Loading AI tools
ঈশ্বরের মুখপাত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নবী বা পয়গম্বর বলতে সেসব ব্যক্তিকে বোঝানো হয় যারা বলেন যে, সৃষ্টিকর্তার সাথে তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগাযোগ বা বার্তা বিনিময় হয়েছে। তারা নিজেরা যে সকল শিক্ষা লাভ করেন তা নিঃস্বার্থভাবে অন্যান্য লোকদের মাঝে বিলিয়ে দেন। নবিদের অধিকাংশই মানুষকে ধর্মীয় শিক্ষা, সুসংবাদ অথবা সতর্কবার্তা প্রদান করেন।[1][2] নবীগণ যে বার্তা লাভ করেন তাকে ইসলামে "রিসালাত" বলা হয়।
ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, ইসলাম ধর্ম, বাহাই ধর্ম, মরমনবাদ, জরাথুস্ট্রবাদ, এবং অন্যান্য ধর্মে নবীগণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
‘নবি’ শব্দটি আরবি। এটি একবচন, বহুবচনে ‘আম্বিয়া'। এর অর্থ হলো: অদৃশ্যের সংবাদদাতা। এটি এসেছে হিব্রু শব্দ נָבִיא (নাভি) থেকে যার বহুবচন নাভি'ইম। এর অর্থ "মুখপাত্র"।[3]
কিছু মুসলিম আলেম মূল ইসলামী আরবী শব্দ "নবী" (نبي)-এর ব্যবহারকে অধিক উৎসাহিত করে থাকেন, যুক্তি হিসেবে তারা বলেন, নবী শব্দটি কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে, তাই শব্দটি বলার সময় প্রতি হরফে দশ নেকি করে ৩ হরফে মোট ৩০ নেকি সাওয়াব পাওয়া যাবে, যা পয়গম্বর বা অন্যান্য অ-কুরআনীয় প্রতিশব্দ উচ্চারণে পাওয়া যাবে না। কুরআনীয় শব্দ বলায় প্রতি হরফে দশ নেকির ক্ষেত্রে তারা ইসলামী নবী মুহাম্মদের উক্ত হাদীসটি পেশ করেন,
রাসূল (সা.) বলেছেন,
مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ، وَالحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا، لَا أَقُولُ الم حَرْفٌ، وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلَامٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ
‘আল্লাহ তাআলার কিতাবের একটি হরফ যে ব্যক্তি পাঠ করবে তার জন্য এর সওয়াব আছে। আর সওয়াব হয় তার দশ গুণ হিসেবে। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ, বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ।’
— [সুনানে তিরমিযি, হাদিস: ২৯১০]
ইব্রাহিমীয় ধর্ম সমূহে, দুই ধরনের নবির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলেন প্রধান নবী এবং অপ্রধান নবী। প্রধান নবীগণ মানুষকে বিভিন্ন রকমের শিক্ষা প্রদান করে থাকেন। অপরদিকে, অপ্রধান নবীগণ পূর্বের নবীগণের শিক্ষাকেই পুনঃবাস্তবায়ন করেন।
তালমুদ অনুসারে পয়গম্বরের সংখ্যা ৪৮ এবং পয়গম্বরিনীর সংখ্যা ৭ জন।[4][5] কিন্তু তার মানে এই নয় যে ইহুদিদের শুধু ৫৫ জন নবী রয়েছে। তালমুদ ভিন্ন উদাহরণ দিয়ে এর যুক্তিখণ্ডন করেছে সাথে বারাইতার সূত্র দিয়ে উদ্ধৃতি দিয়েছে যে দৈব্যবানীর যুগে নবীদের সংখ্যা মিশর থেকে বেরিয়ে যাওয়া ইজরায়েলিদের দ্বিগুন ছিলো (৬,০০,০০০ পুরুষ)। ৫৫ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে কারণ তারা এমন কিছু ভবিষ্যতবাণী করেছিলো যেগুলো শুধু তাদের নিজেদের সময়ের জন্য নয় ভবিষ্যত প্রজন্মের সাথেও সম্পর্কিত ছিলো, অথবা ঈশ্বরের সাথে তাদের স্ব-আনন্দদায়ক ঘটনার জন্য।[6][7] মালাখিকে ইহুদি ধর্মের শেষ নবী হিসেবে বিশ্বাস করা হয়। ইহুদিরা বিশ্বাস করে দৈব্যবানীর যুগ যার নাম নেভুয়াহ, তা নবী হাজ্ঞাই, জাকারিয়া ও মালাখি আসার পর শেষ হয়ে গেছে যখন সাকিনাহ ইজরায়েল থেকে বিদায় নিয়েছিলো।[8][9]
