৫][১৬]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.