১৮৩৩-এর সুমাত্রা ভূমিকম্প
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
১৮৩৩-এর সুমাত্রা ভূমিকম্প ২৫ নভেম্বর আনুমানিক ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সময় ২২:০০ এ সংঘটিত একটি ভূমিকম্প, যার মাত্রা ছিল ৮.৮ থেকে ৯.৮ এর মধ্যে। ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট বিশাল সুনামিতে দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়। ভূমিকম্পে মোট প্রাণহানির কোনও নির্ভরযোগ্য নথি পাওয়া যায় না, তবে হতাহতের সংখ্যাকে কেবল 'অসংখ্য' হিসাবে বর্ণনা করা হয়। প্রবাল মাইক্রো অ্যাটলের উত্থানের পরিমাণ রেকর্ড করে এই ভূমিকম্পের মাত্রা অনুমান করা হয়।[1]
স্থানীয় তারিখ | ২৫ নভেম্বর ১৮৩৩ |
---|---|
স্থানীয় সময় | ২২:০০ |
মাত্রা | ৮.৮–৯.২ Mw |
ভূকম্পন বিন্দু | ২.৫° দক্ষিণ ১০০.৫° পূর্ব |
চ্যুতি | সুন্দা মহাচ্যুতি |
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা | সুমাত্রা, ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ |
সুনামি | হ্যাঁ |
হতাহত | অজানা |
সুমাত্রা দ্বীপটি ইন্দো-অস্ট্রেলীয় পাত এবং ইউরেশীয় পাতের মধ্যবর্তী সংযোগ সীমায় অবস্থিত। এই পাতগুলি সুমাত্রার নিকটে অত্যন্ত তির্যকভাবে একত্রিত হয়েছে। খাঁটি ডিপ-স্লিট ফল্টসহ সুন্দা মহাচ্যুতি নামে পরিচিত সাবডাকশন জোন এবং সুমাত্রা মহাচ্যুতির সাথে খাঁটি স্ট্রাইক-স্লিপ ফল্টিং-এ সাথে স্থানচ্যুতি হয়। সাবডাকশন জোন ইন্টারফেসের প্রধান স্লিপ ঘটনাগুলি সাধারণত মহাচ্যুতি ধরনের হয়ে থাকে। ঐতিহাসিকভাবে, এই মহাচ্যুতি এলাকায় বেশ কিছু বড় ও শক্তিশালী ভূমিকম্প নথিভুক্ত করা হয়েছে, এর মধ্যে ১৭৯৭, ১৮৩৩, ১৮৬১, ২০০৪, ২০০৫ এবং ২০০৭ উল্লেখযোগ্য। এই সমস্ত ভূমিকম্পের বেশিরভাগই বিধ্বংসী সুনামির সৃষ্টি করেছিল। এছাড়াও এই মহাচ্যুতি এলাকায় বড় ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট ছোট ছোট চ্যুতিতেও শক্তিশালী ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে, যেমন ১৯৩৫, ১৯৮৪, ২০০০ এবং ২০০২ সালে সংঘটিত ভূমিকম্প।[1]
ভূমিকম্প এবং তৎপরবর্তী সুনামির ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে কেবলমাত্র কিছু বিরল ও বিক্ষিপ্ত তথ্যসূত্র পাওয়া যায়। তা সত্ত্বেও ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সুনামি সুমাত্রার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল বরাবর পারিয়ামান থেকে বেঙ্কুলু পর্যন্ত ব্যাপক বিধ্বংসী ভূমিকা রেখেছিল। এছাড়াও পূর্ব আফ্রিকার সেশেল দ্বীপপুঞ্জেও সুনামির ফলে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হওয়ার প্রতিবেদন পাওয়া যায়।[2]
ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি বেঙ্কুলুতে ৫ মিনিট এবং প্যাদাংয়ে ৩ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। তীব্রতার সাথে তুলনা করলে এটি একটি খুব বড় উৎস ফাটল বা উপকেন্দ্রে ব্যাপক তীব্রতার সংকেত দেয়।[1] ফাটলের ব্যাপ্তি এবং এই ভূমিকম্পের মাত্রা শৈলশিরা বরাবর ছোট দ্বীপের একটি গুচ্ছসহ সুমাত্রা উপকূলের সমান্তরালে মেন্টওয়াই দ্বীপ থেকে প্রবাল মাইক্রোটলসের উপর আপেক্ষিক সমুদ্রপৃষ্ঠ পরিবর্তনের প্রভাব ব্যবহার করে নির্ধারণ করা হয়। এই মাইক্রো অ্যাটলগুলি থেকে (মূল অ্যাটল বা প্রবালদ্বীপের সাথে সাদৃশ্যের কারণে মাইক্রো অ্যাটল নামকরণ করা হয়েছে) সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন সংক্রান্ত পরিমাপ রেকর্ড করা যেতে পারে। এই সমস্ত মাইক্রো অ্যাটলগুলো গঠিত হয়, কারণ প্রবালের মাথা নিম্ন জোয়ার স্তরের (জীবন ধারণের সর্বোচ্চ স্তর বা এইচএলএস হিসাবে পরিচিত) বাইরে বিকশিত হতে পারে না। কারণ সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে অবস্থানের ফলে প্রবালগুলো মারা যায়। তাই মাইক্রো অ্যাটলগুলোর অঙ্গসংস্থান সরাসরি এইচএলএস বা জীবন ধারণের সর্বোচ্চ স্তরের পরিবর্তনের প্রতিফলন ঘটায়। বার্ষিক বৃদ্ধি রেখার উপস্থিতির সাথে ইউরেনিয়াম-থোরিয়াম ডেটিং পদ্ধতিতে প্রবাল প্রাচীরের এই অঙ্গসংস্থানিক পরিবর্তনের সময়রেখা নির্ধারণ করা যায়। এই পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়রেখা চ্যুতি বা অনিশ্চয়তা মাত্র কয়েক বছর থেকে কয়েক দশক পর্যন্ত হতে পারে।
সুনামির গঠন প্রক্রিয়া থেকে এই ধারণা পাওয়া যায় যে, ১৮৩৩ সালের সুমাত্রা ভূমকম্পের ফলে সৃষ্ট সুনামির বেশিরভাগ শক্তি ভারত মহাসাগরে সঞ্চারিত হয়েছিল। ফলে সুমাত্রাসহ আশেপাশের বেশিরভাগ উপকূলীয় জনসংখ্যার কেন্দ্রগুলোতে তা আঘাত হানেনি।[3] সুমাত্রার আশেপাশের এলাকার বিস্তারিত নকশা ও সুনামির সীমিত সংখ্যক পর্যবেক্ষণের নথি তাই এক্ষেত্রে বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ।[4]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.