Loading AI tools
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (সংক্ষেপে: ডাকসু হিসেবে পরিচিত)[lower-alpha 1] হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। এটি ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ' নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।[1][2] পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ' গ্রহণ করা হয়। ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ বলা হয়।[3][4] বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার হল এই ছাত্র সংসদ। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাসে গৌরবময় ভূমিকা রাখে এই ছাত্র সংসদ।[5] ৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ৬২'র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরাচার ও সামরিকতন্ত্রের বিপরীতে দাঁড়িয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সাহায্য করেছে ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।[5][6]
সংক্ষেপে | ডাকসু |
---|---|
গঠিত |
|
সদরদপ্তর | ডাকসু ভবন |
অবস্থান | |
সদস্যপদ | ৩৮৪৯৩ (সর্বশেষ, জানুয়ারি ২০১৯ এর হিসেব মতে) |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
সভাপতি | নিয়াজ আহমেদ খান |
ওয়েবসাইট | ডাকসু (দাপ্তরিক ওয়েবসাইট) |
১৯২২ সালের ১লা ডিসেম্বর কার্জন হলে অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের একটি সভায় ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ' নামে একটি ছাত্র সংসদ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।[1] ১৯২৩ সালের ১৯শে জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন নির্বাহী পরিষদ পূর্বোল্লিখিত শিক্ষক সভার সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দেয়।[1] ১৯২৫ সালের ৩০ অক্টোবর সংসদের সাধারণ সভায় খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদ অনুমোদন করলে তা কার্যকর হয়। প্রথমবার ১৯২৪-২৫ সালে সম্পাদক ছিলেন যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, পরের বছর অবনীভূষণ রুদ্র। ১৯২৯-৩০ সালে সম্পাদক নির্বাচিত হন আতাউর রহমান খান।[7]
পরবর্তীতে ১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ' গ্রহণ করা হয়।[7] বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ডাকসুর সহসভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন থেকে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাহবুবুর জামান।[8] সর্বশেষ ১৯৯০-৯১ সেশনের জন্য সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে নির্বাচিত হন ছাত্রদলের আমানউল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন।[9] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ১৯৯০ পর্যন্ত ৩৬ বার নির্বাচন হয়েছে।
ডাকসুতে ক্ষমতাসীন দল বিরোধী ছাত্রসংগঠন জয়ী হতে পারে—এই আশঙ্কা থেকে ৯০ পরবর্তী সরকারগুলো এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনীহ ছিল।[10] উপাচার্য একে আজাদ চৌধুরী ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিলেও নানা মহলের চাপ ও বাধায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন আর হয়নি।[6] নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ও সুযোগ না থাকায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনগুলোর বড় নেতাদেরও অনাগ্রহ ছিল।[10] ক্যাম্পাসে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অর্থবহ কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার–ঘনিষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোয় ক্রমে ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সরকারি দলের ছাত্রসংগঠনের একক আধিপত্য।[10] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক বলেন, 'ছাত্র সংসদ না থাকায় মাস্তানতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায়।[11]
উপাচার্যকে সভাপতি এবং ১৬ জন ছাত্র প্রতিনিধি থেকে ১০ জন কর্মকর্তা নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখা হয়, কোষাধাক্ষের দায়িত্ব পালন করেন একজন শিক্ষক। ২০১৯ সালে সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, পদাধিকারবলে ডাকসুর সভাপতি উপাচার্যসহ এর নির্বাহী কমিটি হবে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট।[12] ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে ডাকসুর কথা বলা হয়েছে৷[13] আর ডাকসুর গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ডাকসু নির্বাচন হবে৷[13] কীভাবে হবে, কাদেরকে নিয়ে হবে, সেগুলো বিস্তারিত বলা আছে গঠনতন্ত্রে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্র সংসদ আছে৷ সেখানেও সরাসরি ভোটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার বিধান রয়েছে৷[13]
৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম এবং পরবর্তীতে ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সাহায্য করেছে ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।[5][6][14] ডাকসুর নেতৃবৃন্দের সাহসী ও বলিষ্ঠ উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়।[15]
২০১২ সালের ১১ই মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ শিক্ষার্থী ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন।[16] ২০১৭ সালের ৪ঠা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডাকসু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, ডাকসু নির্বাচন অত্যাবশ্যক, 'তা না হলে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাবে।’[17] ২০১৭ সালে ২৫শে নভেম্বর থেকে ৯ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অনশন করেন সমাজকল্যাণ অনুষদের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সের ছাত্র ওয়ালিদ আশরাফ।[18] ২০১২ সালের ১১ই মার্চ দাখিলকৃত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি বাংলাদেশের উচ্চ আদালত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ডাকসু নির্বাচনের নির্দেশ দেয়।[19] উচ্চ আদালতের আদেশের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও নির্বাচনের কোনো আয়োজন দৃশ্যমান না হওয়ায় ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিস পাঠান রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।[20] জবাব না পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর উপাচার্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন তিনি।[20] উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে ২০১৮'র ১৬ই সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে ঘোষণা দেয় যে ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে ডাকসুর নির্বাচন।[21]
২০১৯ সালের ২৩শে জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ১১ই মার্চ ২০১৯ নির্ধারণ করেন।[22][23][24][25] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন পরিচালনার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক এস এম মাহফুজুর রহমানকে প্রধান নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।[12][26] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে ডাকসু ও হল সংসদ গঠনতন্ত্রের ৮(ই) ধারা অনুযায়ী তাঁকে এই নিয়োগ প্রদান করেন।[12][26] প্রধান নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ন কর্মকর্তাকে সহায়তা করার জন্য আরো পাঁচ জন নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।[12][27] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমাদকে আহ্বায়ক করে ৭-সদস্য বিশিষ্ট ‘আচরণবিধি প্রণয়ন কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।[12][28] ১১ই ফেব্রুয়ারি প্রধান তত্ত্বাবধায়ন কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।[29] ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডাকসুর ২৫টি পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়।[30]
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ প্যানেলের নুরুল হক নুর ১১ হাজার ৬২ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পেয়েছেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট।[31] এছাড়া জিএস পদে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ১০ হাজার ৪৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এজিএস পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন ডাকসুর ইতিহাসের সর্বোচ্চ ভোট (১৫,৩০১) পেয়ে নির্বাচিত হন। এছাড়াও একমাত্র ভিপি এবং সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের পদ ছাড়া মোট ২৫ টি পদের মধ্যে ২৩ টি পদেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত এবং সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্রার্থীগণ বিজয়ী হন।
২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, প্রগতিশীল ছাত্রজোট এবং স্বতন্ত্র জোট ২৫ জন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করে। এক্ষেত্রে দল মত নির্বিশেষে ডাকসু কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী সবচেয়ে যোগ্য তাদেরকেই মনোনয়ন দেয়া হয়। নির্বাচনে মোট ২৫ টি পদের মধ্যে ২৩টি পদেই নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের প্রার্থীরা। অন্যদিকে ভিপি এবং সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের পদে জয়ী হয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ মনোনীত প্রার্থীরা।
ক্রমিক | নির্বাচিত প্রার্থী | পদ | ছাত্র সংগঠন |
---|---|---|---|
১ | নুরুল হক নুর | সহ-সভাপতি | বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ |
২ | গোলাম রাব্বানী | সাধারণ সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
৩ | সাদ্দাম হোসেন | সহ-সাধারণ সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
