ছত্তিশগড়

ভারতের একটি রাজ্য উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

ছত্তিশগড়map

ছত্তিশগড় (হিন্দি: छत्तीसगढ़ ছত্তীসগঢ়; /ætɪsɡɑːr/, হিন্দুস্তানি: [ˈtʃʰət̪ːiːsgəɽʱ]) মধ্য ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য। ২০০০ সালের ১ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে স্থিত ষোলোটি ছত্তিশগড়ি-ভাষী জেলা নিয়ে এই রাজ্য স্থাপন করা হয়। রায়পুর এই রাজ্যের রাজধানী। ৫২,১৯৯ বর্গমাইল (১৩৫,১৯৪ বর্গকিলোমিটার) আয়তন বিশিষ্ট এই রাজ্য ভারতের দশম বৃহত্তম রাজ্য। ছত্তিশগড় রাজ্যের উত্তর-পশ্চিমে মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিমে মহারাষ্ট্র, দক্ষিণে অন্ধ্রপ্রদেশ, পূর্বে ওড়িশা, উত্তর-পূর্বে ঝাড়খণ্ড এবং উত্তরে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য অবস্থিত।

দ্রুত তথ্য ছত্তিশগড় छत्तीसगढ़, ছত্তিশগড় রাজ্য ...
ছত্তিশগড়
छत्तीसगढ़
রাজ্য
ছত্তিশগড় রাজ্য
Thumb
Thumb
Thumb
Thumb
Thumb
Thumb
Thumb
Thumb
উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার ক্রমে: চিত্রকূট জলপ্রপাত জগদলপুরে, সিরপুর গ্রুপ অফ স্মৃতিস্তম্ভ, সাতরেঙ্গা জলাধার, চৈতুরগড় পাহাড়, নতুন রায়পুর, ভোরামদেও মন্দির, ঘাসিদাস জৈতখাম, তীরথগড় জলপ্রপাত, বস্তার দশেরা
Thumb
সীলমোহর
Thumb
ভারতে ছত্তিশগড়ের অবস্থান(লাল রঙে চিহ্নিত)
স্থানাঙ্ক (রায়পুর): ২১.২৭° উত্তর ৮১.৬০° পূর্ব / 21.27; 81.60
দেশ ভারত
এলাকার ক্রম১০ম
জনসংখ্যা
  মোট২,০৭,৯৫,৯৫৬
  ক্রম১৭তম
ওয়েবসাইটhttps://www.chhattisgarh.nic.in
প্রতীক of ছত্তিসগড়
ভাষাছত্তিশগড়ি হিন্দির) স্থানীয়/কথ্য ভাষা
প্রাণীবুনো মহিষ
পাখিপাতি ময়না
বৃক্ষশাল
বন্ধ

পূর্ব হিন্দি ভাষার এক বিশিষ্ট উপভাষা ছত্তিশগড়ি ভাষা এই রাজ্যের প্রধান ভাষা এবং হিন্দির সঙ্গেই রাজ্যের সরকারি ভাষা রূপে স্বীকৃত। এছাড়াও ছত্তিশগড়ে বিভিন্ন উপজাতীয় ও দ্রাবিড়-প্রভাবিত ভাষা ও উপভাষারও চল আছে।

