Loading AI tools
ভারতের একটি হিন্দু মন্দির উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ভারতের উত্তর প্রদেশের মথুরাতে শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থানে নির্মিত কেশব দেও মন্দিরটি সারা বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম পবিত্র ধর্মস্থান। কেশব দেও বা কেশব দেব মন্দিরটি মথুরার মূল কৃষ্ণ জন্মস্থান কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত।[1] কেশব দেব ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরেকটি নাম। জনপ্রিয় লোককথা অনুসারে মূলমন্দিরের উপাস্য শ্রীকৃষ্ণের প্রতিমা প্রকটিত করেন শ্রীকৃষ্ণের প্রপৌত্র শ্রীবজ্রনাভ।[2]
কেশব দেও মন্দির | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
অবস্থান | |
অবস্থান | মথুরা |
দেশ | ভারত |
এই স্থানটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে খুবই পবিত্র একটি স্থান। ধারণা করা হয় ৫০০০ হাজার বছর আগে এখানে মন্দির স্থাপন করেন শ্রীকৃষ্ণের প্রপৌত্র শ্রীবজ্রনাভ।পরবর্তীতে ৪০০ সালে গুপ্ত সম্রাজ্যের দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত একটি সুবিশাল মন্দির নির্মাণ করেন। বলা হয়ে থাকে এই মন্দিরের সৌন্দর্য আর মহত্ব কোন হাতে আঁকা ছবি বা লিখিত বর্ণনার মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। মন্দিরটি গজনির সুলতান মাহমুদ ১০১৭ সালে এটি ধ্বংস করে। পাথরে খোদিত লিপি থেকে জানা যায়,তৃতীয়বারের মত এই মন্দিরটি আবার তৈরি করেন জাজ্জা বিক্রম সাম্ভাত ১২০৭ সালে রাজা বিজয়পাল দেবের শাসন আমলে। এ মন্দিরটি আবারও ধ্বংস হয় সিকান্দার লোদীর হাতে।বলা হয়ে থাকে, লোদীর হাতে ধ্বংসের পূর্বে ১৬ শতকে শ্রীচৈতন্য এই মন্দিরটি পরিদর্শন করেন।
রাজা বীরসিং দেও এই মন্দিরটি আবার গড়ে তোলেন মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসন কালে।কিন্তু ১৬৬৯ সালে এই মন্দির ধ্বংস করার নির্দেশ দেয় মুগল সম্রাট আওরঙ্গজেব। ১৬৬৯ সালে কেশব দেও মন্দিরের স্থানে একটি ঈদগাহ নির্মাণ করা হয়।
রাজা বীরসিং দেও তৎকালীন ৩৩ লাখ টাকা খরচ করে মন্দিরটি চতুর্থবারের মত গড়ে তোলেন মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসন কালে।কথিত আছে,এটি ছিল তৎকালীন ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দর মন্দির। সমগ্র ভারতবর্ষের সকল হিন্দু অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন মন্দিরটিকে। জন মানসে পরবর্তী মুঘল সম্রাট বলে যাকে বিবেচনা করা হত সেই দারা শিকোহ একটি খোঁদাই করা বেড়া সদৃশ পাথর উপহার দিয়েছিলেন যেটি প্রকটিত মূর্তির কাছেই স্থাপন করা হয়েছিল। দর্শনার্থীরা এই বেড়া সদৃশ পাথর পর্যন্ত যেতে পারতেন এবং তাদের দর্শন সম্পন্ন করতেন। ১৬৬৯ সালে এই মন্দির ধ্বংস করার নির্দেশ দেয় মুগল সম্রাট আওরঙ্গজেব। ১৬৬৯ সালে কেশব দেও মন্দিরের স্থানে একটি ঈদগাহ নির্মাণ করা হয়।
ব্রিটিশ শাসনামলে এই স্থানটি ছিল ব্রিটিশ অধিভুক্ত। ১৮১৫ সালে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি একটি নিলাম অনুষ্ঠান আয়োজন করে। নিলাম থেকে কাশীর রাজা পান্তিমল এই স্থানটি কিনে নেন। তার ইচ্ছা ছিল এই স্থানে একটি সুবিশাল মন্দির স্থাপনের। কিন্তু তার সেই ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে যায়। এই স্থানের মালিকানা মথুরার স্থানীয় মুসলিমদের সাথে তিনি বিবাদে জড়িয়ে পরেন এবং তা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। যদিও আদালত শেষ পর্যন্ত কাশীর রাজার পক্ষেই রায় দেন। ১৯৪৪ সালে মদন মোহন মালভ্য নামে এক সজ্জন ব্যক্তি কাশীর রাজার উত্তরাধিকারের কাছ থেকে মাত্র ১৩ হাজার টাকায় এই স্থান কিনে নেন। পূর্বের মালিক এই টাকা নিয়েছিলেন আদালতের খরচ নির্বাহের জন্য।
মালভ্যজি এই মন্দিরের শুরু দেখে যেতে পারেননি। ১৯৫১ সালে তিনি একটি ট্রাস্ট স্থাপন করেন এবং ট্রাস্টের নিকট জমি হস্তান্তর করেন। তার মারা যাবার পরে বিখ্যাত বিড়লা কোম্পানির যুগলকিশোর বিড়লা মন্দির নির্মাণে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও আরেক বিখ্যাত ডালমিয়া গ্রুপের জয়দয়াল ডালমিয়ার ভূমিকাও স্মরণযোগ্য। এই দুই পরিবারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ১৫ মিলিয়ন রুপী ব্যয়ে ১৯৬৫ সালে ঐতিহাসিক এই মন্দিরের কাজ সম্পন্ন হয়। [3]
মন্দিরের পাশেই নির্মাণ করা হয় একটি একটি ছোট ঘর যার আদল অনেকটা সেই জেল কুঠরির মত যেখানে শ্রীকৃষ্ণ জন্ম গ্রহণ করেন। এটি নির্মাণের জন্য ১৯৫৩ সাল থেকে স্বামী অখণ্ডনন্দের তত্বাবধানে খনন কাজ শুরু করা হয়। ১৯৮২ সালে এই প্রতীকী জেল গৃহের নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.