Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হন্ডুরীয় (স্পেনীয়: Hondureños) হন্ডুরাসে বসবাসকারী, জন্মগ্রহণকারী বা গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যের অধিকারী জনগোষ্ঠীদেরকে চিত্রিত করা হয়। অধিকাংশ হন্ডুরীয় হন্ডুরাসে বসবাস করে থাকেন। এছাড়াও হন্ডুরাসের প্রতিনিধি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ক্ষুদ্র আঙ্গিকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। এছাড়াও হন্ডুরাসে অনেকেই বসবাস করছেন। তবে তারা হন্ডুরীয় নয়। কেননা, তারা হন্ডুরাসে জন্মগ্রহণ করেননি বা বড় হননি বা তারা হন্ডুরাসের নাগরিকত্ব লাভের অধিকার করেননি।
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
---|---|
হন্ডুরাস ৮,০৬০,০০০জন | |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ১,৫০০,০০০জন[1] |
স্পেন | ৫৮,৫৭২জন[2] |
ভাষা | |
স্পেনীয়, গারিফুনা, মিস্কিতো, বে আইল্যান্ড ক্রিয়োল ইংরেজি ও অন্যান্য আদিবাসী ভাষা | |
ধর্ম | |
রোমান ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট[3] | |
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী | |
হন্ডুরীয় আমেরিকান, আফ্রো-হন্ডুরীয় |
হন্ডুরাস থেকে আগত ব্যক্তিদেরকে মধ্য আমেরিকানরা ‘কাত্রাচো’ নামে ডাকে। এ পরিভাষাটি ১৯শ শতাব্দীর মধ্যভাগে নিকারাগুয়ীদের মাঝ থেকে এসেছে। হন্ডুরীয় জেনারেল ফ্লোরেন্সিও জাট্রুচ তাঁর হন্ডুরীয় ও এল সালভাদোরের সৈনিকদের নিয়ে আমেরিকার পা-চাটা শাসক উইলিয়াম ওয়াকারকে পরাজিত করে দেশে ফিরে আসলে এ উপাধী পায়। ওয়াকার দাসত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন ও মধ্য আমেরিকার নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন। জেনারেল ও তাঁর সেনাবাহিনী ফিরে আসলে কিছু নিকারাগুয়ী ‘আকুই ভাইনেন লস জাত্রুচেস’ (অর্থ: জাত্রুচেসের বালকেরা এখানে এসেছে) উচ্চৈঃস্বরে উল্লাস ধ্বনি করে। তবে, নিকারাগুয়ীরা জেনারেলের শেষ নামটি উচ্চারণ করতে বেশ সমস্যায় ভোগে। সালভাদোরীয়রা তাঁদের হন্ডুরীয় মধ্য আমেরিকান ভাইদের সাথে উইলিয়াম ওয়াকারের বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়।[4]
মেট্রোপলিটন এলাকাগুলোর মধ্যে হন্ডুরাসের রাজধানী তেগুসিগালপা মধ্য আমেরিকার শহরের জনসংখ্যার মধ্যে গুয়াতেমালা সিটি, মানাগুয়া ও স্যান সালভাদোরের পর চতুর্থ বৃহত্তম জনবহুল এলাকা।
হন্ডুরাসের মোট জনসংখ্যা ৭.৪ মিলিয়ন। ২০০১ সালে পরিচালিত হন্ডুরাসের আদমশুমারীতে সর্বাপেক্ষা জনবহুল ডিপার্টমেন্টগুলো হচ্ছে: কর্তেছ (১.২ মিলিয়ন), ফ্রান্সিস্কো মোরাজান (১.২ মিলিয়ন), ইউরো (৪৬৬,০০০), ওলাঞ্চো (৪২০,০০০), চোলোতেকা (৩৯১,০০০), সিগুয়াতেপেকু ও কোমায়াগুয়ায় (৩৫৩,০০০)। সবচেয়ে কম জনসংখ্যা রয়েছে আইলাস ডে লা বাহিয়া ও গ্রাসিয়াস অ্যা ডায়োস শহরে।
একই সূত্র মোতাবেক জানা যায় যে, প্রধান শহরগুলো হচ্ছে, তেগুসিগালপা (৮৯৪,০০০ - কেবলমাত্র সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট), স্যান পেদ্রো সুলা (৫১৭,০০০), চলোমা (১৬০,০০০), লা সেইবা (১৪০,০০০), এল প্রোগ্রেসো (১০৬,০০০), চলুটেকা, কমেইয়াগুয়া, পুয়ের্তো কর্তেছ, লা লিমা ও দানলি। তবে প্রধান পৌর এলাকার আয়তনের মধ্যে তেগুসিগালপা (১,২০০,০০০; ২০০৭ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী) ও স্যান পেদ্রো সুলা (৯০০,০০০) অন্যতম। ১৯৮৮ ও ২০০১ সালে পরিচালিত আদমশুমারিতে স্যান পেদ্রো সুলা’র জনসংখ্যা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। দেশের প্রধান ২০টি শহরগুলোয় ২০,০০০-এর অধিক জনসংখ্যা রয়েছে।
