বিরামপুর উপজেলা
দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বিরামপুর বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা ও পৌর শহর। বিরামপুর উপজেলা দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল ও দেশের সীমান্তবর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শহর। ছোট যমুনা নদীর কোল ঘেঁষে বিরামপুর উপজেলা অবস্থিত। রাজধানী থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরবর্তী এবং দিনাজপুর সদর থেকে ৫৬ কিলোমিটার দূরবর্তী হলেও বিরামপুর শহর নিজস্ব সংস্কৃতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
বিরামপুর | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে বিরামপুর উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°২১′ উত্তর ৮৮°৫৯′ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | দিনাজপুর জেলা |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৮৩ সাল |
সংসদীয় আসন | দিনাজপুর-৬ |
আয়তন | |
• মোট | ২১১.৮১ বর্গকিমি (৮১.৭৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,৫০,৬২০+ |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৮৯% + |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৫২৬৬ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫৫ ২৭ ১০ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
২১১.৮১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বিরামপুর উপজেলার ওয়ার্ড ৯টি ও মহল্লা ২৯টি। এ উপজেলার উত্তরে ফুলবাড়ী উপজেলা ও নবাবগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে হাকিমপুর উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে নবাবগঞ্জ উপজেলা ও হাকিমপুর উপজেলা, পশ্চিমে ফুলবাড়ী উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।
বিরামপুর পৌরশহর ছোট যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি মূলত যমুনা নদীর উপবাহিকা। শহরটি রাজধানী ঢাকা থেকে এটি প্রায় ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে এবং দিনাজপুর সদর থেকে এটি ৫৬ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
ত্রেতা যুগে মহাকবি বাল্মীকি বিরামপুরের অদূরে তর্পূন ঘাট নামক স্থানে আশ্রম স্থাপন করে পূজাপার্বনাদির কার্য সম্পাদন করতেন। আবার ত্রেতা যুগেই বিরামপুর-নবাবগঞ্জ সড়কের পাশে সীতাকোট নামক স্থানে একটা ইটের স্তূপের উপর সীতার পদচিহ্ন পাওয়া যায়। এ থেকে স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন যে, রাম কর্তৃক সীতা অল্প দিন জন্য হলেও এ স্থানে নির্বাসিত জীবন-যাপন করেন।[1]
বিরাট রাজার রাজধানী ছিল বিরামপুর। দিনাজপুর গেজেটিয়ারে তার কিছু নিদর্শন পাওয়া যায়। তিনি তার রাজধানীকে শক্রর হাত হতে রক্ষা করার জন্য পার্বতীপুর উপজেলার গাবড়া গ্রামে একটা দুর্গ এবং দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত রক্ষার্থে ঘোড়াঘাটে আর একটি দুর্গ নির্মাণ করেন। বিরামপুর-ঘোড়াঘাট সড়ক ঐ সময়ে নির্মিত বলে অনেকের ধারণা। এখনো এই দুর্গদ্বয় ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আছে।
