দেশি সারস
পাখির প্রজাতি / From Wikipedia, the free encyclopedia
দেশি সারস (বৈজ্ঞানিক নাম: Grus antigone) হলো বড় আকারের অপরিযায়ী সারস।[3][4] দেশি সারস সহজেই দৃষ্টিগ্রাহ্য ও দর্শনীয়। [5] এটি উড়তে সক্ষম এমন পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে লম্বা, এটির উচ্চতা প্রায় ১.৮ মিটার (৫.৯ ফুট)।[6] পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। ধূসর শরীর আর গাঢ় লাল মাথা মাথার জন্য এদের খুব সহজে এ অঞ্চলের অন্যসব সারস থেকে আলাদা করা যায়। অগভীর জলাশয় আর জলাভূমিতে এরা তৃণমূল, শল্ক, পোকামাকড়, চিংড়ি, ছোট স্তন্যপায়ী ও মাছ খুঁজে বেড়ায়। সম্ভবত সারা জীবনের জন্য জোড় বাঁধে এবং বিশেষ কোন দুর্ঘটনা না ঘটলে একই জোড়া দীর্ঘদিন বাচ্চা তুলে যায়। জোড়ার একটি মারা গেলে অন্যটি না খেয়ে মারা গেছে এমন ঘটনাও আছে। ভারতে দেশি সারস বৈবাহিক স্থায়ীত্বের প্রতীক। এরা খুবই এলাকাকাতর প্রাণী। প্রতিটি জোড়া নিজেদের জন্য একটি নির্দিষ্ট এলাকা তৈরি করে এবং সেই এলাকায় অনুপ্রবেশকারীকে সহ্য করে না। বর্ষাকাল এদের প্রজনন মৌসুম এবং এ সময়ে অগভীর পানিতে নলখাগড়া, জলজ উদ্ভিদ, ঘাস ইত্যাদি দিয়ে এরা প্রায় দুই মিটার ব্যাসবিশিষ্ট দ্বীপের মত বাসা তৈরি করে থাকে।
দেশি সারস | |
---|---|
দক্ষিণ এশীয় উপপ্রজাতি গ্রুস অ্যান্টিগোন অ্যান্টিগোন | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | অ্যানিম্যালিয়া |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | গ্রুইফর্মিস |
পরিবার: | সারস |
গণ: | গ্রুস |
প্রজাতি: | G. antigone |
দ্বিপদী নাম | |
Grus antigone (লিনিয়াস, ১৭৫৮) | |
উপপ্রজাতি | |
আনুমানিক বৈশ্বিক বিস্তৃত
| |
প্রতিশব্দ | |
Ardea antigone প্রতিশব্দ |
দেশি সারসের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ আন্তিগোনের সারস (লাতিন: গ্রুস : সারস, আন্তিগোন : ট্রয়ের আন্তিগোনে, গ্রিক পুরাণ অনুসারে দেবী হেরা আন্তিগোনেকে সারসে রূপান্তরিত করেছিলেন)।[4] সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের বিচরণ, প্রায় ১৮ লক্ষ ৩০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস।[7] বিগত শতকের তুলনায় এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে গিয়েছে। ১৮৫০ সালের তুলনায় এদের বর্তমান সংখ্যা ১০% থেকে ২.৫% পর্যন্ত কমে গিয়েছে। এ কারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে সংকটাপন্ন বলে ঘোষণা করেছে।[1] বর্তমানে কেবল ভারতেই এরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় টিকে রয়েছে। বহু দেশে এদের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক এবং বাংলাদেশে এদের অনিয়মিতভাবে দেখা যায়। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটিকে সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করা হয় নি।[4]