শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

অকালবোধন

দুর্গাপূজার প্রারম্ভিক অনুষ্ঠান উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

অকালবোধন
Remove ads
Remove ads

অকালবোধন হল শারদীয়া দুর্গাপূজার প্রারম্ভিক অনুষ্ঠান। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথি অথবা শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে হিন্দু দেবীপার্বতীর দুর্গা রূপের পূজারম্ভের প্রাক্কালে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, শরৎকাল দেবলোকের রাত্রি দক্ষিণায়নের অন্তর্গত। তাই এই সময় দেবপূজা করতে হলে, আগে দেবতার বোধন (জাগরণ) করতে হয়। একাধিক পুরাণ ও অন্যান্য হিন্দু ধর্মগ্রন্থে উল্লিখিত হয়েছে যে, রাবণ বধের পূর্বে রাম দেবী পার্বতীর কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে বিল্ববৃক্ষতলে বোধনপূর্বক দুর্গাপূজা করেছিলেন। শরৎকাল দেবপূজার ‘শুদ্ধ সময়’ নয় বলে রাম কর্তৃক দেবী পার্বতীর বোধন ‘অকালবোধন’ নামে পরিচিত হয়। উল্লেখ্য, শাস্ত্রমতে বসন্তকাল দুর্গাপূজার প্রশস্ত সময় হলেও, আধুনিক যুগে শারদীয়া দুর্গাপূজাই অধিকতর প্রচলিত।রাবণ বসন্ত কালে চৈত্র মাসে দেবী পার্বতী কে পুজো করে সন্তুষ্ট করলে দেবী তাকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু যদি সে দেবীর পূজা মন্ত্রে শ্রী শ্রী চন্ডিতে কোনো রূপ ত্রুটি করে তবে দেবী তাকে ত্যাগ করবেন। এই কারণে রামের সকল অস্ত্র রাবণের উপর বিফল হয়ে যায়। তখন ব্রহ্মা রামচন্দ্র কে দেবী পার্বতীর পুজো করতে বলেন। কারণ দেবী এই সময় মর্ত্যে তাঁর মাতা পিতা র গৃহে আসেন। রাম দেবী পার্বতীর পুজো করলে দেবী কর্তৃক তাঁর উদ্দেশ্যে আনা একটি পদ্ম তিনি হরণ করেন। তখন রামচন্দ্র নিজ চক্ষু দেবী কে দান করতে চাইলে দেবী পার্বতী তাঁকে বিরত করেন ও বর দেন। তার পর হনুমান দশমী তিথিতে রাবণ কল্যাণে শ্রী চন্ডী পাঠ রত বৃহস্পতি কে অজ্ঞান করে শ্রী চন্ডী অশুদ্ধ করলে রাবণ কে ত্যাগ করেন দেবী। রাবণ দেখে দেবী তাকে ত্যাগ করে কৈলাসে চলে যাচ্ছেন রাবণের শত মিনতি সত্ত্বেও দেবী পার্বতী আর ফিরে তাকালেন না। তারপর রামচন্দ্র রাবণ বধ করেন। বর্তমান যুগে দেবীর অকাল বোধন রূপটির ও পূজা করা হয়ে থাকে।

Thumb
কৃত্তিবাসি রামায়ণ গ্রন্থে বর্ণিত রাম কর্তৃক দুর্গার অকালবোধনের দৃশ্য; খিদিরপুর ভেনাস ক্লাবের পূজামণ্ডপ, কলকাতা, ২০১০।

এই পূজা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে মহান সাধক বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী যা বলেছেন তা অবশ্যই উদ্ধারযোগ্য :

"আমি বলিলাম – “শ্রীরামচন্দ্রতো স্বয়ং ভগবান। তিনিতো সবই জানিতেন, সবই পারিতেন, তিনি আবার দুর্গাপূজা করিলেন কেন ? ঠাকুর বলিলেন : “ এযে নরলীলা! এখানে জানা টানার, পারা না পারার কোন কথা নাই। তিনি যদি পূর্ণব্রহ্মের ন্যায়ই সব ক'রবেন, তা হ'লে আর অবতীর্ণ হ'লেন কেন ? সেখানে থেকেইতো সব ক'রতে পারতেন। তাঁর আর অসাধ্য কি আছে! যাঁর ইচ্ছাতে সৃষ্টি স্থিতি প্রলয় হ'তেছে, তিনি মুহূর্ত্তে কি না করতে পারেন! যখন তিনি যে উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ হন, তখন তিনি ঠিক সেইরূপই আচরণ করেন। লীলা-সময়ে তাঁর আপন মায়াশক্তি দ্বারাই তিনি আপনাকে আপনি আচ্ছন্ন রাখেন, যেমন গুটিপোকা আপন সুতায় আপনি আবদ্ধ হয়। তাঁর লীলা কি বোঝবার সাধ্য আছে! শুধু তাঁর কৃপা।”