মি. নেট নামে একজন পশ্চিমা ঐতিহাসিকের মতে দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাংশে মহাস্থানের রাজা পরশুরাম (তখন মহাস্থান দিনাজপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল) আনুমানিক ২২ জন অধীনস্থ রাজাকে তাঁবেদার রাজা হিসাবে নিয়োগ করে। তখন রাজা পাতরদাস বিরামপুরে তাবেদার রাজা হিসেবে দায়িত্ব পান। সে সময় বিরামপুরের সীমানা ছিল উত্তরে জয়নগর হতে দক্ষিণে জামালেশ্বর শিব মন্দির পর্যন্ত। চীন পরিব্রাজক হিউয়েন সাং এর বিবরণীতে জানা যায় যে, খ্রিষ্টপূর্ব ৩য় অব্দ হতে ৭ম খ্রিষ্টাব্দ পর্ষন্ত বিরামপুর অঞ্চলের সকল শাসকগণই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিল। পরবর্তীকালে একজন মুসলমান পীরশাহ সুলতান হজরত আউলিয়া কর্তৃক মহাস্থানগড় বিজিত হলে পাল শাসনের অবসান ঘটে।[1]
৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দ বানরাজা নামে বর্তমান পশ্চিম দিনাজপুর রামগড়ের হিন্দু রাজা বিরামপুর দখল করেন। তিনি শিবের ভক্ত ছিলেন বলে তাকে বানাসুর ও বলা হত। দিনাজপুর জেলার ইতিহাস লেখক মেহরাব আলীর ও সৈয়দ মোশাররফ হোসেনের মতে দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চলের থানাসমূহের কেন্দ্রস্থল বিরামপুর ডিগ্রী কলেজের অদূর দক্ষিণে জামালেশ্বরে বানরাজা একটি শিব মন্দির স্থাপন করেন এবং সেটিই ছিল অত্রাঞ্চালের একমাত্র প্রাচীন শিবমন্দির। দিনাজপুর গেজেটটিয়ারে পাওয়া যায়, তখন এ স্থানের নাম ছিল ভোলাগঞ্জ। প্রতি বছর জামালেশ্বরের ভোলাগঞ্জ শিব মন্দিরে আজও বহু দূর-দূরান্ত থেকে সর্বস্তরের হিন্দু ধর্মাবলন্বী এ শিব মন্দিরে পূজা উপলক্ষে আসেন এবং শিব মন্দিরে অর্ঘ দিয়ে থাকেন। এ সময় হতেই ভোলাগঞ্জ (বিরামপুর) পরিচিতি লাভ করতে থাকে।[1]
৯৯৭-১০০৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত গজনীর সুলতান মাহমুদ ভারতবর্ষ অভিযান আরম্ভ করলে উত্তর ভারতের শাসকগণ এক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন। ঠিক সেই সংকটকালে দিনাজপুর এবং ভাদুরিয়া অঞ্চলে পাল বংশের শেষ পরাক্রমশালী শাসক মহীপালের (৯৮০-১০০৩) সহিত কৈবর্ত বংশোদ্ভুত দিবেকাক নামক এ ব্যক্তিকে তাদের অধিনায়ক করে কৈবর্তগণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। যুদ্ধে জয়লাভ করে কৈবর্তরা ঘোড়াঘাটে তাদের রাজধানী স্থাপন করেন এবং রাজধানী রক্ষার্থে ইহার চতুর-পার্শ্বে পরীখা খনন করেন।
১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজী লক্ষ্মণ সেন কে বিতাড়িত করে নদীয়া জয় করে উত্তরবঙ্গের দিনাজপুরের দক্ষিণ অঞ্চলের বৃহত্তম এলাকায় তার শাসন কেন্দ্র ও রাজধানী করেন। ইখতিয়ার উদ্দীনের উদ্দেশ্য ছিল এদেশে ইসলাম ধর্ম প্রচার ও রাজ্য বিস্তার। তাই প্রথা অনুযায়ী তিনি তার নিজ নামে বিরামপুরে একটা মসজিদ নির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি তার ভ্রাতা এবং সেনাপতি আজ্জুদ্দিনকে বালুরঘাটের পূর্বাঞ্চলের তদারকি প্রদান করেন। কিন্তু আট মাসের মাথায় আলিম উদ্দিন খিলজী নামক জনৈক সামন্ত তাকে নিহত করেন ও শাসন দখল করেন। আলিম উদ্দিন খিলজী কর্তৃক আনুমানিক ১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে বিরামপুর বাজারের মধ্যবর্তী স্থান আসন তলীতে একটা মসজিদ নির্মাণ করেন। কালস্রোতে সেটি ধংস প্রাপ্ত হয়। সেখানে আর একটা নতুন মসজিদ গড়ে উঠেছে। মাত্র ২০ বছর আগেও এ মসজিদের ধ্বংসাবশেষের উপর একটা বৃহৎ বটগাছ ছিল। ১২০৬ খ্রিষ্টাব্দ পর বিরামপুরের কোন সঠিক ইতিহাস পাওয়া যায় না। তবে ১৩৪২ খ্রিষ্টাব্দ হতে ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্ষন্ত বাংলায় ইলিয়াস শাহী ও হোসেন শাহী বংশের স্বাধীন শাসনামলে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার ঘটলে বিরামপুরের পশ্চিমে প্রস্তমপুর গ্রামের সন্নিকটে সোটাপীর নামে জনৈক আউলিয়ার আগমন ঘটে। তার দীন ইসলাম প্রচারের ফলে বিরামপুরে ইসলাম ধর্মের বুনিয়াদ দৃঢ় হয়। রাজা বিরাট ও রাজা পাতরদাসের পর বিরামপুরে আর কোন প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল না।
