গান্ধার
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন অঞ্চল ও তৎকালীন রাজ্য / From Wikipedia, the free encyclopedia
গান্ধার আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের কাবুল ও সোয়াত নদীর তীরে অবস্থিত একটি প্রাচীন ইন্দো-আর্য রাজ্য।[1] এটি প্রাচীন ভারতের ১৬টি মহাজনপদের মধ্যে একটি।[2][3] হাখমানেশী যুগে এবং হেলেনীয় সময় কালের রাজ্যটির রাজধানী ছিল চরসদ্দা, কিন্তু পরে ১২৭ খ্রিষ্টাব্দে মহান কুষাণ সম্রাট কণিষ্ক দ্বারা রাজধানী পেশাওয়ার শহরে স্থানান্তরিত হয়েছিল।
গান্ধার | |
---|---|
প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ–৫৩৫ খ্রিস্টাব্দ | |
বৈদিক যুগের পরবর্তী সময়ে গান্ধার এবং অন্যান্য মহাজনপদ | |
বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তান এবং উত্তর-পূর্বে আফগানিস্তান গান্ধার মহাজনপদের আনুমানিক সীমানা। | |
রাজধানী | কাপিসি (বর্তমানে বাগরাম,পারওয়ান প্রদেশ) পুষ্কলাবতী (বর্তমানে চরসাদ্দা,খাইবার পাখতুনখোয়া) এবং তক্ষশীলা,রাওয়ালপিন্ডি বিভাগ এবং পরে পুরুপুরা(পেশাওয়ার,খাইবার পাখতুনখোয়া) |
সরকার | রাজতন্ত্র |
• প্রায় ৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ | নাগনাজিৎ |
• প্রায় ৫১৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ | পুষ্করাশক্তি |
ঐতিহাসিক যুগ | প্রাচীন যুগ |
• প্রতিষ্ঠা | প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ |
• বিলুপ্ত | ৫৩৫ খ্রিস্টাব্দ |
বর্তমানে যার অংশ | আফগানিস্তান পাকিস্তান |
ঋগ্বেদের (১৫০০-১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)[4][5] সময় থেকে গান্ধারের অস্তিত্ব ছিল, পাশাপাশি জরাথুস্ট্রীয় আবেস্তায় এটি অহুর মজদা দ্বারা নির্মিত পৃথিবীর ষষ্ঠ সবচেয়ে সুন্দর জায়গা ভাক্করুত্তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে হাখমানেশী সাম্রাজ্য গান্ধার রাজ্যকে অধিকৃত করে। ৩২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহান আলেকজান্ডার গান্ধার রাজ্য জয় করে; পরবর্তীকালে এটি মৌর্য সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে এবং তারপর ইন্দো-গ্রিক রাজত্বের অংশ হয়ে ওঠে। ইন্দো-গ্রীক রাজবংশের অধীনে গ্রেকো-বৌদ্ধধর্মের জন্য এই অঞ্চলটি একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল এবং পরবর্তী সাম্রাজ্যের অধীনে গান্ধার-বৌদ্ধধর্মের জন্য এই অঞ্চলটি একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল। এটি মধ্য এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ায় বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তারের কেন্দ্রীয় স্থান ছিল।[6] এটি ব্যাক্ট্রিয়ান জরাথুস্ট্রবাদ এবং হিন্দুধর্মেরও কেন্দ্র ছিল।[7] গান্ধার (গেরো-বৌদ্ধ) শিল্প স্থানীয় ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এটি কুষাণ সাম্রাজ্যের অধীনে প্রথম শতাব্দীর থেকে ৫ম শতাব্দীর মধ্যে তার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন। গান্ধার "এশিয়ার পারাপারের রাস্তা হিসেবে উদিত হয়ে" বাণিজ্য পথকে সংযুক্ত করে এবং বিভিন্ন সভ্যতার সাংস্কৃতিক প্রভাবগুলো গ্রহণ করে; ইসলাম ধর্ম এই অঞ্চলে রাজত্ব করতে শুরু করার পূর্বে ৮ম থেকে ৯ম শতাব্দী পর্যন্ত রাজ্যটি বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিল।[8] ১১তম শতাব্দী পর্যন্ত পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় বৌদ্ধধর্মের প্রভাব স্থির ছিল।[9]
ফার্সি শব্দটি 'শাহী' ইতিহাসবিদ আল-বুরুনি[10] ব্যবহার করে রাজকীয় রাজবংশের[11] উল্লেখ করেছিলেন, যা কাবুল শাহী[12] থেকে এসেছিল এবং ১০তম ও ১১তম শতাব্দীর ইসলামিক বিজয়গুলোর পূর্বে এই অঞ্চলটিতে শাসন করেছিলেন। ১০০১ খ্রিষ্টাব্দে গাজনির মাহমুদ জয়লাভের পর গান্ধার নামটি অদৃশ্য হয়ে যায়। মুসলিম আমলে, লাহোর থেকে বা কাবুল থেকে অঞ্চলটি পরিচালিত হতো। মুঘল আমলে এটি কাবুল প্রদেশর একটি স্বাধীন জেলা ছিল।