Loading AI tools
এশিয়ার দক্ষিণাংশ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দক্ষিণ এশিয়া হল এশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল, যা ভৌগোলিক ও জাতিগত-সাংস্কৃতিক উভয় পরিভাষায় সংজ্ঞায়িত। এই অঞ্চলটি আফগানিস্তান,[note 2] বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপ নিয়ে গঠিত।[6] ভূসংস্থানগতভাবে, এটি ভারতীয় পাত দ্বারা প্রভাবিত এবং দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং উত্তরে হিমালয়, কারাকোরাম ও পামির পর্বত দ্বারা সংজ্ঞায়িত। হিন্দুকুশের উত্তরে উঠে আসা আমু দরিয়া উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের অংশ। স্থলভাগে (ঘড়ির কাঁটার দিকে), দক্ষিণ এশিয়া পশ্চিম এশিয়া, মধ্য এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া দ্বারা আবদ্ধ।
আয়তন | ৫১,৩৪,৬৪১ কিমি২ (১৯,৮২,৪৯৬ মা২) |
---|---|
জনসংখ্যা | ১৯৮কোটি (২০২০)[1] |
জনঘনত্ব | ৩৬২.৩/কিমি২ (৯৩৮/বর্গমাইল) |
জিডিপি (পিপিপি) | $১২.৭৫২ ট্রিলিয়ন (২০১৮)[2] |
জিডিপি (মনোনীত) | $৩.৩২৬ ট্রিলিয়ন (২০২০)[3] |
মাথাপিছু জিডিপি | $১,৭০৭ (নামমাত্র)[3] |
এইচডিআই | ০.৬৪২ (মধ্যম)[4] |
জাতিগোষ্ঠী | ইন্দো-আর্য, ইরানীয়, দ্রাবিড়, চীনা-তিব্বতি, অস্ট্রো-এশীয়, তুর্কী ইত্যাদি |
ধর্ম | ইসলাম, হিন্দুধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, শিখধর্ম, জৈনধর্ম, জরাথুস্ট্রবাদ, ধর্মহীনতা |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | দক্ষিণ এশীয় |
দেশসমূহ | |
অধীনস্থ অঞ্চলসমূহ | ব্রিটিশ ভারত মহাসাগরীয় এলাকা |
ভাষাসমূহ |
অন্যান্য ভাষাসমূহ
|
সময় অঞ্চলসমূহ | ৫ টি সময় অঞ্চল
|
ইন্টারনেট টিএলডি | .af, .bd, .bt, .in, .io, .lk, .mv, .np, .pk |
কল কোড | অঞ্চল ৮ ও ৯ |
বৃহত্তম শহরসমূহ | তালিকা |
ইউএন এম৪৯ কোড | ০৩৪ – দক্ষিণ এশিয়া১৪২ – এশিয়া০০১ – বিশ্ব |
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) হল এই অঞ্চলের একটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংগঠন, যা ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং দক্ষিণ এশিয়ার আটটি রাষ্ট্রকেই অন্তর্ভুক্ত করে।[7] দক্ষিণ এশিয়া প্রায় ৫২ লাখ বর্গ কিমি জুড়ে বিস্তৃত, যা এশিয়া মহাদেশের ১১.৭১% বা পৃথিবীর স্থলভাগের ৩.৫% ভূমিভাগ।[6] দক্ষিণ এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ১৮৯.১ কোটি বা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ, এটি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল ও সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ ভৌগোলিক অঞ্চল উভয়কেই গঠন করে।[8] সামগ্রিকভাবে, এটি এশিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ৩৯.৪৯% ও বিশ্বের জনসংখ্যার ২৪% এরও বেশি ধারণ করে এবং এই অঞ্চলটি একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর বাসস্থান।[9][10][11]
২০১০ সালের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ায় হিন্দু, মুসলিম, শিখ, জৈন ও জরথুস্ত্রীয়দের বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যা ছিল।[12] শুধুমাত্র দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাপী হিন্দুদের ৯৮.৪৭%, শিখদের ৯০.৫% ও মুসলমানদের ৩১%, সেই সাথে ৩.৫ কোটি খ্রিস্টান ও ২.৫ কোটি বৌদ্ধ রয়েছে।[13][14][15][16]