দিনাজপুর জেলা সদর হতে ৫৬ কিলোমিটার দক্ষিণে প্রমত্ত যমুনার এক শাখা নদীর কোল ঘেঁষে বিরামপুর উপজেলার অবস্থান। বিরামপুর উপজেলার পটভূমি হিসেবে উল্লেখযোগ্য যে তৎকালীন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর অত্র এলাকার বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ সহ অনেকেই এলাকার উন্নয়নে মনোনিবেশ করেছিলেন। ১৯৭৭ সালে বিরামপুরে মহকুমা সৃষ্টির দাবি ওঠে। বিরামপুর থানা সৃষ্টির পূর্বে হাকিমপুর, নবাবগঞ্জ ও ফুলবাড়ী থানার সমন্বয়ে এ অঞ্চল পরিচালিত হত। নবাবগঞ্জ ও হাকিমপুর থানার ২টি করে ও ফুলবাড়ী থানার ৩টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে বিরামপুর থানা গঠিত হয়। ১৯৭৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি বিরামপুরকে থানা হিসেবে ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়িত হয় ১৯৮১ সালের ৭ই জুন অতঃপর ১৪ই সেপ্টেম্বর ১৯৮৩ সালে বিরামপুর থানাকে উন্নীত করে উপজেলাতে পরিণত করা হয় এবং পরে ১৯৯০ সালে বিরামপুর পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। ১৬ই জুন ১৯৯৫ সাল হতে বিরামপুর পৌরসভার কার্যক্রম শুরু হয়। ২৫.৭৫ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসাবে পরিচালিত হয়ে আসছে এবং এর রাজস্ব আয় প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা।
এ অঞ্চলের মোট ৩টি পূর্ব নাম খুঁজে পাওয়া যায়। এগুলো হল-
চরকাই নামটি একটু বিচিত্র ধরনের। নামের উৎপত্তি সম্পর্কে কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না। কিন্তু একটি মুখরোচক গল্প শোনা যায়। চরকাই রেলস্টেশন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে একটি ঢিবি আছে । লোকে এ ঢিবিকে বলে চোর চক্রবর্তীর ঢিবি। প্রাচীনকালে সেখানে নাকি এক ধনাঢ্য ব্রাহ্মণ বাস করতেন। তার একমাত্র পুত্র বাল্যকালেই নাকি চৌর্যবিদ্যায় অত্যন্ত পারদর্শী হয়ে ওঠে। বালকের পিতা চৌর্যবৃত্তি থেকে নিবৃত্ত করার জন্য একটি কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি একটি থালাতে কিছু টাকা রেখে টাকাগুলি ছাই দিয়ে ঢেকে দেন। তারপর তিনি বালককে আদেশ দেন, ছাইগুলি ফুঁ দিয়ে সরিয়ে টাকাগুলি নিয়ে যেতে। কিন্তু শর্ত থাকে যে, ফুঁ দিয়ে ছাই সরাবার সময় যদি একটা ছাই মুখে লাগে তবে বালককে জীবনের জন্য চৌর্যবৃত্তি ছেড়ে দিতে হবে। বালক হাসিমুখে শর্ত মেনে নিয়ে পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত হয়। সে এক খন্ড লম্বা বাঁশের চোঙ্গা জোগাড় করে, চোঙ্গার ভিতর দিয়ে ফুঁ দিয়ে সরিয়ে ফেলে এবং তাতে একটা ছাইও তার মুখে লাগেনি। অতঃপর মনের খুশিতে সে টাকাগুলি তুলে নেয়।
অতি অল্প বয়সে বালকের এহেন চতুরতা দেখে বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেন। বালক চৌর্যবিদ্যায় হাত পাকাতে থাকে। বড় হয়ে সে নিজ দেশ ছাড়াও অঙ্গ, কলিঙ্গ, মগধ, মিথিলা, ত্রিহুত, পাটলিপুত্র, অবন্তী, মৎস্য, কান্যকুব্জ প্রভৃতি দেশে অতি নিপুণতার সাথে চৌর্যবৃত্তি করতে থাকে এবং অশেষ ধনরত্নের অধিকারী হয়ে সে এখানে প্রাসাদসম এক বিরাট অট্টালিকা নির্মাণ করে। জনশ্রুতি আছে যে, তার অট্টালিকা আশপাশ এলাকা জুড়ে ছোট নদী বেষ্টিত ছিল এবং নদীতে সোনার নৌকায় সে যাতায়াত করতো।