৪ | সাদ বিন কাদের চৌধুরী | স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
৫ | আরিফ ইবনে আলী | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
৬ | লিপি আক্তার | কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
৭ | শাহরিমা তানজিনা অর্নি | আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
৮ | মাজহারুল কবির শয়ন | সাহিত্য সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
৯ | আসিফ তালুকদার | সংস্কৃতি সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
১০ | শাকিল আহমেদ তানভীর | ক্রীড়া সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
১১ | শামস ই নোমান | ছাত্র পরিবহন সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
১২ | আখতার হোসেন | সমাজসেবা সম্পাদক | বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ |
১৩ | যোশীয় সাংমা চিবল | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
১৪ | রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
১৫ | তানভীর হাসান সৈকত | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
১৬ | তিলোত্তমা শিকদার | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
১৭ | নিপু ইসলাম তন্বী | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
১৮ | রাইসা নাসের | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
১৯ | সাবরিনা ইতি | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
২০ | রাকিবুল হাসান রাকিব | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
২১ | নজরুল ইসলাম | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
২২ | ফরিদা পারভীন | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
২৩ | মাহমুদুল হাসান | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
২৪ | সাইফুল ইসলাম রাসেল | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
২৫ | রফিকুল ইসলাম সবুজ | সদস্য | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের পর দীর্ঘ ২৮ বছর পর কর্মচঞ্চলতা ফিরে পায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। সম্পাদকগণ নিজ নিজ পদ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে নানামুখী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা তথা সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে কাজ শুরু করেন। এই সংসদের উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে-
ডাকসুর গঠনতন্ত্রের ৬ (গ) ধারায় অনুযায়ী "নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পদাধিকারীরা ৩৬৫ দিনের জন্য কার্যালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচন না হলে তারা অতিরিক্ত ৯০ দিন দায়িত্বে থাকবেন। ওই ৯০ দিনের আগে যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন কার্যনির্বাহী পদাধিকারীরা। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাকসুর আগের কমিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে।" গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অতিরিক্ত ৯০ দিনেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে কমিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে। ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ দায়িত্ব নেন ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। সেই হিসাবে গত ২২ মার্চ, ২০২০ নির্ধারিত ৩৬৫ দিনের মেয়াদ পূর্ণ করেছে ডাকসুর বর্তমান কমিটি। পরবর্তীতে, অতিরিক্ত ৯০ দিন দায়িত্ব পালন শেষে ২২ জুন ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে বর্তমান কমিটির মেয়াদ। ফলে, ২৩ জুন ২০২০ থেকে এই কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ বিষয়ে এই কমিটির সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে। তাদের যুক্তি করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় তারা পুরোপুরি দায়িত্ব পালন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সর্বশেষ, গত ২২ জুন রাতে মেয়াদ শেষ হলেই পদ ছাড়ে দেবেন বলে জানান সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, কিন্তু সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর জানান, উপাচার্যের সিদ্ধান্তের পর পদ ছাড়বেন তিনি। তবে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে চান তারা দুজনই।[41] অন্যদিকে, এই কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন মনে করেন কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও পদে বহাল থাকা অগণতান্ত্রিক, গঠনতন্ত্রবিরোধী ও অনৈতিক। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ডাকসুর গঠনতন্ত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুন অনুসরণ করেই সবকিছু করা হবে।[42] গত ২২ জুন ২০২০ সালে বর্তমান ছাত্র সংসদের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন বা এই সংসদের সদস্যদের দায়িত্ব পালন নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোন সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যদিকে, মেয়াদ শেষ হলেও কোন সদস্যদের দায়িত্ব থেকে অব্বহতি বা পদত্যাগের খবর পাওয়া যায়নি।[43]