রাজনীতি

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ

প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় ইতিহাস

ঔপনিবেশিক এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী ইতিহাস

রাজ্য গঠন

১৯২০ এর দশকে বর্তমান ছত্তিশগড়ে প্রথম পৃথক রাষ্ট্রের দাবি উত্থাপিত হয়েছিল। একই ধরনের দাবি নিয়মিত বিরতিতে চলছিল। যদিও কখনোই একটি সুসংহত আন্দোলনে পরিণত হয়নি। পরবর্তিতে বেশ কয়েকটি সর্বদলীয় প্ল্যাটফর্ম সাধারণত পিটিশন, জনসভা, আলোচনা সভা, সমাবেশ ও ধর্মঘটের মধ্যেই আন্দোলন সীমাবদ্ধ রেখেছিল।[] রায়পুর কংগ্রেস ইউনিট ১৯২৪ সালে পৃথক ছত্তিসগড়ের দাবি উত্থাপন করে এবং ত্রিপুরীতে কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনেও এটি নিয়ে আলোচনা হয়। ছত্তিশগড়ের জন্য আঞ্চলিক কংগ্রেস সংগঠন গঠনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছিল। স্বাধীনতার পর ১৯৫৪ সালে যখন রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠন করা হয় তখনও পৃথক ছত্তিসগড়ের দাবি উঠেছিল। কিন্তু তা গৃহীত হয়নি। ১৯৫৫ সালে তৎকালীন মধ্য ভারত রাজ্যের নাগপুর বিধানসভায় পৃথক রাজ্যের দাবি উত্থাপিত হয়েছিল।[]

পরবর্তীতে নব্বইয়ের দশকে নতুন রাজ্যের দাবিতে তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। ফলস্রুতিতে ছত্তিসগড় রাজ্য নির্মাণ মঞ্চ নামে রাজ্যব্যাপী রাজনৈতিক ফোরাম গঠন করা হয়। চান্দুলাল চদ্রকর এই ফোরামের নেতৃত্বে ছিলেন। ফোরামের ব্যানারে বেশ কয়েকটি সফল অঞ্চল-ধর্মঘট ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল যার সবকটিই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এবং ভারতীয় জনতা পার্টি সহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির দ্বারা সমর্থিত ছিল।[]

অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে নতুন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) সরকার ক্ষমতায় আসার পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার অনুমোদনের জন্য পুনর্নির্দিষ্ট পৃথক ছত্তিসগড় বিল প্রেরণ করে। মমধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় এটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হওয়ার পর বিলটি লোকসভায় উপস্থাপিত হয়। পৃথক ছত্তিসগড় রাজ্য গঠনের লক্ষে এই বিলটি লোকসভারাজ্যসভায় পাস হলে পৃথক পৃথক ছত্তিশগড় রাজ্য গঠনের পথ সুগম হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি ২৫ আগস্ট ২০০০-এ মধ্য প্রদেশ পুনর্গঠন আইন ২০০০-এ তাঁর সম্মতি দেন।

এই আইনের প্রেক্ষিতে ভারত সরকার ২০০০ সালের ১ নভেম্বরে তৎকালীন মধ্যপ্রদেশ রাজ্যকে ছত্তিসগড়মধ্য প্রদেশে বিভক্ত করার মাধ্যমে নতুন ছত্তিসগড় রাজ্য গঠন করে।[]

অর্থনীতি

শ্রমশক্তি অংশগ্রহণের হার-এ এই রাজ্য ভারতের সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। ১৫-২৯ বর্ষীয়দের ৪৩.৬% এবং সামগ্রিকভাবে ৬২.৭% অংশগ্রহণ রয়েছে । বেকারত্ব হার-এ এই রাজ্য ভারতের সর্বনিম্ম স্থানে রয়েছে। ১৫-২৯ বর্ষীয়দের ৯% এবং সামগ্রিকভাবে ২.৪% রয়েছে মাত্র।

জনসংখ্যার উপাত্ত

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ছত্তিশগড়ের জনসংখ্যার ২৩.৪% (২০১১ সালে প্রায় ৫.১ মিলিয়ন মানুষ) শহরাঞ্চলে অঞ্চলে বাস করে। ভারত সরকারের একটি প্রতিবেদন অনুসারে,[] কমপক্ষে ৩৪% তফসিলি উপজাতি, ১২% তপশিলী জাতি এবং ৫০% এরও বেশি অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি সরকারী তালিকার অন্তর্ভুক্ত। সমভূমিগুলি সাংখ্যিকভাবে তেলি, সাতনামি এবং কুর্মির মতো বর্ণের প্রাধান্য রয়েছে; অপরদিকে বনভূমিগুলি সাধারণত গন্ড, হালবা, কামার/বুজিয়া এবং ওরাওনের মতো উপজাতিদের প্রাধান্য রয়েছে। এছাড়া বৃহৎ ওড়িয়াভাষী জনসংখ্যা রয়েছে। ব্রিটিশ রাজ আমল থেকেই বড় শহরগুলিতে বাঙালিদের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী বিদ্যমান ছিল। তারা শিক্ষা, শিল্প এবং পরিষেবার সাথে যুক্ত।