একবার মগধ দেশের পূর্ব প্রান্তে চুরি করতে গিয়ে সে প্রায় ধরা পড়ে যায়। প্রাণভয়ে অশ্বারোহণে অতি দ্রুতগতিতে গৃহাভিমুখে প্রত্যাবর্তন করতে থাকলে মগধরাজের সৈন্যরাও তার পিছে পিছে ধাওয়া করেন। ছুটতে ছুটতে সে তার প্রসাদে এসে প্রবেশ করলে পশ্চাদ্ধাবনকারীরা তার প্রাসাদের সামনে এসে তাজ্জব হয়ে বলেন, 'এটাতো রাজ প্রাসাদ, চোর কই?' এবং 'চোরকই' 'চোরকই' বলে তারা চেঁচাতে থাকেন। সেই থেকেই নাকি এ স্থানের নাম হয় চরকাই (<চরকই<চোরকই)। এই চোর চক্রবর্তী নাম সম্পর্কে বলা যেতে পারে যে, ইমারতটি বহুকাল আগে পরিত্যক্ত হবার পরে কোনো এক সময়ে হয়তো এখানে চোর-ডাকাতের আড্ডা গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে কোন একজন হয়তো নিজ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অসামান্য কৃতিত্বের জন্য 'চোর চক্রবর্তী' (অর্থাৎ চোরদের শিরোমণি) আখ্যা লাভ করে। সেই স্বনামধন্য 'চোর চক্রবর্তী' মশায়ের নামের সঙ্গে জড়িত হয়ে এ স্থানের চোর চক্রবর্তী নামকরণ হয়ে থাকতে পারে এবং পরে এ স্থান বোধহয় এ নামেই পরিচিত হয়ে ওঠে। এ চোর চক্রবর্তী থেকেই চরকাই নামের উদ্ভব বলে ধারণা করা যায়। এ অঞ্চলে এটি একটি প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ দুর্গ। মাটির ঢিবিটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের এর তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। ১৯৬৮ সালে উৎখননের কাজ শুরু হয়। বাংলাদেশ সরকারের জাদুঘর ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ শাসনামলে সেই চরকাই নামে রেলস্টেশন নির্মাণ হলে ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে ২৩ জুন চরকাই নাম পরিবর্তন করে বিরামপুর রেলস্টেশন নামকরণ করা হয়।
মোঘল সম্রাট আকবর বৈরামখানের অভিভাবকত্বে ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দে পানিপথের ২য় যুদ্ধে জয়লাভ করে দিল্লীর অধিপতি হন। বালেগ হয়ে বৈরামখানের অভিভাবকত্ব ছিন্ন করে মহামতি আকবর ১৫৭৬ খ্রিষ্টাব্দে কররানীকে পরাভুত করে বাংলা জয় করেন।
কথিত আছে, আকবরের সময় বাংলার বারো ভুঁইয়াদের মধ্যে পাতরদাস নামক এক শক্তিশালী রাজা ছিলেন। তার রাজধানী ছিল এই এলাকায়। রাজা পাতরদাস মোগল সেনাপতি বৈরাম খাঁর নিকট যুদ্ধে পরাজয় বরণ করেন। সেনাপতি বৈরাম খাঁর নামে এই এলাকার নাম হয় বিরামপুর।
আরেক ভাষ্যমতে, সম্রাট আকবর বিষ্ণুদত্তকে কান্নগো রুপে দিনাজপুরের রাজস্ব নির্ধারণ ও আদায়ের বন্দোবস্তের জন্য প্রেরণ করেন। বিষ্ণুদত্ত বৈরামখানের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। অনেক ঐতিহাসিকের মতে এ ভক্ত বিষ্ণুদত্তই বৈরামখানের নামানুসারে ভোলাগঞ্জ নাম পরিবর্তন করে এ স্থানের নাম রাখেন বিরামপুর।
১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরামপুর উপজেলার রয়েছে এক অনন্য গৌরবগাঁথা। তৎকালীন ৭ নং সেক্টরের মেজর নাজমুল হূদা ও মেজর নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভারতের তরঙ্গপুর সেক্টরে দেশ-মাতৃকার টানে ২৮০ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। অতঃপর সু-দীর্ঘ ৯ মাস প্রাণপণ যুদ্ধ করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিরামপুরবাসীর সাহায্য নিয়ে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে বিরামপুরকে শত্রুমুক্ত করেন। এতে উপজেলার ২০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন; পঙ্গু হন ০২ জন এবং যুদ্ধে মারাত্মক ভাবে আহত হন ১৩ জন। উল্লেখ্য যে, বিরামপুরের কেটরা হাট নামক স্থানে ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের যুদ্ধে ৭ জন পাকসেনা এবং ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর ৬ ডিসেম্বর বিরামপুর উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
