Remove ads
চট্টগ্রামে অবস্থিত জাদুঘর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর (ইংরেজি: Ethnological Museum) বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদে অবস্থিত দেশের একমাত্র জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর, যেটি মূলত বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর দৈনন্দিন জীবনপ্রণালী, এবং পারষ্পরিক বোঝাপড়া ও সহকর্মী-অনুভূতি লালনের জন্য প্রতিষ্ঠিত।[৩] জাদুঘরে বাংলাদেশের উপজাতি গোষ্ঠীর ইতিহাস সমন্বিত উপকরণের প্রদর্শন করা হয়েছে।[৪]
স্থাপিত | ১৯৬৫ |
---|---|
অবস্থান | আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম |
স্থানাঙ্ক | ২২.৩২৮০৪৮৩° উত্তর ৯১.৮১২৮০৯৪° পূর্ব |
ধরন | জাতি-তাত্ত্বিক |
সংগ্রহ | নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর জীবনপ্রণালী |
পরিদর্শক | ২০০-৩০০ (২০১৫)[১] |
তত্ত্বাবধায়ক | মোহাম্মদ আমিরুজ্জামান[২] |
মালিক | বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর |
নিকটবর্তী পার্কিং | নেই |
এশিয়া মহাদেশের দুইটি জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘরের মধ্য চট্টগ্রামের জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর অন্যতম, অন্যটি রয়েছে জাপানে।[৫] এটি গবেষণাকাজেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ২০১৫ সালের হিসেবে, জাদুঘর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন দেশি-বিদেশি গবেষকসহ ২০০-৩০০ জন দর্শনার্থী জাদুঘর পরিদর্শন করেন।[১]
জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় বাদামতলী মোড় সংলগ্ন ১.২৫ একর (০.৫১ হেক্টর) স্থানের ওপর ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।[৬]
বিশ শতকের ষাটের দশকের গোড়ার দিকে, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উদ্যোগে জাদুঘরটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়, এবং ১৯৭৪ সালের ৯ জানুয়ারি সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য জাদুঘরটি উন্মুক্ত করা হয়।[৩][৬] পরবর্তীকালে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে জাদুঘরে দুটি কক্ষ অন্তর্ভুক্ত হয়।[১][৩] জানুয়ারি ৯, ১৯৭৪ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ আলী এই জাদুঘর উদ্বোধন করেন।[৭]
একতলা বিশিষ্ট দক্ষিণমুখি জাদুঘরটি পাঁচটি ভাগে বিভক্ত, যেখানে রয়েছে একটি কেন্দ্রীয় হলঘরসহ সর্বমোট চারটি গ্যালারি। প্রাথমিকভাবে প্রতিটি গ্যালারিতে তিনটি করে কক্ষ নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও শুধুমাত্র পশ্চিমের দুটি গ্যালারিতে দুটি করে কক্ষ নির্মিত হয়েছে। ফলে বর্তমানে জাদুঘরে সর্বমোট প্রদর্শনী কক্ষের সংখ্যা ১১টি।[৩]
জাদুঘরে ২৯টি বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর জীবনধারা প্রদর্শন করা হচ্ছে।[৩] বাংলাদেশের ২৫টি আদিবাসীসহ আরও ৫টি দেশের জাতিতাত্ত্বিক সামগ্রীর তুলনামূলক বিশ্লেষণে প্রদর্শিত রয়েছে।[৩] বাংলাদেশের বিভিন্ন আদি জনগোষ্ঠীর দৈনন্দিন জীবনধারায় প্রতিফলিত প্রত্ন সংস্কৃতির পরিচয়কে মানচিত্র, আলোকচিত্র, মডেল, কৃত্রিম পরিবেশ, দেওয়ালচিত্র, সংক্ষিপ্ত আলোকচিত্র, মডেল, কৃত্রিম পরিবেশ, সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ফলক প্রভৃতি মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর প্রদর্শন করা হয়েছে। সংগ্রহের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলের নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, স্নো, বম, খিয়াং, খুমি, চাক, রাখাইন, পাবেখো; সিলেট অঞ্চলের খাসিয়া, মনিপুরী, পাঙন, (মুসলিম মনিপুরি) পাত্র; ময়মনসিংহ অঞ্চলের গারো, হাজং, দালু, মান্দাই, কোচ; রাজশাহী-দিনাজপুর অঞ্চলের সাঁওতাল, ওরাঁও, রাজবংশী, পলিয়া, কোচ; এবং যশোর-ঝিনাইদহ অঞ্চলের বুনো, বা বোনা, বাগদি প্রভৃতি জাতিগোষ্ঠী অর্ন্তভুক্ত রয়েছে।[৩] পাশাপাশি পাকিস্তানের পাঠান, সিন্ধি, পাঞ্জাবী, কাফির, সোয়াত; ভারতের আদি, ফুওয়া, মুরিয়া, মিজো; কিরগিজস্থানের (প্রাক্তন রাশিয়া) কিরগিজ; অস্ট্রেলিয়ার অষ্ট্রাল জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন নির্দশন। এছাড়াও দুই জার্মানীর মিলন প্রাচীরের ভগ্নাংশের কিছু নির্দশন জাদুঘরে প্রদর্শিত আছে।[৩] ৩টি গ্যালারীতে ২৫টি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর নানা রকমের সামগ্রী যেমন : অস্ত্র, ফুলদানী, কাপড়, নৌকা, কাচি, অলঙ্কার, বাঁশের পাইপ ইত্যাদি, এবং বাকি গ্যালারীতে ভারত, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার কিছু সাম্প্রদায়ের জীবনপ্রণালী চিত্র, মডেল আকারে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা আছে।[১] পাকিস্তানের পাঠান, সোয়াতি, সিন্ধি, কাফির এবং পাঞ্জাবি এই পাঁচটি গোষ্ঠির ভগ্নাবশেষ সংরক্ষণ করা হয়েছে। ভারতীয় নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে আদি, মুরয়িা, মিজো এবং ফুতোয়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[৬] হলরুমের মানচিত্র এবং দেয়ালচিত্রের মাধ্যমে উপজাতিদের বিভিন্ন উৎসব ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও ধারণা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।[৩] এছাড়াও উল্লেখযোগ্য হিসেবে রয়েছে ১৯৮৯ সালে ভেঙে ফেলা জার্মানির বার্লিন প্রাচীরের টুকরো অংশ।[৫]
জাদুঘরে রয়েছে একটি ছোট গ্রন্থাগার,[৩] এবং ভবনের সামনে রয়েছে সবুজ বাগান।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.