খ্রিস্ট ধর্মে পুরাতন নিয়ম ও গসপেলে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নবী হিসেবে সম্বোধন করা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে নবীরা স্রষ্টা কর্তৃক নির্বাচিত এবং তিনি তাদের নবী বানিয়েছেন। বাইবেল যুগের ৬৮ জনকে সরাসরি নবী হিসেবে খ্রিস্ট ধর্মে মান্য করা হয়। এছাড়া ১৫ দৈব্য অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি এবং ৭০ জন বয়োজ্যেষ্ঠসহ বাইবেল পরবর্তী কিছু ব্যক্তিদের খ্রিস্টানেরা (সবাই নয়) নবী হিসেবে বিশ্বাস করেন। খ্রিস্ট ধর্মে যীশুকে নবীর পাশাপাশি একমাত্র মসিহ ও ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে গণ্য করা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
পবিত্র কুরআনে নবিদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলমানরা বিশ্বাস করে হযরত আদম প্রথম এবং মুহাম্মাদ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি,যিনি মহাবিশ্ব ধ্বংসের কিছুকাল পূর্বে আগমন করেছিলেন। যারা আল্লাহর থেকে প্রেরিত হয়ে মানব জাতীর কল্যাণের জন্য বা সত্য পথে পরিচালিত করার জন্য যারা আগমন করেছিলেন তাদেরকে নবি হিসেবে গণ্য করা হয়। ইসলামী ধর্মমতে সৃষ্টির আদি থেকে আল্লাহ যত নবি-রাসূল প্রেরণ করেছেন তাদের সবাইকেই আল্লাহ তার একত্ববাদ প্রচারের জন্য এবং মানুষের জীবন বিধান হিসেবে দিন-ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্যই পাঠিয়েছেন। আল্লাহর সব নবি-রাসূলই ছিলেন আল্লাহর একত্ববাদে দৃঢ় বিশ্বাসী ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী। আর যেহেতু আল্লাহর কাছে একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম হলো ইসলাম। তাই, আল্লাহর সব নবি-রাসূলের ধর্মই ইসলাম এবং তাঁরা সবাই মুসলমান।
আল কুরআনে মাত্র ২৫ জন নবির কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে ইসলামে শুধুমাত্র ২৫ জন নবী রয়েছেন। কুরআনে বলা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গোত্রের জন্য আল্লাহ এক বা একাধিক নবী প্রেরণ করতেন। হাদিসে রয়েছে,
হজরত আবু জর রা. বর্ণনা করেন, ‘আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! কতোজন আল্লাহর নবি আগমন করেছেন? এক লক্ষ চব্বিশ হাজার। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তাদের মধ্যে কতোজন রাসুল? তিনি বললেন, তিনশো ত্রিশজন; এটাই যথেষ্ট। আমি বললাম, তাদের মধ্যে প্রথম কে? তিনি বললেন, আদম।’[10][11]
বিশ্বাস করা হয় সব নবিদের বার্তা একই ছিল। মুসলমানগণ বিশ্বাস করে ঈসা আল্লাহর পুত্র নন বরং তিনি আল্লাহর রসূল। কুরআনে বলা হয়েছে,
“ | তিনি (আল্লাহ) কাউকে জন্মদান দেননি, এবং কারো থেকে জন্মগ্রহণও করেননি। [কুরআন ১১২:৩] | ” |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.