বিরামপুরের গোহাটির কূয়া, ঘাটপাড় ব্রীজ, ২নং রাইস মিলের কুয়া, পূর্ব জগন্নাথপুরে আব্দুল ওয়াহেদের বাগান বাড়ি, ৪নং রাইচ মিলের কুয়াতে যুদ্ধ চলাকালীন পাক হানাদার বাহিনী গণহত্যা করে শহীদদের লাশ পুঁতে রাখে। তবে আজও নির্মিত হয়নি কোন স্মৃতিস্তম্ভ এবং এখন পর্যন্ত সরকারি স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনস্বরূপ নির্মিত হয়েছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন।
বিরামপুর উপজেলা দিনাজপুর-৬ আসনের অন্তর্ভুক্ত। দিনাজপুর-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হলেন শিবলি সাদিক। বিরামপুর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন মোঃ পারভেজ কবীর। বিরামপুর উপজেলার পৌরসভার মেয়র হলেন মোঃ আক্কাস আলী। বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে মোছাঃ নুজহাত তাসনিম আওন দায়িত্ব পালন করছেন। বিরামপুর উপজেলায় ১টি পৌরসভা, ৭টি ইউনিয়ন, ১৭১টি মৌজা ও ১৮৯টি গ্রাম রয়েছে।
বিরামপুর উপজেলার উত্তরে ১২ কিলোমিটার দুরে খানপুর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অষ্টাদশ শতকের জমিদার বাড়িসহ জমিদারের ১২শ বিঘা জমি বনজ ফলজ ও ওষুধি বাগান রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ব্রিটিশরা অষ্টাদশ শতকে ফুলবাড়ি জমিদারের পক্ষে খাজনা আদায়কারী হিসাবে রাজকুমার সরকারকে বিরামপুরের রতনপুর কাচারীতে প্রেরণ করা হয়। এখান থেকে তিনি বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ফুলবাড়ী এলাকার প্রজাদের নিকট থেকে নৈপুণ্য ও যোগ্যতার সাথে খাজনা আদায় করতেন। আদায়কারী কর্মদক্ষতায় সন্তুষ্ট হয়ে জমিদার তার বোনের সাথে রাজকুমারের বিয়ে দেয় এবং সাড়ে ৬শ বিঘা জমিসহ রতনপুর কাচারী উপহার দেন। সাধারণ আদায়কারী থেকে জমিদার বনে রাজকুমার আরো অধিক অর্থসম্পদের নেশায় মেতে ওঠেন। অপরদিকে একই মৌজায় আড়াইশত একর জমি ও অঢেল অর্থের মালিক রঘুহাসদা নামের একজন প্রতাপশালী সাঁওতাল ছিলেন। রাজকুমার সুযোগ বুঝে সাঁওতাল বঘু হাসদার কাছ থেকে ৫ বস্তা কাঁচা টাকা ধারে নিয়ে অন্য জমিদারের আরো ৩শ একর জমি নিলামে ডেকে ৫০ একর ফলের বাগান দখল করে নিয়ে উপকারী রঘু হাসদাকে বিতাড়িত করেন। এলাকার একক জমিদার হিসেবে তৈরী করে সুদৃশ্য দ্বিতল বিশিষ্ট মনোরম অট্টালিকা। জানা যায়, নতুন জমিদার রাজকুমারের রতন কুমার ও রক্ষনী কুমার নামে দুই পুত্র সন্তানের মধ্যে ১৬ বছর বয়সের বড় ছেলে রতন কুমার মন্দিরের পুকুরে গোসল করতে গিয়ে মারা যায়। পুত্র শোকে কিছুদিন পর রাজকুমারের মৃত্যু ঘটলে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে অঢেল সম্পদ, বাগান ও পুকুরসহ ১২শ বিঘা জমিদারী লাভ করেন রক্ষুনী রাজকুমার সরকার। বর্তমানে এখানে গড়ে উঠেছে একটি ইসলামিক মিশন হাসপাতাল, ১টি দাখিল মাদ্রাসা, মসজিদসহ বিশাল একটি পুকুর। জমিদারের তৈরীকৃত সুদৃশ্য দ্বিতল অট্টালিকাটিতে ইউনিয়ন ভূমি অফিস হিসেবে কাজ করছে। জেলা প্রশাসক রক্ষুনী বাবুর সম্পত্তি ১নং খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যুগ যুগ ধরে এই জমিদার বাড়ীটি মেরামত ও সংষ্কার না করায় তা ধ্বংস হতে চলছে।[3]