[]

- এর মধ্যেই বোধহয় লুকিয়ে আছে বিশ্বাসের আসল তাৎপর্য।

Remove ads

নাম-ব্যুৎপত্তি

সারাংশ
প্রসঙ্গ

সংস্কৃত ‘অকাল’ ও ‘বোধন’ শব্দদুটি বাংলা ভাষায় তৎসম শব্দ হিসেবে গৃহীত হয়েছে। ‘অকাল’ শব্দের অর্থ ‘অসময়, শুভকর্মের অযোগ্য কাল[] বা অনুপযুক্ত কাল’।[]। অন্যদিকে ‘বোধন’ শব্দটির অর্থ ‘উদ্বোধন, নিদ্রাভঙ্গকরণ, বা জাগান’[] ‘অকালবোধন’ শব্দবন্ধটির অর্থ ‘অসময়ে বোধন বা জাগরণ, (হিন্দু সংস্কারে) অসময়ে দেবী দুর্গার আরাধনা’।[]। এই প্রসঙ্গে জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস লিখেছেন:[]

যে সময় (শ্রাবণ হ’তে পৌষ) দুর্গা পূজা হয় তখন সূর্য্যের গতি দক্ষিণ দিক্‌ দিয়া হয়। এই ছয় মাস দক্ষিণায়ণ। অপর ছয় মাস (মাঘ হ’তে আষাঢ়) উত্তরায়ণ। উত্তরায়ণ দেবতাদের দিন এবং দক্ষিণায়ণ রাত্রি। রাত্রিকালে দেবীদুর্গা (পার্বতী)নিদ্রিত থাকেন বলিয়া তাঁহার বোধন করিয়া পূজা করিতে হয়। সাধারণত ষষ্ঠীতেই বোধন আরম্ভ হয়, পূজার পূর্ব্বদিন সায়ংকালে ষষ্ঠী না থাকিলে ও তৎপূর্ব্বদিনে থাকিলে তৎপূর্ব্বদিনেই বোধন হয়।

অপরপক্ষে দুর্গাপূজার বিধিসম্মত সময়কাল হল হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে চৈত্র মাস; যে পূজা বাসন্তীপূজা নামে পরিচিত।[] হিন্দু পুরাণে উল্লিখিত হয়েছে, রাজা সুরথসমাধি বৈশ্য দুর্গাপূজা করেছিলেন বসন্তকালেই। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ গ্রন্থে রয়েছে, রাজা সুরথ চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী ও নবমী তিথিতে শাস্ত্রবিধিমতে দেবী দুর্গতিনাশিনীর (পার্বতী) পূজা করেছিলেন। বসন্তকাল উত্তরায়ণের অন্তর্গত। উত্তরায়ণে দেবতারা জাগ্রত থাকেন বলে বাসন্তীপূজায় বোধনের প্রয়োজন হয় না।পূজা-বিজ্ঞান, স্বামী প্রমেয়ানন্দ, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা, রাম চন্দ্র কতৃর্ক দেবী পার্বতীর স্তুতির দুটি স্তবক --- জগৎ মহামায়ে তুমি শিব ঘরনি / শঙ্কর বক্ষ বিলাসে,মৈনাক ভগিনী,/সকল দেবী তব অংশ জাতা, দোয়া করি দেহ মরে হীমবান সুতা/হের মা পার্বতী আমি দীন অতি,তব দয়া বিনে কেমনে বধি লঙ্কেসে হইমোবতি,কর মরে দয়া শ্যামা,হে শঙ্করের রমা/

Remove ads

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

পাদটিকা

Loading content...

বহিঃসংযোগ

Loading content...
Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads