Remove ads
অস্ট্রিয়-ব্রিটিশ দার্শনিক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
স্যার কার্ল রেইমন্ড পপার, কম্প্যানিয়ন অব অনার, ফেলো অব দ্য ব্রিটিশ একাডেমী, ফেলো অব দ্য রয়েল সোসাইটি[৭](২৮ জুলাই ১৯০২ - ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪) ছিলেন একজন অস্ট্রিয়-ব্রিটিশ দার্শনিক এবং অধ্যাপক।[৮][৯][১০] তাকে সাধারণত বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা 'বিজ্ঞানের দার্শনিক' হিসেবে ধরা হয়।[১১][১২][১৩]
স্যার কার্ল পপার | |
---|---|
জন্ম | কার্ল রেইমন্ড পপার ২৮ জুলাই ১৯০২ |
মৃত্যু | ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ ৯২) | (বয়স
জাতীয়তা | অস্ট্রীয় ব্রিটিশ |
মাতৃশিক্ষায়তন | ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয় |
যুগ | বিংশ-শতাব্দীর দর্শন |
অঞ্চল | পশ্চিমা দর্শন |
ধারা | |
প্রধান আগ্রহ |
|
উল্লেখযোগ্য অবদান |
|
ভাবগুরু
| |
ভাবশিষ্য
|
কার্ল রেইমন্ড পপার | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম | Zur Methodenfrage der Denkpsychologie (চিন্তার মনোবিজ্ঞানে পদ্ধতির প্রশ্নে) (১৯২৮) |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | কার্ল লুডউইগ বাহলার (জার্মান ভাষাতত্ত্ববিদ এবং মনোবিজ্ঞানী) |
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | চার্লস লেওনার্ড হাম্বলিন (অস্ট্রেলীয় দার্শনিক এবং যুক্তিবিদ) |
পপার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী তর্কশাস্ত্র প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তিনি প্রায়োগিক জালকরণের পক্ষে ছিলেন, একটি তত্ত্ব যা অভিজ্ঞতাবাদী বিজ্ঞানে কখনোই প্রমাণিত হতে পারেনা, কিন্তু এটা মিথ্যা বর্ণিত হতে পারে, অর্থাৎ এটা পারে এবং অবেক্ষিত হবে ধোঁকার পরীক্ষণ দ্বারা। পপার যে কোনো কাজ বা সত্যতার প্রতিপাদকের বিরোধিতা করতেন, যেটাকে তিনি সমালোচনামূলক যুক্তিবাদ দ্বারা প্রতিস্থাপন করেন, নাম দেন "দর্শনের ইতিহাসে সমালোচনার প্রথম অ-প্রতিপাদ্য দর্শন"।[১৪]
রাজনৈতিক বক্তৃতার ক্ষেত্রে, তিনি উদারনৈতিক গণতন্ত্রের পক্ষের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠবান ছিলেন, এবং 'সামাজিক সমালোচনা' মতবাদের ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বাস করতে পেরেছিলেন যে সতেজভাবে একটি মুক্তসমাজের বেড়ে ওঠা সম্ভব। তার রাজনৈতিক দর্শনগুলো সব মুখ্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মতাদর্শের ধারণাগুলো গ্রহণ করে এবং পুনরায় সামঞ্জস্যবিধান করার চেষ্টা করেঃ সমাজতন্ত্র/সামাজিক গণতন্ত্র, উদারতাবাদ/প্রাচীন উদারনীতিবাদ এবং রক্ষণশীলতাবাদ।[১৫]
কার্ল পপার ১৯০২ সালে ভিয়েনাতে (ভিয়েনা তখন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির মধ্যে, ১৮৬৭-১৯১৮) জন্ম গ্রহণ করেন, তার বাবা-মা ছিলেন উচ্চ মধ্যবিত্ত। কার্ল পপারের পিতামহ-মহীরা সবাই ইহুদী ধর্মের অনুসারী ছিলেন কিন্তু গোঁড়া ছিলেন না, এবং কার্লের জন্মের আগে সংস্কৃতি-পুঞ্জীভূতকরণের অংশ হিসেবে তারা লুথেরীনবাদ ধর্মে দীক্ষা নেন[১৬][১৭] এবং কার্লও লুথেরীয় ব্যাপ্টিজমের বিশ্বাস লাভ করেন।[১৮][১৯] কার্লের পিতা সাইমন সিগমুণ্ড কার্ল পপার ছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের বোহেমিয়া এলাকার একজন আইনজীবী এবং ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আইনের ডক্টরেট, এবং মাতা জেনী শিফ ছিলেন পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত। কার্ল পপারের কাকা ছিলেন অস্ট্রীয় দার্শনিক জোসেফ পপার-লিংকেউস। ভিয়েনাতে আবাস গড়ার পর, পপাররা ভিয়েনার সমাজের উঁচু অবস্থানের উঠে যান, সাইমন সিগমুণ্ড হার্ল গ্রুবল নামক একজন উদারনৈতিক আইনজীবীর সঙ্গী হয়ে যান, এবং ১৮৯৮ সালে হার্লের মৃত্যু হলে তার ব্যবসা নিজের হাতে নেন সাইমন। এই হার্ল গ্রুবলের আরেক নাম ছিল রেইমন্ড, এই রেইমন্ড পরে কার্লের নামেও স্থান পায়।[১৬] পপার নিজেই তার জীবন-কাহিনীতে বলেন তার এই রেইমন্ড নামের কথা যে এটা হার্ল গ্রুবল নামক এক ব্যক্তি থেকে এসেছে।[২০] তার পিতা ছিলেন একজন বইপোকা যার ব্যক্তিগত গ্রন্থাগারে ১২,০০০ থেকে ১৪,০০০ এর মত বই ছিলো[২১] এবং তার দর্শন, প্রাচীন যুগ এবং সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলো আগ্রহের ছিলো।[১১] পপার গ্রন্থাগার এবং বই পড়ার স্বভাব তার বাবার কাছ থেকেই পান।[২২] কার্ল পরে বর্ণনা দেন যে তিনি বইয়ের মধ্যেই বড় হয়েছেন।[১১]
পপার ১৬ বছর বয়সে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন এবং ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত, পদার্থবিদ্যা, দর্শন, মনোবিজ্ঞান এবং সঙ্গীতের ইতিহাসের অতিথি ছাত্র হিসেবে যোগ দেন। ১৯১৯ সালে তিনি মার্ক্সবাদের প্রতি আকর্ষিত হন এবং সঙ্গে সঙ্গে যোগ দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র-সংঘতে (এ্যাসোসিয়েশন অব সোশালিস্ট স্কুল স্টুডেন্টস)।[১১] তিনি রাজনৈতিক দল 'সোশাল ডেমোক্রেটিক ওয়ার্কার্স পার্টি অব অস্ট্রিয়া' (অস্ট্রিয়ার সমাজবাদী গণতন্ত্রী পার্টি) এর সদস্যও বনে যান, যেটি পুরোপুরি মার্ক্সবাদী মতাদর্শ দ্বারা গঠিত ছিলো।[১১] ১৫ জুন ১৯১৯ তারিখে পুলিশ হর্লগ্যাসে এলাকায় এই রাজনৈতিক দলের কর্মীদের উপর হামলা চালালে আটজন নিহত হয়, তার এই ঘটনার পর কার্ল মার্ক্সের 'ছদ্ম বৈজ্ঞানিক' (ঐতিহাসিক বস্তুবাদ) মতাদর্শ মন থেকে মুছে যায় এবং তিনি তখন থেকে সামাজিক উদারনীতি মতবাদের আজীবন সমর্থকে রূপান্তরিত হন।
তিনি সড়ক নির্মাণের কাজে কিছু সময়ের জন্য নিয়োজিত হন, তবে কঠোর পরিশ্রম করতে পারেননি। ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি ছাত্র হিসেবে তিনি জীবন চালিয়ে যাচ্ছিলেন, এরই মধ্যে আসবাবপত্র নির্মাতা ছুতারমিস্ত্রীর কাজ শিখে নিজেকে ঠিকা মজুর হিসেবে প্রস্তুত করেন। তিনি ঐ সময়ে বাচ্চাদের জন্য প্রতিদিনকার সেবার চিন্তা করেন, যেটার জন্য তিনি ধারণা করেছিলেন যে তার আসবাবপত্র বানানোর সক্ষমতা কাজে আসবে। এরপর তিনি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আলফ্রেড এ্যাডলারের বাচ্চাদের জন্য ক্লিনিকে কাজ করেন। ১৯২২ সালে তিনি ম্যাচুরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন দ্বিতীয় বার দেওয়ার পরে এবং ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশেষে একজন নিয়মিত শিক্ষার্থীর মর্যাদা পান। তিনি প্রাথমিক শিক্ষক হবার যোগ্যতা পান ১৯২৪ সালে এবং সমাজের নিম্ন শ্রেণীর শিশুদের একটি স্কুলে তিনি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ১৯২৫ সালে দর্শন এবং মনোবিজ্ঞান পড়েন নবগঠিত একটি প্রতিষ্ঠানে। তিনি এই সময়ের মধ্যে জোসেফিন এ্যান্না হেনিঙ্গার নামের এক তরুণীর সঙ্গে প্রেম করা শুরু করেন যিনি পরে তার পত্নী হয়েছিলেন।
১৯২৮ সালে তিনি কার্ল বাহলারের (জার্মান মনোবিজ্ঞানী) তত্ত্বাবধানে মনোবিজ্ঞানে ডক্টরেট উপাধি অর্জন করেন। তার গবেষণামূলক দীর্ঘ নিবন্ধের শিরোনাম ছিলো "দার্শনিক মনোবিজ্ঞানে প্রশ্ন করার পদ্ধতি"।[২৩] তিনি ১৯২৯ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গণিত এবং পদার্থবিদ্যা পড়ানোর অনুজ্ঞা পান এবং যেটা তিনি শুরু করে দেন। ১৯৩০ সালে তিনি জোসেফিন এ্যান্না হেনিঙ্গার (তার সহকর্মীও) এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জোসেফিন ১৯০৬ সালে জন্ম নেন এবং '৮৫ সালে মারা যান। নাৎসিবাদের উত্থান এবং অস্ট্রিয়ার জার্মানির মধ্যে ঢুকে যাওয়ার সময় তিনি ভয় পেয়ে যান এবং দিন-রাত ব্যয় করে তার প্রথম বই "জ্ঞানের তত্ত্বের দুটি মৌলিক সমস্যা" লেখতে থাকেন। ইহুদীদের জন্য নিরাপদ এমন একটি দেশে তার শিক্ষাগত মর্যাদা পাওয়ার জন্য একটি বই প্রকাশের দরকার ছিলো। যদিও তিনি দ্বি-সংখ্যা বিশিষ্ট বইটি প্রকাশ করেননি, কিন্তু বইটির একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ বের করে এবং কিছু নতুন উপাদান যোগ করে 'বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের যুক্তি' নামে প্রকাশ করেন ১৯৩৪ সালে। এখানে তিনি মনস্তত্ত্ববাদ, প্রকৃতিবাদ, তর্কশাস্ত্রবাদ এবং যৌক্তিক ধনাত্মকতাবাদ এর সমালোচনা করেন এবং অবিজ্ঞান থেকে বিজ্ঞানের সীমানানির্দেশের নির্ণায়ক হিসেবে তার সম্ভাবনাময় জালকরণের তত্ত্ব প্রয়োগ করেন। ১৯৩৫ এবং ১৯৩৬ সালে তিনি অপরিশোধিত ছুটিতে শিক্ষা সফরে যুক্তরাজ্য গমন করেন।[২৪]
১৯৩৭ সালে কার্ল এমন একটি অবস্থানে আসেন যেটি তাকে নিউজিল্যান্ডে স্থানান্তরিত হওয়ার সক্ষমতা যোগায়, তিনি ক্রাইস্টচার্চে অবস্থিত নিউজিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ক্যান্টারবেরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে দর্শনের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি সে দেশে 'মুক্ত সমাজ এবং এটার দুশমনেরা' নামের একটি বই লেখেন (যুক্তরাজ্যে ১৯৪৫ সালে প্রকাশিত হয়)। কার্ল নিউ জীল্যান্ডের ডুনেডিন শহরে শরীরতত্ত্ববিদ্যার অধ্যাপক জন ক্যারু এ্যাকলেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে ১৯৪৬ সালে কার্ল যুক্তরাজ্যে যান যুক্তিবিদ্যা এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নিয়ে পড়তে, সেখানে তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে অধ্যায়ন করেন। তিন বছর পর ১৯৪৯ সালে তাকে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তিবিদ্যা এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বিষয়ের অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ১৯৫৮ থেকে ১৯৫৯ পর্যন্ত লন্ডনের 'ব্লুম্সবারী স্কয়ার' এর 'এ্যারিস্টোটোলীয় সমাজ' এর সভাপতি ছিলেন। ১৯৮৫ সালে তিনি তার অসুস্থ পত্নীকে দেখার জন্য অস্ট্রিয়া আসেন, জোসেফিন ঐ বছরের নভেম্বরে মারা যান। অস্ট্রিয়ার পদার্থবিদ এবং দার্শনিক লুডউইগ বোল্টয্মানের নামের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্লকে বিজ্ঞানের দর্শনের নতুন গবেষণা শাখার পরিচালক বানাতে ব্যর্থ হলে, তিনি '৮৬ সালে যুক্তরাজ্যের কেনলীতে চলে আসেন।[৭]
পপার ১৯৯৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তারিখে মারা যান যুক্তরাজ্যের কেনলীতে, তার কিডনীতে সমস্যা ছিলো এবং নিউমোনিয়া ও ক্যান্সার রোগেও ভুগছিলেন তিনি।[২৫][২৬] মৃত্যুর দুই সপ্তাহ আগেও তিনি তার দর্শন নিয়ে কাজ করছিলেন কিন্তু হঠাৎ তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।[২৭] তার শবদেহ আগুনে পড়ানোর পর ছাইগুলো ভিয়েনাতে নিয়ে যাওয়া হয় 'অস্ট্রীয় ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন' এর সদর দপ্তরের কাছের একটি এলাকায় যেখানে তার পত্নী জোসেফিনকে আগেই সমাধিত করা হয়েছে।[২৮] পপারের ভূসম্পত্তি তার সচিব এবং ব্যক্তিগত সহকারী মেলিটা মিউ এবং তার পতি রেইমন্ড দ্বারা ব্যবস্থিত হয়ে আসছে। পপারের গ্রন্থ বা প্রবন্ধাদির হস্তলিখিত অনুলিপি যুক্তরাষ্ট্রের 'স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়' এর হুভার ইন্সটিটিউশনে যায়, আংশিকভাবে তার জীবদ্দশায় এবং আংশিকভাবে অতিদিষ্ট বস্তু হিসেবে তার মৃত্যুর পর। অস্ট্রিয়ার ক্লাগেনফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয় পপারের গ্রন্থাগারের স্বত্বাধিকারিত্ব রেখেছে, এর মধ্যে রয়েছে তার মূল্যবান প্রিয় গ্রন্থগুলো, সাথে সাথে আসল হুভার ম্যাটেরিয়ালগুলোর হার্ডকপি এবং অতিরিক্ত ম্যাটেরিয়ালগুলোর মাইক্রোফিল্ম। তার অবশিষ্ট ভূসম্পত্তিগুলোর অধিকাংশ 'দ্য কার্ল পপার চ্যারিটেবল ট্রাস্ট' স্থানান্তর করা হয়েছিল।[২৯] ২০০৮ এর অক্টোবরে ক্লাগেনফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয় তার ভূসম্পত্তি থেকে আইনগত অধিকার নেয়। পপার এবং তার পত্নী বাচ্চা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যুদ্ধের পরিস্থিতি দেখে তাদের বিয়ের প্রথম কয়েক বছরে। পপার এ ব্যাপারে মন্তব্য করেন যে "এটি সম্ভবত ছিলো কাপুরুষতা কিন্তু একদিক দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত"।[৩০]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.