ক্রমিক | সাল | সহসভাপতি | ছাত্র সংগঠন | সাধারণ সম্পাদক | ছাত্র সংগঠন |
---|---|---|---|---|---|
১ | মমতাজ উদ্দিন আহমেদ | যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত | |||
২ | ১৯২৮-২৯ | এ এম আজহারুল ইসলাম | এস চক্রবর্তী | ||
৩ | ১৯২৯-৩২ | রমণী কান্ত ভট্টাচার্য | কাজী রহমত আলী ও আতাউর রহমান | ||
৪ | ১৯৪৭-৪৮ | অরবিন্দ বোস | গোলাম আযম | ||
৫ | ১৯৫৩-৫৪ | এস. এ. বারী | জুলমত আলী খান ও ফরিদ আহমেদ | ||
৬ | ১৯৫৪-৫৫ | নিরোদ বিহারী নাগ | আব্দুর রব চৌধুরী | ||
৭ | একরামুল হক | শাহ আলী হোসেন | |||
৮ | বদরুল আলম | মো. ফজলী হোসেন | |||
৯ | আবুল হোসেন | এটিএম মেহেদী | |||
১০ | ১৯৫৭-৫৮ | আমিনুল ইসলাম তুলা | আশরাফ উদ্দিন মকবুল | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | |
১১ | বেগম জাহানারা আখতার | অমূল্য কুমার | |||
১২ | এস এম রফিকুল হক | এনায়েতুর রহমান | |||
১৩ | ১৯৬২-৬৩ | শ্যামা প্রসাদ ঘোষ | কে এম ওবায়েদুর রহমান | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | |
১৪ | ১৯৬৩-৬৪ | রাশেদ খান মেনন | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | মতিয়া চৌধুরী | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন |
১৫ | ১৯৬৪-৬৬ | বোরহান উদ্দিন | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | আসাফুদ্দৌলা(আশরাফ উদ দৌলা পাহলোয়ান) | |
১৬ | ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | শফি আহমেদ | ||
১৭ | মাহফুজা খানম | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | মোরশেদ আলী | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | |
১৮ | তোফায়েল আহমেদ | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | নাজিম কামরান চৌধুরী | ||
১৯ | আ স ম আব্দুর রব | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | আব্দুল কুদ্দুস মাখন | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | |
২০ | ১৯৭২-৭৩ | মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | মাহবুবুর জামান | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন |
২১ | ১৯৭৯ | মাহমুদুর রহমান মান্না | জাসদ-ছাত্রলীগ | আখতারুজ্জামান | জাসদ-ছাত্রলীগ |
২২ | ১৯৮০ | মাহমুদুর রহমান মান্না | বাসদ-ছাত্রলীগ (সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট) | আখতারুজ্জামান | বাসদ-ছাত্রলীগ (সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট) |
২৩ | ১৯৮২ | আখতারুজ্জামান | বাসদ-ছাত্রলীগ (সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট) | জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু | বাসদ-ছাত্রলীগ (সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট) |
২৪ | ১৯৮৯-৯০ | সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ | মুশতাক হোসেন[5] | |
২৫ | ১৯৯০-৯১ | আমান উল্লাহ আমান | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল | খায়রুল কবির খোকন | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল |
২৬ | ২০১৯-২০ | নুরুল হক নুর | বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ | গোলাম রাব্বানী | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ |
ডাকসুর একটি সংগ্রহশালা রয়েছে। ডাকসুর সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন এবং এ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষিত রয়েছে ডাকসু সংগ্রহশালায়। ১৮৮৩ সাল থেকে এ দেশের মুদ্রা, দুর্লভ আলোকচিত্র, পুস্তক, কোলাজ পদ্ধতির পোস্টার, পত্রিকা কাটিং, ভাষা শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ইত্যাদি ইতিহাসের উপাদান সংরক্ষিত আছে এখানে। এটিকে অনেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'মিনি জাদুঘর' হিসেবে অভিহিত করে। ১৯৯২ সালের ৭ জানুয়ারি ডাকসু ভবনের নিচতলায় একটি কক্ষে যাত্রা শুরু করে এটি। এখানে প্রবেশের আগে চোখে পড়ে ভবনের দেয়ালে অাঁকা ভাষা শহীদদের ম্যুরাল 'চেতনায় একুশ'। ভেতরে আছে বিভিন্ন সময়ের ছাত্র নেতা, রাজনীতিবিদ, শহীদ, শিক্ষাবিদ, দার্শনিকদের ছবি। সংগ্রহশালার এক কোনায় রয়েছে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক আমতলার আমগাছের ধ্বংসাবশেষ। কক্ষের ভেতরে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। এখানে রয়েছে ৩৫ জন ভাষাসৈনিকের মুদ্রিত সাক্ষাৎকার, ভাষা আন্দোলনকেন্দ্রিক ২৯টি পোস্টার, ভাষাসৈনিকদের ১৫টি আলোকচিত্র, মুক্তিযুদ্ধের তথ্যসংবলিত ছবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক মুহূর্তের আলোকচিত্র, প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, প্রচারপত্র, স্মারকলিপি ইত্যাদি।[44]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.