ধর্ম

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ছত্তিশগড়ের ৯৩.২৫% জনগণ হিন্দু ধর্ম অনুশীলন করেন, যেখানে ২.০২% ইসলাম অনুসরণ করেন, ১.৯২% খ্রিস্টান ধর্ম অনুসরণ করেন এবং অল্প সংখ্যক মানুষ বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও অন্যান্য ধর্ম অনুসরণ করেন।[]

ভাষা

২০১১ অনুযায়ী ছত্তিশগঢ়ের ভাষাসমূহ []
  1. ছত্তিশগড়ি (৬২.১%)
  2. হিন্দি (১০.৮৩%)
  3. সরগুজিয়া (৬.৮%)
  4. গোণ্ডি (৪.১৯%)
  5. ওড়িয়া (৩.৫৮%)
  6. হালবি (২.৭৭%)
  7. সাদরি-নাগপুরী (২.৫৩%)
  8. কুরুখ (২.০২%)
  9. বাংলা (০.৯৫%)
  10. তেলুগু (০.৬%)
  11. মারাঠি (০.৫৬%)
  12. অন্যান্য (৩.০৭%)

রাজ্যের সরকারী ভাষা হ'ল ছত্তিশগড়ি এবং হিন্দি। এই রাজ্যে ছত্তিশগড়ি হল সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের দ্বারা কথিত এবং বুঝতে পারা ভাষা। অন্যান্য ভাষার মধ্যে ওড়িয়া ভাষা রাজ্যের পূর্ব অংশে বহুল ব্যবহৃত হয়। সাদ্রি ঝাড়খণ্ডের নিকটবর্তী উত্তর-পূর্বে কথিত হয়। ছত্তিশগড়িকে আদিবাসীদের দ্বারা খলতাহী বলা হয় ও ওড়িয়ায় লরিয়া বলা হয়।

ছত্তিশগড়ি ছাড়াও হালবি, গোণ্ডি এবং ভাতরির মতো বাস্তার অঞ্চলের উপজাতির লোকদের দ্বারা কথিত আরও বেশ কয়েকটি ভাষা রয়েছে। তেলেঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রের সীমান্তে যথাক্রমে তেলুগু এবং মারাঠি ভাষাগুলির ছোট্ট সম্প্রদায় রয়েছে।[][][][][]

সংস্কৃতি

রাজ্যটিতে অনেক ধর্মীয় সম্প্রদায় রয়েছে, যেমন সতন্মপন্থ, কবিরপন্থ, রামনামী সমাজ এবং অন্যান্য। চম্পারণ একটি ছোট শহর যার ধর্মীয় গুরুত্ব সাধক বল্লভাচার্যের জন্মস্থান হিসেবে, গুজরাটি সম্প্রদায়ের জন্য তীর্থস্থান হিসেবে ক্রমবর্ধমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভগবান রামের জীবনে ছত্তিশগড়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভগবান রাম তাঁর স্ত্রী সীতা এবং তাঁর ছোট ভাই লক্ষ্মণের সাথে বস্তারে তাঁর বনবাস (নির্বাসন) শুরু করেছিলেন, যা তখন দণ্ডকারায়ন নামে পরিচিত ছিল। তারা তাদের ১৪ বছরের বনবাসের মধ্যে ১০ বছরেরও বেশি সময় ছত্তিশগড়ের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেছিলেন। উল্লেখযোগ্য স্থানগুলির মধ্যে একটি হল শিবরিনারায়ন যা ছত্তিশগড়ের বিলাসপুর জেলার কাছে অবস্থিত। শিবরীনারায়ণ নামকরণ করা হয়েছিল এক বৃদ্ধা মহিলা শবরীর নামে।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.