বিরামপুর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১,৫০,৬২০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৭৭,৫১৭ জন এবং মহিলা ৭৩,১০৩ জন। [4]
বিরামপুর উপজেলাকে দিনাজপুরের অন্যতম শিক্ষা কেন্দ্র হিসাবে ধরা হয়। দিনাজপুরের মধ্যে বিরামপুর শিক্ষা অঙ্গনে এক অনন্য নাম।
বিরামপুরে ১০টি প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। উপজেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হল শিয়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিরামপুর পৌর কিন্ডারগার্টেন স্কুল।
বিরামপুর উপজেলার শিক্ষার হার ২০১৪ সাল অনুযায়ী ৮৭%।
কাটলা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়
কাটলা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় বিরামপুর উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি বিরামপুর উপজেলার একটি অন্যতম স্বনামধন্য উচ্চ বিদ্যালয়।
অন্যান্য স্কুলের মধ্যে আদর্শ হাইস্কুল, বিরামপুর, দিনাজপুর, বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বিরামপুর উপজেলা কলেজিয়েট হাই স্কুল, শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় এর খ্যাতি নান্দনিক রূপে বেড়ে চলেছে।
বিরামপুরে একটি সরকারি কলেজ রয়েছে । সেখানে একজন শিক্ষানুরাগী চাইলে অনার্স কোর্স সম্পন্ন করতে পারে। এছাড়াও পৌরশহরে বিরামপুর মহিলা কলেজ, বিএম কলেজ, বিজুল দারুল হুদা কামিল স্নাতকোত্তর মাদ্রাসা রয়েছে।
বিরামপুর পৌর শহরে ৩৫ টি মাহালী পরিবার বাস করে। তারা বাঁশ দ্বারা বিভিন্ন সামগ্রী যেমন: কুলা, চালুন, ঢাকী, সেমাইয়ের খাঁচি, ডোল, টুকরী তৈরি ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা বংশ পরম্পরায় এই পেশায় নিয়োজিত আছে। এসব বাঁশের তৈরি সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে গ্রামাঞ্চলে। ফলে হাট-বাজারে এসব বাঁশজাত সামগ্রী প্রচুর বিক্রি হয়ে থাকে। এসব সামগ্রী তৈরি করতে মোড়ল ও মহাল বাঁশের প্রয়োজন হয়।
বিরামপুর ভৌগোলিক কারণে জেলা হবার যোগ্য দাবিদার। দিনাজপুর সদর অনেক দূরবর্তী হওয়ায় এটি ৪ থানার মানুষের প্রাণের দাবিতে রূপান্তরিত হয়েছে। পাশাপাশি দিনাজপুর সদর প্রায় ৬০ কি.মি হওয়ায় প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ করার প্রয়োজনে বিরামপুরকে জেলা ঘোষণা এখন সময়ের দাবি।
বিরামপুর একটি ব্যবসা প্রধান এলাকা। পাশ্ববর্তী চার উপজেলার বাণিজ্য কেন্দ্র হওয়ায় এখানে গড়ে উঠেছে খুচরা থেকে পাইকারী সহ নানা বিপণন দোকান। এখানে অনেক চাল কল, সেমাই কল, চিড়া কল ও অটো রাইস মিল উল্লেখযোগ্য। এখানকার প্রধান জীবিকা কৃষি এবং কৃষি উৎপাদ হল ধান ।
বিরামপুর উপজেলায় ১৯ টি হাট (সাপ্তাহিক বাজার) রয়েছে।
বিরামপুরে প্রধান কৃষি ফসল হল ধান। দিনাজপুরের দক্ষিণে বিরামপুর, ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট উপজেলার প্রধান চাষাবাদ আমন ধান, দ্বিতীয় বোরো, তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাক-সবজির চাষ। এছাড়াও আলু, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ, পটল, বেগুন, ঝিঙ্গা, টমেটো, শিম, ফুলকপি এবং বাধাকপি চাষ হয়। শীতকালে এসব শাক-সবজি চাষ হয় বেশি।
বিরামপুরের আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। তবে গরম কালে মাঝারি তীব্রতা ও শীতকালে শীতের তীব্রতা লক্ষণীয়। এছাড়া নদী আর প্রচুর গাছপালার উপস্থিতি থাকার কারণে বর্ষাকালে পরিমিত বৃষ্টি হয়।