দক্ষিণ এশিয়ার আধুনিক সামঞ্জস্যপূর্ণ সংজ্ঞায় আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপকে অন্তর্ভুক্ত করে।[18][19][20] আফগানিস্তানকে অবশ্য কেউ কেউ মধ্য এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের অংশ বলে মনে করে।[21][22][23][24][25] দ্বিতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের পর, এটি ১৯১৯ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল।[18][20][26] অন্যদিকে, ব্রিটিশ রাজের অংশ হিসেবে ১৮৮৬ সাল থেকে ১৯৩৭ সাল[27] পর্যন্ত এবং বর্তমানে আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত মায়ানমারকে (পূর্বে বার্মা) মাঝে মাঝে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[21][22][28] কিন্তু, দক্ষিণ এশিয়ার অংশ হিসেবে অ্যাডেন উপনিবেশ, ব্রিটিশ সোমালিল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরকে কখনোই প্রস্তাব করা হয়নি, যদিও উক্ত অঞ্চলসমূহ ব্রিটিশ রাজের অধীনে বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত হয়েছিল।[29] দক্ষিণ এশিয়ার অংশ হিসাবে চীন দ্বারা দখলকৃত (বিতর্কিত অঞ্চল) আকসাই চীন অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, যা ব্রিটিশ ভারতীয় রাজত্বের জম্মু ও কাশ্মীরের এবং স্বাধীন ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের অংশ ছিল, বর্তমানে চীনের স্বশাসিত অঞ্চল শিনচিয়াংয়ের অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়, কিন্তু ভারতও অঞ্চলটিকে নিজের অংশ হিসাবে দাবি করে।[30]
যাইহোক, দক্ষিণ এশিয়ার মোট এলাকা ও এর ভৌগোলিক পরিসর স্পষ্ট নয়, কারণ এর উপাদানগুলির পদ্ধতিগত ও পররাষ্ট্রনীতির দিকগুলি বেশ অসম।[21] ব্রিটিশ রাজ বা ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্যের মূল অঞ্চল ছাড়াও, দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যান্য দেশগুলি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চ মাত্রার বৈচিত্র্য রয়েছে।[22][31][32][33] দক্ষিণ এশিয়া ও এশিয়ার অন্যান্য অংশ বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে ভৌগোলিক, ভূ-রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক বা ঐতিহাসিকভাবে একটি স্পষ্ট সীমানা না থাকার কারণে বিভ্রান্তি বিদ্যমান ছিল।[34]
বেশ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ার সাধারণ সংজ্ঞাটি মূলত ব্রিটিশ রাজের প্রশাসনিক সীমানা থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত।[35] দক্ষিণ এশিয়ার মূল অঞ্চল বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বর্তমান অঞ্চলগুলি গঠন করে, যা ১৮৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মূল অঞ্চল ছিল।[19][20][36][37] পার্বত্য দেশ নেপাল ও ভুটান দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র, যা ব্রিটিশ রাজের অংশ ছিল না,[38] এবং দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপকে সাধারণত অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিভিন্ন কারণের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সংজ্ঞা অনুসারে, ব্রিটিশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[39][40][41][42][43][44][45] ব্রিটিশ রাজ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, কিন্তু সরাসরি শাসিত হয়নি এমন ৫৬২ টি রাজত্ব ভারত বা পাকিস্তানে যোগদানের পর দক্ষিণ এশিয়ার প্রশাসনিক অংশ হয়ে ওঠে।[46][47]
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা - এই সাতটি রাষ্ট্র নিয়ে শুরু হয়েছিল এবং আফগানিস্তানকে অষ্টম সদস্য হিসেবে ২০০৭ সালে স্বীকৃতি লাভ করে।[48][49] সার্কের পূর্ণ সদস্যের মর্যাদার জন্য চীন ও মিয়ানমারও আবেদন করেছে।[50][51] দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তি ২০১১ সালে আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি প্রদান করে।[52]
ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া শব্দ দুটি কখনও কখনও বিনিময়যোগ্যভাবে ব্যবহৃত হয়।[39][53][54][55] ভারতীয় উপমহাদেশটি মূলত একটি ভূতাত্ত্বিক শব্দ, যা প্রাচীন গন্ডোয়ানা থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাওয়া ভূমি খণ্ডকে নির্দেশ করে, এটির সাথে প্রায় ৫.৫ কোটি বছর আগে প্যালিওসিনের শেষের দিকে ইউরেশীয় প্লেটের সংঘর্ষ হয়েছিল। এই ভূতাত্ত্বিক অঞ্চলে মূলত বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা অন্তর্ভুক্ত।[56] ঐতিহাসিক ক্যাথরিন অ্যাশার ও সিন্থিয়া টালবট বলেন যে ভারতীয় উপমহাদেশ শব্দটি দক্ষিণ এশিয়ার একটি প্রাকৃতিক ভৌত ভূমির বর্ণনা প্রদান করে, যা বাকী ইউরেশিয়া থেকে অপেক্ষাকৃত বিচ্ছিন্ন ছিল।[57]
এই অঞ্চলটিকে ব্র্যান্ডাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ প্রোগ্রাম ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে আফগানিস্তান, বার্মা, মালদ্বীপ ও তিব্বতকে" নিয়ে সংজ্ঞায়িত করেছে।[58] কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুরূপ কর্মসূচির অধ্যায়নে মধ্যে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা রয়েছে এবং বার্মাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।[59] অতীতে, দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি সুসংগত সংজ্ঞার অভাবের ফলে একাডেমিক অধ্যয়নের অভাব দেখা দেয়, এই ধরনের অধ্যায়নের প্রতি আগ্রহের অভাবও ছিল।[60] বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা জুড়ে দুই বছরের পুরোনো জরিপে উত্তরদাতাদের মধ্যে দক্ষিণ এশীয় পরিচয়ের পরিচয় উল্লেখযোগ্যভাবে কম পাওয়া গেছে।[61]
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সংক্ষেপে সার্ক) দক্ষিণ এশিয়ার একটি সরকারি সংস্থা। এর সদস্য দেশগুলো হলো - বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান এবং আফগানিস্তান। গণচীন ও জাপানকে সার্কের পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। সার্ক ১৯৮৫ সালের ৮ই ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার নেতারা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক,অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা করার লক্ষে এক রাজকীয় সনদপত্রে আবদ্ধ হন।
দক্ষিণ এশিয়ার সমাজ ব্যবস্থা মোটামুটি একইরকম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে একই ধরণের সমাজ ব্যবস্থা বিদ্যমান। পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার উপরে ভিত্তি করে যৌথ পরিবার-ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা বিদ্যমান।
দক্ষিণ এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ১৭৪.৯ কোটি, যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চল করে তুলেছে।[62] এটি সামাজিকভাবে খুবই মিশ্র, অনেক ভাষা বিভাগ এবং ধর্ম নিয়ে গঠিত, এবং একটি অঞ্চলের সামাজিক অভ্যাস যা অন্য একটি অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির।[63]
দক্ষিণ এশিয়ায় অসংখ্য ভাষা রয়েছে। এই অঞ্চলের কথ্য ভাষাগুলি মূলত ভূগোলের ভিত্তিতে এবং ধর্মীয় সীমানা জুড়ে ভাগ করা হয় তবে লিখিত লিপিগুলি ধর্মীয় সীমানা দ্বারা বিরাটভাবে বিভক্ত। বিশেষত, দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানরা যেমন আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে আরবি বর্ণমালা এবং পার্সিয়ান নাস্তালিক ব্যবহার করে। ১৯৭১ পর্যন্ত, মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত) কেবল নাস্তালিক লিপি বাধ্যতামূলক করেছিল, কিন্তু এরপরে আঞ্চলিক লিপি এবং বিশেষত বাংলা ভাষা গ্রহণ করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অমুসলিমরা এবং অন্যদিকে ভারতের কিছু মুসলমান তাদের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন ঐতিহ্য লিপি যেমন ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার জন্য ব্রাহ্মী লিপি থেকে প্রাপ্ত লিপি এবং দ্রাবিড় ও অন্যান্য ভাষাসমূহের জন্য ব্রাহ্মী-লিপি ব্যবহার করে।[64]
এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় কথ্য ভাষা হল হিন্দুস্তানি ভাষা, তার পরে বাংলা, তেলুগু, তামিল, মারাঠি, গুজরাতি, কন্নড় ও পাঞ্জাবী রয়েছে। [179]
২০১০ সালে হিন্দু, জৈন ও শিখ ধর্মবিশ্বাসীরা বিশ্বের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি ছিল, এছাড়া প্রায় ৫১ কোটি মুসলমান, পাশাপাশি ২.৫ কোটি বেশি বৌদ্ধ ও ৩.৫ কোটি খ্রিস্টান ছিল।[15] সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জনসংখ্যার মধ্যে হিন্দু ধর্মবিশ্বাসীরা প্রায় ৬৮ শতাংশ বা প্রায় ৯০ কোটি এবং মুসলমান ৩১ শতাংশ বা ৫১ কোটি, বাকি অংশের বেশিরভাগ অংশ বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান ও শিখ ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে গঠিত।[67] হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ এবং খ্রিস্টানরা ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানে; আর মুসলমানরা আফগানিস্তান (৯৯%), বাংলাদেশ (৯০%), পাকিস্তান (৯৯%) ও মালদ্বীপে (১০০%) কেন্দ্রীভূত।[15]
ভারতীয় ধর্ম হল সেই সকল ধর্ম, যেগুলি ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভূত হয়েছে; ভারতীয় ধর্মের মধ্যে যথাক্রমে হিন্দুধর্ম, জৈনধর্ম, বৌদ্ধধর্ম ও শিখধর্ম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[68] ভারতীয় ধর্মগুলি পৃথকভাবে পরিভাষা, বিশ্বাস, লক্ষ্য এবং ধারণাগুলি ভাগ করে নিয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়া থেকে পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।[68] আদি খ্রিস্টধর্ম ও ইসলামকে দক্ষিণ এশিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে বণিকদের দ্বারা প্রবর্তন করা হয়েছিল, যারা স্থানীয় জনসংখ্যার মধ্যে বসতি স্থাপন করেছিল। পরবর্তী সময়ে সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও পাঞ্জাব অঞ্চলের কিছু অংশ পারস্য ও মধ্য এশিয়া থেকে আগত মুসলমানদের সাথে আরব খলিফারা বিজয় লাভ করেছিল, যার ফলস্বরূপ দক্ষিণ এশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশে শিয়া ও সুন্নি ইসলাম উভয়ের বিস্তার ঘটেছিল।[69][70] পরবর্তীকালে, ইসলামী সুলতানি ও মুঘল সাম্রাজ্যের মুসলিম শাসকদের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে।[69][71] প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মুসলমান দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাস করে।[72][73][74]
বিশ্বের বেশকিছু সর্বাধিক জনবহুল অতিমহানগর দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত। "ডেমোগ্রাফিয়া ওয়ার্ল্ড আরবান এরিয়াস"-এর ২০২০ সালের সংস্করণ অনুসারে, এই অঞ্চলে বিশ্বের ৩৫ অতিমহানগরের মধ্যে ৮টি (১ কোটি জনসংখ্যার পৌর এলাকা) রয়েছে:[75]
ক্রম | নগরাঞ্চল | রাজ্য/প্রদেশ/বিভাগ | রাষ্ট্র | জনসংখ্যা[75] | এলাকা (কিমি২)[75] | ঘনত্ব (/কিমি২)[75] |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | দিল্লি | জাতীয় রাজধানী অঞ্চল | ভারত | ২,৯৬,১৭,০০০ | ২,২৩২ | ১৩,২৬৬ |
২ | মুম্বই | মহারাষ্ট্র | ভারত | ২,৩৩,৫৫,০০০ | ৯৪৪ | ২৪,৭৭৩ |
৩ | কলকাতা | পশ্চিমবঙ্গ | ভারত | ১,৭৫,৬০,০০০ | ১,৩৫১ | ১২,৯৮৮ |
৪ | ঢাকা | ঢাকা বিভাগ | বাংলাদেশ | ১,৭৪,৪৩,০০০ | ৪৫৬ | ৩৩,৮৭৮ |
৫ | করাচি | সিন্ধ | পাকিস্তান | ১,৪৮,৩৫,০০০ | ১,০৪৪ | ১৪,২১৩ |
৬ | বেঙ্গালুরু | কর্ণাটক | ভারত | ১,৩৭,০৭,০০০ | ১,২০৫ | ১১,৩৮১ |
৭ | চেন্নাই | তামিলনাড়ু | ভারত | ১,১৩,২৪,০০০ | ১,০৪৯ | ১০,৭৯৫ |
৮ | লাহোর | পাঞ্জাব | পাকিস্তান | ১,১০,২১,০০০ | ৮৫৩ | ১২,৯৩৪ |
ভারতীয় উপমহাদেশে খেলাধুলার ৯০% ভক্তের[76] সাথে ক্রিকেট দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা।[77]