Loading AI tools
সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী পরিচালিত ১৯৮০ সালের বাংলাদেশী চলচ্চিত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ঘুড্ডি হচ্ছে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী পরিচালিত ১৯৮০ সালের সাদাকালো রোমান্টিক-নাট্য চলচ্চিত্র।[2] ছবিটির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন পরিচালক সালাহউদ্দিন জাকী নিজেই। এটি সালাহউদ্দিন জাকীর প্রথম চলচ্চিত্র পরিচালনা।[3] এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সুবর্ণা মুস্তাফা এবং অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, তারিক আনাম খান, নায়লা আজাদ নূপুর, সৈয়দ হাসান ইমাম।[4] এই চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়।[5] এছাড়া ছবির সকল চরিত্রে নাম তাঁদের প্রকৃত নামেই।[6]
ঘুড্ডি | |
---|---|
পরিচালক | সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী |
রচয়িতা | সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | লাকী আখন্দ |
চিত্রগ্রাহক | শফিকুল ইসলাম স্বপন |
সম্পাদক | সাইদুল আনাম টুটুল |
প্রযোজনা কোম্পানি | সিনেমা কমিউন |
পরিবেশক | সিনেমা কমিউন |
মুক্তি | ১৯ ডিসেম্বর ১৯৮০[1] |
স্থিতিকাল | ১৪৫ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
ঘুড্ডি ১৯৮০ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশে মুক্তি পায়। সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী এই ছবির জন্য ৬ষ্ঠ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা এবং শফিকুল ইসলাম স্বপন শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক বিভাগে পুরস্কার অর্জন করে।[7]
আসাদ নামক এক যুবক, ঢাকা শহরের হাতিরপুল কিংবা ফকিরাপুলের পানির ট্যাংকের কাছে একটি টিনের ঘরে বাস করে, শিক্ষিত কিন্তু বেকার এবং বাউন্ডুলে-ভবঘুরে এবং তার কাছে টাকাপয়সা প্রায় থাকেনা বললেই চলে, সকালে তার এক বন্ধুর লন্ড্রিতে সময় কাটায়, দুপুরে বন্ধুর মতিঝিলের অফিসে খায় এবং আড্ডা দেয়। বন্ধুর লন্ড্রি থেকে সে জামা নিয়ে বাইরে ঘুরতে বেরোয়, সে তার রিকশা ভাড়াও তার বন্ধুর কাছ থেকে নেয়।
আসাদ তার বন্ধুর সাথে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে যায় গাড়িতে করে, যেটা তার বন্ধুরই গাড়ি, আসাদের বন্ধু হোটেলের ভেতরে চলে গেলে আসাদ গাড়ির বাইরে দাঁড়ায় এবং এক তরুণী তাকে বলে যে তার গাড়িটি বের করার জন্য আসাদের গাড়িটি সরাতে হবে, আসাদ তার বন্ধুকে গাড়ির ড্রাইভার সাজায়, বলে যে তার কাছ থেকে চাবি আনতে হবে, তার কাছ থেকে চাবি নিয়ে আসে, দেখা যায় তরুণীটির গাড়ি স্টার্ট হচ্ছেনা, তারপর আসাদ তরুণীটিকে গাড়িতে উঠিয়ে গাড়ি চালিয়ে তার বন্ধুর সামনে দিয়েই চলে যায়। আসাদের বন্ধুর লন্ড্রিতে গাড়ি থামাতে বলে সে তরুণীটি, আসা গাড়ি থামায় এবং তরুণীটি কাপড় বদলে আসে। রাস্তায় এক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় ঐ তরুণীটির এবং সে তাকে 'ঘুড্ডি' বলে ডাকছিলো। আসাদ ঘুড্ডির বাড়ি সামনে এসে পড়লে ঘুড্ডি তাকে তার নাম জিজ্ঞেস করে, আসাদ মিথ্যে নাম বলে যে, 'মহাব্বাত আলী'।
ঘুড্ডি পুনরায় একদিন আসাদের বন্ধুর লন্ড্রিতে যায় এবং আসাদ তাকে অনুসরণ করতে করতে শ্যামলী সিনেমা হলে চলে যায়, তার কাছে টাকা থাকেনা। ওখানে ক্যান্টিনে পেপসি আর ভেজিটেবল রোলের বিল সে দিতে গিয়ে থতমত খায়।
এভাবে আসাদ আর ঘুড্ডি অনেক ঘোরাঘুরি আর আড্ডা দিতে দিতে একে অপরের প্রেমে পড়ে যায়।[8]
ঘুড্ডির চিত্রসমূহ ৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছিল। ঢাকা ছাড়াও সোনাকান্দা দুর্গ, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, হিমছড়িতে দৃশ্যধারণ করা হয়েছিল।[9]
ঘুড্ডি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন লাকী আখন্দ। গীত রচনা করেছেন কাওসার আহমেদ চৌধুরী। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন হ্যাপী আখন্দ, শাহনাজ রহমতুল্লাহ ও শিমুল ইউসুফ ও লিনু বিল্লাহ।
নং. | শিরোনাম | রচয়িতা | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|---|
১. | "ঘুম ঘুম চোখে" | এস.এম. হেদায়েত | শাহনাজ রহমতুল্লাহ | ৪:৫০ |
২. | "যেমন নদীর বুকে নাও ভাইসা চলে" | কাওসার আহমেদ চৌধুরী | শিমুল ইউসুফ ও লিনু বিল্লাহ | : |
৩. | "সখী চল না" | কাওসার আহমেদ চৌধুরী | হ্যাপী আখন্দ | ৩:৫১ |
৪. | "আবার এলো যে সন্ধ্যা" | কাওসার আহমেদ চৌধুরী | হ্যাপী আখন্দ | ৪:২১ |
চলচ্চিত্র সমালোচক নাজমুল হাসান দারাশিকো সাপ্তাহিক অনন্যায় এক সমালোচনায় এই চলচ্চিত্র সম্পর্কে লিখেছেন, "এটি বাজারী চলচ্চিত্র নয়, তবে তা তৃপ্তিদায়ক এবং সত্যিকারের একটি বাংলাদেশী প্রেমের ছবি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের চিত্র ফুটে উঠেছে এর সংলাপ, চরিত্রায়ণ এবং ঘটনাপ্রবাহে।"[10] বিডিনিউজের লেখক নাদির জুনাইদ ছবিটিকে "বাংলাদেশের প্রথাবিরোধী ও প্রতিবাদী চলচ্চিত্র" বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি ছবিটি সম্পর্কে আরও বলেন "নান্দনিক নির্মাণশৈলী, রাজনৈতিক সমালোচনা, অভিনয় এবং কাহিনির অগতানুগতিকতা, বক্তব্যের গভীরতা বিভিন্ন বিচারেই ছিল সমসাময়িক বাংলাদেশী ছবি থেকে ভিন্ন। কাহিনি, নির্মাণপদ্ধতি, রাজনৈতিক বক্তব্য প্রভৃতি দিক থেকে ছবিটিকে গতানুগতিক বাংলাদেশী ছবি থেকে ব্যতিক্রমী করে তোলার ক্ষেত্রে পরিচালকের সফলতার কারণে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত নির্মিত বিকল্প ধারার চলচ্চিত্রসমূহের মধ্যে ঘুড্ডি অন্যতম শক্তিশালী ছবি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য।"[11]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.