রুবাইয়াত হোসেন পরিচালিত ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মেহেরজান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি চলচ্চিত্র। রুবাইয়াত হোসেন পরিচালিত এই ছবিটি ২০১১ সালের ২১শে জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়[২] । মুক্তির পর থেকে ছবিটি ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ আর ভালবাসার চিরন্তন গল্প নিয়ে ছবিটি নির্মাণ করছেন পরিচালক। এরা মোশন পিকচার্স এর ব্যানারে নির্মিত ছবিটির বাংলাদেশের পরিবেশক আশীর্বাদ চলচ্চিত্র । ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী জয়া বচ্চন। অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ভারতীয় অভিনেতা ভিক্টর ব্যানার্জী। এছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন ওমর রহিম (পাকিস্তান), শায়না আমিন, হুমায়ুন ফরীদি, খায়রুল আলম সবুজ, আজাদ আবুল কালাম, রীতু আব্দুস সাত্তার, রুবাইয়াত হোসেন ও নাসিমা সেলিম।
মেহেরজান | |
---|---|
পরিচালক | রুবাইয়াত হোসেন |
প্রযোজক | আশিক মোস্তফা |
রচয়িতা | রুবাইয়াত হোসেন |
শ্রেষ্ঠাংশে | জয়া বচ্চন ভিক্টর ব্যানার্জি ওমর রহিম শায়না আমিন হুমায়ুন ফরীদি খায়রুল আলম সবুজ আজাদ আবুল কালাম রীতু আব্দুস সাত্তার নাসিমা সেলিম রুবাইয়াত হোসেন |
সুরকার | নীল মুখোপাধ্যায় |
চিত্রগ্রাহক | সমীরণ দত্ত |
সম্পাদক | মিতা চক্রবর্তী সুজন মাহমুদ |
পরিবেশক | আশীর্বাদ চলচ্চিত্র (বাংলাদেশ) |
মুক্তি | ২১ জানুয়ারি, ২০১১[১] |
স্থিতিকাল | ১১৯ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ইংরেজি উর্দু |
১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময়ে শত্রুপক্ষের সেনার প্রেমে পড়ার পরিণতি নাড়িয়ে দেয় মেহেরের মনোজগত, পরিবার ও সমাজ তাকে ঠেলে দেয় অপরাধবোধের যন্ত্রণায়-নেমে আসে দীর্ঘ নিরবতা।
আজ যুদ্ধের ৩৮ বছর পর মেহেরের নিরবতা ভঙ্গ করে সারাহ- খালাতো বোন নীলার ঔরসজাত যুদ্ধশিশু যাকে বিদেশী এক দম্পতির কাছে দত্তক দেয়া হয়েছিল-সে তার বীরাঙ্গনা মায়ের সন্ধান করতে এসে মেহেরকে আর একবার দাঁড় করিয়ে দেয় সেই ভুলে যেতে চাওয়া অতীতের মুখোমুখি।
যুদ্ধের ভয়াবহতার শিকার এই দুই নারী অতীতের ইতিহাস খুঁড়তে গিয়ে পুনর্বিবেচনা করে তাদের জীবনের ঘটে যাওয়া বৃত্তান্ত আর খুঁজে পায় কালিমার অন্ধকার ঘুঁচে আলোয় ফেরার পথ। [৩]
১৯৭১ এ পাকিস্তান ফুঁসে উঠে যুদ্ধের উন্মাদনায়। কিশোরী মেহের শহর থেকে পালিয়ে তার মা-বাবার সঙ্গে নানাবাড়িতে আশ্রয় নেয়। নানাজান খাজা সাহেব সাতচল্লিশের ভারত বিভাজনের সময় কলকাতা থেকে চলে আসা একজন বনেদি সুফী মুসলমান। যেকোনো মূল্যে গ্রামে রক্তপাত ঠেকাতে চান তিনি। এদিকে খাজা পরিবারের অন্দরমহলে ঢুকেছে যুদ্ধের প্রভাব। খাজা সাহেবের বড় নাতনি নীলা আর্মি ক্যাম্পে ধর্ষণের শিকার হয়ে যুদ্ধে যায়। অন্যদিকে কিশোরী মেহের সবকিছু ছাপিয়ে প্রেমে পড়ে দলত্যাগী বেলুচ সেনা ওয়াসিমের।
মেহেরজান-এর প্রচারণা ট্যাগলাইন, একটি যুদ্ধ ও ভালোবাসার কাহিনি। ছবির প্রচারণা বুকলেটে লেখা, মেহেরজান ‘অপর’কে ভালবাসার মানবিক বোধের ছবি। পুরুষতন্ত্রের একক ক্ষমতায়নের পথকে পাশ কাটিয়ে নারীত্বের আবেগ ও অনুভূতির বহুবিচিত্র সংবেদনশীলতাকে এগিয়ে নেয়ার প্রয়াস 'মেহেরজান'। অন্যদিকে, এই ছবির অন্যতম প্রেক্ষিত জাতীয়তাবাদের যে চোরাগুপ্তা পথে ছাড় পেয়ে যায় যুদ্ধ, হত্যা ও নৃশংসতা তারই সূক্ষ্ম সমালোচনা। শেষ পর্যন্ত ‘মেহেরজান’ যুদ্ধ ও হিংস্রতার বিরুদ্ধে নান্দনিক সমাধান দিতে ভালোবাসা ও আধ্যাত্মিকতার পথে আশ্রয় খোঁজে।
মেহেরজান ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেন নীল মুখোপাধ্যায়। মেহেরজান ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করে চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি। অরূপ রাহী কণ্ঠ দিয়েছে শীর্ষ সঙ্গীত কী আনন্দ জাগে রে প্রাণে এবং লালনের মিছে মায়ায় মজিয়ে মন কী করো রে, তুমি কার আর কে বা তোমার এই সংসারে গানে। এছাড়াও ছবিতে ব্যবহৃত হয়েছে নায়ারা নূরের কণ্ঠে ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের গজল ‘ঢাকা সে ওয়াপসি পার’ বা ‘ঢাকা থেকে ফেরার পথে’।
ট্র্যাক | গান | কণ্ঠশিল্পী | পর্দায় | নোট |
---|---|---|---|---|
১ | কী আনন্দ জাগে রে প্রাণে | অরূপ রাহী | শীর্ষসঙ্গীত | কথা ও সুরঃ অরূপ রাহী |
২ | মিছে মায়ায় মজিয়ে মন | অরূপ রাহী | কথা ও সুরঃ লালন সাঁই | |
৩ | হাম ক্যায় ঠ্যাহরে আজনাবি | নায়ারা নূর | ঢাকা সে ওয়াপসি পার গজল | কথাঃ ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ |
কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব, ফ্রিবুর্গ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, বোগোটা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, উরুগুয়ে ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, ফোর্ট লডেরডেল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এবং লন্ডন এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল সহ বহু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে মেহেরজান।[৩] এবং অর্জন করেছে বিভিন্ন পুরস্কার যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.