হিন্দু মন্দিরের স্থাপত্য
ধর্মীয় স্থাপত্যশৈলী / From Wikipedia, the free encyclopedia
প্রাচীন হিন্দু মন্দিরগুলির স্থাপত্য শৈলী হিন্দু স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম প্রধান পরিচায়ক। এই ধরনের স্থাপত্য শৈলীর একাধিক গঠন বৈচিত্র্য রয়েছে। তবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে প্রায় সব হিন্দু মন্দির একটি প্রাথমিক বা মূল গঠন শৈলীর ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য হিসেবে প্রত্যেক মন্দিরে একটি অভ্যন্তরীণ গর্ভগৃহ, বা গর্ভ-কক্ষ থাকে যেখানে একটি সাধারণ উন্মুক্ত প্রকোষ্ঠে দেবতার বিগ্রহ বা মূর্তি বা প্রতিকৃতি রাখা থাকে।
এই নিবন্ধটি ইংরেজি থেকে আনাড়িভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি কোনও কম্পিউটার কর্তৃক অথবা দ্বিভাষিক দক্ষতাহীন কোনো অনুবাদক কর্তৃক অনূদিত হয়ে থাকতে পারে। |
অধিকাংশ মন্দিরে এই কক্ষটির সামনে একটি খোলা জায়গা থাকে যেখানে দর্শনার্থী তথা ভক্তরা পূজা ও প্রার্থনাদি করে থাকেন। এটিকে মণ্ডপ বলা হয়। গর্ভগৃহের চারপাশ দিয়ে একটি পরিক্রমা পথ থাকে যা দিয়ে ভক্তরা মন্দির প্রদক্ষিণ করেন। গর্ভগৃহ ও মণ্ডপের মাঝখানে অনেক ক্ষেত্রে একটি পার্শ্বকক্ষ বা উপকক্ষ থাকে যেটিকে অন্তরাল বলা হয়। গর্ভগৃহের ওপরে থাকে চূড়া যাকে শিখর বলে। দক্ষিণ ভারতে মন্দিরের এই চূড়া তথা শিখরগুলি বিমান নামে পরিচিত।
অধিকাংশ মন্দিরে গর্ভগৃহের বাইরে মণ্ডপের ন্যায় এক বা একাধিক কাঠামো থাকে। কিছু কিছু মন্দিরের মূল কাঠামোর বাইরে অনেক সময়ে এক বা একাধিক ছোট মন্দির দেখতে পাওয়া যায়। কোনও কোনও বিরাট মন্দিরের ক্ষেত্রে এই ধরনের কাঠামো কয়েক একর জায়গাজুড়েও ছড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।[1]
হিন্দু মন্দির স্থাপত্য ধর্ম, মূল্যবোধ, এবং হিন্দুধর্ম পরিচালিত জীবনশৈলীর নীতিসমূহের একটি চমৎকার সংমিশ্রণকে তুলে ধরে। হিন্দু ধর্মে মন্দিরগুলি এক একটি তীর্থ হিসেবে স্বীকৃত।[2] হিন্দুধর্মের পৌরাণিক গ্রন্থগুলিতের উল্লিখিত মানব জীবনের উৎপত্তি স্বরূপ স্বীকৃত মহাজাগতিক উপাদানসমূহ - পঞ্চমহাভূত তথা বায়ু, অগ্নি, জল, পৃথিবী, এবং আকাশ, প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী থেকে শুরু করে দেবতার বিগ্রহ, নারী থেকে পুরুষ, কাম থেকে অর্থ, বাঁশির ধ্বনি ও ধূপের সুগন্ধ থেকে শুরু করে পুরুষার্থ তথা বিশ্বজনীনতার মধ্যে শাশ্বত নশ্বরবাদ – সবই নিহিত রয়েছে হিন্দু মন্দির স্থাপত্যগুলির গঠনশৈলীতে।[2] এসব স্থাপত্যের গঠন, আকার ও তাৎপর্যগত মেলবন্ধন এমন একটি পরিবেশ তৈরী করে ব্যবহার করা যা মন্দিরকে মানুষ ও ঈশ্বরের আদর্শ মিলনস্থল হিসেবে তুলে ধরে। প্রাচীন কালে মন্দিরগুলি তৈরির পেছনে মূল উদ্দেশ্যই ছিল পরমাত্মার সঙ্গে মানবআত্মার মিলিত হওয়ার মাধ্যম তৈরী করে তার মোক্ষ লাভের পথ প্রশস্ত করা। এই উদ্দেশ্যের প্রয়োজনীয়তাস্বরূপ মানুষকে আগে জ্ঞান ও সত্যের পরিচয় করানো আবশ্যক ছিল।[3]
হিন্দু মন্দির স্থাপত্যের মূল নিয়মাবলী লেখা রয়েছে শিল্পশাস্ত্র ও বাস্তুশাস্ত্র নামক দুটি প্রাচীন গ্রন্থে।[4][5] হিন্দু সংস্কৃতি মন্দির স্থপতি ও কারীগরদের নান্দনিক স্বাধীনতা দেওয়ার বিষয়ে কখনও কার্পণ্য করেনি। কারীগরগণ প্রায়ই সৃষ্টিশীল প্রকাশের ক্ষেত্রে ভীষণ রকম সৃজনশীলতা দেখিয়েছেন। রকমারী জ্যামিতিক আকার ও গাণিতিক নিয়মাবলীর প্রকাশ তাঁদের কাজের মধ্যে দিয়ে ফুটে উঠেছে। ফলে মন্দিরের গঠন শৈলীগুলির মাধ্যমে হিন্দু জীবনশৈলীরও খুব সুন্দর চিত্র আমরা দেখতে পাই।[6]