জসিম
বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন (পেশাদার নাম জসিম নামেই অধিক পরিচিত; ১৯৫০ – ১৯৯৮) ছিলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ফাইট পরিচালক ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।[1] অনেকেই তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশনের পথপ্রদর্শক হিসেবে মনে করেন। তিনি প্রখ্যাত অভিনেতা আজিমের হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন। ১৯৭২ সালে ‘দেবর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়।[2]
জসিম | |
---|---|
জন্ম | আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন ১৪ আগস্ট ১৯৫০ |
মৃত্যু | ৮ অক্টোবর ১৯৯৮ ৪৮) | (বয়স
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
পেশা | অভিনেতা প্রযোজক ফাইট পরিচালক |
কর্মজীবন | ১৯৭৬ – ১৯৯৮ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | লালু মাস্তান, টাইগার, দোস্ত দুশমন |
উচ্চতা | ৫" ১১' |
দাম্পত্য সঙ্গী | নাসরিন জসিম |
জসিম ১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বক্সনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম আবদুল খায়ের জসিম উদ্দিন।[3] জসিম ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে একজন সৈনিক হিসেবে দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।[2]
জসিম আশির দশকে বাংলা চলচ্চিত্রে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেন। জসিম চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন দেবর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ১৯৭২ সালে। এই ছবিতে জসিম চলচ্চিত্র পরিচালকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। ১৯৭৩ সালে তিনি রংবাজ ছবিতে অ্যাকশন ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন তিনি।[2] তিনি পরিচিতি পান দেওয়ান নজরুল পরিচালিত দোস্ত দুশমন চলচ্চিত্রে খলনায়কের অভিনয় করে। খলনায়ক চরিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করলেও পরবর্তীকালে নায়ক হিসেবেও তিনি সফলতা পেয়েছিলেন। দোস্ত দুশমন ছবিটি সাড়াজাগানো হিন্দি চলচ্চিত্র শোলের পুনর্নিমাণ। ছবিটিতে তিনি গাফফার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[3] খোদ শোলে ছবির নামকরা চরিত্র গব্বার সিং এর আদলে থাকা ভারতীয় খলনায়ক আমজাদ খান পর্যন্ত ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন জসিমের। তার খলনায়ক অভিনয়ের সমাপ্তি ঘটে ‘সবুজ সাথী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। সবুজ সাথী চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। এই চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত নায়ক হিসেবেই অভিনয় চালিয়ে যান।[2]
আশির দশকের সকল জনপ্রিয় নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছেন এই অ্যাকশন অভিনেতা। তবে শাবানা ও রোজিনার সাথে তার জুটিই সবচেয়ে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। বিভিন্ন চলচ্চিত্রে তাকে শোষণ-বঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে দেখা যায়।
জসিমের প্রথম স্ত্রী ছিলেন ড্রিমগার্লখ্যাত নায়িকা সুচরিতা। পরে তিনি ঢাকার প্রথম সবাক ছবির নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে নাসরিনকে বিয়ে করেন । জসিমের তিন ছেলে রাতুল, রাহুল, সামি । যার মধ্যে রাতুল ও সামি 'ওউনড' ব্যান্ডের বেজিস্ট ও ড্রামার আর রাহুল 'ট্রেইনরেক' ব্যান্ডের গিটারিস্ট।[3]
এবং
এর মধ্যে দেবর, রংবাজ, দোস্ত দুশমন, মহেশখালির বাঁকে, বারুদ, বদলা, কসাই, বাহাদুর, এক মুঠো ভাত, সুন্দরী, আসামি হাজির, প্রতিহিংসা, মান-সম্মান, লাইলী মজনু, নাজমা, গাদ্দার, সবুজ সাথী, সিআইডি, লাভ ইন সিঙ্গাপুর, অভিযান, আক্রোশ, দি রেইন, কুয়াশা, প্রতিজ্ঞা, এপার-ওপার, নিশান, নিষ্পাপ, নিঃস্বার্থ, নিষ্ঠুর, স্বামীর আদেশ, দুই রংবাজ, প্রেম লড়াই, হিরো, শত্রুতা, ভাই আমার ভাই, ভরসা, মাস্তান রাজা, সারেন্ডার, স্বামী কেন আসামি, মেয়েরাও মানুষ, ভালোবাসার ঘর, ঘাত-প্রতিঘাত, পরাধীন, লাট সাহেব, কালিয়া, বিজয়, ছোট বউ, জিদ্দি, ওমর আকবর, রক্তের বদলা, চিরশত্রু, লক্ষ্মীর সংসার, লালু মাস্তান, টাইগার, কাজের বেটি রহিমা ও বাংলার নায়ক ছবিতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। এছাড়াও নায়ক হিসেবে অভিনীত তাঁর আরও কিছু ছবির মধ্যে রয়েছে:
এবং
খলচরিত্রে অভিনয়: জসীম যে শুধু একজন নায়ক হিসেবেই ঢালিউডে কাজ করেছেন এমন নয়। খলনায়ক হিসেবেও তাঁর জনপ্রিয়তা ছিলো তুঙ্গে। খলনায়ক হিসেবে তাঁর অভিনীত বেশকিছু ছবি আজও সমান জনপ্রিয়। খলনায়ক হিসেবে তাঁর অভিনীত বেশকিছু ছবির মধ্যে রয়েছে: (১) রংবাজ (২) মাসুদ রানা (৩) এপার ওপার (৪) দুই রাজকুমার (৫) ডাকু মনসুর (৬) জিঘাংসা (৭) এক মুঠো ভাত (৮) দোস্ত দুশমন (৯) নিশান (১০) বাহাদুর (১১) আসামী হাজির (১২) বারুদ (১৩) আলাদিন আলিবাবা সিন্দাবাদ (১৪) রাজ দুলারী (১৫) রাজ নন্দিনী (১৬) বদলা (১৭) মিন্টু আমার নাম (১৮) প্রতিজ্ঞা (১৯) কসাই (২০) তুফান (২১) লাভ ইন সিঙ্গাপুর (২২) ওস্তাদ সাগরেদ (২৩) গাদ্দার (২৪) আলী আসমা (২৫) জনি (২৬) চ্যালেঞ্জ (২৭) প্রতিহিংসা (২৮) মান সম্মান (২৯) জালিম এবং
(৩০) ধর্ম আমার মা।জসিম ১৯৯৮ সালের ৮ই অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে পরলোকগমন করেন । জসিমের মৃত্যুর পর এফডিসিতে তার নামে একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয়।[2]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.