তাবলিগ জামাত
ইসলাম ধর্মভিত্তিক সংগঠন ও ইসলাম ধর্মপ্রচার আন্দোলন / From Wikipedia, the free encyclopedia
তাবলীগ জামায়াতে (উর্দু: تبلیغی جماعت, ধর্মপ্রচারকদের সমাজ)[1][2], যা আরব বিশ্বে আহবাব (বাংলাঃ বন্ধুগণ) নামে পরিচিত, হল একটি ইসলাম ধর্মভিত্তিক সংগঠন ও ধর্মপ্রচার আন্দোলন, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা, এবং যা মুসলিমদেরকে ও নিজ সদস্যদেরকে সেভাবে ধর্মচর্চায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে, যেভাবে শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় তা চর্চা করা হতো,[3][4] এবং তা হলো বিশেষত আনুষ্ঠানিকতা, পোশাক ও ব্যক্তিগত আচরণের বিষয়গুলোতে।[5][6] বিশ্বজুড়ে সংগঠনটির আনুমানিক ১.২ কোটি থেকে ৮ কোটি অনুগামী রয়েছে ,[7] যার অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করে,[8] এবং প্রায় ১৮০ থেকে[9] থেকে ২০০ টি দেশে এর উপস্থিতি রয়েছে।[5] একে "২০-শতকের ইসলামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্মীয় আন্দোলনগুলোর মধ্যে অন্যতম" হিসেবে গণ্য করা হয়।[10]
প্রতিষ্ঠাতা | |
---|---|
মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভি | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
ভারত | |
বাংলাদেশ | |
পাকিস্তান | |
যুক্তরাজ্য | |
মালয়েশিয়া | |
দক্ষিণ আফ্রিকা | |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | |
শ্রীলঙ্কা | |
ধর্ম | |
সুন্নি (ইসলাম) (প্রধানত দেওবন্দি) | |
ধর্মগ্রন্থ | |
কোরআন, হাদিস, ফাযায়েলে আমল, ফাযায়েলে সাদাকাত, মুন্তাখাব হাদিস, হায়াতুস সাহাবা, রিয়াদুস সালিহিন | |
ভাষা | |
সার্বজনীন: আরবি বাংলাদেশে: বাংলা পাকিস্তান ও ভারত:উর্দু যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের: স্ব স্ব স্থানীয় ভাষা |
১৯২৬ সালে মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভি কর্তৃক ভারতের মেওয়াতে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি দেওবন্দি আন্দোলনের একটি শাখা হিসেবে এবং ইসলামের বিভিন্ন বিষয়কে অবজ্ঞা ও নৈতিক মুল্যবোধের সমসাময়িক অবক্ষয়ের প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাদের যাত্রা শুরু করে। আন্দোলনটি তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করার মাধ্যমে ইসলামের আধ্যাত্নিক পুনর্গঠনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে।[5][11] তাবলিগ জামাত-এর মূল ভিত্তি হিসেবে ৬টি উসুল বা মূলনীতিকে ধারণ করা হয়। এগুলো হলো: কালিমা, নামায, ইলম ও যিকির, একরামুল মুসলিমিন (মুসলমানদের সহায়তা করা), সহিহ নিয়ত বা এখলাসে নিয়ত (বিশুদ্ধ মনোবাঞ্ছা), এবং দাওয়াত-ও-তাবলিগ (ধর্মপ্রচারের আহ্বান)।[12]
তাবলিগ জামাত রাজনীতি ও ফিকহে (আইনশাস্ত্র) সকলপ্রকার সম্পৃক্ততাকে অস্বীকার করে [13][14] এর পরিবর্তে কোরআন ও হাদিসে দৃষ্টি দেয়।[13][15] তবে, দলটির উপর রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছিল।[5] যুক্তরাষ্ট সরকার ২০০১ এর সেপ্টেম্বরের পর থেকে তাবলীগ জামাতকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে।[16] সংগঠনটির সাথে সন্ত্রাসবাদের কোন সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই বলে জানা গিয়েছে, যদিও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো তাদের মধ্য থেকে লোক নিয়ে সদস্য নিয়োগ দিয়েছে।[16] তাবলিগী জামায়াতের নেতৃবৃন্দ সন্ত্রাসবাদের সাথে যোগসূত্রের বিষয় অস্বীকার করেছেন।[16] তাবলীগী জামায়াত কঠোরভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং বিতর্ক এড়িয়ে চলে এবং এর পরিবর্তে কেবল ধর্মের দিকে মনোনিবেশ করে।[16] তাবলিগ জামায়াত স্বীকার করে যে এটি সামাজিক বা রাজনৈতিক অবস্থান নির্বিশেষে সকল ধরনের ব্যক্তিকে আকৃষ্ট করে এবং এর সদস্যপদ নিয়ন্ত্রণ করে না।