হন্ডুরীয় জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই শ্বেতাঙ্গ ও আমেরিন্দিয়ানের শঙ্করায়ণে সৃষ্ট মেস্তিজো বা শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর।
আমেরিন্দিয়ানের জনগোষ্ঠী সাতটি আদিবাসীদের জনগোষ্ঠী নিয়ে গঠিত তারা হন্ডুরাস অটোচথোনাস পিপলস কনফেডারেশন (সিওএনপিএএইচ) ও হন্ডুরাস সরকার কর্তৃক স্বীকৃত। তাছাড়া ও আফ্রো-ক্যারিবীয় ও আমেরিন্দিয়ানবিহীন গারিফুনা দলগুলোর কাছ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে। সাতটি আদিবাসীদের দল হচ্ছে - চোর্তি, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের গুয়াতেমালা সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মায়া উপজাতি জনগোষ্ঠী। গারিফুনা জনগোষ্ঠী কারিবভাষায় কথা বলে। তারা হন্ডুরাসের পুরো ক্যারিবীয় উপকূলবর্তী ও উপসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ এলাকায় একত্রে বসবাস করে। পিচ বা পায়া ইন্ডিয়ানেরা ওলাঞ্চো ডিপার্টমেন্টর ছোট এলাকায় বসবাস করে। তলুপানেরা ইউরো ডিপার্টমেন্ট ও মন্তানা ডে লা ফ্লোর সংরক্ষিত এলাকায় থাকে। তারা ‘জিকাকুই’, বা ‘তোল’ নামেও পরিচিত। লেনকা ইন্ডিয়ানেরা পশ্চিমাঞ্চলীয় ইন্তিবুকা উচ্চভূমি, লেম্পিরা, লা পাজ, ভ্যালে ও চলুটেকা ডিপার্টমেন্ট বাস করে। গ্রাসিয়াস এ ডায়োস ডিপার্টমেন্টের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় তীরবর্তী ও নিকারাগুয়ার সীমান্ত এলাকায় মিসকিটো ইন্ডিয়ানেরা বাস করেন।
মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৩৫০,০০০জন যা প্রায় ৫% হন্ডুরীয় জনগণ কৃষ্ণাঙ্গ বর্ণের অধিকারী। কিংবা আফ্রো-হন্ডুরীয়। তারা মূলতঃ দেশের ক্যারিবীয় বা আটলান্টিক তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করে থাকেন। বিভিন্নভাবে এ সকল কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর লোকজনের এখানে আগমন ঘটেছে। তাদের অধিকাংশই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিভিন্ন দ্বীপপুঞ্জ থেকে ক্রীতদাস ও চাকর হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছিল। অন্য আরেকটি বৃহৎ আকৃতির দল আফ্রো-কারিব জনগোষ্ঠীর বংশোদ্ভূত গারিফুনা। সেন্ট ভিনসেন্টে ব্রিটিশদের বিপক্ষে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে ও তাদেরকে ১৮শ শতাব্দীতে জোরপূর্বক বেলিজ ও হন্ডুরাসে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। গারিফুনাসদেরকে মঞ্চে উপস্থাপনা বিশেষ করে ‘লুভাভাগু’ হিসেবে হন্ডুরীয় পরিচিতি ঘটানো হয়েছে।
হন্ডুরাসে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আরব সম্প্রদায়ের লোক অবস্থান করছেন। এর অধিকাংশই ফিলিস্তিনী বংশোদ্ভূত খ্রিস্টান আরব ও লেবাননীয় বংশোদ্ভূত। ১৯শ শতাব্দীর শেষদিকে এবং ২০শ শতাব্দীর শুরুর দিকে ফিলিস্তিনী ও লেবাননীয়রা এদেশে আগমন করে। মূলতঃ তারা স্যান পেদ্রো সুলা শহরের বসবাস করছেন। অন্যান্যরা পরিবার নিয়ে তেগুসিগালপা, লা সেইবা ও এল প্রোগ্রেসো এলাকায় থাকছেন। ফিলিস্তিনী জনগোষ্ঠী হন্ডুরাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংকিং, প্রতিষ্ঠান ও রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে। সাধারণভাবে তারা ‘টার্কোস’ নামে পরিচিত কেননা তারা তুর্কি পাসপোর্ট বহন করে এখানে এসেছেন।
পূর্ব এশীয় সম্প্রদায়ভুক্ত লোকজনও এখানে বসবাস করছেন। মূলতঃ চীনা বংশোদ্ভূত লোকদেরই প্রাধান্য বেশি। এছাড়াও স্বল্পসংখ্যক জাপানী, কোরীয়, রিওকুয়ান, ভিয়েতনামীরা ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক হিসেবে হন্ডুরাসে অবস্থান করছেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.