বিরামপুরের কোল ঘেঁষে যমুনার একটি শাখা নদী চলে গিয়েছে। বিরামপুর উপজেলায় উল্লেখযোগ্য নদী ছোট যমুনা। বিরামপুর উপজেলাটি ছোট যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর এক তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা আছে। ছোট যমুনা নদীটির উৎপত্তি ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ এবং ঘোড়াঘাট উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর শাখা নদী বিরামপুরের ছোট যমুনা নদী। তবে নদীতে যত্রতত্র বালি উত্তোলনের কারণে নদীর নাব্যতা হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ২নং কাটলা ইউনিয়নের খিয়ার মামুদপুর মৌজায় ও পাটনচড়া বাজারের দক্ষিণে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায় ২৬ একরের দীর্ঘাকার এই দিঘীটি অবস্থিত।
উপজেলার মধ্যে যতগুলো বৃহৎ আকর্ষনীয় দিঘি রয়েছে তাঁরমধ্যে ভাঙ্গা দিঘি অন্যতম। নিকটবর্তী জায়গাগুলিসহ দিঘীটির চারপাশের পাড় গুলো অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ও মনোরম হওয়ায় সহজেই দর্শনার্থীদের মন কেড়ে নেয়। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে দিঘীটির পানি অত্যন্ত স্বচ্ছ। এই ভাঙ্গা দিঘি সংলগ্ন আমরুর বিল ও উত্তরে একটি সুইচগেট সহ আরও একটি ঐতিহ্যবাহী দিঘি রয়েছে যা সাগরদিঘী নামে পরিচিত। পাড়গুলো বেশ উঁচু ও চওড়া হওয়ায় শীত মৌসুমে দেশীসহ ও বিদেশ হতে নানা প্রজাতির ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমনে যেন বিচিত্র পাখির মেলা বসে এই নয়নলোভা ভাঙ্গা দিঘীতে।
জনবহুল কাটলা বাজার হতে ইজিবাইক, ভ্যান রিক্সা হয়ে এই দর্শনীয় স্থানে যাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নির্মিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সকল স্তরের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে। পরবর্তীতে বিরামপুরে চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নয়নের স্বার্থে বেসরকারি হাসপাতাল স্থাপন করা হয় পাশাপাশি অন্য শহর থেকে স্বনামধন্য ডাক্তার তাদের চেম্বার স্থাপন করেছে। এর মধ্যে উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে-
১৯৮১ সালে সরকারিভাবে থানাগুলোকে উপজেলায় রূপান্তর করা হলে সেই সময়ে প্রতিটি উপজেলা আদালতে বিচারকার্য চালু হয়। এ জন্য সারাদেশে ২৫টি কারাগার স্থাপন করা হয়। ১৯৮৪ সালে দিনাজপুরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিরামপুর, ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাটসহ ৫টি উপজেলার বিচারাধীন আসামিদের সঠিক সময়ে উপজেলা আদালতে হাজিরা দেয়ার সুবিধার্থে বিরামপুরে উপ-কারাগারটি নির্মিত হয়। কারাগারটির আয়তন ২.৮ একর। ১৯৯১ সালে সরকার উপজেলা আদালতগুলোকে জেলা শহরে স্থানান্তর করলে এটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।[7]
বিরামপুরে রাজধানী থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ সুবিধাজনক। ঢাকা থেকে এটি ৩০০ কিমি দূরে অবস্থিত । মহানগরী থেকে এখানে দুটি প্রধান উপায়ে যাওয়া যায়।
বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনে উত্তরবঙ্গগামী সকল ট্রেন বিরতি দেয়। ঢাকা হতে মোট ৩টি ট্রেন চলাচল করে।
তাছাড়াও ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক বিরামপুর এর উপর দিয়ে অতিক্রান্ত করেছে। সড়ক পথে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন ছোট-বড় শহরের সাথে বিরামপুর সরাসরি সংযুক্ত।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.